সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশযাত্রার ঘটনার পর শনিবার সকালে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পরিদর্শনে যান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। পরিদর্শনে গিয়ে তিনি ইমিগ্রেশনের জন্য অপেক্ষারত যাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন। এ বিষয়ে পুলিশকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনাও দেন জাহাঙ্গীর আলম।

এ সময় ইমিগ্রেশনে উপস্থিত একজন পুলিশ সদস্যকে উদ্দেশ্য করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘স্যুট পইরা আইলে ছাইড়া দিবা আর অন্যদের আটকায়ে রাখবা তা কইরো না, একটু খেয়াল রাইখ।’

পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের বিদেশযাত্রার ঘটনায় তদন্ত কমিটি তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দেবে। প্রতিবেদনের পর যারা দায়ী তাদের সবার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় যারা দায়ী তাদের কয়েকজনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে, কাউকে অ্যাটাচ করা হয়েছে এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

সাবেক রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে এসবির পক্ষ থেকে একটি নিষেধাজ্ঞা ছিল, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আমাদের কাছে নিষেধাজ্ঞা পাঠিয়েছে কি-না আমি জানি না। আমার কাছে এই ব্যাপারে তথ্য নেই। আপনারা যেহেতু বললেন আমি খোঁজ নেব। যেহেতু তদন্ত কমিটি করা হয়েছে, কমিটি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে। যারা দোষী তাদের শাস্তি পেতেই হবে।

জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি ২০১১ সালের পর বিদেশে যাইনি। তাই সিস্টেমটা জানার জন্য এসেছিলাম, কীভাবে ইমিগ্রেশন হয় সেসব দেখার জন্য। আমি দেখলাম আগের থেকে অনেক উন্নত হয়েছে।

ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে তিনি বলেন, ইন্টারপোলের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনতে কাজ চলছে। এ বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক আবেদন করা আছে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী ইন্টারপোল প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছে। ইন্টারপোল তো আমার কথা অনুযায়ী কাজ করবে না। এ ক্ষেত্রে তারা (ইন্টারপোল) তাদের আইন-কানুন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে চলমান ব্লকেড কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের যেন ভোগান্তি না হয় সে ব্যাপারে আপনারাও (সাংবাদিকরা) সচেতন করতে ভূমিকা পালন করতে পারেন। সবার দাবি-দাওয়ার আন্দোলনগুলো যদি রাস্তা ছেড়ে এমন একটি জায়গায় করা হয় যেখানে ভোগান্তি হবে না, তাহলে সেটা খুব ভালো হয়।

দাবিগুলো অযৌক্তিক বলব না উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, তারা (ছাত্র-জনতা) শুরুতে আন্দোলন যেখানে শুরু করেছিল সেখান থেকে শিফট করে অন্য জায়গায় গেছে। এরপরও জরুরি পরিবহন ও অ্যাম্বুলেন্স যাতায়াত করছে।


 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের কসমেটিকস বিশ্ববাজারেও সমাদৃত: শ্রম উপদেষ্টা

কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য ও সুরক্ষার বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি এবং শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য শিল্প খাতের অন্যতম সম্মাননা ‘গ্রিন ফ্যাক্টরি অ্যাওয়ার্ড-২০২৫’ পেয়েছে রিমার্ক এইচবি লিমিটেড। দেশের একমাত্র সেরা কসমেটিকস, স্কিন কেয়ার ও হোম কেয়ার পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে হিসেবে এই বিশেষ অ্যাওয়ার্ড অর্জন করলো রিমার্ক। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এই অ্যাওয়ার্ড শিল্প খাতের জন্য বিশেষ স্বীকৃতি।

মঙ্গলবার (২৪ জুন) ঢাকার ওসমানি স্মৃতি মিলনায়তনে রিমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল আম্বিয়া ও পরিচালক আলমগীর আলম সরকারের হাতে এই পুরষ্কার তুলে দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেন, শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান ও শ্রম সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।

দেশের অন্যতম প্রধান কসমেটিকস, স্কিনকেয়ার ও হোমকেয়ার পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান রিমার্কের অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগত সুবিধা সম্পন্ন ফ্যাক্টরি বাংলাদেশের কসমেটিকস খাতের প্রথম এবং পাইওয়নিয়ার। শুধু তাই নয় প্রথমবারের মতো কসমেটিকস ও স্কিন কেয়ার উৎপাদক কোন প্রতিষ্ঠান এই অ্যাওয়ার্ড লাভ করলো।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি এম সাখাওয়াত হোসেন রিমার্কের ভূয়সি প্রশংসা করে বলেন, “কসমেটিকসের বাজারে বিশ্বস্ততা এনে দিয়েছে রিমার্ক। মানসম্মত পণ্য উৎপাদন করে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে তারা। বিদেশি ক্রেতাদের কাছেও এখন বাংলাদেশি কসমেটিকস সমাদৃত হচ্ছে।”

শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান আশা করে বলেন, “আজ রিমার্কসহ যেসব প্রতিষ্ঠান অ্যাওয়ার্ড পেল, তাদের দেখে অন্যরাও উৎসাহিত হবে। দেশ এবং দেশের মানুষের স্বার্থে পরিবেশবান্ধব শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ার বিকল্প নেই।”

অনুষ্ঠানে রিমার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল আম্বিয়া বলেন, “সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসমৃদ্ধ রিমার্ক এইচবির উৎপাদন প্রক্রিয়া সিজিএমপি (গুড ম্যানুফ্যাকচারিং প্র্যাকটিস সার্টিফিকেট) এবং আইএসও স্বীকৃত যা নিশ্চিত করে যে সব পণ্য সর্বোচ্চ গুণগত ও নিরাপত্তা মানদণ্ড অনুসারে তৈরি করা হয়। এই উৎকর্ষতার প্রতিশ্রুতি রিমার্ক এইচবি লিমিটেডকে বাংলাদেশের কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার শিল্পে শীর্ষস্থানীয় হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। পাশাপাশি দেশে হালাল কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার পণ্য উৎপাদনে একটি মাইলফলক অর্জন করেছে।”

রিমার্ক এর আগে বাংলাদেশের কারখানায় উৎপাদিত গ্লোবাল ব্র্যান্ডের পণ্য নিয়ে দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত বিশ্বের সবচেয়ে বড় স্কিনকেয়ার প্রদর্শনী দুবাই ডার্মায় অংশ নেয়। সেখান থেকেও মধ্যপ্রাচ্যের বাজারে প্রায় ২ মিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আদেশ পায়। আগামী ২৫ জুন থেকে অনুষ্ঠেয় এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার পণ্যের প্রদর্শনী কসমোপ্রফ (সিবিই আশিয়ান)-২০২৫এ অংশ নিচ্ছে রিমার্ক। এই প্রদর্শনীতেও বাংলাদেশে উৎপাদিত কসমেটিকস ও স্কিন কেয়ারের বিভিন্ন ব্র্যান্ডের প্রায় ৫শতাধিক পণ্য প্রদর্শিত হবে। আশা করা হচ্ছে, থাইল্যান্ডের বাইরেও আশিয়ান দেশগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ নতুন রপ্তানি আদেশ পাওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হবে।

অ্যাসোসিয়েশন অব স্কিন কেয়ার বিউটি প্রোডাক্টস ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অব বাংলাদেশ (এএসবিএমইবি) জেনারেল সেক্রেটারী জামাল উদ্দীন বলেন, “রিমার্ক এইচবি লিমিটেড এর এই ফ্যাক্টরি বাংলাদেশে কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার পণ্য আমদানিনির্ভরতা কমিয়েছে। এতে যেমন উন্নত মানের পণ্যের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করেছে, তেমনি বিদেশি পণ্যের উপর নির্ভরতা কমিয়ে অর্থনীতিকেও শক্তিশালী করেছে। দেশে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দক্ষ জনশক্তি গড়তে বড় ভূমিকা রাখছে। আমরা যতটুকু দেখেছি, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের চেয়ে আমাদের দেশে রিমার্কের উৎপাদিত কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার পণ্য সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরী এবং অনেক উন্নত।” 

উদ্ভাবনী দক্ষতা, সাশ্রয়ী মূল্য ও গুণগত মানের উপর জোর দিয়ে কসমেটিকস ও স্কিনকেয়ার শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ করেছে রিমার্ক। নিবিড় গবেষণা ও অত্যাধুনিক উৎপাদন প্রক্রিয়ার সমন্বয়ে ভোক্তাদের চাহিদা মেটাতে কার্যকরী ও নিরাপদ স্কিনকেয়ার সমাধান দিয়ে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। এর ফলে একদিকে যেমন আমদানি নির্ভরতা কমছে অপরদিকে রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে অর্থনীতির চাকা সমৃদ্ধ করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ