বছর ঘুরে আবারো এলো পবিত্র মাহে রমজান। প্রতি বছরের মতো পবিত্র রমজানের প্রথম দিনেই জমে উঠেছে কুমিল্লার ইফতার বাজার। ইফতার দোকানে ছিল হরেক রকমের ইফতারির আইটেমে সমাহার। কুমিল্লা নগরীতে প্রথমদিনে ইফতারের বাজার জমজমাট ছিল।
রবিবার (২ মার্চ) দুপুরের পরপরই শহরের অভিজাত রেস্তোরাঁ থেকে ফুটপাত ও অলিগলি সর্বত্রই ইফতারের পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা।
বিশেষ করে শহরের নিউমার্কেট, রামঘাটস্থ, পদুয়া বাজার (বিশ্বরোড), চকবাজার, রানীবাজার, রাজগঞ্জ বাজারে ইফতার ব্যবসায়ীদের হাঁকডাক ছিল বেশি। এসব এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ইফতারের দোকানে ক্রেতারা ভিড় করছেন। বেশিরভাগ মানুষই পেয়াজু, বেগুনি, ছোলা ও জিলাপি কিনছেন। হুড়োহুড়ি করে নগরীর বধূয়া ফুড ভিলেজের থেকে হালিম কিনছেন অনেকে।
আরো পড়ুন:
স্বাগতম মাহে রমজান!
রাজধানীর মসজিদে মসজিদে তারাবির জামাতে মুসল্লিদের ঢল
হালিমের পাশাপাশি ক্রেতাদের পছন্দের হায়দ্রাবাদী বিরিয়ানি, মেজবানির মাংস, শাম্মি কাবাব, বাট্টি পরোটা, চিকেন কাটলেট, জিরা পানি, দই-জিরা পানি, জুস, হালিম আখনি, ল্যাম্ব শর্মা, চিকেন শর্মা, মাটন লেগরোস্টসহ নানা মুখরোচক ইফতার সামগ্রী বিক্রি হয়েছে।
নগরীর বধূয়া ফুড ভিলেজে হালিম কিনতে আসা শাসনগাছা এলাকার বাসিন্দা আলউদ্দিন জানান, এখানে প্রতি বছর বিভিন্ন ধরনের ইফতার পাওয়া যায়। বিশেষ করে তারা আলাদা করে বিফ, চিকেন ও মাটন হালিম তৈরি করে। অবস্থা এমন হয়েছে, এখন হালিম ছাড়া ইফতার, এটা কল্পনাই করা যায় না।
বধূয়া ফুড ভিলেজে ব্যবস্থাপক ফুয়াদ হোসেন জানান, প্রতি রমজানে তারা দৈনিক একশত আইটেম করেন। এবার রমজান উপলক্ষে ইফতার মেলা আয়োজন করছেন। তারা সব সময় ভিন্ন ধরনের আয়োজন করেন। এখানে চিকেন, বিফ ও মাটন তিনটাই আছে। তিনটার দামও এক। মানভেদে প্রতি কেজি ৮২০ টাকা।
এদিকে, অলিগলির ভাসমান দোকানে জমজমাট ইফতার বেচাকেনা হয়েছে। তুলনামূলক দাম কমের জন্য এসব দোকান থেকে মানুষ ইফতার কিনতে ভিড় করেন। নগরীর নিউমার্কেট এলাকা ভাসামান একটি দোকানে ইফতার কিনতে এসেছেন চর্থা এলাকার বাসিন্দা মাইনুল হাসান৷ তিনি জানান, প্রতি বছর এসব দোকান থেকে ইফতার কিনে নিয়ে যান। এখানে তুলনামূলক কম দামের পাওয়া যায়৷ গত বছরের চেয়ে দাম এবার একটু বেশি। ৫ টাকার নিচে কোনো পদ নেই।
এদিকে রানী বাজারে ভাসমান দোকানে বিক্রি হতে দেখা গেছে হালিম, জিলাপি, জালি কাবাব, নানরুটি, সামী কাবাব, চিকেন চাপ, শিক কাবাবসহ বেশ কয়েকটি ইফতার সামগ্রী। দোকানের বাইরে বিকেল থেকে মানুষকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তারা বলছেন, সন্ধ্যার কিছু সময় আগে সবকিছু গরম পাওয়া যায় তাই সেসময় ভিড় জমে। রোজায় অন্য সময়ের চেয়ে বেশি ভিড় হয়।
রানীবাজারে ইফতারসামগ্রীর পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতা আবদুল করিম। তিনি জানান, তারা প্রতি বছরই ইফতারি বিক্রি করেন। মানুষ আসরের নামাজ পড়ে ইফতারি কিনতে আসতে শুরু করেন। ইফতারের এক ঘণ্টা আগে থেকে ভিড় জমতে শুরু করে। আর আধা ঘণ্টা আগে সবচেয়ে বেশি ভিড় হয়। সবচেয়ে বেশি বিক্রির তালিকায় পিঁয়াজু, ছোলা, মুড়ি আর বেগুনি রয়েছে। জিলাপিও কেনে বেশিরভাগ মানুষ।
ঢাকা/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রমজ ন ইফত র র ইফত র ইফত র র ইফত র ব রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
হাবিব ও সজীবের জল্লারপাড় লেকে জমজমাট মাদক বানিজ্য
নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ১৭ নং ওয়ার্ডের জল্লারপাড় এলাকায় হাবিব ওরফে পিচ্চি হাবিব (মাদকসহ ৫/৭টি মামলার আসামি), একটা খুনি পরিবার থেকে বেড়ে ওঠা ভয়ংকর সন্ত্রাসী, মাদক ব্যবসায়ী ও কিশোর গাং লিডার।
বাবা মৃত কমল মিয়া এক সময় পুলিশের সোর্স ছিলেন যে কিনা খুন হয় নিজ সৎ ছেলের হাতে। হাবিবের বড় ভাই মানিক এলাকার জনি নামের এক ছেলেকে খুন করে যাবজ্জীবন সাজায় জেল খাটছে।
হাবিব ৫ই আগস্ট এর আগে আজমীর ওসমানেরক্যাডার বাহিনীর সক্রিয় সদস্য ছিলো। গণঅভ্যূত্থানের আগে এলাকায় বড় করে ১৫ আগস্ট পালন ও নাসিম ওসমানের মৃত্যুবার্ষিকী পালন এবং ওসমান পরিবারের পালিত ক্যাডারদের দাওয়াত করে মহড়া দেয়ার ছবি ও বিভিন্ন মিছিল মিটিং এর ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল।
ফ্যাসিস্ট সরকার পতনের পর সে যোগ দেয় বিএনপিতে। এলাকার বিএনপি'র বিভিন্ন নেতা ও দেওভোগের অনেক নেতার দেখা মিলে হাবিবের অফিসে ও আড্ডায়। অনেকেই আসে হোন্ডার বহর নিয়ে যার ফলে এলাকার মানুষ ভয়ে মুখ খুলেনা। মানুষকে আতঙ্কে রাখতে হাবিবকে দেখা যায় নিজে বড় বড় ছুড়ি নিয়ে মহড়া দিতে।
হাবিবকে শেন্টার দিচ্ছে বিএনপি'র ক্যাডার গাল কাটা জাকিরের ছোট ভাই ডাকাত সজিব। ডিস বাবুর নির্দেশে ডাকাতি করতে যাওয়া সজিব ডাকাতি মামলায় ৯বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি, হাইকোর্ট থেকে আপিল করে জামিনে আছে। সদর থানায় ৪/৫ টির বেশি মাদকসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে। হাবিব ও সজীব নারায়ণগঞ্জে আজমির ওসমানের ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে পরিচিত।
৫ আগস্টের পর সন্ত্রাসী ও তাদের গডফাদাররা এলাকা ছাড়লেও হাবিব ও সজীব এলাকায় আছে বহাল তবিয়তে। এর কারণ হাবিবের মাদক ব্যবসার অডেল টাকা ও তাদের দুজনের ক্ষমতা। মাদকের টাকায় হাবিব করেছে এলাকায় আলিশান দুইতালা বাড়ি। হাবিব ও সজীবের আয়ের উৎস হল তারা পাইকারি হিরোইন ইয়াবা ও গাজা ব্যবসায়ী।
এক নং বাবুরাইল, ২ নং বাবুরাইল, জিমখানা, পাইকপাড়া, নলুয়াপাড়া, ঋষিপাড়া সব জায়গায় হাবিব ও সজীবের মাদক বিক্রি হয়। হাবিবের দখলকৃত সবচেয়ে বড় স্পট হলো জিমখানা পানির টাংকি যা ফাইম ও সায়েম দেখে। এসব স্পটে দৈনিক লাখ লাখ টাকার নেশা বিক্রি হয়।
বিভিন্ন সুত্রে জানা গেছে, এখান থেকে মাসোহারা পৌঁছে যায় কিছু অসাধু পুলিশ কর্মকর্তার পকেটে সেই সাথে নামধারী সাংবাদিকদের কাছে মাসোহারা পৌছে। জনশ্রুতি রয়েছে, এসব অসাধু পুলিশ কর্মকর্তা ও কথিত সাংবাদিকদের দাপটে হাবিব ধরা ছোঁয়ার বাইরে।
হাবিবের প্রধান সেলসম্যান মিলন ও মাসুম ওরা একাধিকবার ডিবির কাছে গ্রেফতার হয় পরে বিশাল অংকের টাকা দিয়ে ছাড়া পায়। ওদের দুজনকে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করলে বেরিয়ে আসবে বিভিন্ন তথ্য।
এলাকায় একাধিকবার অভিযান পরিচালনা হলেও হাবিবকে ধরতে পারছে না প্রশাসন এর কারণ পুরো এলাকা বিভিন্ন সিসি ক্যামেরা দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা জল্লারপাড় মসজিদের সামনে বিভিন্ন দোকানদার তাকে ফোন করে জানিয়ে দেয় এলাকায় পুলিশ আসছে, প্রশাসন ঢোকার আগেই হাবিব সটকে পড়ে। এলাকা ঘনবসতি হওয়ায় লুকিয়ে যায় অন্য কারো ঘরে এজন্য প্রশাসন ধরতে না পড়ে চলে আসে।
এলাকার সবাই রাতে যখন ঘুমায় তখন তার বিচরণ দেখা যায় বিভিন্ন অলিতে গলিতে। গভীর রাতে সঙ্গী সহ অনেক পাওয়ারের টর্চ লাইট ও দেশি অস্ত্রশস্ত্র সাথে থাকে ডাকাত সজিব ও কিশোর গ্যাং এর সদস্যরা। হাবিব ও সজীবের বিরুদ্ধে রয়েছে অন্যের জায়গা দখলে নেওয়ার অভিযোগও।
একাধিক বাড়ির মালিক তাদের বাড়ির কাজ করতে পারছে না তাদের দুজনের জন্য। চাঁদা না দিলে কাজ বন্ধ। চাঁদা দিয়ে মীমাংসা করলেই বাড়ির কাজ করতে পারছেন। অন্যের কেনা বাড়িতে সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে দিচ্ছে তারা দুজন জায়গার দাবি করে হাতিয়ে নিচ্ছে লক্ষ লক্ষ টাকা।
এলাকাবাসী এখন হাবিব ও সজীবের হাতে জিম্মি। সবাই এর থেকে মুক্তি চায়। হাবিব এতটাই ধুরন্দর যে প্রশাসনে হাত থেকে বাঁচার জন্য ৫ ই আগস্ট এর পর এলাকায় ওয়াইফাই ব্যবসা দিয়েছে, তার সেলসম্যান মাসুম এই ব্যবসার ম্যানেজার সে সম্পূর্ণ ব্যবসা দেখাশোনা করছে। মাসুমেরও বিভিন্ন ছবি আছে আজমির ওসমানের মিছিলে ও ১৫ ই আগস্টের খিচুড়ির বিতরনের অনুষ্ঠানে।
ছাত্র আন্দোলনের সময় হাবিব, সজীব ও মাসুম তাদের সবারই ওসমান পরিবারের পক্ষে ছিল নজর কাড়া ভূমিকা। মোট কথা এলাকাবাসী এখন সম্পূর্ণ জিম্মি হাবিব ও সজীবের কাছে।
নারায়ণগঞ্জের সব মাদকের স্পটে অভিযান হলেও জল্লারপাড়ায় হাবিবের মাদকের স্পটে কেন অভিযান হচ্ছে না এ নিয়ে এলাকাবাসীর মনে বিভিন্ন প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। এলাকাবাসী দ্রুত প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছে তারা হাবিব ও সজীবের জিম্মি থেকে মুক্তি হতে চায়।