নিজের কর্মক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠো: সিলভানা কাদের
Published: 7th, March 2025 GMT
দেশের স্বাস্থ্যখাতে পরিচিত এক উদ্যোগের নাম ‘প্রাভা হেলথ’। বিন্দু বিন্দু করে প্রাভা হেলথ গড়ে তুলেছেন সিলভানা কাদের সিনহা। তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠান ও ব্র্যান্ড হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে প্রাভা।
এই সাফল্য সম্পর্কে সিলভানা বলেন, ‘কাজের লক্ষ্য ও ফলাফলই আমার চালিকাশক্তি। আর মূল ভিত্তি হলো সহমর্মিতা ও সততা। যত বাধাই আসুক, আমি তা পেরিয়ে যাই দৃঢ়তার সঙ্গে, সত্যিকারের পরিবর্তনের সংকল্প নিয়ে। আমার এই যাত্রার মূল উদ্দেশ্য হলো- সীমা অতিক্রম করা, পুরনো ধারণা ভেঙে দেওয়া, অন্যের ক্ষমতায়ন এবং এমন এক ভবিষ্যতের সূচনা যেখানে প্রাধান্য পায় উদ্ভাবন ও অন্তর্ভুক্তি।’
দেশে স্বাস্থ্যখাতের অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানে নেতৃস্থানীয় পদে রয়েছেন পুরুষ। এই খাতের প্রতিষ্ঠানে নারী নেতৃত্ব ১৫ শতাংশেরও কম বলে জানান সিলভানা। তিনি বলেন, ‘এমন এক পরিস্থিতিতে নারীরা যেসব বাধার মুখোমুখি হন, সেগুলো সামনে এনেছি, সেগুলো নিয়ে কথা বলছি।’ দেশে স্বাস্থ্যখাতে পরিবর্তন আনছে প্রাভা এবং এর নেতৃত্ব দিতে পারা গর্বের উল্লেখ করে সিলভানা বলেন, ‘স্বাস্থ্যসেবার সংজ্ঞা আমরা পাল্টে দিচ্ছি। এ কারণে আমাদের ওপর ভরসা রাখছেন প্রায় ১০ লাখ রোগী।’
প্রাভা হেলথের প্রতিষ্ঠাতা বলেন, ‘নেতৃত্ব দিতে প্রয়োজন দূরদৃষ্টি। ক্ষমতায়নের পেছনে থাকতে হবে যথাযথ উদ্দেশ্য এবং অন্যকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে নিজের কর্মের মাধ্যমে। সত্যিকারের নেতৃত্ব মানুষের সুপ্ত সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলে, বাধা পেরিয়ে পরিবর্তনের সূচনা করে।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে, ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেড ‘এক্সেলারেট অ্যাকশন- এম্পাওয়ার্ড ওমেন, এম্পাওয়ারিং দ্যা ফিউচার’ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে স্মরণ করছে সিলভানা কাদের সিনহাকে। তার পরিচালিত প্রাভা হেলথ অন্যতম হেলথকেয়ার পার্টনার ইউনিলিভারের।
স্বাস্থ্যখাতে আধুনিক এক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখেন সিলভানা। তিনি বলেন, ‘নারী নেতৃত্বের পথ ধরেই আরও নারী নেতৃত্বের জন্ম হবে। প্রাভার নেতৃত্ব দেওয়ার প্রায় পুরোটা আমাদের নির্বাহী পরিষদের অন্তত ৫০ শতাংশই ছিলেন নারী। আশা করি ভবিষ্যতেও আমরা এ ধারা অব্যাহত রাখতে পারব।’ সিলভানা আরও বলেন, ‘নারীরা শুধু পদ দখল করবেন না, বরং সক্রিয় নেতৃত্ব দেবেন, উদ্ভাবনে অংশ নেবেন এবং আমূল পাল্টে দেবেন স্বাস্থ্যখাতসহ অন্যান্য খাতের চেহারা।’
‘এমন এক ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখি, যেখানে নারীর হাতে থাকবে অর্থনৈতিক ক্ষমতা। পাশাপাশি থাকবে উদীয়মান নারী নেতৃত্ব ক্ষমতায়নের যথাযথ সুযোগ, ব্যবসার পুঁজি হবে সহজলভ্য, ফলাফল হিসেবে উন্নতি হবে দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই’- বলেন সিলভানা কাদের সিনহা।
যেসব নারী নেতৃত্বের পর্যায়ে আসার স্বপ্ন দেখেন, তাদের উদ্দেশ্যে সিলভানার বলেন, ‘নিজের সুপ্ত ক্ষমতায় বিশ্বাস রাখো, নিজের কর্মক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠো, ভেঙে দাও বাধার দেয়াল, আর সুচনা করো উন্নতির। উদ্ভাবনের সময়ে পিছু হঠবে না, অন্যের মাঝে পরিবর্তনের সাহস এনে দাও। আর নিজহাতে গড়ো এক অসীম সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র উদ য ক ত ইউন ল ভ র ইউন ল ভ র ব ল দ শ ক ষমত য়
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।