Samakal:
2025-06-15@21:02:40 GMT

বাড়ি ফেরা যে কত রকমের হতে পারে

Published: 17th, February 2025 GMT

বাড়ি ফেরা যে কত রকমের হতে পারে

‘বিভূতিভূষণের চাঁদের পাহাড় পড়েছিস?’/-‘না স্যার।’ কথাসাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলনের ‘রহস্যময় জঙ্গলবাড়ি’ উপন্যাসের শুরুর দিকে কিশোর অর্ণব ও তার শিক্ষকের এই কথোপকথন। ‘চাঁদের পাহাড়ে’ বাঙালি তরুণের পূর্ব আফ্রিকায় চাকরি, সেখান থেকে হীরার খনির সন্ধানে বের হওয়া। একের পর এক ভয়ংকর প্রাণীর সঙ্গে লড়াই। সঙ্গীর মৃত্যু। আগ্নেয়গিরি ডিঙানো। অ্যাডভেঞ্চার আর টানটান উত্তেজনায় ভরপুর এই উপন্যাস। শেষে শঙ্কর জাহাজে বাড়ি ফেরে। এই একরকম বাড়ি ফেরা আমরা দেখি।

ইমদাদুল হক মিলনের উপন্যাসে অর্ণবের বাড়ি ফেরাটা অন্যরকম। সে অপহরণকারীদের ফাঁদে পড়ে। তাকে নিয়ে যাওয়া হয় অজ্ঞাত স্থানে। সেখান থেকে এক সময় সে পালিয়ে আসে। তার এই বাড়ি ফেরাটা নিশ্চয়ই ছিল আনন্দের। কিন্তু তার পকেটে ছিল না টাকা। ফলে তাকে ফিরতে হয় অনেক কষ্টে। চালককে অনুরোধ করে গাড়িতে চড়ে আবার হেঁটে। বাড়ি ফেরার পর অবশ্য অন্যরা আনন্দিত হয়।
তার এই বাড়ি ফেরার কথা পড়তে গিয়ে আমার মনে পড়ে গেল মাইকেল চাকমার কথা। তিনিও বাড়ি ফিরেছেন গত বছর। চোখ বেঁধে চট্টগ্রামের একটি পাহাড়ের ওপর তাঁকে ফেলে রাখা হয়। সেখানে চোখ খুলে তিনি কিংকর্তব্যবিমূঢ়। এক মোটরসাইকেল চালককে অনুরোধ করে বাসস্ট্যান্ডে যান। বাসে উঠে চট্টগ্রাম শহরে আসেন। টাকা না থাকায় পদে পদে তাঁকে অপমান-অপদস্থ করা হয়েছে। মানুষর কাছে হাত পাততে হয়েছে। এই এক বাড়ি ফেরা দেখলাম আমরা বাস্তবে।

আমাদের মাথায় রাখতে হবে ‘রহস্যময় জঙ্গলবাড়ি’ কিশোর উপন্যাস। ছোট ছোট বাক্য, সাবলীল ভাষা, সহজ-সরল উপস্থাপনা– এর বিশেষ গুণ। এই উপন্যাসে যেমন আছে অ্যাডভেঞ্চার, তেমনি আছে রূপকথা। অর্ণব অপহরণের পর যেখানে ছিল, সেটি পুরোনো একটা বাড়ি। এটাই মূলত জঙ্গলবাড়ি। আর এর রহস্য হচ্ছে রাজকন্যা স্বর্ণলতা। আছে তার দেহরক্ষী রুস্তম। অর্ণবকে মুক্ত করতে সহায়তা করে এরা দু’জন।
উপন্যাসের শুরু এক অদ্ভূত স্বপ্ন দিয়ে। পরপর তিন রাত একই স্বপ্ন। স্বপ্নে সে রহস্যময় জঙ্গলবাড়িটা দেখে। সেখানে দু’জন মানুষ। বাস্তবে সে এমন বাড়ি কখনও দেখেনি। এই স্বপ্ন দেখার কিছুদিন পর তাকে অপহরণ করা হয়। অপহরণকারীরা তাকে সেই জঙ্গলবাড়িতে নিয়ে আসে। এই বাড়ির বর্ণনাটা চিত্তাকর্ষক। একদিন ঘুম ভেঙে অর্ণব দেখে ‘বাইরে বোধহয় প্রখর জ্যোৎস্না ফুটেছে। দরজার ফুটো-ফাটা দিয়ে চাঁদের আলো ঢুকেছে।’ এমন চাঁদের আলোয় কি কেউ ভয় পায়? তার ভয়ও কেটে যায়। সে বাইরে বেরিয়ে পড়ে। এভাবে সে মুক্ত হয়।
বইটি ইতোমধ্যে পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। প্রথম ১০ দিনে দ্বিতীয় মুদ্রণ ছেপেছে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান অনন্যা। ১১২ পৃষ্ঠার বইয়ের দাম ৩০০ টাকা। প্রচ্ছদ এঁকেছেন ধ্রুব এষ। প্রচ্ছদেও রহস্য ধরা পড়েছে।

হানযালা হান, কবি ও সাংবাদিক

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: বইম ল উপন য স রহস য

এছাড়াও পড়ুন:

মুক্তিপণ না পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিকে হত্যা

দক্ষিণ আফ্রিকার কুইন্স টাউনে মুক্তিপণ না পেয়ে মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন ইকবাল নামে এক প্রবাসী বাংলাদেশিকে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।

বৃহস্পতিবার (১২ জুন) কুইন্সটাউনের একটি জঙ্গল থেকে আলমগীর হোসেন ইকবালের মরদেহ পাওয়া যায়।

নিহত আলমগীর হোসেন ইকবালের বাড়ি নারায়ণগঞ্জ সদরের আলীরটেক এলাকায়।

আরো পড়ুন:

বগুড়ায় যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ

মামাত বোনকে ধর্ষণ-হত্যা করে নিখোঁজের গল্প সাজায় নয়ন: পুলিশ

স্বজনেরা জানান, গত ২ জুন অপহরণকারীরা নিহতের পরিবারের কাছে প্রথমে ৫ কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। পরে এক কোটি টাকা দাবি করে অপহরণকারীরা। টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে হত্যা করা হয়।

স্থানীয়রা জানান, আলমগীর হোসেন ইকবাল দীর্ঘদিন ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাস করে আসছিল। সেখানে তার নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ইকবালের পরিবারে মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে। তারা বর্তমানে নারায়ণগঞ্জ শহরে বসবাস করে আসছিলেন।

নিহত আলমগীর হোসেন ইকবালের ভগ্নীপতি শরিফুর রহমান ঢালী বলেন, ‘‘গত ২ জুন রাত ১০টার দিকে নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের সামনে গাড়ি থেকে মালামাল আনলোড করার সময় ৪ জন অপহরণকারী ইকবালকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। দুদিন পরে ইকবালের স্ত্রীর ফোন নাম্বারে কল করে সাউথ আফ্রিকান ৫০ লাখ (বাংলাদেশি টাকায় ৫ কোটি টাকা) দাবি করে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘একাধিকবার কথা বলার পরিবার এত টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে অপহরণকারীরা সর্বশেষ এক কোটি টাকা দাবি করে। কিন্তু, পরিবার এই অর্থ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় অপহরণকারীরা তাকে হত্যা করে। ১২ জুন একটি জঙ্গল থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আগামী ১৫ জুন রাতে কাতার এয়ারওয়েজে নিহত আলমগীর হোসেন ইকবালের মরদেহ দেশে আসবে।’’

ঢাকা/অনিক/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • র‌্যাব পরিচয়ে অপহরণ: চক্রের মূল হোতা গ্রেপ্তার
  • মুক্তিপণ না পেয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশিকে হত্যা