ঢাকার ধামরাইয়ে ভূমিকম্পে হেলে পড়া ঝুঁকিপূর্ণ চারতলা ভবনটি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। রাইজিংবিডি ডটকমে খবর প্রকাশের পর উপজেলা প্রশাসন ও পৌর কর্তৃপক্ষ ভবনটি ভেঙে ফেলার নির্দেশনা দেয়।

শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল থেকে ভবনটি ভাঙা শুরু হয়।

আরো পড়ুন:

এক সেকেন্ডের ব্যবধানে ২ বার ভূমিকম্প: আবহাওয়া অধিদপ্তর

ভূমিকম্প আতঙ্ক: রবিবার বন্ধ থাকবে ঢাবি

এর আগে, ২০২৪ সালের মে মাসে আংশিক হেলে পড়ে ভবনটি। শুক্রবার ভূমিকম্পের পর আরো বেশি হেলে পড়লে ওই ভবনটি ভাঙার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

সরেজমিনে শনিবার দুপুরের দিকে ধামরাই পৌরসভার ঢুলিভিটা এলাকায় গড়ে ওঠা ধানসিঁড়ি হাউজিং প্রকল্পের ভেতরের মো.

জিয়াউদ্দিনের বাড়ির চারতলার ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভাঙার কাজ করতে দেখা যায় শ্রমিকদের।

ভবন মালিক ও স্থানীয়রা জানান, ধানসিঁড়ি হাউজিং প্রকল্পের ভেতরে পাশাপাশি দুটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। দুই ভবনের মধ্যে ১০ ফুট জায়গায় করিডরের মতো আরেকটি চারতলা ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। এটির ভেতর দিয়েই পেছনের দিকে অপর মূল ভবনে ঢুকতে হয়। এই করিডরের মতো অংশটিই পাশের ছয় তলা ভবনের ওপর হেলে পড়ে।

ভবনটিতে ঢুকে দেখা যায়, করিডরের তৃতীয় তলার অংশটি পাশের ছয়তলা ভবনের ওপর হেলে রয়েছে। তিন তলার বারান্দার রেলিংয়ের ইটের গাঁথুনির অংশটি ফেটে গেছে। তবে করিডরের আর কোথাও কোনো ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি। যদিও করিডর দিয়ে ঢুকে চারতলা ভবনের ভেতরেও কোনো ক্ষয়ক্ষতির চিত্র দেখা যায়নি।

ভবনের মালিকপক্ষ জানায়, ওই প্লটটিতে ছয়তলা ভবন করার অনুমতি ছিল। এর মধ্যে সেটি দুটি প্লট আকারে বিক্রি করে মালিক। চার শতাংশের একটি অংশ কিনে নেন মো. রফিক। তিনি সেখানে তিন তলা ভবন নির্মাণ করেন। আর পেছনের দুই শতাংশ জমি কিনে নেন মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিন। সেখানে তিনি নির্মাণ করেন চারতলা ভবন।

এছাড়া তিনতলা ভবন ও পাশের অপর ছয়তলা ভবনের মাঝখানে সড়কের মতো থাকা প্রায় ১০ ফুট চওড়া ও প্রায় ৪২ ফুট লম্বা জমি কিনে নিয়ে সেখানে করিডরের মতো বর্ধিত চারতলা সংযুক্ত ভবন নির্মাণ করেন জিয়াউদ্দিন। সেটিই ২০২৪ সালে প্রথম হেলে পড়ে। আর শুক্রবার এটি পুরোপুরি কাৎ হয়ে যায়। প্রশাসনের নির্দেশে সকাল থেকেই ভবনটি ভাঙার কাজ শুরু করে মালিকপক্ষ।

মালিকপক্ষ বলছে, নিজ ইচ্ছাতে কয়েকদিনের মধ্যেই ভবনটির ঝুঁকিপূর্ণ অংশ ভেঙ্গে ফেলতেন তারা। কিন্তু গতকাল হঠাৎ ভূমিকম্প হওয়ায় আজই ভাঙার কাজ শুরু করেছেন। অচিরেই ঝুঁকিপূর্ণ অংশ ভেঙ্গে ফেলা হবে বলে জানান তারা।

ভবন মালিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনের ছেলে মোনায়েম বলেন, “আসলে আগেই এটা আমাদের ডাঙার পরিকল্পনা ছিল। প্রশাসন যতটা ভাঙতে বলবে, সেটা ভাঙতাম। কিন্তু গতকাল যে ভূমিকম্প হয়েছে, তাতে একটা আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। যেজন্য দ্রুত এটা ভাঙার উদ্যোগ নেই। আজ সকাল থেকে ভাঙার কাজ চলছে। অর্ধেকের বেশি ভাঙা হয়ে গেছে। খুব দ্রুত ভাঙা শেষ হবে।”

সংবাদ প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসন ও ভবন মালিক ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটি ভাঙ্গা শুরু করায় স্থানীয় বাসিন্দারা স্বস্তি জানান। 

ধামরাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মামনুন আহমেদ অনীক বলেন, “শুক্রবার ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর আমরা ওখানে লোক পাঠাই। পরিদর্শনের পর ভবনটি ভেঙ্গে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের দিকে অবশ্যই আমরা দায়িত্বশীল থাকব।”

ঢাকা/সাব্বির/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ভ ম কম প ন ন র ম ণ কর জ য় উদ দ ন ভ ম কম প র ভ তর ই ভবন ভবন র চ রতল

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিপাইনে ‘চীনা গুপ্তচর’ মেয়রকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে অভিযুক্ত ফিলিপাইনের সাবেক মেয়র অ্যালিস গুও-কে একটি জালিয়াতি কেন্দ্র পরিচালনার ভূমিকার জন্য মানব পাচারের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর), তাকে এবং আরো তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ২ মিলিয়ন পেসো (৩৩ হাজার ৮৩২ ডলার ) জরিমানা করা হয়েছে। খবর বিবিসির। 

আরো পড়ুন:

চীন-জাপান উত্তেজনা: জাপানগামী প্রায় ৫ লাখ ফ্লাইট টিকিট বাতিল

চীনকে শান্ত করতে দূত পাঠাচ্ছে জাপান

কর্তৃপক্ষ মেয়র অ্যালিসের ছোট শহর বাম্বানে দেশের বৃহত্তম জালিয়াতি কেন্দ্রগুলোর মধ্যে একটি উদঘাটন করার পর অ্যালিস গুওর মামলাটি বছরের পর বছর ধরে ফিলিপাইনকে আচ্ছন্ন করে রেখেছে। অভিযানের পর প্রায় ৮০০ ফিলিপিনো এবং বিদেশিকে জালিয়াতির কেন্দ্র থেকে উদ্ধার করা হয়। এরপর গুওর বিরুদ্ধে অনলাইন ক্যাসিনোর আড়ালে জালিয়াতি কেন্দ্র এবং মানব পাচার সিন্ডিকেট পরিচালনার অভিযোগ আনা হয়। 

ফিলিপাইন কর্তৃপক্ষ গত জুলাই মাসে অ্যালিস গুওর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের তদন্ত শুরু করে। ৩৫ বছর বয়সী এই নারী এরপর কয়েক সপ্তাহ পলাতক থাকার পর গত ৪ সেপ্টেম্বর গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তিনি তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

তিনি আপিল করতে পারবেন কিনা তা এখনও স্পষ্ট নয়।

গুওর বিরুদ্ধে এখনও পাঁচটি মামলা চলমান রয়েছে, যার মধ্যে একটিতে তার বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে।

২০২২ সালে, গুও রাজধানী ম্যানিলার উত্তরে অবস্থিত বাম্বানের মেয়র নির্বাচিত হন। বাম্বানের বাসিন্দারা আগে বিবিসিকে বলেছিলেন যে, তিনি একজন যত্নশীল ও সহানুভূতিশীল নেতা হিসেবে পরিচিত ছিলেন।

কিন্তু ২০২৪ সালে, কর্তৃপক্ষ সেখানে একটি বড় জালিয়াতি কেন্দ্র উদঘাটন করার পর নীরব শহরটি জাতীয় আলোচনায় আসে। গুও প্রথমে ওই জায়গা সম্পর্কে তার সমস্ত জ্ঞান অস্বীকার করেছিলেন, কিন্তু পরবর্তীতে সিনেটের তদন্তে তার অফিসের কাছে অবস্থিত আট হেক্টর কেন্দ্রটি সনাক্ত করতে তার অক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে।

পরে জানা যায় যে কম্পাউন্ড- যার মধ্যে ৩৬টি ভবন ছিল- গুওর পূর্বে মালিকানাধীন জমিতে নির্মিত হয়েছিল।

কর্তৃপক্ষ গুওর জীবন কাহিনীতেও অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছে। গুও দাবি করেছিলেন, তিনি ফিলিপাইনে জন্মগ্রহণ করেননি, বরং কিশোর বয়সে তার পরিবারের সাথে চীন থেকে চলে এসেছিলেন। পরে তদন্তকারী সংসদ সদস্যরা দেখতে পান যে, তার আঙুলের ছাপ হুয়া পিং নামে একজন চীনা নাগরিকের সাথে মিলে যায়।

তাকে দ্রুতই মেয়রের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। মামলার আরো বিস্তারিত তথ্য প্রকাশের সাথে সাথে, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে তিনি নিখোঁজ হন, যার ফলে তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য চারটি দেশে আন্তর্জাতিক অভিযান শুরু হয়।

একই বছরের সেপ্টেম্বরে, তাকে ইন্দোনেশিয়ায় গ্রেপ্তার করা হয় এবং ফিলিপাইনে প্রত্যর্পণ করা হয়। তার ফিলিপাইনের পাসপোর্টও বাতিল করা হয়।

দক্ষিণ চীন সাগরের মালিকানা নিয়ে ফিলিপাইন ও চীনের বিবাদ অব্যাহত থাকায় গুওর মামলাটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ফিলিপাইনে মামলাটি ব্যাপক আলোচিত হলেও, অ্যালিসের বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পর্কে চীন এখনও কোনো মন্তব্য করেনি। 

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কেরানীগঞ্জে ‘হেলে পড়া’ ভবন খালি করতে প্রশাসনের নির্দেশ মানা হয়নি
  • শিক্ষকেরা চ্যাটজিপিটি থেকে কপি-পেস্ট করেন
  • মানবতাবিরোধী অপরাধে হাসিনার সাজা ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে পরীক্ষায় ফেলেছে
  • জকসু: ছাত্রদলের প্যানেল থেকে লড়বেন জুলাইয়ে গুলিবিদ্ধ অনিক
  • চীনের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে ফিলিপাইনে সাবেক মেয়রকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
  • ফিলিপাইনে ‘চীনা গুপ্তচর’ মেয়রকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড