দাড়ি ধরে আলেম-ওলামাদের জেলে ঢুকানো হয়, এমন বাংলাদেশ দেখতে চান না বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার দিকে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলার ধামতী ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসায় দুই দিনব্যাপী ৭৭তম বার্ষিক ইছালে ছাওয়াবের মাহফিলে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা এমন বাংলাদেশ আর চাই না, যে বাংলাদেশে আলেম-ওলামাদের সামনে থেকে মাইক কেড়ে নেওয়া হয়। আমরা এমন বাংলাদেশ আর চাই না, যেখানে দাড়ি ধরে আলেম-ওলামাদের জেলে ঢুকানো হয়। আমরা এমন বাংলাদেশ আর চাই না, যে বাংলাদেশে কোরআন–হাদিস থেকে বয়ান করলে সে মাহফিল বন্ধ করে দেওয়া হয়। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যে বাংলাদেশে দুর্নীতি, রাহাজানি, হানাহানি, গুম এবং হত্যা থাকবে না। আমরা এমন বাংলাদেশ চাই, যে বাংলাদেশে প্রত্যেক মানুষ তাঁর ধর্মকে স্বাধীনভাবে পালন করতে পারবেন।’  

হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘রাষ্ট্র, প্রশাসন, পুলিশ কখনোই আমাদের ঠিক করতে পারবে না, যদি না আমরা নিজেরা নিজ থেকে ঠিক হই। আমি ইসলাম নিয়ে বেশি কিছু জানি না। এখানে যাঁরা উপস্থিত রয়েছেন, তাঁরা বেশি জানেন। তবে বাস্তবিক অভিজ্ঞতা থেকে বলব, ঘুষ থেকে দূরে থাকতে হবে। কাউকে ঘুষ দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। তদবির কোনো ভালো জিনিস নয়। আপনার যদি মনে হয়, আপনার পরিচতি একজন ক্ষমতাধর রয়েছেন। তাঁর থেকে আপনি বিশেষ কোনো সুবিধা নেবেন, এটাও একধরনের অপরাধ। এই ঘুষ ও সুদ থেকে আপনাদের দূরে থাকতে হবে।’

যাঁরা জনগণের প্রতিনিধিত্ব করছেন, তাঁরা জনগণের কর্মচারী উল্লেখ করে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘যাঁরা আপনাদের প্রতিনিধিত্ব করছেন, তাঁরা আপনাদের কর্মচারী। এই কর্মচারীদের কাছে যদি আপনারা বিশেষ একটি দিনে (ভোটের দিন) দুই হাজার, এক হাজার টাকায় বিক্রি হয়ে যান, তাহলে এই আমানতের খেয়ানত আপনারা করবেন। আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ করব, আপনারা কর্মচারীর কাছে কখনোই বিক্রি হবেন না। অত্যাচারী শাসক, সুদ ও ঘুষের কাছে কখনোই মাথানত করবেন না। আমরা ৫ বছর–১০ বছর নেতাকে গালাগাল করতে পারব, কিন্তু আপনার হাতে যে এক দিনের ক্ষমতা ছিল, ওই এক দিনের ক্ষমতা যদি আপনি অপব্যবহার করে থাকেন, তাহলে ওই পাঁচ বছরের অপশাসনের দায়ভার আপনাকেই নিতে হবে। নেতাকে দোষ দেওয়ার আগে নিজের কাছে আগে দায়বদ্ধ হবেন।’

ধামতী দরবার শরিফের পীর মাওলানা বাহাউদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে মাহফিলে আরও বক্তব্য দেন ইসলামি আলোচক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ বাসার, আইনজীবী রেজভিউল আহসান মুন্সি, জামায়াতে ইসলামীর কুমিল্লা উত্তর জেলা সেক্রেটারি মু.

সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আপন দ র ইসল ম আপন র এমন ব

এছাড়াও পড়ুন:

ফরিদপুরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় জিডি

ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের খাসকান্দি সর্বজনীন শ্রীশ্রী কালী ও দুর্গামান্দিরের কালীপ্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় জিডি হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত জড়িত কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

গত বুধবার বিকেলের মধ্যেই প্রতিমার ভেঙে ফেলা অংশগুলো মেরামত করা হয়। ওই প্রতিমা নির্মাণশিল্পী কানাইপুরের বিজন পাল প্রতিমাটি মেরামত করেন। এ জন্য আনুষঙ্গিক ব্যয় হয়েছে আড়াই হাজার টাকা।

মন্দিরের পরিচালনা কমিটির সভাপতি বাসুদেব বিশ্বাস বুধবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় এ বিষয়ে একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের নাম আমাদের জানা নেই। এ জন্য মামলা হয়নি।’

বাসুদেব বিশ্বাস আরও বলেন, প্রতিমা মেরামতের টাকা জেলা পুলিশ দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তাঁরা তা গ্রহণ না করে নিজেরাই এর ব্যয়ভার বহন করেন।

কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ্ মোহাম্মদ আলতাফ হুসাইন বলেন, আগামী রোববার (৩ আগস্ট) এলাকাবাসীকে নিয়ে ওই মন্দির প্রাঙ্গণে মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়েছে। মন্দিরের নিরাপত্তা বাড়ানোর বিষয়ে সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আসাদউজ্জামান জানান, এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে এলাকায় গোয়েন্দা তল্লাশি চালানো হচ্ছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আসামিদের শনাক্ত করে দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার রাত ১০টা থেকে বুধবার সকাল ৬টার মধ্যে কোনো এক সময় কানাইপুর ইউনিয়নের খাসকান্দি সর্বজনীন শ্রীশ্রী কালী ও দুর্গামন্দিরে প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ