বিএনপির মনোনয়ন পেয়ে ফজলুর রহমান বললেন, ‘এলাকার মানুষের সুখ–দুঃখের অংশীদার হতে চাই’
Published: 5th, November 2025 GMT
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ–৪ আসনে (ইটনা–মিঠামইন–অষ্টগ্রাম) বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন দলীয় পদ স্থগিত থাকা ফজলুর রহমান। তিনি দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ছিলেন।
দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে গত আগস্টে ফজলুর রহমানের প্রাথমিক সদস্যপদসহ দলীয় সব ধরনের পদ তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়। তখন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তাঁর দলীয় মনোনয়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। গত সোমবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়।
কিশোরগঞ্জ–৪ আসনে ফজলুর রহমানের নাম ঘোষণার পর তাঁর সমর্থকেরা আনন্দমিছিল ও মিষ্টি বিতরণ করেন। ইটনা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি মনির উদ্দিন বলেন, ‘ফজলুর রহমানের মনোনয়নে হাওরে বিএনপি নেতা–কর্মীদের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। এ জন্য বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ নীতিনির্ধারকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই।’
এ সম্পর্কে ফজলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার মতো একজন মুক্তিযোদ্ধাকে দল যেভাবে মূল্যায়ন করেছে, সে জন্য আমি দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ আমার নির্বাচনী এলাকার মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। বাকিটা জীবন এলাকার মানুষের পাশে থেকে তাঁদের সুখ–দুঃখের অংশীদার হয়ে থাকতে চাই।’
আরও পড়ুননোটিশের জবাব দিলেন ফজলুর রহমান, তিন মাসের জন্য পদ স্থগিত করল বিএনপি২৬ আগস্ট ২০২৫কিশোরগঞ্জ জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে চারটি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া যাঁদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে ফজলুর রহমান ছাড়া অন্যরা হলেন কিশোরগঞ্জ–২ (কটিয়াদী–পাকুন্দিয়া) আসনে জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও পাকুন্দিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো.
কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম বলেন, কিশোরগঞ্জের ছয়টি আসনের মধ্যে প্রাথমিকভাবে চারটির নাম ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এগুলোই চূড়ান্ত নয়, দল চাইলে পরিবর্তন করতে পারে।
আরও পড়ুনকোন আসনে বিএনপির প্রার্থী কে, দেখে নিন০৩ নভেম্বর ২০২৫বিভিন্ন মন্তব্যের জেরে গত ২৬ আগস্ট তিন মাসের জন্য বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ফজলুর রহমানের দলের সব পদ স্থগিত করা হয়। তবে দল থেকে কারণ দর্শানো ও পরে দলীয় পদ স্থগিত করায় তাঁর অনুসারীরা প্রতিবাদ জানান। পদ স্থগিত করার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশসহ দলের নেতা–কর্মীরা নানা কর্মসূচিও পালন করেন। ফজলুর রহমান নিজেও এলাকায় একাধিক সমাবেশে ধানের শীষ মার্কা ফেরত চান। গত ২০ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সম্মেলনে তাঁকে আমন্ত্রণ না দেওয়ার প্রতিবাদে তাঁর সমর্থকেরা মিছিল নিয়ে সম্মেলনে যোগ দেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফজল র রহম ন র ক শ রগঞ জ জ ল ব এনপ র স
এছাড়াও পড়ুন:
সাংবাদিকের ওপর চড়াও আইনজীবী, ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা
মানিকগঞ্জে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আইনজীবীর বিরুদ্ধে সাংবাদিককে কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠেছে।
শুক্রবার (৭ নভেম্বর) দুপুর দেড়টার দিকে মানিকগঞ্জ আইনজীবী সমিতির ১ নম্বর ভবনের সামনে দায়িত্ব পালনের সময় মানিকগঞ্জ জজ কোর্টের আইনজীবী মো. জাহাঙ্গীর আলম সিদ্দিকী মাইটিভির রির্পোটার আজিজুল হাকিমকে কাজে বাঁধা দেন এবং তার ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
আরো পড়ুন:
সাংবাদিকের ওপর হামলা: স্বেচ্ছাসেবক দলের ২ নেতা বহিষ্কার
প্রয়োজনে প্রথম আলোর সম্পাদককে মনোনয়ন দেবে এনসিপি: নাসীরুদ্দীন
এসময় ঢাকা পোস্ট ডটকমের রির্পোটার সোহেল হোসাইন ও মোহনা টিভির সাধন সূত্রধরসহ কয়েকজন আইনজীবী এগিয়ে গিয়ে জাহাঙ্গীর আলমকে শান্ত করার চেষ্টা করেন।
মাইটিভির সাংবাদিক আজিজুল হাকিম জানান, একটি রিপোর্টের জন্য কয়েকজন ভুক্তভোগীর বক্তব্য আনতে শুক্রবার দুপুরে মানিকগঞ্জ আইনজীবী ১ নম্বর ভবনের সামনে যান। ১ নম্বর ভবনের ভেতর থেকে এক নারী কাঁদতে কাঁদতে বের হন। তার সঙ্গে আরা কয়েজন নারী-পুরুষ ছিলেন। বিষয়টি নিয়ে জাহাঙ্গীর আলমের কাছে জানতে চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আদালত চত্বর থেকে চলে যেতে বলেন।
“ওই নারী ও পুরুষদের ভিডিও করায় ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ করে আজিজুল হাকিম বলেন, তখন তাকে বাঁধা দিলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে সাংবাদিককের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তি করেন এবং আইনজীবী সমিতির ভবনের ভেতরে নিয়ে যেতে চান,” বলেন তিনি।
ঘটনার পরম্পরার বর্ণনা দিতে গিয়ে ভুক্তভোগী সাংবাদিক আজিজুল হাকিম বলেন, এ সময় আদালত চত্বরে থাকা অপর দুই সাংবাদিক ঢাকা পোস্ট ডটকমের রির্পোটার সোহেল হোসাইন ও মোহনা টিভির সাধন সূত্রধরসহ কয়েকজন আইনজীবী এগিয়ে এলে আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলম আরো ক্ষিপ্ত হয়ে যান। তখন সবার উপস্থিতিতে আবার মাইটিভির সাংবাদিকের ওপর চড়াও হন এবং ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
তিনি জানান, তখন আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তার সঙ্গে থাকা অন্য আইনজীবীরা তাকে সেখান থেকে চলে যেতে বলেন এবং আইনজীবী জাহাঙ্গীর আলমের এক সহকর্মী তাকে আদালত চত্বর থেকে নিয়ে যান।
জাহাঙ্গীর আলম প্রথমেই সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া হয় জানিয়ে আজিজুল হাকিম বলেন, “পরিচয় দেওয়ার সময় আমার হাতে মাইটিভির মাইক্রোফোন ও স্ট্যান্ডসহ ক্যামেরা ছিল। তারপরও তিনি পেশাগত কাজে বাঁধা দেন এবং ক্যামেরা ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য চেষ্টায় ধাক্কা দেন।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে কথা হলে বলেন, “শুক্রবার দুপুরে আমার চেম্বার (আইনজীবী সমিতির ১ নম্বর ভবনের ১০১ নম্বর কক্ষ) থেকে একটি যৌতুক মামলার সালিশ শেষে বের হয়ে আসার সময় ১ নম্বর ভবনের গেটে বিষয়টি নিয়ে জানতে সাংবাদিকরা আমাকে প্রশ্ন করেন। অনুমতি না নিয়ে ভিডিও ধারণ করতে থাকেন। এ নিয়ে প্রশ্ন করলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়।”
তবে অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে দাবি করেন জাহাঙ্গীর আলম।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস বলেন, “সাংবাদিকের পেশাগত কাজে বাঁধা দেওয়া অন্যায়। আমরা ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।”
ঢাকা/চন্দন/রাসেল