ইলিশ মাছে ‘ভিটামিন এ’ ভরপুর। এর ‘ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড’ বিষণ্নতা কাটায়। এই মাছ খেলে ত্বক ও চুলে জেল্লা বাড়ে, হৃদযন্ত্রের খারাপ চর্বি দূর হয়। ক্যালসিয়াম ও আয়রন থাকায় ইলিশ খাওয়া হাড়ের জন্যও ভালো। এর পরও কখনও কি শুনেছেন, ভিটামিন ও খনিজের ঘাটতি মেটাতে কেউ ইলিশ খেতে চাইছে? শর্ষে ইলিশ, ইলিশ পাতুরি, কড়কড়ে ইলিশ ভাজা নিয়ে কাড়াকাড়ি বরাবর রসনার তৃপ্তি মেটাতে।  জাতীয় মাছ যেন পাতে জোটে তাই প্রতিবছর মার্চ-এপ্রিল দুই মাস ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ থাকে। অক্টোবরের শেষ থেকে নভেম্বরের শুরু পর্যন্ত মোট ২২ দিন ইলিশ পরিবহন, বেচাকেনা, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধ থাকে। ইলিশ উৎপাদন এভাবে বেড়েছে বছর বছর। এ সময় জেলেদের অন্নসংস্থানে ভিজিএফ কর্মসূচিতে চাল দেওয়া হয়। যদি কেউ তখন ইলিশ ধরার চেষ্টা করে তবে আছে কঠিন শাস্তি। 
ইলিশকে খুব কাছ থেকে দেখেছেন চাঁদপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) সাবেক মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড.

 মো. আনিছুর রহমান। তাঁর সঙ্গে ‘বায়োলজিক্যালি অ্যানাড্রোমাস ফিশ’ ইলিশ নিয়ে কথা পাড়লাম। 

দেশে সারাবছর যে সংখ্যক ইলিশ পাওয়া যায়, তার ৫৬ শতাংশ আসে বঙ্গোপসাগর থেকে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ মেলে মেঘনা অববাহিকায়; বাকি ৪ শতাংশ আসে পদ্মা নদী থেকে। কিন্তু সাগর থেকে মেঘনায় ইলিশের ঝাঁক আসার পথেই অন্তত দেড়শ ডুবোচর আছে। 

২০০৮-০৯ সালে দেশে ২.৯৯ লাখ টন ইলিশ উৎপাদন হয়। ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশে ৫.৭১ লাখ টন ইলিশ আহরণ করা হয়। গত এক যুগেরও বেশি সময়ে দেশে ইলিশের উৎপাদন ৯২ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও ইলিশ উৎপাদন প্রবৃদ্ধিতে উন্নতি কম দেখা গেছে। ইলিশের জীবনচক্র কি তাহলে চ্যালেঞ্জের মুখে? 
বিশ্বে ইলিশ আহরণকারী দেশ রয়েছে ১১টি– বাংলাদেশ, ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তান, ইরান, ইরাক, কুয়েত, বাহরাইন, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড। এর মধ্যে বাংলাদেশ ইলিশ উৎপাদনে শীর্ষে। বিশ্বে মোট ইলিশের ৭৫-৮০ শতাংশ উৎপাদন হয় বাংলাদেশে। এই ইলিশ কি আন্তঃসীমান্তীয় মাছ?

আনিছুর রহমান বললেন, ৩৩ বছরের গবেষণা জীবনে তিনি দেখেছেন, ইলিশ আন্তঃসীমান্ত এবং গভীরভাবে পরিযায়ী। ঘুরে বেড়ানোর জন্য প্রধান যে অঞ্চল ইলিশ বেছে নিয়েছে সেই বঙ্গোপসাগরের লিভিং জোন থেকে এরা বড় নদনদীতে উঠে আসে। মেঘনা বেল্টে তাদের যে চলাচল, বেড়ে ওঠা; আগস্ট-সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে বৃষ্টি-বাদল কম হলেও এরা প্রজননের উদ্দেশ্যে ছুটে আসে। যদিও ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিলেও তারা প্রজনন করে।

ইলিশের পাসপোর্ট-ভিসা লাগে না। এক দেশের সীমানা থেকে আরেক দেশে চলে যাবে। ভারত-মিয়ানমারে চলে যাবে বাংলাদেশের জলসীমা ছাড়িয়ে। তাই শুধু নদী নয়; নদী-সাগর-মোহনা সবই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং ভালো অবস্থায় রাখার কথা ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন।
আনিছুর রহমানের মতে, সাগর থেকে মোহনা বেয়ে, যেটা মেঘনা বেল্ট বলা হয়, পদ্মা ও গঙ্গা দিয়ে ভারতে পর্যন্ত চলে যায় ইলিশ। বাংলাদেশের জলসীমা পেরিয়ে ভারতে যেতে মাছটির ২২ দিন সময় লেগে যায়। তাঁর গবেষণামতে, ইলিশ প্রতিদিন ৭২ থেকে ৭৪ কিলোমিটার স্রোতের বিরুদ্ধে নদীপথ অতিক্রমের সক্ষমতা রাখে। অবশ্য মাছটি ডিম ছাড়ে বাংলাদেশের জলসীমার মধ্যেই। যদি ভারতে চলে গিয়েও ডিম ছাড়ে, ইলিশকে সেই সুযোগ দিতে হবে। কারণ সেই মাছ আবার বাংলাদেশেও আসতে পারে। 

বঙ্গোপসাগরের ইলিশ বাংলাদেশের গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনা অববাহিকা ছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের হুগলি বা ভাগীরথী নদী দিয়ে এবং মিয়ানমারের ইরাবতী নদী দিয়ে উজানে যেতে থাকে। বঙ্গোপসাগরের দিক থেকে বাংলাদেশ-মিয়ানমার-ভারত একই অববাহিকার অংশ। যে কারণে ইরাবতীর ইলিশও বাংলাদেশে আসতে পারে। এখন প্রশ্ন হতে পারে, ‘ইলিশের বাড়ি’ কোন নদী?
আনিছুর রহমানের বক্তব্য, বুড়িগঙ্গা-শীতলক্ষ্যা-তুরাগ নদেও আগে ইলিশ মিলত। এখন তো অন্যান্য মাছও কমে গেছে। পদ্মা হলো প্রধান। রূপসা-বিষখালী-শিবসা-পায়রা অনেক নদী আছে। যদি উত্তর থেকে দক্ষিণে যাওয়া যায়, প্রায় প্রতিটি জেলার নদীতে ইলিশ মিলবে। গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-পদ্মা-মেঘনার শাখানদী বা উপনদীগুলোতেও ইলিশ মিলবে। চট্টগ্রাম অঞ্চলের কর্ণফুলী, চাঁদপুর অঞ্চলে মেঘনা, খুলনা অঞ্চলে রূপসা, বরিশালে কীর্তনখোলা, সন্ধ্যা, আড়িয়াল খাঁ, ভৈরব নদে ইলিশ মিলবে।

আনিছুর রহমানের নিজের বাড়ি মাগুরা। ওই অঞ্চলের নবগঙ্গা, মধুমতীসহ সুন্দরবন-সংলগ্ন নদীগুলোতে ইলিশ এখন কমে গেলেও আছে।  
২০১৭ সালের ১৭ আগস্ট বাংলাদেশের জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন (জিআই) বা ভৌগোলিক নির্দেশক সনদ পায় ইলিশ। দেশে পদ্মার ইলিশ হাঁক দিয়ে কেনাবেচায় বাড়তি শশব্যস্ত হয়ে ওঠে বাজার।
পদ্মার ইলিশ কেন স্বাদের হয়– এ প্রশ্নে আনিছুর রহমান বলেন, প্রমত্তা পদ্মাই তো এখন সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে। নদীতে পানির পরিমাণ ও গুণগত মান ভালো রাখতে হবে। কারণ ইলিশের স্বাদের ক্ষেত্রে স্রোতের মাত্রা একটি ফ্যাক্টর। 

বস্তুত, প্রতিবেশ ব্যবস্থা ঠিক থাকলে মাছের খাবার ঠিক থাকে; তখন মাছও ভালো থাকে। যে কারণে একই মাছ বিলে থাকলে এক স্বাদ, আর পুকুরে তা চাষ করলে আরেক স্বাদ। ইলিশ মাছও কোন অঞ্চলের কোন খাবার খেয়ে বড় হচ্ছে, তার ওপরে এর স্বাদ নির্ভর করে। আনিছুর বলেন, সাগরে যে ধরনের প্লাংকটন আছে, সেটা পদ্মায় নেই। আবার পদ্মার প্লাংকটন সাগরে নেই। সাগর থেকে চলে আসার পর একই ইলিশ যখন পদ্মা-মেঘনা বেল্টে চলাচল করে, তখন তার স্বাদ পাল্টে যায়। যদিও খোদ পদ্মা নদী আগের মতো না থাকায় এখন ইলিশের সেই স্বাদ মানুষ খুঁজে ফেরে।
গবেষকরা দেখেছেন, পদ্মায় গত কয়েক বছরে কমে আসছে দ্রবীভূত অক্সিজেন। ২০১৮ সালে পদ্মার পানিতে ডিও ছিল ৮ দশমিক ৭০। ২০২২ সালে ডিওর মান পাওয়া যায় ৫ দশমিক ৪১। মেঘনায় ২০১৮ সালে ডিওর গড় মান ছিল ৮ দশমিক ৪০, যা ২০২২ সালে কমে হয় ৬ দশমিক ৮৪। পদ্মায় ২০২২ সালে পানিতে অ্যামোনিয়ার গড় উপস্থিতি ছিল শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ। মেঘনায় পানিতে ২০২২ সালে অ্যামোনিয়া  হয়েছে শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ। তাহলে ইলিশ ধরা বন্ধে হম্বিতম্বির চেয়ে ইলিশের বাড়ি নদীগুলো সংরক্ষণ কি বেশি জরুরি নয়? 
আনিছুর রহমান মনে করেন, শুধু ইলিশ কেন; সব মাছের জন্য নদী সংরক্ষণ জরুরি। ইলিশ নদীর মিঠাপানিতে আসছে ডিম ছাড়ার জন্য। জাটকা বড় হয়ে ফিরে যাচ্ছে সাগরে। এই যে আসা-যাওয়ার বিরাট পথ অতিক্রম করে, এটা যদি দূষিত থাকে; বালু উত্তোলনসহ নানাবিধ কারণে নষ্ট হয়ে যায়; জাটকা ধরে ফেলা হয়; পানি যথেষ্ট না হয়; সময়মতো বৃষ্টিপাত না 
হয়, তাহলে ইলিশের চলাচল ও জীবনচক্র বাধাগ্রস্ত হয়।

ইলিশ একটা প্রাণী, যা নদীর সঙ্গে খুবই সম্পৃক্ত। নদী ভালো না থাকলে জুয়োপ্লাংকটন-ফাইটোপ্লাংকটন প্রভৃতি জলজ সম্পদ অর্থাৎ ইলিশ সাংঘাতিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ইলিশ গভীর পানির মাছ এবং স্বচ্ছ পানি এলেই ডিম ছাড়তে নদীতে আসতে শুরু করে। তাই ইলিশের জন্য নদীর পানির মান বৃদ্ধিতে নজর দিতে হবে। 

বর্তমান সময়ে আধুনিকায়ন, যন্ত্রায়ন, ইনফ্রাস্ট্রাকচার গড়ে ওঠাসহ নানাবিধ কারণে নদী অনেক ক্ষেত্রেই ধ্বংস হয়ে গেছে।
জলবায়ু পরিবর্তন, ফারাক্কা-তিস্তা ব্যারাজ; সেগুলো তো আছেই। মানুষ যেমন বাতাস না থাকলে স্থলে বাঁচতে পারে না; মাছ পানি না থাকলে বাঁচতে পারে না। সেই পানি যদি হয় দূষিত অথবা চলাচলের ক্ষেত্র কম, তাহলে মাছ থাকবে কোথায়? নদীতে পানি থাকতে হবে এবং সে পানি হতে হবে বিশুদ্ধ। তাহলেই মাছ ভালো থাকবে, ইলিশ ভালো থাকবে। বঙ্গোপসাগর অববাহিকার বাকি দেশগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের বৈঠক করা প্রয়োজন; সমন্বয় থাকা প্রয়োজন যাতে মাছের চলাচল, জীবনচক্র ও জাটকা থেকে ইলিশে পরিণত হওয়ার সুযোগ অক্ষুণ্ন থাকে। 

আইরিন সুলতানা; লেখক ও পরিবেশকর্মী

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ২০২২ স ল অবব হ ক পদ ম র র জন য দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রাম্পের ক্ষমায় যুক্তরাষ্ট্রের কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন হন্ডুরাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট

হন্ডুরাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট হুয়ান অরল্যান্ডো হার্নান্দেজকে যুক্তরাষ্ট্রের কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল কারা কর্তৃপক্ষের ওয়েবসাইট থেকে এমন তথ্য জানা গেছে। যুক্তরাষ্ট্রে মাদক পাচারের অভিযোগে হার্নান্দেজ কারাদণ্ড ভোগ করছিলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁকে ক্ষমা করে দেওয়ায় তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

ফেডারেল কারাগারের রেকর্ড অনুযায়ী, হার্নান্দেজ গত সোমবার পশ্চিম ভার্জিনিয়ার ইউএসপি হেজেলটন কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে কোকেন আমদানির ষড়যন্ত্র ও নিজের কাছে মেশিনগান রাখার অভিযোগে হার্নান্দেজকে ২০২৪ সালের মার্চ মাসে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল। তাঁকে তখন ৪৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

হার্নান্দেজ হন্ডুরাসের ন্যাশনাল পার্টির সদস্য। তিনি ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সহিংসভাবে মাদক চোরাচালানের ষড়যন্ত্র এবং যুক্তরাষ্ট্রে শত শত টন কোকেন পাচারে সহযোগিতার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করতে ২০২২ সালের এপ্রিলে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

গত শুক্রবার ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে লিখেছিলেন, হার্নান্দেজের সঙ্গে রূঢ ও অন্যায় আচরণ করা হয়েছিল।

গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া পোস্টে হার্নান্দেজের স্ত্রী আনা গার্সিয়া দে হার্নান্দেজ ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, ‘আমার স্বামী এখন একজন মুক্ত মানুষ।’

হার্নান্দেজ হন্ডুরাসের ন্যাশনাল পার্টির সদস্য। তিনি ২০১৪ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। সহিংসভাবে মাদক চোরাচালানের ষড়যন্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রে শত শত টন কোকেন পাচারে সহযোগিতার অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করতে ২০২২ সালের এপ্রিলে তাঁকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বিচার চলাকালে নিউইয়র্কের কৌঁসুলিরা বলেছিলেন, হার্নান্দেজ মধ্য আমেরিকার দেশ হন্ডুরাসকে ‘মাদক চক্রের নিয়ন্ত্রণাধীন রাষ্ট্রের মতো’ পরিচালনা করেছেন। তিনি চোরাচালানিদের আইনের হাত থেকে সুরক্ষা দেওয়ার বিনিময়ে লাখ লাখ ডলার ঘুষ নিয়েছেন।

কারাদণ্ডের পাশাপাশি হার্নান্দেজকে ৮০ লাখ ডলার জরিমানা পরিশোধের নির্দেশ দিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের আদালত।

রোববার এয়ার ফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজের ভেতর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প হার্নান্দেজকে ক্ষমা করে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি দাবি করেন, হার্নান্দেজের বিরুদ্ধে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন সাজানো তদন্ত করেছে।

রোববার এয়ার ফোর্স ওয়ান উড়োজাহাজের ভেতর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ট্রাম্প হার্নান্দেজকে ক্ষমা করে দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেছেন। তিনি দাবি করেন, হার্নান্দেজের বিরুদ্ধে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন সাজানো তদন্ত করেছে।

ট্রাম্প বলেন, ‘তিনি (হার্নান্দেজ) দেশটির (হন্ডুরাস) প্রেসিডেন্ট ছিলেন। আর এ কারণেই মূলত তারা তাঁকে মাদক ব্যবসায়ী বানিয়ে দিয়েছে।’

হার্নান্দেজকে এমন সময়ে মুক্তি দেওয়া হলো, যখন কিনা হন্ডুরাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল নিয়ে উত্তেজনা চলছে।

হন্ডুরাসে গত রোববার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়। এরই মধ্যে ভোট গণনায় দেরি হওয়াকে কেন্দ্র করে নির্বাচনে ভোট জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হন্ডুরাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মধ্যপন্থী লিবারেল পার্টির নেতা সালভাদর নাসরাল্লা রক্ষণশীল প্রার্থী নাসরি আসফুরার চেয়ে সামান্য এগিয়ে গেছেন। গতকাল মঙ্গলবার প্রায় ৬৮ শতাংশ ভোট গণনা শেষে নির্বাচন কর্তৃপক্ষ এমন তথ্য দিয়েছে। আসফুরা হলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প-সমর্থিত প্রার্থী।

আরও পড়ুনহন্ডুরাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ট্রাম্প–সমর্থিত প্রার্থীর চেয়ে এগিয়ে গেলেন নাসরাল্লা৩ ঘণ্টা আগে

গতকাল মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ আংশিক ভোট গণনায় প্রাপ্ত সর্বশেষ ফল প্রকাশ করেছে। এতে দেখা যায়, ৬৮ শতাংশ ভোট গণনা শেষে নাসরাল্লা পেয়েছেন ৪০ দশমিক ১৩ শতাংশ ভোট এবং ন্যাশনাল পার্টির আসফুরা পেয়েছেন ৩৯ দশমিক ৭১ শতাংশ ভোট।

হন্ডুরাসের নির্বাচনী কর্তৃপক্ষ গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বলেছে, প্রাথমিকভাবে দ্রুত ভোট গণনার ব্যবস্থায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। এতে যে ওয়েব পোর্টালে তাৎক্ষণিকভাবে ফলাফলের তথ্য হালনাগাদ করার কথা ছিল, সেটিতেও সমস্যা তৈরি হয়েছে।

গত সোমবার নিজের মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া পোস্টে ট্রাম্প অভিযোগ করেন, হন্ডুরাস প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফলাফল পরিবর্তন করার চেষ্টা করছে।

ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যালে লিখেছেন, ‘যদি তারা এটা করে, তবে তাদের কঠিন পরিণতি হবে। হন্ডুরাসের মানুষ ৩০ নভেম্বর বিপুল সংখ্যায় ভোট দিয়েছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাশিয়া বলপ্রয়োগের মাধ্যমে ইউক্রেনের ডনবাস অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নে
  • ট্রাম্পের ক্ষমায় যুক্তরাষ্ট্রের কারাগার থেকে মুক্তি পেলেন হন্ডুরাসের সাবেক প্রেসিডেন্ট
  • বিশ্বকাপ জিতেও আর্জেন্টিনা দলে যে স্বপ্ন অপূর্ণ ফার্নান্দেজের
  • রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ করতে চাইলে দ্রুত পরাজিত হবে ইউরোপ, হুঁশিয়ারি পুতিনের