দেশ ও দেশের বাইরে সমান জনপ্রিয় ব্যান্ড চিরকুট। এবার দীর্ঘ আট বছর পর তাঁরা চতুর্থ অ্যালবাম ‘ভালোবাসাসমগ্র’ প্রকাশ করেছে। এ অ্যালবামে থাকছে নতুন দশটি গান। শারমিন সুলতানা সুমির কথা-সুরে গানগুলো তৈরি করেছে চিরকুট। আর এর মাধ্যুমে দেশ বিদেশে চিরকুটের অগনিত শ্রোতাদের নতুন এ্যা লবামের অপেক্ষা শেষ হলো।
ব্যান্ডটি জানায়, স্পটিফাই, এ্যা পল মিউজিক, ইউটিউব, ফেইসবুক মিউজিকসহ সকল স্ট্রিমিং প্ল্যাাটফর্মে গানগুলো গত মঙ্গলবার থেকে শুনতে পাচ্ছেন শ্রোতোরা। তাঁরা আরও বলেন এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মত না। ব্যা ন্ড হিসেবে এ্যা লবাম আমাদের সবচেয়ে বড় অস্তিত্বের জায়গা। আমাদের আজকে ভাল ঘুম ভাল হবে। এরইমধ্যে ‘দামী’ নামে প্রথম গানটির ভিডিও প্রকাশের পর থেকে দারুণ সাড়া পাচ্ছে ব্যান্ডটি।আরও দুটি গান মিউজিক ভিডিও আকারে প্রকাশ করতে যাচ্ছে তারা।
নতুন অ্যালবাম প্রকাশ সম্পর্কে চিরকুট জানায়, ২৩ বছর এর পথচলায় চিরকুটের মূল শক্তি ছিল শ্রোতাদের ভালোবাসা। তার সাথে ছিল সকল প্রতিকূলতাকে পিছে ফেলে এগিয়ে চলা, নিজেদের, ক্রমাগত সৃষ্টিতে নিয়মিত নতুন গান, পরিশ্রম ও একাগ্রতা। আর এ সবের মুলে ছিল ব্যান্ডের প্রতি আমাদের নিষ্ঠা আর নি:স্বার্থ ভালবাসা। আর তাই আমরা মনে করি ভালোবাসার চেয়ে বড় শক্তি আর কিছু নেই। এমনিতে জীবন খুবই ছোট আর এই জীবনটাও ভালবাসার জন্য যথেষ্ট না। তাই এই অসীম স্পিরিটের সাথে থাকতে; নানা আঙ্গিকের ভালোবাসাকে কেন্দ্র করে দশটি গান নিয়ে শ্রোতাদের জন্য চিরকুটের উপহার ‘ভালোবাসাসমগ্র’।
শারমিন সুলতানা সুমি বলেন, এ্যালবাম মানে একদম আমাদের ভাবনা এবং কাজ- এর প্রতিফলন থাকা। চিরকুট আমাদের ধ্যা নের মত। আশা করছি আমাদের যারা ভালবাসেন, সেই জায়গাটা বুঝতে পারেন; আমাদের এ স্বতঃস্ফূর্ত নতুন বাংলা গানগুলো তাঁদের হৃদয়ে পৌঁছাবে। এছাড়া চিরকুট নিয়ে গত ২৩ বছরে আমাদের একান্ত যাত্রায় নিজস্ব একটা ভ্রমণ তৈরি হয়েছে। এই পথ পরিক্রমায় এত মানুষের দোয়া, ভালবাসা পেয়েছি যে ভালবাসার ভাষায়; গানে গানেই প্রতি নিয়ত তার প্রতিদান দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি মাত্র। আমরা অতি ক্ষুদ্র মানুষ। পৃথিবীতে ভাল কিছু করে যাওয়ার চেষ্টা করছি মাত্র।
তিনি আরও বলেন, “এই এ্যা লবামের একটা বিশেষ ব্যা পার হচ্ছে আমাদের বর্তমান চারজন সদস্যোরে জীবনের প্রথম সম্পূর্ণ স্টুডিও এ্যা লবাম এই ‘ভালোবাসাসমগ্র’। প্রান্ত, দিব্যী, ইয়ার আর শুভ্র। ওরা এটা নিয়ে খুব খুশি। আমার ওদের খুশি দেখতে অদ্ভুত আনন্দ লেগেছে। সব মিলিয়ে ভালোবাসার বহুমাত্রিকতায় এবারের অ্যলাবামের গানগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। স্বতঃস্ফুর্তভাবে যে কথাগুলো ভেতর থেকে এসেছে, যে সুর হৃদয়ে বেজেছে; তা দিয়েই ব্যান্ডের সবাই অনেক পরিশ্রম আর যত্ন করে গানগুলো তৈরি করেছি।’অ্যালবামের গানগুলো হল- দামী, হিয়া, উত্তরে ভাল না, আগুন, ডাক, কেন তুমি এলে না, ভালোবাসি তোমায়, দিন যায়, অসুখ সেরে যায়, দরদী।
অ্যালবামটির মিউজিক প্রডিউস করেছে চিরকুট। কো-প্রডিউসার হিসেবে কাজ করেছে তরুণ প্রতিভাবান শিল্পী, প্রডিউসার জাকির আহমেদ। গানগুলোর মিক্স মাস্টার করেছেন ইফতি খাইরুল আলম শুভ এবং তার সহযোগী ছিলেন জাকির এবং ইয়ার হোসেন। অ্যালবামের ৩টি গানের মিউজিক ভিডিও তৈরি হয়েছে। যেগুলো তৈরি করেছে লাইভটুওয়েব এবং আফফান আজিজ প্রিতুল। এ্যালবাম আর্ট ওয়ার্ক করেছেন রাকিব রহমান। গানগুলো রেকর্ড করা হয়েছে স্টুডিও কোকিল এবং বাটার রেকর্ডস-এ। পোস্ট প্রডাকশন এর কাজ হয়েছে বাটার রেকর্ডস-এ। বাকি গানগুলোর লিরিক্যাল ভিডিও দিয়ে ঘটছে অ্যালবামের দশটি গানেরই শুভমুক্তি।
গানের ডিস্ট্রিবউশন পার্টনার হিসেবে থাকছে বন ফায়ার। চিরকুট জানায়, গান রিলিজের পাশাপাশি, এ্যালবাম ‘ভালোবাসাসমগ্র’ উপলক্ষে খুব শিগগিরই বিশেষ একক কনসার্ট-এর ও পরিকল্পনা করছে ব্যান্ডটি।
ব্যান্ড ভ্রমনের বর্তমান লাইন আপ– শারমিন সুলতানা সুমি [কথা, সুর, কণ্ঠ], পাভেল আরিন[সাউন্ড প্রডাকশন, ড্রামস], রায়হান ইসলাম শুভ্র[রিদম গিটার],দিব্য নাসের[লিড গিটার, হারমনি ভয়েস],ইশমামুল ফারহাদ [বেইজ গিটার], রায়হান পারভেজ আকন্দ প্রান্ত [ব্যাঞ্জ,ম্যান্ডোলিন, ইউকুলেলে, গিটার, স্ট্রামস্টিক],ইয়ার হোসেন [কি বোর্ড, হারমোনিয়াম, ভায়োলিন[ফায়েজ সাগর সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার]
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ রক ট ব য ন ড দল ভ ল ব স সমগ র আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
পূজার ছুটিতেও পর্যটকশূন্য খাগড়াছড়ি
সাপ্তাহিক ছুটিসহ দুর্গাপূজা উপলক্ষে টানা চার দিনের ছুটি উপভোগ করছেন সরকারি চাকরিজীবীসহ অনেকে। আনন্দমুখর পরিবেশে ছুটি উপভোগ করতে অনেকেই ভ্রমণ করছেন পর্যটন স্পটগুলোতে। তবে, পর্যটকশূন্য রয়েছে বাংলাদেশের অন্যতম ভ্রমণ গন্তব্য খাগড়াছড়ি।
সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে এক স্কুলছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে জুম্ম ছাত্র-জনতা নামের একটি সংগঠন। খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারা উপজেলায় বিক্ষোভ চলাকালে ব্যাপক সহিংসতা হয়। পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বাঙালিদের সংঘর্ষও হয়। উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ায় সহিংসতাকবলিত এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে স্থানীয় প্রশাসন। এর প্রভাব পড়েছে পর্যটনেও। পূজার ছুটিতে পার্বত্য অঞ্চলের অন্যান্য জেলাতে পর্যটকদের ঢল নামলেও খাগড়াছড়িতে তা নেই।
অন্যান্য বছর পূজার ছুটিতে খাগড়াছড়ির পর্যটন স্পটগুলো জমজমাট থাকলেও এ বছর হয়েছে তার উল্টো। পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, গুটি কয়েক মানুষ ছাড়া তেমন পর্যটক নেই খাগড়াছড়ির স্পটগুলোতে। পর্যটননির্ভর ব্যবসায়ীরা এখন অলস সময় পার করছেন। সম্প্রতি খাগড়াছড়িতে ঘটে যাওয়া সহিংসতার কারণে এ জেলায় পর্যটকদের আগমন কমেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন পর্যটননির্ভর ব্যবসায়ীরা।
খাগড়াছড়ির মূল আর্কষণ আলুটিলা পর্যটনকেন্দ্র। সেখান থেকে দেখা যায় পুরো খাগড়াছড়ি শহর ও শহরের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া আঁকাবাঁকা চেঙ্গী নদীর মনোরম দৃশ্য এবং এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ের সৌন্দর্য। সেই পর্যটন স্পটে এখন হাতেগোনা কয়েকজন ছাড়া পর্যটক নেই। খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদ হর্টিকালচার পার্কেও পর্যটকের আনাগোনা খুবই কম।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা মো. ইসমাইল হোসেন ও চট্টগ্রাম থেকে আসা নিলুফার জাহান বলেছেন, পাহাড়ের মনোরম দৃশ্য দেখে তারা খুশি। কিন্তু, পর্যটক কম থাকায় তাদের ভালো লাগছে না।
পর্যটন ব্যবসায়ী টিটু চাকমা জানিয়েছেন, পর্যটক না আসায় তার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা অলস সময় কাটাচ্ছেন।
হোটেল গাইরিংয়ের ম্যানেজার প্রান্ত বিকাশ ত্রিপুরা ও অরণ্য বিলাসের ম্যানেজার আব্দর রশিদ সাগর জানিয়েছেন, পূজার ছুটিতে তাদের হোটেলের ৮৫ ভাগ সিট বুকিং ছিল। কিন্তু, সহিংস পরিস্থিতির কারণে বুকিং বাতিল করছেন পর্যটকরা।
খাগড়াছড়ি পর্যটন মোটেলের অভ্যর্থনা ব্যবস্থাপক মো. সুজনুর রহমান সাগর জানিয়েছেন, তাদের যা বুকিং ছিল, সব বাতিল করেছেন পর্যটকরা। আশা ছিল, পূজার ছুটিতে ভালো ব্যবসা হবে। সহিংসতার কারণে তাদের প্রচুর ক্ষতি হলো।
পর্যটন খাতকে হরতাল, অবরোধের আওতামুক্ত রাখার দাবি জানিয়েছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আশ্বস্ত করেছেন যে, পর্যটকরা এলে তাদের নিরাপত্তার দেওয়া হবে।
খাগড়াছড়িতে এখনো ১৪৪ ধারা বলবৎ আছে। জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি আরো স্বাভাবিক হলে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় করে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হবে।
ঢাকা/রফিক