অটোরিকশা ছিনতাই করতেই রিকশাচালকে হত্যা করে লাশ শালবনের মধ্যে রাখা হয়: পিবিআই
Published: 15th, February 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই করতে চালক মো. ফালান মিয়াকে (২৭) হত্যা করে বনের ভেতর ফেলে রাখেন হত্যাকারীরা। পরে অটোরিকশাটি ভাঙারি ব্যবসায়ীর কাছে মাত্র ২৮ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন তাঁরা।
আজ শনিবার এ তথ্য জানায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) গাজীপুর কার্যালয়। এ ঘটনায় ৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। আসামিদের জবানবন্দি ও তদন্তে এ তথ্য জানতে পেরেছে তারা।
১১ ফেব্রুয়ারি শ্রীপুরের বেলতলী গ্রামের জোড়পুকুর এলাকায় একটি শালবনের ভেতরে মো.
মো. ফালানকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার কংশেরকুল গ্রামের মো. সাগর (২২), টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার জুনকাই গ্রামের মো. শাহিন (২০), ময়মনসিংহের কোতোয়ালি থানার বনপাড়া গ্রামের মো. শুক্কুর আলী (৪৪) ও একই উপজেলার সোনাখালী গ্রামের আরিফ হোসেন (১৮)।
ফালানের স্বজনেরা জানান, ৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় তিনি অটোরিকশা নিয়ে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেননি। নিখোঁজ হওয়ার পরদিন ১০ ফেব্রুয়ারি ফালানের স্ত্রী রিনা আক্তার এ বিষয়ে শ্রীপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
ফালানের স্বজন মো. মোজাম্মেল হক বলেন, কয়েক বছর ধরে শ্রীপুরের ২ নম্বর সিঅ্যান্ডবি, মাওনা চৌরাস্তা, মাওনা বাজারসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে আসছিলেন ফালান। রোববার সকালে যথারীতি নিজের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা নিয়ে বের হন। সেদিন সন্ধ্যায় তিনি বাড়িতে এসে খাওয়াদাওয়া করে আবার বের হয়ে যান। এরপর সেই রাতে আর তিনি বাড়িতে ফেরেননি। পরে নিখোঁজ হওয়ায় পরিবারের পক্ষ থেকে পরদিন থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। এরপর মঙ্গলবার দুপুরে একটি লাশ পাওয়ার খবর জানায় শ্রীপুর থানার পুলিশ। সেখানে গিয়ে দেখতে পান, লাশটি নিখোঁজ হওয়া ফালান মিয়ার।
পিবিআইয়ের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গ্রেপ্তার চার আসামি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ছিনতাই করতে চালক মো. ফালানকে হত্যা করে বনের ভেতর ফেলে রাখেন বলে আদালতের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। জবানবন্দিতে তাঁরা বলেছেন, ৯ ফেব্রুয়ারি রাতে মাওনা চৌরাস্তা থেকে তাঁরা ফালানের অটোরিকশাটি ভাড়া করেন। তাঁরা বারোতোপার পাশে বেলতলীর জোড়পুকুর এলাকায় পৌঁছে চালক ফালানকে হাত-পা বেঁধে অটোরিকশাটি ছিনতাই করেন। একপর্যায়ে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করে বনের ভেতর ফেলে অটোরিকশাটি নিয়ে চলে যান। পরদিন সেটি এক ভাঙারির দোকানে ২৮ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন।
পিবিআই গাজীপুরের পুলিশ সুপার মো. আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, মালায় গ্রেপ্তার আসামিরা তাঁদের অপরাধ স্বীকার করে আদালতের কাছে জবানবন্দি দিয়েছেন। অটোরিকশা ছিনিয়ে নিতেই ওই চালককে শ্বাসরোধে হত্যা করেন তাঁরা। এ ঘটনায় জড়িত অন্য আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুনশ্রীপুরে শালবনে পড়ে ছিল অটোরিকশাচালকের লাশ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল র
এছাড়াও পড়ুন:
চোখে আলো ফেলা নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে কৃষককে হত্যা
ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায় চোখে টর্চলাইটের আলো পড়া নিয়ে বাগ্বিতণ্ডার জেরে ছুরিকাঘাতে এরশাদ আলী (৩৫) নামের এক কৃষক নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোহাগীপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত এরশাদ আলী উপজেলার দক্ষিণ মাইজপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম সোহাগীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। খবর পেয়ে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পশ্চিম সোহাগীপাড়া গ্রামে মানিক মিয়ার মুদিদোকানে যান এরশাদ আলী। এ সময় এরশাদ আলীর চোখে টর্চলাইটের আলো ফেলে বিরক্ত করেন একই গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে সাকিব মিয়া। এ নিয়ে দুজন বাগ্বিতণ্ডায় জড়ালে স্থানীয় লোকজন মিটমাট করে দেন। পরে এরশাদ আলীসহ সবাই যে যার মতো বাড়িতে চলে যান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ শুক্রবার সকাল ছয়টার দিকে এরশাদ আলীকে ডেকে নিয়ে আবার কথা-কাটাকাটি ও মারামারিতে জড়ান সাকিব ও তাঁর সঙ্গে আসা কয়েকজন। একপর্যায়ে এরশাদ আলীকে ছুরিকাঘাত করা হয়। স্থানীয় লোকজন আহত এরশাদ আলীকে উদ্ধার করে ধোবাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে অভিযুক্ত সাকিব মিয়াসহ তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
ধোবাউড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আল মামুন সরকার বলেন, পুলিশ তিনজনকে আটক করেছে। নিহত এরশাদ আলীর শরীরে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন আছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।