ইউ এইন্ট গুড লুকিং
শামস আল মমীন
সোজাসাপ্টা বলেই ফেলি, সে একজন সাদা আমেরিকান। আর
বাংলার শ্যামল গড়ন নিয়ে আমারও অহংকার কম নয়।
তার সাথে ক্লাসরুম থেকে কফি হাউস আর বিকেল রোদে ঝিলমিল করা
ঘাসের সবুজে দেখি সূর্যটা হেলে পড়ছে ‘ইয়েলো স্প্রিং’-এ।
এই ছোট্ট গ্রামীণ জনপদ তাকে চেনে।
এন্টিওক কলেজ পার হতেই আমাদের গাড়ি থামে। দূর থেকে
ওর বাবা জোর গলায় জানতে চায়, “হে ভেনেসা, হু ইজ দ্যাট গাই”?
“বাংলাদেশ থেকে এসেছে ও বাবা; আমার সাথে পড়ে।”
দীর্ঘদেহী মিস্টার এন্ডারসন হাসতে হাসতে হাত বাড়িয়ে দেয়,
“হ্যালো, ইয়াং ম্যান, ইউ লুকিং গুড বাট ইউ এইন্ট গুড লুকিং”
বুঝে কিংবা না বুঝে আমিও ওদের সাথে হাসি। মুহূর্তে
কফির ঘ্রাণ ছড়িয়ে পড়ে, ঘরের কোনা কাঞ্চিতে … রাত আসি আসি।
বিদ্যুৎ খুঁটির বাল্বগুলো বিশ্বস্ত দাসের মতো আলো দিয়ে যায়।
পথের দু’ধারে বিস্তৃত কর্ন ফিল্ড …আমাদের
গাড়ি চলে উঁচু নিচু আঁকাবাঁকা পথে … আর দোল খেতে খেতে
মাথার ভিতরে ঘুরপাক করে …“ইউ লুকিং গুড বাট ইউ এইন্ট গুড লুকিং।”
*ইয়েলো স্প্রিং ওহিয়োর ডেটন শহর থেকে প্রায় ২০ মাইল দূরের ছোট্ট শহর। ১৯৮২ সালের জুন মাসের এক স্মৃতির স্মরণে লেখা।
রোজনামচা
ওবায়েদ আকাশ
আমি প্রতিদিন কাঁদি
এ কান্না প্রথাস্নিগ্ধতা
এ কান্না নিগূঢ় কথকতা
তুমি যে না পাওয়ার– কখনও বলি না তা
পরিত্যক্ত শীতের চাদরে
জমে থাকা উষ্ণতায় তোমার মুখ বিস্ময় ঊষর
ভাঙা হাটের হাহাকার জানে
উৎসবে দেওয়া শাড়িটা এখন বয়সে প্রাচীন
আমি প্রতিদিন হাঁটি বালুকাবেলায়, ঢেউয়ে
আমি প্রতিদিন দেখি
তোমার পা ভিজিয়ে দিতে সমুদ্র উঠে আসছে নগর ছাপিয়ে
আমাকে বিশ্বাস করো–
আমি এই সামুদ্রিক ঢেউয়ে অকুণ্ঠ বিশ্বাস হারানো প্রেমিক
এদিকে নগর ভিজে যায়
তোমাকে কোথাও দেখি না
নক্ষত্র ও মানব
রিমেল সরকার
শুকতারা– তোমার পিছু নিতে নিতেই আমি এসেছিলাম
কোনো রাষ্ট্রযন্ত্র ও তন্ত্রের ধার ধারিনি
মানিনি তোমাদের পুষে রাখা যাজকদের বিধান
যে দামামা এতকাল বেজে এসেছে হৃদয়ে, তা কেবল ঈশ্বর হত্যার দায়
তুমি জানতে চাওনি কিছু, বলে দিয়েছিলে আমি অরাজক
একবারও অনুবাদ করতে চাইলে না হৃদয়
স্বাতী– সংবিধান কি ঈশ্বর হত্যার বিচার করতে পারে?
তোমার আইন কি পারে আমায় আরেকবার হেমলক পানে মৃত্যু ঘটাতে?
ঈশ্বর কি আমায় খুন করতে পারবে আরেকবার সেনেকার মতন?
যে খুনের দায় ঈশ্বরের ওপর বর্তায়, সেগুলোর বিচার কি করেছে সংবিধান?
অথচ দেখো, আমি ঈশ্বরের করা খুনের মতন মৃত্যুদণ্ড চাইছি
বিশাখা– স্ট্যালিন কি আজও একইরকম নিষ্ঠুর?
লেনিন কি আজও একইরকম স্থিতধী?
সংবিধান, আমার বিধান করো
নক্ষত্রদের সভায় মানব চিরকাল বক্তা থাকে না
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
নতুন বাংলাদেশ গড়তে শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়ন করবে সরকার: প্রধান উপদেষ্টা
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শ্রমিকদের আগের অবস্থায় রেখে নতুন বাংলাদেশ গড়া সম্ভব নয়। এ জন্য তিনি শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবসমূহ বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
আজ বৃহস্পতিবার মহান মে দিবস এবং জাতীয় পেশাগত স্বাস্থ্য ও সেফটি দিবস-২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন। রাজধানীর বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘আমাদের প্রথম কাজ হলো শ্রম সংস্কার কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী আশু করণীয় নিয়ে যাত্রা শুরু করা। এরপর পর্যায়ক্রমে প্রতিটি সুপারিশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে হবে।’
‘শ্রমিক মালিক এক হয়ে গড়ব এ দেশ নতুন করে’ স্লোগানকে সামনে রেখে এবারের মে দিবস পালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ–চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা পাঁচ শ্রমিকের পরিবারের হাতে শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন।
অনুষ্ঠানে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান, শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান সুলতান উদ্দিন আহম্মদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।
অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মহাপরিচালক গিলবার্ট এফ হাংবোর একটি ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়।