প্রতি ঈদেই দেশের ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলোর থাকে বিশেষ প্রস্তুতি। এবার রোজার ঈদে ওটিটিতে মুক্তি পেয়েছে দুটি নতুন সিরিজ ও সমানসংখ্যক সিনেমা। পাশাপাশি প্রকাশ হয়েছে একাধিক নাটক। গল্পের বৈচিত্র্যের পাশাপাশি এসব কনটেন্টে ছিলেন জনপ্রিয় তারকাশিল্পীরা। এবারের ঈদে একটি সিনেমা ও দুটি সিরিজ নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। ঈদের আলোচিত তিনটি কনটেন্ট নিয়ে এ প্রতিবেদন।

জিম্মি
‘জিম্মি’ একটি মিস্ট্রি ড্রামা। প্রথম সিজনে পর্ব মোট ৭টি পর্ব মুক্তি পেয়েছে হইচইতে। এর গল্প ‘ব্যক্তিগত জীবনের অশান্তি ও সংসারে টানাটানি নিয়ে জীবন নির্বাহ করতে থাকা নিম্নপদস্থ সরকারি কর্মচারী রুনা লায়লার জীবন ওলট-পালট হয়ে যায় অফিসের স্টোররুমে মোটা অঙ্কের টাকা ভর্তি একটি বাক্স আবিষ্কার করার পর। সে কি লোভের কাছে নতি স্বীকার করবে, নাকি অন্ধকারে লুকিয়ে থাকা সত্য প্রকাশ করবে?’

প্রথম পর্বেই রুনার জীবনের টানাটানির সঙ্গে সঙ্গে আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপের প্রাপ্তিও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। সেই না পাওয়ার অভাব পূরণ করতেই টাকাভর্তি বাক্সে হাত গলায় রুনা। লোভ তখন তাকে একেবারে পেয়ে বসেছে। লোভের প্রতিক্রিয়া হিসেবে এরপর রুনার জীবনে চলে আসে ভোগান্তি। এই পুরো গল্প আসলে চলেছে ২০২৪ সালের মধ্য-জুলাই থেকে আগস্টের শুরুর মধ্যে। ফিকশন হলেও ওই সময়কার বাংলাদেশের বাস্তবতাও ফুটিয়ে তুলেছেন নির্মাতা। 

কোটা আন্দোলন, অভ্যুত্থান, পটপরিবর্তন সংক্রান্ত নানা ঘটনাকে প্রতীকীভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন নির্মাতা। এই সিরিজে রুনা লায়লা চরিত্রে অভিনয় করেন জয়া আহসান। তাঁর চরিত্রের ব্যাপ্তিও বেশি ছিল, ফলে এই শিল্পীর ৭ পর্বজুড়েই ক্ষুরধার পারফরম্যান্সের ধারাবাহিকতা অতীব প্রয়োজন ছিল। সেই পরীক্ষায় জয়া উতরে গেছেন ভালোভাবেই। এর বাইরে ইরেশ যাকেরের অভিনয় ছিল মনোমুগ্ধকর। শাহরিয়ার নাজিম জয়ও ছিলেন নিখুঁত। অভিনয়ের দিক থেকে প্রায় সবাই দারুণ করেছেন। ৭ পর্বের সিরিজে প্রতিটি পর্বের দৈর্ঘ্য ২০ থেকে ৩০ মিনিটের মধ্যেই। অনায়াসেই দেখে ফেলা যায়, ক্লান্তি জাগায় না।

হাউ সুইট
সুইট নামে এক মেয়েকে বিয়ে করতে চায় এক সন্ত্রাসী। সেই বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে বরিশালে পাড়ি জমায় মেয়েটি। পথে পরিচয় হয় অপূর্ব অভিনীত চরিত্রের সঙ্গে। ঘটতে থাকে নানা মজার ঘটনা। জিয়াউল ফারুক অপূর্ব ও তাসনিয়া ফারিণ অভিনীত রোমান্টিক, অ্যাকশন ও কমেডির মিশেলে ওয়েব ফিল্ম ‘হাউ সুইট’ সিনেমার গল্প। এটি নির্মাণ করেছেন কাজল আরেফিন অমি। ঈদের দিন থেকে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বঙ্গতে দেখা যাচ্ছে। আরও আছেন মারজুক রাসেল, আবদুল্লাহ রানা, এরফান মৃধা শিবলু, পাভেল, জিয়াউল পলাশ প্রমুখ।

মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন ২
ওটিটি প্ল্যাটফর্ম চরকিতে চাঁদ রাতে মুক্তি পেয়েছে সিরিজটি। ‘সিন্ডিকেট’ সিরিজের জনপ্রিয় চরিত্র অ্যালেন স্বপনকে নিয়ে তৈরি হয়েছিল স্পিন অফ সিরিজ ‘মাইসেলফ অ্যালেন স্বপন’। চট্টগ্রামের মাদক কারবারি থেকে স্বপন কীভাবে হয়ে ওঠে মানি লন্ডারিংয়ের হোতা, সেই গল্প নিয়ে গড়ে উঠেছিল সিরিজের প্রথম সিজন। নতুন সিজনে বাড়ে স্বপনের কাজের পরিসর। স্বপনের কাছে থাকা ৪০০ কোটি টাকা কোথা থেকে এলো, শেষ পর্যন্ত এই টাকা সাদা করতে পারবে কিনা সেই উত্তর পাওয়া যায় এবারের সিরিজে। প্রথম সিজনের মতো এবারও সিরিজটি নির্মাণ করেছেন শিহাব শাহীন। অ্যালেন স্বপন চরিত্রে অভিনয় করেছেন নাসির উদ্দিন খান। আরও আছেন রাফিয়াত রশিদ মিথিলা, জেফার রহমান, আইমন শিমলা, ফরহাদ লিমন, অর্ণব ত্রিপুরা প্রমুখ।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অ য ল ন স বপন কর ছ ন প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

জমজমাট নাটকের পর কিংসের শিরোপা উৎসব

সময়ের চেয়েও বেশি দীর্ঘ হলো অপেক্ষা। উত্তেজনার বাঁকে বাঁকে লুকিয়ে ছিল ফুটবলীয় রোমাঞ্চ। শেষ ১৫ মিনিট যেন পরিণত হলো রূপকথার উপসংহারে—যেখানে আবাহনীর স্বপ্ন থেমে যায়, আর বসুন্ধরা কিংস খুঁজে পায় চতুর্থ ফেডারেশন কাপের সোনালি মুহূর্ত।

বৃষ্টির ছন্দে বিভ্রান্ত হওয়া ফাইনাল আবার শুরু হলো এক সপ্তাহ পর। ১-১ সমতায় থাকা ম্যাচের বাকি অংশ গড়ালো ময়মনসিংহ জেলা স্টেডিয়ামে। যেখানে শুরু থেকেই ১০ জনের দল নিয়ে খেলতে নামে কিংস। অতিরিক্ত সময়ে কিছুই হল না। তবে অপেক্ষার পুরস্কার মিলল টাইব্রেকারে।

সেখানে বাজিমাত করলেন কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ। আবাহনীর দ্বিতীয় শট আটকে দিয়ে দলকে দিলেন এগিয়ে যাওয়ার আত্মবিশ্বাস। আর শেষ শটটি নেন ব্রাজিলিয়ান ড্যাসিয়েল, যা গোললাইন পার হয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই উৎসবে ফেটে পড়ে কিংস শিবির।

আরো পড়ুন:

যে কারণে এবারের লিগ জয়কে এগিয়ে রাখছেন সালাহ

পাঁচ গোলের রোমাঞ্চকর ফাইনালে শেষ হাসি বার্সার

কিছুদিন আগেই আবাহনীর কাছে টাইব্রেকারে হেরেছিল কিংস। এবার সেই হারের উত্তরটা যেন মিলল একই মঞ্চে, একই কৌশলে— তবে ভিন্ন ফলাফলে। মোরসালিন, তপু, ইনসান, জোনাথন আর ড্যাসিয়েল— কেউই ভুল করেননি। আবাহনীর একমাত্র ব্যর্থ শটটি ছিল নাইজেরিয়ান এমেকার, যা ঠেকিয়ে দেন শ্রাবণ। আর মিরাজুলের চতুর্থ শট, যা প্রথমবার ঠেকিয়ে দিয়েছিলেন শ্রাবণ। কিন্তু রেফারির সিদ্ধান্তে আবার নিতে হয়। তাতেও গোল হলেও ততক্ষণে কিংস হয়ে গেছে অপ্রতিরোধ্য।

এদিন মাত্র ১৫ মিনিট খেলা হলেও মাঠের উত্তাপ ছিল পূর্ণদৈর্ঘ্য নাটকের মতো। শুরুতেই হলুদ কার্ড দেখেন আবাহনীর সুমন রেজা ও অধিনায়ক হৃদয়। আগের ম্যাচেও হলুদ-লাল কার্ডে ভরা ছিল দৃশ্যপট। ফুটবল এখানে শুধু কৌশলের খেলা নয় তা যেন হয়ে ওঠে মানসিক স্থিতির পরীক্ষাও।

এই জয়ে বসুন্ধরা কিংস চতুর্থবারের মতো ফেডারেশন কাপ জয় করল। একই সঙ্গে আবাহনীকে প্রথমবার কোনো ফাইনালে হারানোর কৃতিত্বও অর্জন করল তারা। অতীতে দুই ফাইনালে পরাজিত হয়েছিল কিংস। এবার তারা সেই রেকর্ড মুছে দিল নির্ভার ফুটবলে।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছয় গোলের থ্রিলারে জমজমাট ড্র বার্সেলোনা-ইন্টারের
  • অবশ্যম্ভাবী নাটকীয়তায় জমজমাট আইপিএল, দেখে নিন সমীকরণ
  • জমজমাট নাটকের পর কিংসের শিরোপা উৎসব