Samakal:
2025-06-15@12:41:39 GMT

বাঁধে নাকাল বাঁকা খাল

Published: 22nd, April 2025 GMT

বাঁধে নাকাল বাঁকা খাল

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় বালিয়াটি ইউনিয়নের বাগবাড়ি শিমুলিয়া গ্রামে যেন খাল দখলের মহোৎসব চলছে। খালজুড়ে অর্ধশতাধিক বাঁধ দিয়ে রাস্তা ও বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। প্রশাসনকে ম্যানেজ করে দীর্ঘদিন ধরে খালটি ভরাট করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
খাল ভরাটের বিষয়ে জানতে গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সাটুরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তানভীর আহমদের কার্যালয়ে গেলে তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রায় ১ ঘণ্টা কার্যালয়ের বাইরে বসিয়ে রেখে কথা না বলেই বেরিয়ে যান।
জানা গেছে, সাটুরিয়া উপজেলার বালিয়াটি ইউনিয়নের ভাঙ্গাবাড়ী থেকে ভাটারা হয়ে বাগবাড়ি শিমুলিয়া দিয়ে বনমালিপুর পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ খালটি বয়ে গেছে। এটির নাম বাঁকা খাল। শতবর্ষী খালটির বেশির ভাগ ভরাট করে বাড়িঘর ও রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। তবে কিছু জায়গায় এখনও খালের চিহ্ন দেখা যায়।
স্থানীয়রা জানান, এই খাল দিয়ে এক সময় মালবাহী পালতোলা নৌকা চলত। খালের পানি দিয়ে কৃষকরা তাদের জমিতে সেচ দিতেন। বর্ষা মৌসুমে এই খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন করে কৃষিজমি আবাদের জন্য প্রস্তুত করত। সেই খালটি এখন মৃত। দখলকারীরা বাঁধ দিয়ে দখল করায় এই খাল দিয়ে আর পানি প্রবাহিত হয় না। ফলে আগে কৃষক দুইবার ফসল ফলাতে পারলেও এখন একবার ফসল ফলায়।
গতকাল মঙ্গলবার বাগবাড়ি শিমুলিয়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, আধা কিলোমিটার খালের ওপর ১১টি বাঁধ দিয়ে রাস্তা ও বাড়িঘর নির্মাণ করেছেন স্থানীয় আব্দুস সামাদ মিয়া, আবুল হোসেন, রফিক হোসেন, শফিক মিয়া, শহিদুল ইসলাম, জলিল মিয়াসহ অনেকে। 
বাগবাড়ি শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ফজল হক বলেন, এখানে বড় নদী ছিল। সেই নদী খালে পরিণত হয়। এখন খালটিও দখল হয়ে গেছে। খাল ভরাট করে অনেকেই রাস্তা, বাড়িসহ বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করেছে। খালটি প্রশাসনের অসাধু কিছু কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে ভরাট ও দখল হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বাগবাড়ি শিমুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা মোশারফ হোসেন বলেন, যারা খাল দখল করে রাস্তা তৈরি করেছে– তারা এলাকার প্রভাবশালী। তারা ভূমি অফিসের কর্মকর্তাদের পকেট ভারী করে খাল দখলের মহোৎসব চালাচ্ছে।
প্রবাসী আবুল হোসেনের ছেলে সামির হোসেন জানান, দীর্ঘদিন ধরে তারা সাঁকো দিয়ে খাল পারাপার করেন। সাঁকো ভেঙে গেলে খাল পারাপারে সমস্যা হয়। তাই খালের ওপর বাঁধ দিয়ে রাস্তা তৈরি করে চলাচলের ব্যবস্থা করেছেন। 
আব্দুস সামাদ মিয়া জানান, বর্ষা মৌসুম এলে তাদের কষ্ট বেড়ে যায়। বর্ষা মৌসুমে অনেক সময় কলাগাছের ভেলা বানিয়ে খাল পারাপার হতে হয়। তাই উপায় না পেয়ে খালের ওপর বাঁধ দিয়ে রাস্তা তৈরি করে চলাচল করেছেন।
এ বিষয়ে সাটুরিয়ার ইউএনও ইকবাল হোসেন বলেন, সরেজমিন গিয়ে তদন্ত করে দখলদারীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খালটি উদ্ধার করে পানি প্রবাহের ব্যবস্থাও করা হবে।
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

খেলাপি ঋণ আরও বেড়ে ৪ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা

লুকানো খেলাপি ঋণের আসল চিত্র সামনে আসায় আরও বেড়েছে খেলাপি ঋণ। মার্চে খেলাপি ঋণ আরও বেড়ে হয়েছে ৪ লাখ ২০ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। মোট ঋণের যা ২৪ দশমিক ১৩ শতাংশ। তিন মাস আগে গত ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছিল তিন লাখ ৪৫ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকায়। মোট ঋণের যা ছিল ২০ দশমিক ২০ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সাম্প্রতিক এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, খেলাপি ঋণের কোনো তথ্য আমরা লুকিয়ে রাখবো না। সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছানোর পর এটা আদায় জোরদারের মাধ্যমে কমানো হবে। নতুন করে বিতরণ করা ঋণ যেন খেলাপি না হয় সে জন্য বিভিন্ন আইনি কঠোরতা আনার কথা জানান তিনি।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে কয়েকটি গ্রুপ ঋণের নামে বিপুল অর্থ বের করে নিয়েছে। যাদের বেশিরভাগই এখন পলাতক। কেউ কেউ গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন। গত ৫ আগস্টের আগে ঋণ পরিশোধ না করেও বিভিন্ন উপায়ে নিয়মিত দেখানোর সুযোগ ছিল। তবে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর এখন সেই সুযোগ বন্ধ হওয়ায় এখন তারা খেলাপি। এরই মধ্যে এস আলম, বেক্সিমকোসহ শীর্ষ ঋণগ্রহীতাদের অনেকেই খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত মার্চ পর্যন্ত বিতরণ করা মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ৪১ হাজার ৯৯২ কোটি টাকা। গত ডিসেম্বর শেষে যা ছিল ১৭ লাখ ১১ হাজার ৪০২ কোটি টাকা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ