‘এই গল্প ফিল্মের চেয়ে বেশি ফিল্মি’
Published: 21st, April 2025 GMT
বাস্তব চরিত্রকে এবার পর্দায় ‘জীবন্ত’ করছেন বলিউড তারকা ইমরান হাশমি। তেজসপ্রভা বিজয় দেওস্কর পরিচালিত ‘গ্রাউন্ড জিরো’ ছবিতে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কমান্ড্যান্ট নরেন্দ্রনাথ ধর দুবের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ইমরান। ২০০১ সালে নয়াদিল্লির লোকসভা কেন্দ্র ও গুজরাটের অক্ষরধাম মন্দিরে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক অপারেশনকে ঘিরে এ ছবির কাহিনি। সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে ছবিটির ট্রেলার। মুম্বাইয়ের এক পাঁচতারা হোটেলে আয়োজিত ট্রেলার মুক্তির অনুষ্ঠানে ইমরান এ ছবিকে ঘিরে তাঁর নিজের অভিজ্ঞতার কথা উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন।
ইমরান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আসল সত্যি প্রকৃত ঘটনার চেয়ে ভয়ংকর—এই প্রবাদ এ ছবির গল্পের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। (নরেন্দ্রনাথ ধর) দুবেজির সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতের কথা মনে পড়ে। ওনার চরিত্রেই আমি অভিনয় করছি। আমি ওনাকে বলেছিলাম যে এই গল্প ফিল্মের চেয়ে বেশি ফিল্মি। ২০০৩ সালে অফিসাররা এই অপারেশন যেভাবে পরিকল্পনা করে বাস্তবায়িত করেছিলেন, তা এককথায় অবিশ্বাস্য ও অভূতপূর্ব।’
‘গ্রাউন্ড জিরো’ সিনেমা ইমরান। আইএমডিবি.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইমর ন
এছাড়াও পড়ুন:
এই পরিস্থিতিতে প্রার্থীরা কীভাবে নির্বাচন করবেন, প্রশ্ন আনিসের
তফসিল ঘোষণা করা হলেও এখনো দেশে নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি বলে অভিযোগ করেছে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ)।
দলটি বলছে, নির্বাচন করতে গিয়ে ওসমান হাদিকে প্রকাশ্য গুলিবিদ্ধ হতে হয়েছে। নির্বাচনের আগেই যদি এমন পরিস্থিতি হয় তাহলে প্রার্থীরা কীভাবে নির্বাচন করবেন? প্রকৃতপক্ষে নিরাপত্তাহীনতায় প্রার্থীরা শঙ্কিত। তাই সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে দলটি।
দেশের চলমান পরিস্থিতিতে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্টের চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ শনিবার গুলশানের একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।
জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেখতে চায় মন্তব্য করে ব্যারিস্টার আনিস বলেন, ‘‘একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের মাধ্যমে যদি সরকার গঠিত হয়, তবে সেই সরকার হবে স্থিতিশীল ও স্থায়ী। সে সরকার কার্যকর কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারবে এবং এর মধ্য দিয়ে দেশ এগিয়ে যাবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করার জন্য যা যা করণীয়, তা করতে হবে। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এবং প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। এই দুই বিষয়ে সরকারকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।’’
কিন্তু তফসিল ঘোষণা করা হলেও এখনো দেশে নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি। প্রার্থীদের জীবনও নিরাপদ নয় বলেও মন্তব্য করেন জোটটির চেয়ারম্যান।
দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, ‘‘তফসিল ঘোষণার পরপরই ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদিকে প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করা হলো। তাহলে নিরাপত্তা কোথায়? এই পরিস্থিতিতে প্রার্থীরা কীভাবে নির্বাচন করবেন? এটাকেই যদি উৎসবমুখর পরিবেশ বলা হয়, তাহলে আমার আর কিছু বলার নেই। মব সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও সহিংসতা চলছে। জুলাই আন্দোলনের পরও যদি আগের মতো নির্বাচন হয়, তাহলে সেই আন্দোলনের মর্ম নষ্ট হয়ে যাবে। নির্বাচন কমিশন একা কিছু করতে পারবে না। রাজনৈতিক দল ও নেতা-কর্মীদেরও দায়িত্ব রয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘তফসিল ঘোষণা করায় আমরা আনন্দিত এবং এটিকে স্বাগত জানাই। কিন্তু মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য সময় দেওয়া হয়েছে মাত্র ১৭ দিন, যা খুবই কম। এই নির্বাচন সকলকে নিয়ে একটি ইনক্লুসিভ নির্বাচন হতে হবে। নির্বাচনের জন্য নিরাপত্তা এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।’’
সুষ্ঠু নির্বাচনের আশঙ্কা প্রকাশ করে আনিস বলেন, ‘‘প্রশাসন আজ ভাগাভাগির প্রশাসনে পরিণত হয়েছে । জামায়াত ও বিএনপির মধ্যে প্রশাসন ভাগাভাগি করা হয়েছে। নির্বাচনের জন্য যে নিরপেক্ষতা প্রয়োজন, তা আমরা দেখতে পাচ্ছি না। এখনো কেয়ারটেকার সরকারের সময় রয়েছে। যদি তা নিশ্চিত না করা হয়, তাহলে ইতিহাসে আপনাদের মূল্যায়ন ভালো হবে না। এই অবস্থায় সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’’
তিনি বলেন, ‘‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ১৯৯১, ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে নির্বাচিত সরকার থেকে ক্ষমতা নিয়ে একটি নিরপেক্ষ সরকারের রূপে রূপান্তরিত হয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে পেরেছিল। আজ দুঃখের সঙ্গে বলতে হয়, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও এখনো আমরা নিরপেক্ষ সরকার হিসেবে দেখছি না।’’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘আগামী ২৫ ডিসেম্বর তারেক রহমান দেশে ফিরবেন। আমরা বিশ্বাস করি, দেশে ফিরে তিনি দেশের স্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করতে অগ্রণী ভূমিকা রাখবেন।’’
জোটের মুখপাত্র ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার বলেন, ‘‘ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় সারাদেশে চরম সংশয় বিরাজ করছে। নভেম্বর মাসেই ৫৮টি অজ্ঞাত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। একই মাসে ৯ জন রাজনৈতিক নেতা-কর্মী খুন হয়েছেন। গণপিটুনিতে নিহত হয়েছে ১৯ জন। পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি মাসে রাজধানীতে গড়ে ২০ থেকে ২৫ জন খুন হচ্ছে। চলতি বছরের প্রথম ছয় মাসে সারাদেশে ১ হাজার ৯৩১ জন মানুষ খুন হয়েছে। দেশের সাধারণ মানুষ চরম নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে রয়েছে।’’
তিনি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, ‘‘জুলাই-আগস্টে থানাসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে লুট হওয়া অস্ত্র এখনো উদ্ধার করা হয়নি। এসব অস্ত্র বহু প্রার্থীর জীবন কেড়ে নিতে পারে। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের নীরবতায় আমরা চরমভাবে হতাশ। হাজারো অস্ত্র সন্ত্রাসীদের হাতে রেখে কোনোভাবেই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়। হলেও তা হবে চর দখলের মতো নির্বাচন। নির্বাচনের পূর্বে সকল প্রার্থী ও সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। হানাহানি, মারামারি ও জীবনহানির প্রতিযোগিতা বন্ধ করতে হবে।’’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফেরার জন্য আগাম স্বাগত জানান হাওলাদার।
জাতীয় পার্টি ও জেপিসহ ১৮টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত নির্বাচনি জোটের ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। এতে জোটের মুখপাত্র ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, এনডিএফ নেতা ও জাপার নির্বাহী চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু, জেপির মহাসচিব শেখ শহিদুল ইসলাম, জোটের প্রধান সমন্বয়কারী গোলাম সরোয়ার মিলন, জোটের শীর্ষনেতা, জাতীয় ইসলামিক জোটের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু নাসের মো. ওয়াহেদ ফারুক, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তি জোটের চেয়ারম্যান আবু লায়েস মুন্না, তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব মেজর (ডা.) শেখ হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (বিএমএল)-এর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মহসিন রশিদ, বাংলাদেশ স্বাধীন পার্টির চেয়ারম্যান মির্জা আজম, স্বাধীনতা পার্টি (জেএসপি)-এর চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজু, ডেমোক্রেটিক পার্টি গণতান্ত্রিক জোটের চেয়ারম্যান এস. এম. আসিক বিল্লাহ, বাংলাদেশ সার্বজনীন দলের সভাপতি প্রিন্সিপাল নূর মোহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//