রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড সরে গিয়ে নিচে পড়ে পথচারীর মৃত্যুর পর জনসাধারণের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে। এমন সময় মেট্রোরেল কাঠামোর ঝুঁকি আগেভাগেই শনাক্ত করতে একটি নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী ইরান সরদার।

ফার্মগেট মেট্রোরেল দুর্ঘটনা

গত ২৬ অক্টোবর দুপুর ১২টা ২০ মিনিটের দিকে ফার্মগেট এলাকার মেট্রোরেলের ৪৩৩ নম্বর পিলার থেকে একটি বিয়ারিং প্যাড সরে গিয়ে নিচের রাস্তায় পড়ে। এ সময় মাথায় আঘাত পেয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন পথচারী আবুল কালাম আজাদ (৩৫)। একই এলাকার মেট্রোরেল ৪৩০ নম্বর পিলার থেকে ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর একটি বিয়ারিং প্যাড সরে নিচে রাস্তায় পড়ে। তখন কোনো প্রাণহানি না হলেও মেট্রোরেল চলাচল বন্ধ ছিল প্রায় ১১ ঘন্টা।

সমস্যা কোথায়

মেট্রোরেলের ভায়াডাক্টে ব্যবহৃত বিয়ারিং প্যাড স্ট্রাকচারকে স্থিতিশীল রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। দীর্ঘ সময় ব্যবহার বা অতিরিক্ত কম্পনের ফলে এগুলো সরে যেতে পারে। বর্তমানে দুটি দুর্ঘটনার পর মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ পিলারে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করেছে। কিন্তু স্বয়ংক্রিয়ভাবে শনাক্ত করার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

মেট্রোরেল বিয়ারিং প্যাড নিরাপত্তা প্রযুক্তির উদ্ভাবন

এ অবস্থায় ‘মেট্রোরেল বিয়ারিং প্যাড সেফটি মনিটরিং সিস্টেম’ নামের একটি প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কম্পিউটিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস (সিআইএস) বিভাগের শিক্ষার্থী ইরান সরদার। রোবোটিকস ও আইওটি প্রযুক্তিতে গবেষণায় আগ্রহী এই তরুণ উদ্ভাবক জানান, তাঁর তৈরি সিস্টেমটি বিয়ারিং প্যাডে সেন্সর লাগিয়ে তাৎক্ষণিক নজরদারি করবে।

ইরান সরদার বলেন, ‘যেকোনো কম্পন বা কাঠামোগত বিচ্যুতি সেন্সর সঙ্গে সঙ্গে শনাক্ত করবে। কোন পিলারের প্যাড সরে গেছে তা মনিটরে দেখাবে। একই সঙ্গে অ্যালার্ম বাজবে এবং কন্ট্রোল রুমে সতর্কবার্তা যাবে। এতে দুর্ঘটনা ঘটার আগেই ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে।’ তিনি আরও বলেন, সরকার যদি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান করে, তবে তিনি প্রযুক্তিটিকে মেট্রোরেলে ব্যবহারযোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে পারবেন। এই প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে মেট্রোরেলের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ সক্ষমতা আরও বাড়বে এবং সাধারণ পথচারীরাও নিরাপদে রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে পারবে।

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাডের নিরাপত্তায় ইরান সরদারের উদ্ভাবনী যন্ত্রের মডেল.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নারায়ণগঞ্জে কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণ, দগ্ধ ৬ 

নারায়ণগঞ্জে একটি সিমেন্ট কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে ছয়জন দগ্ধ হয়েছেন। তাদের রাজধানী ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট ভর্তি করা হয়েছে।

শনিবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বন্দর থানা এলাকার মদনগঞ্জে ঘটনাটি ঘটে।

আরো পড়ুন:

ভূমিকম্পে হুড়োহুড়িতে আহত ২৯ শ্রমিক এখনো হাসপাতালে

হাসপাতালের কর্মচারীকে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন

দগ্ধরা হলেন- ফেনীর নাহিদ হাসান (২২), পাবনার কামাল হোসেন (৪৫), নোয়াখালীর তাইজুল ইসলাম (৩৫), জামালপুরের ফেরদৌস (৩৫), কুষ্টিয়ার তোরাব আলী (৫৫) এবং নারায়ণগঞ্জের আতিকুর রহমান (৪২)।

দগ্ধদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া মো. রহিম জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সিমেন্ট কারখানায় বয়লার থেকে বিস্ফোরণ হয়। পাশে থাকা ছয়জন দগ্ধ হন। দ্রুত তাদের ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়।

বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, ছয়জনের শরীররই মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়েছে। শ্বাসনালীও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের চিকিৎসা চলছে।

ঢাকা/অনিক/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ