আন্তর্জাতিক নারী দিবস: টেলিমার্কেটিং পেশায় দিন বদল করছেন নাটোরের ওয়াহিদা আহমেদ
Published: 8th, March 2025 GMT
ওয়াহিদা আহমেদ রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজতত্ত্বে স্নাতক ডিগ্রি নিয়েছেন। এখন টেলিমার্কেটিংকে পেশা হিসেবে নিয়েছেন। বিদেশে ক্রেতার কাছে ফোন করে নিজের কোম্পানির পণ্য বিপণনে সহায়তা করেন। আয়রোজগার মন্দ নয়। এক বছরের বেশি সময় ধরে এই চাকরি করছেন।
ওয়াহিদা আহমেদের বাড়ি নাটোর জেলার সদর উপজেলার আলাইপুরে। টেলিমার্কেটিং করে প্রতি মাসে গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা আয় করেন, আর তা দিয়ে বেশ ভালো চলে।
ওয়াহিদা আহমেদ প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের টেলিমার্কেটিং বিভাগের নাটোর সেন্টারে কাজ করেন। তিনি মূলত প্রাণ-আরএফএলের পণ্য কুয়েতের যেসব সুপারশপ বা দোকানিরা কেনেন, তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। প্রতিদিন গড়ে ৮০টির মতো ফোনকল করেন। মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে এই কল করেন তিনি। ফোন করে তিনি ওই সুপারশপ বা দোকানিকে জিজ্ঞাসা করেন, তাঁর নতুন করে কোনো পণ্য লাগবে কি না। এ ছাড়া কোনো অভিযোগ থাকলেও এর সমাধানের চেষ্টা করেন। ক্রয়াদেশ পেলে ওয়াহিদা আহমেদ তা প্রাণ-আরএফএলের নির্দিষ্ট সফটওয়্যারে তা সন্নিবেশিত করেন। প্রতিষ্ঠান সেই অনুযায়ী পণ্যের সরবরাহ করে। এভাবে তিনি কোম্পানির পণ্যের বিপণনে সহায়তা করেন।
ওয়াহিদা আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, এই পেশা নতুন ধরনের ও চ্যালেঞ্জিং। আয়রোজগার ভালো। শিক্ষিত তরুণ-তরুণীরা এই পেশায় আসছেন। অনেকটা ঘরে বসেই এই পেশায় আয় করা যায়। বড় বড় শহরের বাইরে মফস্সলের শিক্ষিত তরুণ-তরণীরা এই পেশায় আসতে পারেন। তিনি জানান, বেতনের পাশাপাশি ক্রয়াদেশের ওপর নির্দিষ্ট হারে অর্থ পান তিনি।
ওয়াহিদা আহমেদের মতো ঘরে বসেই দেশে-বিদেশে পণ্যের মার্কেটিং বা বিপণন পেশা হিসেবে নিয়েছেন প্রায় সাড়ে সাত শ নারী। দেশের অন্যতম বড় শিল্পগোষ্ঠী প্রাণ-আরএফএল গ্রুপে এমন সাড়ে সাত শ নারী কাজ করছেন।
টেলিমার্কেটিং পেশায় থাকা তরুণীরা মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব, কুয়েত, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশের ছোট-বড় সুপারশপের মালিকদের ফোন দিয়ে বাংলাদেশের পণ্যের কথা বলেন এবং ক্রয়াদেশ দেন। সেই অনুসারে আমদানিকারককে জানানো হয়। এভাবে দেশে–বিদেশ টেলিমার্কেটিংয়ের কাজ করছেন দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের নারীরা।
নারীদের সম্পৃক্ত করে টেলিফোনের মাধ্যমে বিশ্ববাজারে বিপণন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ২০২৪ সালে টেলিমার্কেটিং ধারণা নিয়ে প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু করে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। শুরুতে বিভিন্ন দেশের পরিবেশক ও খুচরা বিক্রেতার তথ্যসংবলিত একটি সফটওয়্যার তৈরি করে প্রতিষ্ঠানটি। শুরুতে মাত্র চার নারী কর্মী নিয়োগ দিয়ে নাটোরে একটি সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা হয়।
প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ সূত্রে জানা গেছে, নাটোর ও রাজশাহী অঞ্চলে তিনটি সেন্টারে প্রায় ৭৫০ নারী কর্মী টেলিমার্কেটিংয়ের কাজ করছেন। যাঁরা প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পণ্য বিশ্ববাজারে ক্রেতার সামনে তুলে ধরছেন। নিয়োগ পাওয়া নারী কর্মীরা ভালো করায় এ খাত নিয়ে আরও বড় স্বপ্ন দেখছে শিল্প গ্রুপটি। এ জন্য টেলিমার্কেটিং খাতে ২০২৭ সালের মধ্যে পাঁচ হাজার নারী কর্মী নিয়োগ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সিলেট, চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা অঞ্চলে টেলিমার্কেটিং সেন্টার তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
টেলিমার্কেটিংয়ের যাত্রা নিয়ে গ্রুপের পরিচালক (বিপণন) কামরুজ্জামান কামাল বলেন, সশরীর বিপণন কার্যক্রম পরিচালনায় প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি অনেক ব্যয়বহুল। টেলিফোন কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি জায়গায় বসে বিদেশে যোগাযোগ সম্ভব। এ ক্ষেত্রে নারীদের যদি প্রশিক্ষণ দিয়ে নিজ এলাকায় কাজের সুযোগ দেওয়া যায়, তবে তাঁরা অনেক বেশি অনুপ্রাণিত হবেন। সেই চিন্তা থেকেই মূলত নারী কর্মীদের অন্তর্ভুক্ত করে টেলিমার্কেটিং খাতের চিন্তা আসে।
কীভাবে কাজটি করা হয়প্রথমেই প্রাণ-আরএফএলের পণ্য বিদেশের যেসব সুপারশপ বা দোকানে রাখা হয়, সেসব সুপারশপের মালিককে ফোন করেন টেলিমার্কেটিংয়ে যুক্ত থাকা নারীরা। নির্দিষ্ট পণ্যটি কেমন বেচাকেনা চলছে, চাহিদা কেমন, বিক্রেতা খুশি কি না, এসব জিজ্ঞাসা করে পণ্যের গুণগত মান সম্পর্কে জানান ওই কর্মী। পরে তাঁর (মালিক) কাছ থেকে সম্ভাব্য ক্রয়াদেশ নেন। এরপর প্রাণ-আরএফএলের নির্দিষ্ট সফটওয়্যার সেই ক্রয়াদেশের তথ্য দেয়। এরপর ওই তথ্য পাঠিয়ে দেওয়া হয় ওই নির্দিষ্ট দেশের প্রাণ-আরএফএলের পণ্য আমদানিকারককে। ওই আমদানিকারক তাঁর চালানে ওই নির্দিষ্ট পরিমাণ অন্তর্ভুক্ত করেন। এভাবে চলে টেলিমার্কেটিংয়ের কাজ।
প্রাণ-আরএফএলের টেলিমার্কেটিং খাতের হেড অব অপারেশন মোহাম্মদ তানবীর হোসেন বলেন, ‘আমাদের টেলিমার্কেটিং খাতে উচ্চমাধ্যমিক শেষ করেই ভাষাগত দক্ষতা দিয়ে কাজের সুযোগ পাচ্ছেন। অনেকেই আছেন যাঁরা স্নাতক শেষ করেও ঢুকছেন। এখানে আয়ের খুব ভালো সুযোগ রয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প র ণ আরএফএল গ র প প র ণ আরএফএল র স প রশপ এই প শ ক জ কর আহম দ ব পণন করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বেসরকারি সংস্থায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ
বেসরকারি সংস্থা প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের পদে অভিজ্ঞ ও যোগ্য কর্মী নিয়োগের জন্য আবেদন আহ্বান করেছে।
নিয়োগপ্রাপ্তরা ওয়েব ও মোবাইল ভিত্তিক সফটওয়্যার, ডেটাবেজ পরিচালনা, রিপোর্টিং ব্যবস্থা ও কম্পিউটার প্রোগ্রাম তৈরির কাজে নিয়োজিত হবেন। সিনিয়র সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের জন্য ৫ বছর এবং সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারের জন্য ২ বছরের অভিজ্ঞতা থাকা আবশ্যক। শিক্ষাগত যোগ্যতা: কম্পিউটার সায়েন্স ও ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ব্যাচেলর, ন্যূনতম CGPA ৩.০০।
চাকরির স্থান প্রশিকার সদর দপ্তর, ঢাকা, বয়সসীমা ৩৫ বছর, এবং ৬ মাসের প্রোবেশন পিরিয়ড রয়েছে।
আবেদনের শেষ তারিখ ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, আবেদন ফি ৫০০ টাকা। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও ছবি জমা দিতে হবে।
একনজরে
পদ: সিনিয়র ও সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার
সংখ্যা: ২
যোগ্যতা: কম্পিউটার সায়েন্সে ব্যাচেলর, CGPA ৩.০০+
অভিজ্ঞতা: ৫ বছর (সিনিয়র), ২ বছর (সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার)
বয়স: ৩৫ বছর
আরও পড়ুনটিআইবিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ, নেবে ১২৫ জন৩ ঘণ্টা আগেচাকরির স্থান: সদর দপ্তর, ঢাকা
আবেদনের শেষ তারিখ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২৫
আবেদন ফি: ৫০০ টাকা
যোগাযোগ: ডিরেক্টর, মানবসম্পদ বিভাগ, প্রশিকা মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র, প্রশিকা ভবন, মিরপুর-২, ঢাকা। ই–মেইল: [email protected]
আরও পড়ুন১২ দিনের ছুটিতে যাচ্ছে সরকারি নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫