২০১৯ সালে নেটফ্লিক্সে মুক্তির পরেই চমকে দেয় ক্রাইম ড্রামা ‘দিল্লি ক্রাইম’। সত্য ঘটনা অবলম্বনে নির্মিত সিরিজটি জিতে নেয় আন্তর্জাতিক এমি অ্যাওয়ার্ডস। দ্বিতীয় মৌসুমও পায় দর্শক-সমালোচকদের প্রশংসা। এবার আসছে তৃতীয় কিস্তি। গতকাল মঙ্গলবার ট্রেলার মুক্তির পর থেকেই আলোচনায় সিরিজটির তৃতীয় মৌসুম।

নতুন মৌসুমের গল্প
‘দিল্লি ক্রাইম ৩’-এর গল্প আরও ভয়ংকর—মানব পাচার, নিখোঁজ মানুষ আর এক নির্মম অপরাধ সাম্রাজ্যকে ঘিরে। এবার দেখা যাবে ডিআইজি ভার্তিকা চতুর্বেদীকে (শেফালি শাহ), যিনি একের পর এক নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার সূত্র ধরে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা এক মানব পাচার চক্রের হদিস খুঁজতে নামেন। ফাইলের স্তূপে উঠে আসে শীতল এক বাস্তবতা—তরুণীদের চাকরির লোভ দেখিয়ে পাচার করা হচ্ছে, শিশুদের দাস হিসেবে বিক্রি করা হচ্ছে, বিয়ের ফাঁদে ফেলে নিপীড়নের শিকার করা হচ্ছে।

‘দিল্লি ক্রাইম’–এর তৃতীয় মৌসুমে শেফালি শাহ। আইএমডিবি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চুম্বনে চুম্বনে এনে দাও প্রহেলিকা

অস্পৃশ্য

তার মুখ কবেই তো ভুলে গেছি, তবু
কার্তিক এলেই তীব্র নিনাদের মতো
মনে পড়ে তাকে, নিভৃত বিস্ময়ে
মৃদু লয়ে কাছে আসে আশ্চর্য বিষাদ ঋতু
একলা দহনে দাউ দাউ জ্বলে পাপ—
চলে যায় ছিন্ন অন্ধকারে, নির্জলা আগুন!
দর্পণ পেরিয়ে দূরে আরও দূরে
জন্ম-জন্মান্তরে অশরীরী ছায়া প্রেমে;
বুক চিরে শূন্যে ভেসে ওঠে নীলাভ জোছনা
হৃদয় মন্থনে শুধু অনন্ত-বঞ্চনা নিয়ে
হেঁটে যায় পথ, চারদিকে নেমে আসে
অস্পৃশ্য কুয়াশা, শান্ত নীড়ে অদ্ভুত বিকেল
দুঃখবোধ আর স্মৃতিটুকু নিয়ে তবু
জাদুর মতন ছেড়ে যায় শেষ দেখা ট্রাম
দুচোখের কোণে অতর্কিতে হানা দেয়
তখন প্রার্থনা আর আনন্দ অসুখ।

ঠোঁট

এখানে বৃষ্টির পর খুব একা লাগে
তখন শ্রাবণদিনে নারী
শুধু খেলা করে, নাচে-গায়!
উড়ে উড়ে ঘুরে মরে ভ্রমণের দল
প্রবল জলের স্রোতে শেওলা দেখা দিলে,
সহসাই ময়ূর পেখম মেলে ধরে
প্রিয়, আজ অনন্ত শূন্যতা মেলে ধরো;
বাধাহীন হয়ে তবু ভেতরে-বাহিরে
চুম্বনে চুম্বনে এনে দাও প্রহেলিকা
ক্রমাগত ভ্রমণের তীব্র আকুলতা
কখনো ভেবেছ তেমন অশরীরীরা
কাছে এলে, তোমার ঠোঁট আমার ঠোঁট
ছুঁতে চায়, কতবার বলো কত কত
করেছ চুম্বন? তবু কি কোথাও
মিলেছে আশ্রয়? আমাদের দুজনের
দুঠোঁট যখন ছুঁয়ে যাবে
সবকিছু মনে হবে আশ্চর্য বিস্ময়!

অন্তহীন

ভেবে দেখো
অন্য কোনোভাবে
নতুন পথের দিকে,
রওনা হওয়ার আগেই
কতটুকু তৃষ্ণায়-ক্লান্তিতে
চোখ মুদে আসে আমাদের!

জলের অপেক্ষা ছিল পথে
পথ ফিরে যেতে চেয়েছিল
সাঁকোটির কাছে,

তবু এই মেঘ-ঝোড়ো দিন শেষে
জঙ্গল পেরিয়ে এলে,
কুয়াশার ঘনঘোর ছায়া হয় আর
বহুদূর থেকে অপেক্ষার
প্রতিধ্বনি ভেসে আসে কাছে;

চন্দ্রচূড় পাহাড়ের সবচেয়ে উঁচু
চূড়ায় জোছনা ভেসে যায়
ভেসে যায় জোনাকির
নেশাতুর হাতছানি;

তোমাকে ভোলার জন্য
বিক্ষুব্ধ-উত্তাল হয়
নোনা প্রমত্ত সমুদ্র!
তন্ময় ঘড়ির কাঁটা থমকে যায়
নিদারুণ ক্ষোভে...

আরও কয়েকটা বছর ভুলে
থাকতে হবে
ভুলে থাকতে হবে
চাওয়া-পাওয়ার
মায়াবী ফাঁদ
ভেঙে ফেলতে চাই
যত আশাতীত সম্ভাবনা!

পথে ভেঙে দেয়
সালতির পর সালতি সাজিয়ে
গড়ে তোলা সমস্ত নদীর
সেতুবন্ধগুলো,

নেই অন্য কোনো সম্ভাবনা
নেই আর ভেবে দেখার ইচ্ছেটুকুও

আর কোনো পথ খোলা নেই
যেন সব পথ শুধু
হারিয়ে গিয়েছে অন্তহীন
অন্ধ পথের নেশায়...

হেমন্ত চেয়েছি শুধু

রেশম কুয়াশা ফোটা হেমন্তের সুখ
গুটি গুটি পায়ে এগোয় হিমের দিকে
এগিয়ে চলেছি স্বপ্নালু শৈশব থেকে
আমিও তেমনি করে, তোমার দিকেই...
পাখিদের শীতের ইশারা মোহময়
নীলাদ্রি আকাশে ধূপ চন্দনের আলো
কুসুম কুসুম রোদে রোশনাই খুব
প্রজাপতির ডানায় ভাসে হেমন্তের
অবারিত ঋতু, মনের উঠোনে ওড়ে
কাশফুল তুলো—গাঙচিল হয়ে শূন্যে
ভাসে বিচ্ছেদ যন্ত্রণা সুচের মতন।
তোমার বুকের ওম পেতে হলে বলো
কত কতকাল তবে অপেক্ষায় রব?
নতুন কি কোনো বার্তা দেবে?
চোখে, ঠোঁটে, চিবুকে, বাহুতে,
অথবা বৃক্ষের শাখা-প্রশাখায়, শূন্য
মনের অচল কোণে হিমেল নিদ্রায়?

হৃদয় ভরে আছে বৃষ্টিতে

নেশারু তুষার ঝরে ঝরে
বৃষ্টিতে হৃদয় ভরে গেছে
তবু দ্বিখণ্ডিত হয়েছিল
সেদিন, অলিভবাগান, বিনিদ্র রাতে
গূঢ় নির্জনতম রাস্তায়
সঙ্গী হয়েছিল স্মৃতি চোখের পাতায়
ঘুমন্ত রাতের আকাশে অদেখা স্বপ্ন
পুষ্পধনু যেন দক্ষিণের
পাহাড়ে আলতো ঝুলে থাকে,
শীতের কুন্দন, বৃষ্টি জড়ানো দুপায়ে,
অলেখা কবিতা আর নিষ্ফল প্রেমের
শীতলতা নিয়ে আকুতি লুকানো ছিল;
দাসত্বে আবদ্ধ দুচোখের কোণ,
ব্যথিত বৃত্তের মাঝে নীরবতা
দীর্ঘদিন ধরে, অদৃশ্য ফাটল দেখা দিলে
বিচ্ছেদের ভীতি ভেঙে যায়;
তখন দুজন আধোচেনা
মানুষ দুদিকে শুধু ঘুরপাক খায়!
 
এই প্রেম অকারণ বরিষণ তবু...

সম্পর্কিত নিবন্ধ