Samakal:
2025-11-03@13:46:00 GMT

কাজ হয়নি কিছুই টাকা তোলা শেষ

Published: 30th, April 2025 GMT

কাজ হয়নি কিছুই টাকা তোলা শেষ

ভাঙ্গুড়া উপজেলার অষ্টমনিষা ইউনিয়নের রূপসী ওয়াপদা বাঁধ থেকে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা। এখানে কোনো কাজই হয়নি। অথচ তুলে নেওয়া হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। একই ইউনিয়নের বড় বিশাকোল ও লামকান জামে মসজিদসংলগ্ন রাস্তায় আংশিক কাজ করে অর্ধেক টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। বাঁশের সাঁকো নির্মাণ প্রকল্পেও কোনো কাজ হয়নি বলে দাবি স্থানীয়দের।

কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল লতিফের সঙ্গে। তিনি জানান, রাস্তায় এক টুকরো মাটিও পড়েনি, বাঁশের সাঁকোর নামগন্ধ নেই। অনেক প্রকল্পে কাজ হয়নি। অথচ বিল তোলা হয়েছে। একই অভিযোগ করেন মহির উদ্দিন, মঈন উদ্দিন, তাইজাল শেখসহ উপস্থিত অনেকে। 

উপজেলা ঘুরে অষ্টমনিষা ইউনিয়নের প্রকল্পের মতো এমন কিছু প্রকল্প পাওয়া গেছে, যেগুলোর কাজ কাগজে-কলমে সমাপ্ত। এসব প্রকল্পের জন্য বরাদ্দের টাকাও তুলে নেওয়া হয়েছে। অথচ বাস্তবে কোনো কাজই শুরু হয়নি। অনিয়মে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস হোসেন এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের পিআইসি ও ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে। 

উপজেলায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর-কাবিখা) কর্মসূচির আওতায় মোট বরাদ্দ ছিল ১ কোটি ৭০ লাখ টাকার বেশি। এ বছর কাবিটা কর্মসূচিতে ১৭টি প্রকল্পের জন্য ৮৬ লাখ ৭ হাজার ৮১৫ টাকা ও টিআর কর্মসূচির ১৭টি প্রকল্পের জন্য ৮৪ লাখ ৭৪ হাজার ৯৭৫ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ছয়টি ইউনিয়নে ৭৩টি প্রকল্পের মধ্যে ১৪টি প্রকল্পে কোনো কাজ না করেই উত্তোলন করা হয়েছে ৩৬ লাখ টাকারও বেশি। বাকি প্রকল্পগুলোর বেশির ভাগ আংশিক কাজ করে তোলা হয়েছে অর্ধেক টাকা।

খানমরিচ ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, কাবিটার তিনটি প্রকল্পে ১৫ লাখ টাকার বেশি বরাদ্দ দেওয়া হয়। কোথাও একেবারেই কাজ হয়নি। কিছু জায়গায় আংশিক কাজ হয়েছে। এখানে টিআর প্রকল্পের আটটির মধ্যে ছয়টিতে কোনো কাজই হয়নি। অথচ বরাদ্দকৃত অর্থের অর্ধেক তুলে নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া পুরোনো রাস্তার ওপর নতুন প্রকল্প দেখিয়ে টাকা তোলা হয়েছে। 

মন্ডতোষ ইউনিয়নে কাবিটার দুটি প্রকল্পে ৪ লাখ ৭৫ হাজার টাকা এবং টিআর কর্মসূচির দুটি প্রকল্পের ৪ লাখ ৬৭ হাজার টাকার কাজে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। একই অবস্থা দিলপাশার, পার-ভাঙ্গুড়া ও সদর ইউনিয়নেও। বেশ কিছু প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটিতে (পিআইসি) অনেক ইউপি সদস্যের নাম থাকলেও তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন। কেউ কেউ বলছেন, চেয়ারম্যানের সিদ্ধান্তে নাম দেওয়া হয়েছে। তারা কোনো কাজ পাননি। 

পিআইসির সদস্য আবু সাঈদ বলেন, আমি কোনো কাজ করিনি। গোলাম কিবরিয়া বলেন, চেয়ারম্যান পিআইসিতে নাম দিয়েছেন। আমি কিছু জানি না।

অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে অষ্টমনিষা ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, কাজের আগেই বিল তোলা হয়। এর সত্যতা যাচাইয়ে কাগজপত্র দেখতে চাইলে তিনি সাক্ষাতে কথা বলবেন বলে জানান। কমিটির বিষয়ে প্রশ্ন করেও সদুত্তর পাওয়া যায়নি। 

এ বিষয়ে কথা বলতে প্রকল্পের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমুন নাহার, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ফেরদৌস হোসেনের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হয়। কিন্তু সাড়া মেলেনি। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: প বন প রকল প র কর মকর ত ক জ হয়ন ক জ হয় র জন য বর দ দ প আইস উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ‘নয়া মানুষ’

নদীমাতৃক বাংলাদেশের প্রান্তিক চরের মানুষের জীবনযাপন, মানবিকতা ও ধর্মীয় সহাবস্থানের চিত্র নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’। প্রশংসিত এই চলচ্চিত্র জায়গা করে নিয়েছে ‘কাশ্মীর ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল’-এর পঞ্চম আসরে। ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগরে আজ থেকে শুরু হওয়া এই উৎসবে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের এই আলোচিত চলচ্চিত্রটি। 

৭ দিনব্যাপী এ উৎসবে মিসর, জার্মানি, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান ও ভারতের নির্বাচিত চলচ্চিত্রের সঙ্গে প্রদর্শিত হবে ‘নয়া মানুষ’, যা বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নিচ্ছে উৎসবে। 

আরো পড়ুন:

দুই গায়িকার পাল্টাপাল্টি অভিযোগ, দ্বন্দ্ব চরমে

সমালোচনা নিয়ে মুখ খুললেন ভাবনা

২০২৪ সালের ৬ ডিসেম্বর মুক্তি পাওয়া ‘নয়া মানুষ’ দর্শক ও সমালোচকদের কাছ থেকে প্রশংসা কুড়ায়। আ. মা. ম. হাসানুজ্জমানের লেখা ‘বেদনার বালুচরে’ উপন্যাস অবলম্বনে চলচ্চিত্রটির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেন মাসুম রেজা। 

চলচ্চিত্রটিতে অভিনয় করেছেন রওনক হাসান, মৌসুমী হামিদ, আশীষ খন্দকার, ঝুনা চৌধুরী, শিখা কর্মকার, নিলুফার ওয়াহিদ, বদরুদ্দোজা, মাহিন রহমান, নাজমুল হোসেন, স্মরণ সাহা, সানজানা মেহরান ও শিশুশিল্পী ঊষশী। 

উৎসবে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে গল্পকার ও অভিনেতা আ. মা. ম. হাসানুজ্জমান বলেন, “আমি যখন গল্পটি লিখি, তখন এত কিছু ভাবিনি। কিন্তু চলচ্চিত্রটি দর্শক দেখার পর যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তা সত্যিই অকল্পনীয়। ‘নয়া মানুষ’ ধর্মীয় উন্মাদনার বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, শান্তির বার্তা দিচ্ছে, ধর্মের প্রকৃত দর্শন তুলে ধরছে—এটাই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।” 

চলচ্চিত্রটির নির্মাতা সোহেল রানা বয়াতি বলেন, “আমার প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘নয়া মানুষ’ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক উৎসবে অংশ নিচ্ছে—এটা আমার জন্য গর্বের বিষয়। কাশ্মীর ফেস্টিভ্যালে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে ‘নয়া মানুষ’ অংশ নিচ্ছে, যা দেশের চলচ্চিত্রের জন্যও একটি বড় সাফল্য।” 

চাঁদপুরের দুর্গম কানুদীর চরে চিত্রগ্রহণ করা হয়েছে চলচ্চিত্রটির। চিত্রগ্রহণ পরিচালনা করেছেন কমল চন্দ্র দাস। সিনেমাটির সংগীতে কণ্ঠ দিয়েছেন বাউল শফি মণ্ডল, চন্দনা মজুমদার, বেলাল খান, অনিমেষ রয়, মাসা ইসলাম ও খাইরুল ওয়াসী। সংগীত পরিচালনা করেছেন ইমন চৌধুরী, মুশফিক লিটু ও শোভন রয়। 

মানবতার বার্তা, ধর্মীয় সহনশীলতা ও জীবনবোধের অনন্য মেলবন্ধন নিয়ে ‘নয়া মানুষ’ এবার বাংলাদেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে পৌঁছে দিচ্ছে শান্তি ও সহমর্মিতার বার্তা।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ