পাবনায় জামায়াতে ইসলামীর একটি কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও গুলি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের নেতা–কর্মীরা। এ ঘটনায় আজ রোববার বিকেলে ৩ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের যুব বিভাগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এতে বিএনপির স্থানীয় কয়েকজন নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে।

জামায়াতের নেতা–কর্মীরা অভিযোগ করেন, গতকাল শনিবার রাতে সদর উপজেলার হিমাইতপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড জামায়াতের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে। বেশ কিছুদিন ধরেই জমি নিয়ে স্থানীয় জামায়াত নেতা আবদুল্লাহ করিমের সঙ্গে জেলা সদরের মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলীর লোকজনের বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গতকাল বিকেলে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে রাত ১০টার দিকে জামায়াতের কার্যালয়ে হামলা করা হয়। হামলাকারী ব্যক্তিরা কয়েকটি দোকানপাট, জামায়াতের কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় ও একটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয়।

জামায়াত নেতা আবদুল্লাহ করিম অভিযোগ করেন, গত ৫ আগস্ট থেকেই মালিগাছা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলীর নেতৃত্বে দখলদারি ও আধিপত্য বিস্তার চলছিল। তাঁর নির্দেশেই নিজেদের শক্তি জানান দিতে জামায়াতের কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়েছে। গতকাল রাত ১০টার দিকে ২৫–৩০ জন অস্ত্রধারী পিস্তল, বন্দুক, রামদা, চায়নিজ কুড়াল নিয়ে হিমাইতপুর ইউনিয়নের কুমারগাড়ি স্থানীয় জামায়াতের কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করে। তারা একটি মুদিদোকান ভাঙচুর করে লুট করে। এ ছাড়া অটোরিকশার গ্যারেজ ও জামায়াত নেতা আবদুল করিমের বাড়ি ভাঙচুর করা হয়। পাশে থাকা একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলি করে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে চলে যায়।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বিএনপি নেতা ইয়াকুব আলী বলেন, ‘এ ঘটনা আমি মোটেও জানি না। ঘটনার সময় থানার ওসি সাহেবের ফোন পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে সবাইকে ছত্রভঙ্গ করে দিই। এর বেশি কিছু জানা নেই। রাজনৈতিকভাবে হেয় করতে আমার ওপর মিথ্যা দায় চাপানো হচ্ছে। আমি এর প্রতিবাদ করছি।’

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুস সালাম প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। জমিজমা নিয়ে বিরোধের জের ধরে দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা ও ভাঙচুরের তথ্য পাওয়া গেছে। তবে গুলির কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। বিষয়টি তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ম র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

রাজশাহীতে পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে সাবেক কাউন্সিলরের মৃত্যু

রাজশাহী সিটি করপোরেশনের সাবেক এক কাউন্সিলরের মৃত্যু হয়েছে। পরিবার বলছে, পুলিশ দেখে পালাতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যান। তবে পুলিশ বলছে, তারা অন্য কাজে এলাকায় গিয়েছিল, ওই কাউন্সিলরকে ধরতে যায়নি। গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে নগরের দাসপুকুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মারা যাওয়া ওই কাউন্সিলরের নাম কামাল হোসেন (৫৫)। তিনি নগরের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর এবং দাসপুকুর এলাকার বাসিন্দা। একসময় বিএনপির রাজনীতি করতেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন। তবে দলে তাঁর কোনো পদ–পদবি ছিল না।

গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কামাল হোসেনের নামে চারটি মামলা হয়। তিনি এলাকায় থাকলেও গা ঢাকা দিয়ে থাকতেন। পরিবারের ধারণা, মামলা থাকায় পুলিশ দেখে ভয় পেয়ে কিংবা হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

কামালের ছেলে সোহান শাকিল প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাতে আমাদের এলাকায় পুলিশ এসেছিল। পুলিশ দেখে আমার বাবা তবজুল হক নামের এক ব্যক্তির বাড়িতে ঢুকে সিঁড়ি দিয়ে ছাদে উঠতে যান। তখন সিঁড়িতে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং সেখানেই মারা যান।’

নগরের রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কামাল হোসেনের বিরুদ্ধে চারটি মামলা আছে। তিনি আত্মগোপনে থাকতেন। শুনেছি রাতে তিনি মারা গেছেন।’

ওসি বলেন, রাতে দাসপুকুর এলাকায় পুলিশ গিয়েছিল। তবে কামালকে ধরতে যায়নি। পুলিশ গিয়েছিল অন্য কাজে। কিন্তু পুলিশ দেখে পালাচ্ছিলেন কামাল হোসেন। তখন হৃদ্‌রোগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। লাশ পরিবারের কাছেই আছে। তারা দাফনের ব্যবস্থা করছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ