রাজধানীর উত্তরায় ভাড়া বাসায় চীনের নাগরিক ওয়াং বু (৩৭) হত্যার ঘটনায় দু’জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। রাজধানী থেকে তাদের হেফাজতে নিয়ে গতকাল শুক্রবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের নাম-পরিচয় নিশ্চিত করা হয়নি।

গত বুধবার উত্তরা ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৬ নম্বর রোডে বাসায় ওয়াং বু হত্যার শিকার হন। বৃহস্পতিবার ওই বাসা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, চীনের দুই নাগরিক মাইক্রোবাসে বাসার সামনে নামেন। কিছুক্ষণ পর তারা বাসা থেকে ওই গাড়িতে করেই বেরিয়ে যান।

সূত্র জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ঘটনাস্থলে আসা-যাওয়া করা মাইক্রোবাসের চালক ও সহকারীকে হেফাজতে নিয়েছে উত্তরা পশ্চিম থানা পুলিশ। উত্তরা জোনের সহকারী কমিশনার সাদ্দাম হোসেন বলেন, ধারণা করা হচ্ছে– ওই ব্যক্তিকে হত্যার পর তারা দেশে (চীন) ফিরে গেছেন। তবে তারাই যে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন, তা এখনও নিশ্চিত নয়। ওই ঘটনায় চালক ও সহকারী জড়িত কিনা, তা জানতে তদন্ত চলছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

পুলিশ কর্মকর্তা জানান, নিহত চীনের নাগরিকের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন।

ঢাকার পশ্চিম থানার ওসি হাফিজুর রহমান বলেন, বাসায় ওয়াং বুকে হত্যার ঘটনায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। শনিবার (আজ) সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: চ ন ন গর ক

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ