রাজধানীর কাজীপাড়ায় মেট্রোরেলের লাইনের ওপর থেকে ককটেল উদ্ধারের ঘটনায় কাফরুল থানায় বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা করা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় জড়িত কাউকে এখনো শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।

কাফরুল থানা–পুলিশ জানিয়েছে, গতকাল শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পূর্ব কাজীপাড়া মেট্রোস্টেশনের কাছে লাইনের ওপর থেকে পুলিশ অবিস্ফোরিত অবস্থায় দুটি ককটেল উদ্ধার করে। গতকাল রাতেই ওই ঘটনায় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) একজন কর্মকর্তা বাদী হয়ে কাফরুল থানায় মেট্রোরেল আইনসহ বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করা হয়েছে।

আজ শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পাশের ভবন বা ভবনের ছাদ থেকে ককটেলগুলো ছোড়া হয়েছে, তবে সেগুলো বিস্ফোরিত হয়নি। সম্ভাব্য স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। এখন সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও তদন্ত করে ককটেল ছোড়ার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে জুলাই হত্যাকাণ্ডের মামলার রায়কে কেন্দ্র করে সপ্তাহখানেক ধরে দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটছে। পুলিশ এসবের জন্য কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের দায়ী করছে।

আজ সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে ম্যাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (এমআরটি) পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সিদ্দিকী তানজিলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্যে কারও পক্ষে মেট্রোস্টেশনে উঠে ককটেল নিক্ষেপ করা সম্ভব নয়। আবার পাশের ভবন থেকে ককটেল ছুড়ে মারলে তা বিস্ফোরিত হওয়ার কথা। আতঙ্ক ছড়াতে হয়তো কোনো কায়দায় মেট্রোরেলের লাইনের ওপর ককটেলসদৃশ এই বস্তু রেখেছে। তিনি আরও বলেন, মেট্রোস্টেশন এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে এমআরটি পুলিশ। তবে রেললাইনের নিরাপত্তার দায়িত্ব তাঁদের নয়।

জানতে চাইলে আজ সন্ধ্যায় ডিএমপির মুখপাত্র মুহাম্মদ তালেবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সিটিটিসির বোমা উদ্ধার ও নিষ্ক্রিয়করণ দল যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মেট্রোরেলের লাইনের ওপর থেকে উদ্ধার করা ককটেলগুলো নিষ্ক্রিয় করেছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল ক উদ ধ র ঘটন য় ককট ল

এছাড়াও পড়ুন:

কুষ্টিয়ায় কৃষককে গুলি করে হত্যায় মামলা

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় কৃষক রেফাজুল ইসলামকে (৪০) গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। নিহতের স্ত্রী তাসনিয়া খাতুন বাদী হয়ে শনিবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে ভেড়ামারায় থানায় হত্যা মামলা করেন।

ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রব তালুকদার মামলার করার তথ্য জানান। তবে পুলিশ ও নিহতের পরিবার মামলার আসামি সংক্রান্ত তথ্য এড়িয়ে গেছেন।

আরো পড়ুন:

স্ত্রীর গায়ে আগুন দিয়ে হত্যা, স্বামী গ্রেপ্তার

ভেড়ামারায় কৃষককে গুলি করে হত্যা

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) রাত ৮টার দিকে উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের রায়টা পাথরঘাটা এলাকায় রেফাজুলকে গুলি করে হত্যা করা হয়। নিহত রেফাজুল ইসলাম একই এলাকার জামাত আলীর ছেলে। তিনি কৃষিকাজের পাশাপাশি গরু কেনাবেচা ও রাজমিস্ত্রির কাজও করতেন।

এদিকে, গুলি করা দেখে ফেলায় দুর্বৃত্তরা চা বিক্রেতাকে লালন মন্ডলকে (৫০) ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করেছে। তাকে ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

নিহতের স্ত্রী তাসনিয়া খাতুন বলেন, ‘‘শুক্রবার (২১ নভেম্বর) রাতে আমার স্বামী বাড়িতে ছিলেন। ফোন পেয়ে কথা বলতে বলতে বাড়ির বাইরে বেড়িয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পরে গুলির শব্দ শুনতে পাই। বাড়ি থেকে আধা কিলোমিটার দূরে তার গুলিবিদ্ধ লাশ পড়ে ছিল। মুখের ভেতর অস্ত্র ঢুকিয়ে গুলি করা হয়েছে।’’ 

রেফাজুলের তেমন কোনো শত্রু ছিল না বলে জানিয়েছেন স্ত্রী তাসনিয়া খাতুন। 

আহত লালন মন্ডলের জামাতা অনিক বলেন, ‘‘আমার শ্বশুর গরিব মানুষ। রায়টা পাথরঘাটা এলাকায় চা বিক্রি করেন। ঘটনাস্থলের পাশে নদীতে তার ছেলে মাছ ধরছিল। ঘটনার সময় তিনি ছেলেকে খুঁজতে বেরিয়েছিলেন। তখন তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে যখম করে। মুখ বাঁধা থাকায় কাউকে চিনতে পারেননি তিনি।’’ 

ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) একরামুল হক বলেন, ‘‘আহত ব্যক্তির মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তার শরীরে গুলির কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। তিনি শঙ্কামুক্ত আছেন।’’ 

ওসি আব্দুর রব তালুকদার বলেন, ‘‘নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। কিছু তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ কাজ করছে। তদন্তের স্বার্থে এ মুহূর্তে তথ্য গোপন রাখা হচ্ছে। দ্রুত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে।’’ 

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ