ইউক্রেনকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধের হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের
Published: 21st, November 2025 GMT
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনের সাথে গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগি এবং অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। মার্কিন-মধ্যস্থতায় শান্তি চুক্তির কাঠামো মেনে নেওয়ার জন্য চাপ দিতে এই হুমকি দিয়েছে ওয়াশিংটন। বিষয়টি সম্পর্কে অবগত দুই ব্যক্তির বরাত দিয়ে শুক্রবার রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে।
ওয়াশিংটন ইউক্রেনকে ২৮-দফা পরিকল্পনা দিয়েছে, যা যুদ্ধে রাশিয়ার কিছু প্রধান দাবিকে সমর্থন করে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে কিয়েভকে অতিরিক্ত অঞ্চল ছেড়ে দিতে হবে, তার সেনাবাহিনীর আকার হ্রাস করতে হবে এবং ন্যাটোতে যোগদান করা যাবে না।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সূত্রগুলো জানিয়েছে, পূর্ববর্তী যেকোনো শান্তি আলোচনার তুলনায় কিয়েভ ওয়াশিংটনের চাপের মধ্যে ছিল এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চায় আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে ইউক্রেন চুক্তির একটি কাঠামো স্বাক্ষর করুক।
বৃহস্পতিবার কিয়েভে মার্কিন সামরিক বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধিদল প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে দেখা করেন। ইউক্রেনে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এবং প্রতিনিধিদলের সাথে ভ্রমণকারী সেনাবাহিনীর জনসংযোগ বিভাগের প্রধান এই বৈঠকটিকে সফল বলে বর্ণনা করেছেন। তারা জানিয়েছেন, ওয়াশিংটন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউক্রেনের মধ্যে একটি নথি স্বাক্ষরের জন্য ‘তাৎক্ষণিক সময়সীমা’ চেয়েছিল।
শুক্রবার মিত্র ব্রিটেন, জার্মানি এবং ফ্রান্সের নেতাদের সাথে ফোনে কথা বলা জেলেনস্কি মার্কিন পরিকল্পনা প্রত্যাখ্যান না করার বা আমেরিকানদের অসন্তুষ্ট না করার বিষয়ে সতর্ক ছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে।
জেলেনস্কি বলেছেন, “এই যুদ্ধের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এবং তার দলের প্রচেষ্টাকে আমরা মূল্য দিই। আমরা আমেরিকান পক্ষের প্রস্তুত করা নথির উপর কাজ করছি। এটি অবশ্যই এমন একটি পরিকল্পনা যা বাস্তব এবং মর্যাদাপূর্ণ শান্তি নিশ্চিত করবে”
অবশ্য ২৮-দফা পরিকল্পনায় যাদের সাথে পরামর্শ করা হয়নি, তারা কিয়েভের প্রতি তাদের দৃঢ় সমর্থন ব্যক্ত করেছেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কাজা কালাস বলেছেন, “আমরা সবাই চাই এই যুদ্ধের অবসান হোক, কিন্তু এটি কীভাবে শেষ হবে তা গুরুত্বপূর্ণ। রাশিয়া যে দেশ আক্রমণ করেছে তার কাছ থেকে কোনো ছাড় পাওয়ার কোনো আইনি অধিকার নেই, শেষ পর্যন্ত যে কোনো চুক্তির শর্তাবলী মেনে নেওয়ার ইউক্রেনেরই সিদ্ধান্ত। এটি সবার জন্য একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক মুহূর্ত।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম র ক ন য ক তর ষ ট র ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
আগামী সরকারের বড় চ্যালেঞ্জ জ্বালানি সরবরাহ
আগামী নির্বাচিত সরকারের সামনে জ্বালানি সরবরাহ সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে বলে মনে করছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। তাই এখন থেকেই এ খাতের নতুন বিনিয়োগ করা না হলে ২০৩১ সালে সরবরাহ সংকট দেখা দেবে। তাই এ খাতের ধারাবাহিক নীতি কাঠামোর দাবি জানান ব্যবসায়ীরা।
আজ বুধবার গুলশানের একটি হোটেলে বিদ্যুৎ খাতের বিনিয়োগ পরিবেশ নিয়ে এক সেমিনারে এ কথাগুলো বলেন বক্তারা। ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) ও পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ এই সেমিনারের আয়োজন করে। এতে এ খাতের বিশেষজ্ঞ, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতারা বক্তব্য দেন।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন ইএমএ পাওয়ার লিমিটেডের পরিচালক আবু চৌধুরী। তিনি বলেন, ২০২৯ সালে দেশের বিদ্যুৎ চাহিদা ৩৫ হাজার মেগাওয়াট ছাড়িয়ে যাবে। তাই এখন থেকে নতুন বিনিয়োগ না করলে ২০৩১ সালে বিদ্যুৎ–সংকট দেখা দিতে পারে। বর্তমানে দেশের বিদ্যমান উৎপাদন সক্ষমতার ৪৮ শতাংশ আছে বেসরকারি খাতের হাতে। তাই নতুন নীতি তৈরিতে বেসরকারি খাতের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতে হবে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ম তামিম বলেন, আগামী সরকারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে জ্বালানি সরবরাহ। শুধু সরকারি সংস্থা বাপেক্সের ওপর নির্ভরতায় গত ২০ বছরে সাফল্য আসেনি। তাই গ্যাস অনুসন্ধানে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের আনা দরকার। এ নিয়ে এখন সিদ্ধান্ত না নিলে ২০৩১ সালে জ্বালানি সংকট তৈরি হবে।
চা–বাগানের ভূমি ব্যবহারের নীতি পরিবর্তন করা গেলে বাগান থেকে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে বলে মনে করছেন এমসিসিআইয়ের সভাপতি কামরান টি রহমান। তিনি বলেন, ১০ থেকে ১৫ বছরে রাস্তায় আমরা অনেক বৈদ্যুতিক গাড়ি দেখতে পাব। তখন বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। তাই এ খাতে নীতি কাঠামো প্রয়োজন। বেসরকারি খাত বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেন, বিনিয়োগের জন্য সামাজিক স্থিতিশীলতা প্রয়োজন। এটা সব দলের দায়িত্ব। নতুন বিনিয়োগ না হলে কর্মসংস্থান হবে না। এতে প্রতিবছর কর্মক্ষেত্রে যুক্ত হওয়া ২৫ লাখ তরুণ কাজ পাবে না। ফলে কাজ না পেয়ে সমাজে অস্থিরতা তৈরি হবে।
সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মাহমুদ হাসান খান, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর শুরা কাউন্সিলের সদস্য মোবারক হোসেনসহ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা।