Samakal:
2025-08-01@03:17:30 GMT

কাজ হয়নি কিছুই টাকা তোলা শেষ

Published: 30th, April 2025 GMT

কাজ হয়নি কিছুই টাকা তোলা শেষ

ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের রূপসী ওয়াপদা বাঁধ থেকে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এখানে কোনো কাজই হয়নি। অথচ তুলে নেওয়া হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। একই ইউনিয়নের বড় বিশাকোল ও লামকান জামে মসজিদসংলগ্ন রাস্তায় আংশিক কাজ করে অর্ধেক টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বাঁশের সাঁকো নির্মাণ প্রকল্পেও কোনো কাজ হয়নি বলে দাবি স্থানীয়দের।

কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল লতিফের সঙ্গে। তিনি জানান, রাস্তায় এক টুকরো মাটিও পড়েনি, বাঁশের সাঁকোর নামগন্ধ নেই। অনেক প্রকল্পে কাজ হয়নি। অথচ বিল তোলা হয়েছে। একই অভিযোগ করেন মহির উদ্দিন, মঈন উদ্দিন, তাইজাল শেখসহ উপস্থিত অনেকে। 

উপজেলা ঘুরে অষ্টমনিষা ইউনিয়নের প্রকল্পের মতো এমন কিছু প্রকল্প পাওয়া গেছে, যেগুলোর কাজ কাগজে-কলমে সমাপ্ত। এসব প্রকল্পের জন্য বরাদ্দের টাকাও তুলে নেওয়া হয়েছে। অথচ বাস্তবে কোনো কাজই শুরু হয়নি। অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস হোসেন এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের পিআইসি ও ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে। 

উপজেলায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর-কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় মোট বরাদ্দ ছিল ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার বেশি। এ বছর কাবিটা কর্মসূচিতে ১৭টি প্রকল্পের জন্য ৮৬ লাখ ৭ হাজার ৮১৫ টাকা ও টিআর কর্মসূচির ১৭টি প্রকল্পের জন্য ৮৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৭৫ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ছয়টি ইউনিয়নে ৭৩টি প্রকল্পের মধ্যে ১৪টি প্রকল্পে কোনো কাজ না করেই উত্তোলন করা হয়েছে ৩৬ লাখ টাকারও বেশি। বাকি প্রকল্পগুলোর বেশির ভাগ আংশিক কাজ করে তোলা হয়েছে অর্ধেক টাকা।

খানমরিচ ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, কাবিটার তিনটি প্রকল্পে ১৫ লাখ টাকার বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়। কোথাও একেবারেই কাজ হয়নি। কিছু জায়গায় আংশিক কাজ হয়েছে। এখানে টিআর প্রকল্পের আটটির মধ্যে ছয়টিতে কোনো কাজই হয়নি। অথচ বরাদ্দকৃত অর্থের অর্ধেক তুলে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পুরোনো রাস্তার ওপর নতুন প্রকল্প দেখিয়ে টাকা তোলা হয়েছে। 

মন্ডতোষ ইউনিয়নে কাবিটার দুটি প্রকল্পে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং টিআর কর্মসূচির দুটি প্রকল্পের ৪ লাখ ৬৭ হাজার টাকার কাজে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। একই অবস্থা দিলপাশার, পার-ভাঙ্গুড়া ও সদর ইউনিয়নেও। বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিতে (পিআইসি) অনেক ইউপি সদস্যের নাম থাকলেও তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন। কেউ কেউ বলছেন, চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তে নাম দেওয়া হয়েছে। তারা কোনো কাজ পাননি। 

পিআইসির সদস্য আবু সাঈদ বলেন, আমি কোনো কাজ করিনি। গোলাম কিবরিয়া বলেন, চেয়ারম্যান পিআইসিতে নাম দিয়েছেন। আমি কিছু জানি না।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অষ্টমনিষা ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, কাজের আগেই বিল তোলা হয়। এর সত্যতা যাচাইয়ে কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি সাক্ষাতে কথা বলবেন বলে জানান। কমিটির বিষয়ে প্রশ্ন করেও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। 

এ বিষয়ে কথা বলতে প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস হোসেনের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হয়। কিন্তু সাড়া মেলেনি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প বন প রকল প র কর মকর ত ক জ হয়ন ক জ হয় র জন য বর দ দ প আইস উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টিস্নাত রমনায় সবুজের উল্লাস

রমনা উদ্যানের গাছগুলো বৃষ্টিতে ভিজছে, ভিজছে মাটি ও মাটির ওপরের ঘাসগুলো। বর্ষায় রমনার রূপ হয় দেখার মতো। চারদিকে কেবল সবুজ আর সবুজ। বসন্তের মতো ফুল নেই তো কী হয়েছে? আছে শ্যামল রূপ, আছে অপার স্নিগ্ধতা। বুকভরে ধুলাহীন নিশ্বাস নেওয়ার অবকাশ, প্রকৃতির উদার আমন্ত্রণ।

‘পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে’ ঢাকার রমনা পার্কের গাছের পাতাগুলো এখন আরও সবুজ। টলটলে জলের নয়নাভিরাম ঝিলটা টইটম্বুর। ধুলাময়লাহীন পায়ে চলার পথ। আর গাছের পাতার ফাঁকে রয়েছে অজস্র ফুল। কোনোটা লাল, কোনোটা বেগুনি আবার কোনোটা সাদা। বৃষ্টির মধুর আশকারা পেয়ে রমনা পার্কে এখন সবুজের উল্লাস।

এই পার্কটিকে ঢাকার ফুসফুস বলা হয়। এর যথেষ্ট কারণ আছে অবশ্য। এ রকম প্রগাঢ় নিরেট সবুজ এ শহরে কমই আছে। রমনা তাই ঢাকার জনজীবনের স্পন্দন। এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্প্রতি ‘বৃষ্টি নেশাভরা’ এক বিকেলে অরুণোদয় ফটক দিয়ে রমনা পার্কে প্রবেশ করলাম। অনেকে শরীরচর্চায় ব্যস্ত। কেউ দল বেঁধে করছেন, কেউ একাকী। কোনো দল ব্যায়াম করে ভোরে, কেউ আবার বিকেলে বা সন্ধ্যায়। আবার অনেকে আছেন দুই বেলাই হাঁটাহাঁটি করেন। হাঁটা সেরে কেউ কেউ লেকের পাশে এসে দুদণ্ড জিরিয়ে নেন। লেকে চলছিল বোট।

বর্ষার ফুলের উৎসব

বর্ষা এলেই রমনা পার্ক যেন রঙের নতুন ভাষা শেখে। আমাদের ঋতুচক্র অনুযায়ী, বসন্ত ও গ্রীষ্মকালেই এ দেশে ফোটে অধিকাংশ ফুল। তবে বর্ষারও নিজস্ব কিছু ফুল আছে, আর গ্রীষ্মের কিছু ফুল টিকে থাকে বর্ষা পর্যন্ত। সেদিন রমনায় গিয়ে এমনই কিছু ফুল চোখে পড়ল—বৃষ্টিভেজা পাতার ফাঁকে তাদের রং যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। মনে হলো, প্রকৃতির এই নিঃশব্দ উৎসবেও কত কথা লুকিয়ে থাকে!

রমনার গোলাপবিথি সেদিন দর্শনার্থীদের সবচেয়ে বেশি মনোযোগ কাড়ছিল। সারি সারি ঝোপে ফুটে আছে হরেক রঙের গোলাপ—লাল, সাদা, হলুদ, কমলা, গাঢ় গোলাপি। বর্ষার ভেজায় যেন আরও সতেজ, আরও তাজা হয়ে উঠেছে প্রতিটি পাপড়ি। নরম আলো আর বৃষ্টিজলে ভেজা ফুলগুলোর সৌন্দর্য মোহিত করেছে পথচলার মানুষকে। কেউ থেমে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন, কেউ ভিডিও করছেন—মুঠোফোনে বন্দী হচ্ছে বর্ষার রঙিন রমনা।

এটি কেবল একটি পার্ক নয়, বরং নাগরিক জীবনের পরম আনন্দ-আশ্রয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ