রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে বিএনপির স্থানীয় প্রার্থীর দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসড়কে শুয়ে অবরোধ করেছেন দলের এক পক্ষের নেতা–কর্মীরা। আজ শনিবার বিকেলে পবা উপজেলার খড়খড়ি বাইপাস বাজারে এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে রাজশাহী-নাটোর মহাসড়কের খড়খড়ি বাইপাস বাজার এলাকায় নেতা–কর্মীরা আসতে থাকেন। রাস্তার দুই ধারে জড়ো হতে থাকেন বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের বিভিন্ন ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মীরা। রাজশাহী-নাটোর মহাসড়ক অবরোধ করে তাঁরা প্রায় এক ঘণ্টা ধরে মিছিল, স্লোগান ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে তাঁরা সড়কের মাঝখানে শুয়ে প্রতিবাদ জানান।

বিক্ষোভকারীদের দাবি, তৃণমূলের মর্যাদা যখন বারবার উপেক্ষিত হয়, তখন এইভাবে রাস্তায় শুয়ে পড়া ছাড়া তাঁদের আর কোনো পথ নেই। তাঁদের অভিযোগ, রাজশাহী বিভাগের ছয়টি সংসদীয় আসনের মধ্যে পাঁচটিতে স্থানীয় প্রার্থী মনোনয়ন পেলেও রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সহসম্পাদক শফিকুল হককে। তিনি দীর্ঘদিন স্থানীয় রাজনীতি থেকে দূরে ছিলেন এবং তিনি রাজশাহী-২ (সদর) আসনের ভোটার। এই কারণে তৃণমূলের মধ্যে তাঁর প্রতি ‘আস্থাহীনতা’ তৈরি হয়েছে বলে জানান নেতা–কর্মীরা।

মাঠপর্যায়ের কর্মীরা দাবি করেন, স্থানীয় নেতাকে উপেক্ষা করে বহিরাগতকে প্রার্থী দেওয়ায় সংগঠনের ভাঙন, কর্মীদের হতাশা ও নির্বাচনে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। এই আসনে যাঁরা বছরের পর বছর মামলা-হামলা মোকাবিলা করেছেন, লাঠির সামনে দাঁড়িয়েছেন, রাতের পর রাত ঘুমাতে পারেননি—প্রার্থী হওয়ার অধিকার তাঁদেরই।

পবা উপজেলা শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমরা যে নেতাকে চিনি, যিনি দলীয় পতাকা বহন করে গ্রেপ্তার হয়েছেন, পালিয়ে থেকেও দলের পক্ষে কাজ করেছেন, সেই জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক রায়হানুল আলমকে বাদ দিয়ে বহিরাগতকে মনোনয়ন দিলে তৃণমূল কখনোই সেটা মেনে নেবে না। আমরা দল ভাঙতে চাই না, কিন্তু তৃণমূলের ঘাম, রক্ত, ত্যাগকে যদি মূল্যায়ন না করা হয়, তাহলে কর্মীরা হতাশ হবেন, ক্ষুব্ধ হবেন।’

কর্মসূচি চলাকালে মহাসড়ক অবরোধ থাকায় রাজশাহী-নাটোর সড়কে কয়েক কিলোমিটার যানজট তৈরি হয়। বিক্ষোভ শেষে নেতা–কর্মীরা ঘোষণা দেন, স্থানীয় প্রার্থীর দাবিতে তাঁদের আন্দোলন শান্তিপূর্ণভাবে অব্যাহত থাকবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ম র ব এনপ অবর ধ

এছাড়াও পড়ুন:

ভূমিকম্পে পঞ্চবটি-মুক্তারপুর ফ্লাইওভারে ৭৭ নম্বর পিলারে ফাটলের চিহ্ন

শুক্রবার সকালে দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুভূত হওয়া ভূমিকম্পে পঞ্চপটিক টু মুক্তারপুর নির্মাণাধীন দ্বিতল সড়কের ৭৭ নম্বর পিলারের উপরের অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে।

বিষয়টি জানাজানি হতেই নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার কাশিপুর মুন্সিবাড়ি এলাকার স্থানীয়দের মাঝে চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকাবাসীরা জানান, ভূমিকম্পের আগে পিলারটি স্বাভাবিক ছিল। কিন্তু ভূমিকম্পের পরপরই উপরের অংশে স্পষ্ট ফাটল দেখা দিয়েছে। তবে পিলারের নিচের অংশ একেবারেই অক্ষত। 

এ বিষয়ে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা এ ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। তবে ফ্লাইওভারের কাজ করা কয়েকজন শ্রমিক জানান, ভূমিকম্পের আগ পর্যন্ত পিলারটিতে ফাটলের কোনো চিহ্ন ছিল না।

ফাটলটি কতটা ঝুঁকিপূর্ণ এবং দ্রুত মেরামতের প্রয়োজন আছে কি না—এ নিয়ে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত তদন্ত ও ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

২০২০ সালের ৮ ডিসেম্বর একনেক সভায় এ প্রকল্প অনুমোদিত হয়। প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ২৪২ কোটি ৭৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা। 

প্রকল্পটি জিওবি এবং বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের নিজস্ব অর্থায়নে বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের ১ জানুয়ারি। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

এদিকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া হওয়ায় প্রতিদিন হাজারো মানুষ এই সড়ক ও ফ্লাইওভারের নিচ দিয়ে যাতায়াত করেন। এমন অবস্থায় সাধারণ পথচারীদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা গেছে।

এ বিষয়ে পঞ্চবটি- মুক্তারপুর ফ্লাইওভারের প্রকল্প কর্মকর্তা মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, ফ্লাইওভারে কোথাও ফাটল ধরেনি। ফ্লাইওভারের নিচে ব্লক গুলোর চলটি (আস্তরণ) উঠে গেছে। তারপরও আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো রায়হান কবির জানান, পিলারের ব্লকে ফাটল দেখা যাওয়ার বিষয় আমি সংশ্লিষ্টদের জানাচ্ছি এবং বিষয়টি যাচাই করতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

তিনি আরও জানান, দ্রুত পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে যাতে কোন দুর্ঘটনা না ঘটে এবং সাধারণ মানুষের ঝুঁকি না থাকে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ