ভারতের হামলায় পাকিস্তানে এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির যে তথ্য জানা গেল
Published: 7th, May 2025 GMT
পাকিস্তানের ৬টি জায়গায় ভারতের হামলায় নিহত ব্যক্তির সংখ্যা বেড়ে ২৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন ৪৬ জন।
আজ বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ১০টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক আহমেদ শরিফ চৌধুরী এসব তথ্য জানিয়েছেন।
গতকাল মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর পাকিস্তানের বিভিন্ন জায়গায় হামলা চালায় ভারত। সংবাদ সম্মেলনে সেসব হামলার ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যান উপস্থাপন করেন আহমেদ শরিফ।
আহমেদ শরিফের তথ্য অনুযায়ী, বাহাওয়ালপুরের আহমেদপুর ইস্ট শহরে হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুটি তিন বছরের শিশু, সাতজন নারী ও চারজন পুরুষ। এ ছাড়া ৩৭ জন আহত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে ২৮ জন পুরুষ ও ৯ জন নারী।
আরও পড়ুনতিন রাফাল, এক মিগসহ ভারতের পাঁচ যুদ্ধবিমান ‘ভূপাতিত’৩ ঘণ্টা আগেমুজাফফরাবাদে ক্ষয়ক্ষতির হিসাব দিতে গিয়ে আইএসপিআরের মহাপরিচালক বলেন, সেখানকার বিলাল মসজিদকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এ হামলায় তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া এক কিশোর ও এক কিশোরী আহত হয়েছে।
কোটলিতে আব্বাস মসজিদকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। ওই হামলায় ১৬ ও ১৮ বছর বয়সী দুজন নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া হামলায় এক নারী ও তাঁর মেয়ে আহত হয়েছেন।
আহমেদ শরিফ আরও বলেন, পাঞ্জাবের মুরিদকেতে উমালকুরা মসজিদকে লক্ষ্য করে হামলা হয়েছে। এ ঘটনায় তিনজন নিহত ও একজন আহত হয়েছেন। আরও দুই ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছেন। হামলায় স্থানীয় মৃৎশিল্পীরা আর্থিকভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন।
শিয়ালকোট ও শাকারগড়ে হামলার ঘটনায় বড় কোনো ক্ষতি হয়নি বলে জানান আহমেদ শরিফ। তিনি বলেন, সেখানকার একটি দোকানে সামান্য ক্ষতি হয়েছে।
সেনাবাহিনীর এ মুখপাত্র আরও বলেন, নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতীয় সেনাবাহিনীর ছোড়া গুলিতে পাঁচজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে পাঁচ বছর বয়সী একটি শিশুও রয়েছে।
এর আগে ভোর চারটার দিকে করা এক সংবাদ সম্মেলনে আহমেদ শরিফ ভারতের এ হামলাকে ‘বিনা উসকানিতে চালানো ভিতুসুলভ’ হামলা বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা জবাব দিচ্ছি এবং ভবিষ্যতেও দিয়ে যাব।’
আরও পড়ুনপাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানের বহু ফ্লাইট বাতিল১ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় নিহত অন্তত ৩
পাকিস্তানে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত তিনজন নিহত এবং ১২ জন আহত হয়েছেন। পাকিস্তানের আন্তবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী এ তথ্য জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের আইএসপিআরের মহাপরিচালক জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দিবাগত মধ্যরাতের পর পাকিস্তানের কোটলি, ভাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ ও মুজাফ্ফরবাদে ‘কাপুরুষোচিত’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ভারত। পাকিস্তান সেনাবাহিনী ইতিমধ্যে এর বদলা নিতে শুরু করেছে।
গত ২২ এপ্রিল ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলায় ৩৬ জনের প্রাণহানির পর থেকে পারমাণবিক ক্ষমতাধর দুই দেশের মধ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে এ হামলা চালাল ভারত।
রাত ১টার পর পাকিস্তানের এআরউয়াই নিউজকে পাকিস্তানের আইএসপিআরের মহাপরিচালক বলেন, ‘এখন থেকে কিছু সময় আগে কাপুরুষ শত্রু ভারত ভাওয়ালপুরের আহমেদ ইস্ট এলাকায় সুবহান্নাল্লাহ মসজিদ, কোটলি ও মুজাফ্ফরবাদের অন্তত তিন জায়গায় বিমান হামলা চালিয়েছে।’ হামলাগুলো ভারতের আকাশসীমা থেকে চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
পাকিস্তান এর সমুচিত জবাব দেবে উল্লেখ করে দেশটির এই সেনা কর্মকর্তা বলেছেন, ‘এই ঘৃণ্য উসকানি জবাব ছাড়া পার পাবে না।’
ভারতের হামলায় হতাহতের বিষয়ে জানতে চাইলে লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী বলেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে পরে আরও তথ্য জানানো হবে। এর কিছুক্ষণ পর তিনি পাকিস্তানের জিউ নিউজকে ক্ষয়ক্ষতির একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দিয়েছেন। তাতে বলেছেন, ভাওয়ালপুরের আহমেদপুর ইস্ট এলাকায় একটি শিশু নিহত ও ১২ জন আহত হওয়ার খবর পেয়েছেন। কোটলিতে দুইজন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
তিনি জানান, আহমেদপুরে একটি মসজিদে হামলা হয়েছে। কাছের একটি বাড়িও আক্রান্ত হয়েছে। সেখানে একটি শিশু ও তার বাবা–মা আটকা পড়েছেন। তাদেরকে উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।
কোটলিতেও একটি মসজিদে হামলা হয়েছে। মুজাফ্ফরবাদে একটি সড়কে ক্ষেপণাস্ত্র পড়েছে। তাতে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।
পাকিস্তানি বাহিনী স্থল ও আকাশপথে এই হামলার জবাব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে ভারত সরকারের এক বিবৃতির বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতের সশস্ত্র বাহিনী ‘অপারেশন সিন্দুর’ শুরু করেছে। এর আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের নয়টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে।
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কোনো স্থাপনাকে এই অভিযানে নিশানা করা হয়নি।