মাঠে এখন উত্তেজনার পারদ চূড়ায়। আইপিএলের ১৭তম আসরে ৪৮টি ম্যাচ শেষে দাঁড়িয়ে আছে এমন এক মোহময় মুহূর্তে, যেখানে দশ দলেরই সামনে তাত্ত্বিকভাবে প্লে-অফের রাস্তা খোলা! মাত্র ২২টি ম্যাচ বাকি। কিন্তু প্রত্যেক দল এখনো তাদের ভাগ্য গড়ার লড়াইয়ে মাঠে ঘাম ঝরিয়ে যাচ্ছে। কার সামনে কেমন চ্যালেঞ্জ, দেখে নেওয়া যাক এক ঝলকে—

১.

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (১৪ পয়েন্ট, ১০ ম্যাচ):
শীর্ষে থাকা কোহলিরা স্রেফ দু’টি জয় পেলেই নিশ্চিত করে ফেলবে প্লে-অফের টিকিট। তিনটি জিতলে প্রথম দুইয়ের মধ্যে থাকার সম্ভাবনাও থাকবে, যা কোয়ালিফায়ারে সরাসরি সুবিধা এনে দিতে পারে।

২. মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স (১২ পয়েন্ট, ১০ ম্যাচ):  
প্রথমদিকে হোঁচট খেয়ে পরে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে রোহিতের মুম্বাই। চার ম্যাচ বাকি, এর মধ্যে তিনটি জিতলেই কাজ সারা! সব জিততে পারলে প্রথম দুইয়ে যাওয়ার পথও খোলা থাকবে।

আরো পড়ুন:

মিরাজের বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ

বাংলাদেশের বিপক্ষে দারুণ বোলিং করে মুজারাবানির ইতিহাস

৩. গুজরাট টাইটান্স (১২ পয়েন্ট, ৯ ম্যাচ):  
এক ম্যাচ কম খেলেও শক্ত অবস্থানে গুজরাট। পাঁচ ম্যাচের মধ্যে তিনটি জয়ই যথেষ্ট। তবে চারটি জিতলে শীর্ষস্থানও ধরা-ছোঁয়ার মধ্যে আছে।

৪. দিল্লি ক্যাপিটালস (১২ পয়েন্ট, ১০ ম্যাচ):
টানা দুটি হারের পরও দিল্লি এখনো ঠিক জায়গাতেই আছে। তিন জয় পেলে প্লে-অফ পাকা। আর চার জয় নিয়ে তারা প্রথম দুইয়ের মধ্যেও জায়গা করে নিতে পারে।

৫. পাঞ্জাব কিংস (১১ পয়েন্ট, ৯ ম্যাচ):  
পাঁচ ম্যাচ হাতে রেখেছে শ্রেয়াসের দল। চার জয় আনলেই সরাসরি প্লে-অফ নিশ্চিত। তিন জয় পেলেও সম্ভাবনা টিকে থাকবে।

৬. লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস (১০ পয়েন্ট, ১০ ম্যাচ):
চার ম্যাচ বাকি। সব জিতলে নিশ্চিত প্লে-অফ। তিনটি জিতলে বাকি দলগুলোর ফলাফলের ওপর নির্ভর করতে হবে।

৭. কলকাতা নাইট রাইডার্স (৯ পয়েন্ট, ১০ ম্যাচ):
সর্বোচ্চ ১৭ পয়েন্ট পর্যন্ত যেতে পারবে কেকেআর। এর জন্য বাকি চার ম্যাচই জিততে হবে, নইলে অন্য দলগুলোর ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে।

৮. রাজস্থান রয়্যালস (৬ পয়েন্ট, ১০ ম্যাচ):
সমীকরণ কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। চারটি ম্যাচে জয় তুলে নিতে হবে এবং তারপর অন্য দলের ফলাফলের দিকেও নজর রাখতে হবে।

৯. সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (৬ পয়েন্ট, ৯ ম্যাচ):
রাজস্থানের মতোই পয়েন্ট। তবে এক ম্যাচ বেশি হাতে থাকায় তাদের সম্ভাবনা তুলনামূলক বেশি। পাঁচটি জয় চাই, একটিও হারলে জটিল হিসাব শুরু।

১০. চেন্নাই সুপার কিংস (৪ পয়েন্ট, ৯ ম্যাচ):
তলানিতে অবস্থান করা চেন্নাই এখনো শেষ কথা বলেনি। পাঁচ ম্যাচে জয় আনলে ১৪ পয়েন্টে পৌঁছতে পারবে। কিন্তু তখন অন্য ৯ দলের ফলাফল নির্ধারণ করবে তাদের ভাগ্য।

এই মরসুমে আইপিএল যেন হয়ে উঠেছে এক বিশাল ধাঁধার মঞ্চ। শেষ হাসি কে হাসবে, তা জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত!

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল র ফল ফল ১০ ম য চ

এছাড়াও পড়ুন:

দেড়শ বছর টিকে আছে বালিকান্দি চামড়ার হাট

প্রায় দেড়শ বছর আগে মৌলভীবাজারের বালিকান্দি গ্রামে গড়ে ওঠে চামড়ার হাট। কোরবানির ঈদ এলেই মনু নদী তীরবর্তী গ্রামের এ হাটে চামড়া কেনাবেচা চলে দীর্ঘ রাত পর্যন্ত। ক্রেতা-বিক্রেতা, শ্রমিকের আনাগোনায় উৎসবমুখর থাকে বালিকান্দি বাজার। 
মৌলভীবাজার জেলায় চামড়া কেনাবেচার একমাত্র হাট বালিকান্দি বাজার। জল ও স্থলপথে যোগাযোগ সহজ হওয়ায় এটি দ্রুত বিভিন্ন এলাকায় পরিচিতি লাভ করে। স্থানীয় বাজারে চা স্টলের মালিক আব্দুল করিম জানান, তারা বাপ-দাদার আলোচনায় শুনেছেন, চার-পাঁচ পুরুষ আগে এ ব্যবসার যাত্রা শুরু। এক সময় খুব জমজমাট ছিল এ হাট। তিনিও এক সময় চামড়া কেনাবেচায় জড়িত ছিলেন। ব্যবসায় লস খাওয়ায় চায়ের দোকান দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন এখন।
জানা যায়, ১৮৬০ থেকে ১৮৭০ সালের দিকে এ বাজারের যাত্রা। এখন এ ব্যবসার প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে গেছে। ট্যানারি মালিকরা টাকা আটকে রাখায় সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। চামড়া বেচাকেনা যখন জমজমাট ছিল, তখন ঈদকেন্দ্রিক বাজার সরব থাকত। 
স্থানীয়রা জানান, অতীতে ঈদকেন্দ্রিক মৌসুমি ব্যবসায়ীসহ শতাধিক মানুষ চামড়া কেনাবেচা করতেন। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা মাংস ছিলে লবণ লাগিয়ে বড় পুঁজির ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করতেন। বড় ব্যবসায়ীরা আগেকার দিনে ঢাকার হাজারীবাগ এবং নাটোরে ট্যানারি মালিকদের কাছে বিক্রি করতেন। শওকত মেম্বার, সানুর মিয়া, আনোয়ার মিয়া, মো. তারণ, মিন্টু মিয়া, সুলেমান মিয়ারা তাদের আদি পুরুষের ব্যবসার ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন।
গত ৭ জুন ঈদের দিন সন্ধ্যায় সরেজমিন বালিকান্দি চামড়ার বাজারে যেতে দেখা যায় চামড়াবোঝাই ছোট-বড় ট্রাক-পিকআপ, টমটম, সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভিড়ে জ্যাম লেগে গেছে। ফাঁড়ি রাস্তায় যেতে হয়েছে বালিকান্দি বাজারে। সেখানে শামিয়ানা টানিয়ে সড়কের পাশে, কোথাও সড়কের অংশজুড়ে চলছে চামড়া থেকে মাংস সরানোর কাজ। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে এ কাজ করছেন।
চামড়া ব্যবসায়ী সুলেমান মিয়া জানান, ঈদের সময় বালিকান্দি বাজারে এখনও ১৫ থেকে ১৬ হাজার চামড়া কেনাবেচা হয়। এতে এক দিনে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকার বেচাকেনা হয়। এবার গরুর আকারভেদে দেড়শ থেকে ৬০০ টাকা দরে চামড়া কেনাবেচা হয়েছে। চামড়া বিক্রি করতে আসা মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা তাফাজ্জুল বিন ফারুকী রাজনগরী জানান, চামড়া ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দেড়শ-দুইশ টাকায় প্রতি পিস চামড়া কিনেছেন। এতে ট্রাক ভাড়া ও অন্যান্য খরচ ওঠানো কষ্টকর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শওকত মিয়া মেম্বার সমকালকে জানান, ব্যবসার মজা শেষ হয়ে গেছে ২০১৩ সাল থেকে। আগে ঈদ এলেই ট্যানারি মালিকরা বকেয়া পরিশোধ করে দিতেন। এখন বছরের পর বছর যাওয়ার পরও পাওনা টাকা পরিশোধ করেন না। গত বছরের পাওনা ৫৫ লাখ টাকার মাঝে এবার ঈদের আগের দিন ট্যানারি মালিক মাত্র ৫০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এ বছর চার হাজারের বেশি চামড়ায় লবণ লাগিয়ে রেখেছেন। আরও কিছু লবণযুক্ত চামড়া কেনার জন্য দাম-দর চলছে। তিনি জানান, এ বছর বড় গরু কোরবানি দেওয়ার সংখ্যা খুব কম। ছোট চামড়ার সংখ্যাই বেশি। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আবারও জমজমাট চাঁদপুর লঞ্চঘাট, দিনে পারাপার অর্ধ লক্ষ যাত্রী
  • দেড়শ বছর টিকে আছে বালিকান্দি চামড়ার হাট