Prothomalo:
2025-11-22@19:43:24 GMT

এক দিনে ৩ বার ভূমিকম্প

Published: 22nd, November 2025 GMT

দেশে গতকাল শনিবার সাড়ে সাত ঘণ্টায় তিনবার ভূমিকম্প হয়েছে। এর মধ্যে সকালে একবার ও সন্ধ্যায় পরপর দুবার ভূকম্পন অনুভূত হয়।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিট ৪ সেকেন্ডে রিখটার স্কেলে ৩ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়। এর এক সেকেন্ড পর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিট ৫ সেকেন্ডে দ্বিতীয়বার ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে এটির মাত্রা ছিল ৪ দশমিক ৩। প্রথমটির উৎপত্তিস্থল রাজধানীর বাড্ডায়, দ্বিতীয়টির উৎপত্তিস্থল নরসিংদীতে।

এর আগে গতকাল সকালে নরসিংদীতে আরও একটি মৃদু ভূমিকম্প হয়। জেলার পলাশ উপজেলায় সকাল ১০টা ৩৬ মিনিট ১২ সেকেন্ডে ভূকম্পনটি অনুভূত হয়। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৩ দশমিক ৩।

এর আগে গত শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে রাজধানীসহ আশপাশের জেলাগুলো। এদিনের ভূমিকম্পে শিশুসহ ১০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ছয় শতাধিক ব্যক্তি। সবচেয়ে বেশি—পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে উৎপত্তিস্থল নরসিংদীতে। এ ছাড়া ঢাকায় চারজন ও নারায়ণগঞ্জে একজন মারা যান। ভূমিকম্পের সময় আতঙ্কে কেউ কেউ ভবন থেকে লাফিয়ে পড়েন। অনেকেই ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসেন। ভূমিকম্পে কিছু ভবন হেলে পড়ে ও ফাটল দেখা দেয়।

নরসিংদীতে আতঙ্ক

শুক্রবারের ভূমিকম্পের আতঙ্ক এখনো তাড়া করছে নরসিংদীবাসীকে। এর মধ্যে গতকাল সকাল ও সন্ধ্যায় দুবার অল্প মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়। এ দুটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলও নরসিংদী। স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, আবার ভূমিকম্প হওয়ার আশঙ্কায় শুক্রবার রাতে তাঁরা ঘুমাতে পারেননি।

নরসিংদী শহরের বহুতল ভবন হাজেরা টাওয়ারের বাসিন্দা গৃহবধূ শাহনাজ আক্তার গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল (শুক্রবার) ভূমিকম্পের সময় দুই সন্তান ছিল পাশে। একটির বয়স ছয়, আরেকটির তিন। তীব্র ঝাঁকুনিতে ভয়ে–আতঙ্কে বড়টিকে রেখে, ছোটটিকে কোলে নিয়ে দৌড় দিয়েছিলাম। ফিরে এসে দেখি বড়টা কান্না করছে। আমার তো তখন কিংকর্তব্যবিমূঢ় অবস্থা। সারা রাত একটুও ঘুমাতে পারিনি, আবার ভূমিকম্প হওয়ার আতঙ্কে।’

ভূমিকম্প টের পেয়েই পাঁচতলা থেকে নিচে নেমে এসেছিলেন নরসিংদীর একটি বেসরকারি কলেজের শিক্ষক ও ব্রাহ্মন্দী এলাকার বাসিন্দা আনিসুর রহমান। তিনি বলেন, ‘দেখি, নারী-শিশুসহ সবাই চিৎকার করছে, আর আল্লাহকে ডাকছে। বিল্ডিংয়ে এখন থাকতেই ভয় করছে। কখন আবার ভূমিকম্প হয়, ভয়ে আতঙ্কে সারা রাত দুচোখের পাতা এক করতে পারিনি।’

পলাশের কাঁচা সড়কে ফাটল দেখা দেওয়া পলাশ রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা শাকিল আহমেদ বলেন, ‘ভূমিকম্পের (শুক্রবার) পর থেকে এখনো আমরা আতঙ্কের মধ্যেই আছি। মনে হলেই বুকের মধ্যে ধড়ফড় করে। রাতে বাচ্চাদের নিয়ে ঘুমাতে পর্যন্ত পারি নাই। আল্লাহ, আমাদের রক্ষা করছে।’

পলাশের গজারিয়া এলাকার রহিম মিয়া টিনের ঘরে বসবাস করেন। তিনি বলেন, ‘এমন ঝাক্কা জীবনেও খাই নাই। মনে হইতেছিল, ঘর ভাইঙ্গা ওপরে পড়ব। আজ সারা দিন ধরে আতঙ্কে আছি। ঘরের সবাইরে সতর্ক কইরা বলছি, বেশির ভাগ সময় ঘরের বাইরে থাকতে।’

মালিতা এলাকার বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, ‘এলাকায় মাটির ঘরের দেয়াল ধসে একজনের মৃত্যুর পর আতঙ্ক আরও বেড়ে গেছে। সবাই মিলে সতর্ক থাকার চেষ্টা করছি। কিন্তু আতঙ্ক কাটছে না।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জেলার প্রধান দুটি সরকারি হাসপাতালে গতকাল পর্যন্ত শতাধিক ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আহত আর কেউ চিকিৎসাধীন নেই। ১০০ শয্যাবিশিষ্ট নরসিংদী জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ এন এম মিজানুর রহমান ও নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ফরিদা গুলশানারা কবির এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাত সদস্যের একটি দল পলাশসহ বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা থেকে ধসে পড়া মাটির নমুনা সংগ্রহ শুরু করেছে। মাটিতে ফাটল দেখা যাওয়া পলাশ রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ ও ঘোড়াশাল ডেইরি ফার্মেও যায় প্রতিনিধিদলটি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড.

আ স ম ওবায়দুল্লাহ বলেন, প্রাথমিকভাবে নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। পরীক্ষা–নিরীক্ষার পর ভূমিকম্পের ধরন ও গভীরতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে কমিটি

ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদী জেলার বিভিন্ন স্থানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে কাজ করছে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি। পাশাপাশি ভূমিকম্পে ফাটল ধরা সরকারি–বেসরকারি ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা চিহ্নিত করার উদ্যোগ নিয়েছে তারা। এ ছাড়া নরসিংদী শহরে হেলে পড়া ভবন, ফাটল ধরা ভবন চিহ্নিত করতে চার সদস্যবিশিষ্ট কমিটি করেছে পৌর কর্তৃপক্ষ।

নরসিংদী পৌরসভার প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপপরিচালক মো. মনোয়ার হোসেন জানান, পৌর নির্বাহী প্রকৌশলীকে প্রধান করে গঠন করা এ কমিটি বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করবেন। পরবর্তী সময়ে জেলা পর্যায়ের কমিটি মোট ক্ষতির পরিসংখ্যান নির্ধারণ করবে।

জেলা প্রশাসক আনোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামীকাল (আজ) দুপুর ১২টায় জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির মিটিং আহ্বান করা হয়েছে। ওই মিটিংয়ে আমরা জেলাজুড়ে সব ক্ষয়ক্ষতির পর্যালোচনা করব এবং পরবর্তী সময়ে ভূমিকম্পে করণীয় বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’ গতকাল আরও দুবার ভূকম্পন অনুভূত হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক বলেন, শুক্রবারের ভূমিকম্পের তুলনায় শনিবারের দুটি ভূমকম্পের মাত্রা ছিল কম। তবে আতঙ্কের বিষয়, এ দুটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থলও নরসিংদী। তাই সবাইকে আরেকটু বেশি সতর্ক থাকতে হবে।

ভূমিকম্পে নিহত বাবা-ছেলেসহ পাঁচজনের পরিবারকে ২৫ হাজার করে টাকা দিয়েছে জেলা প্রশাসন। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবু তাহের মো. সামসুজ্জামান জানান, শুক্রবার রাতে এবং গতকাল সকালে নিহত ব্যক্তিদের পরিবারের সদস্যদের হাতে এসব টাকা তুলে দেওয়া হয়। নিহত ব্যক্তিদের সবার দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস–পরীক্ষা স্থগিত

পরপর দুই দিন ভূমিকম্প হওয়ায় শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা আতঙ্কিত হওয়ায় এবং কয়েকজন শিক্ষার্থীর আহত হওয়ার ঘটনায় আজ রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের অভ্যন্তরীণ ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। গতকাল রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। স্থগিত হওয়া পরীক্ষার নতুন সময়সূচি পরে জানানো হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

এদিকে গতকাল সন্ধ্যায় ভূমিকম্প হওয়ার পর ছাত্রী হলগুলোতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আতঙ্কিত হয়ে হুড়োহুড়ি করে সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এর মধ্যে শামসুন নাহার হলের তিনজন, বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হলের একজন ও রোকেয়া হলের একজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ভ ম কম প হওয় ব র ভ ম কম প ভ ম কম প র শ ক রব র র পল শ র পর ক ষ এল ক র সন ধ য অন ভ ত আতঙ ক হওয় র গতক ল সরক র ত হওয়

এছাড়াও পড়ুন:

‘মধুপুর ফল্টের কারণে ঢাকা উচ্চমাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে’

বাংলাদেশ ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে। দেশের তিনটি প্রধান ভূ-ফাটলের মধ্যে প্রথমটি ‘মধুপুর ফল্ট’ নামে পরিচিত। এ কারণে টাঙ্গাইল ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঝুঁকি রয়েছে বলে মনে করছেন টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এএসএম সাইফুল্লাহ। 

শুক্রবার (২১ নভেম্বর) সকাল ১০ টা ৩৮ মিনিটে টাঙ্গাইলসহ সারা দেশে ৫ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০ টা ৩৬ মিটিটেও বাইপাইলে ৩ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে। দুটির উৎপত্তিস্থল ছিল নরসিংদী। যেটি মধুপুর ফল্টের ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে। এতে সারা দেশে অন্তত ১১ জন নিহত ও কয়েক হাজার মানুষ আহত হয়েছে। সব মিলিয়ে দেশের মানুষের মধ্যে এখনো আতঙ্ক কাটেনি।

আরো পড়ুন:

সাড়ে ৭ ঘণ্টা পর আবার ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল রাজধানীর বাড্ডা

বাইপাইলে নয়, ৩.৩ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল নরসিংদী

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের ২০২৪ এর জুনে এক গবেষণায় দেখা গেছে, মধুপুর ফল্টে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূকম্পনে ঢাকার ৮ লাখ ৬৪ হাজার ৬১৯টি থেকে ১৩ লাখ ৯১ হাজার ৬৮৫টি ভবন ধসে বা ভেঙে পড়তে পারে, যা মোট ভবনের ৪০ দশমিক ২৮ থেকে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ঢাকায় ভবন ধসের আশঙ্কার এ সর্বনিম্ন ও সর্বাধিক শতাংশের গড় করলে দাঁড়ায় ৫২ দশমিক ৫৩ শতাংশ। 

২০১২ সালে এক ভূমিকম্পে মধুপুরের অরণখোলা ইউনিয়নের বোকারবাইদ গ্রামে ভূমিকম্পে এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে ফাটল দেখা দেয়। যার ব্যাস ছিলে ৫/৬ ইঞ্চি ও গভীরতা ২৫ থেকে ২৬ ফুট। সেই সময় থেকে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

মধুপুর এলাকার ব্যবসায়ী গোলাম ফারুক বলেন, ‘‘শুক্রবার (২১ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১০টার পর যখন ভূমিকম্প হয়, তখন পরিবার নিয়ে বাড়িতে ছিলাম। আমাদের টিনের ঘর অনেক কেঁপেছে। চোখে যা দেখেছি, সেই আতঙ্ক এখনো আমার কাটেনি।’’ 

টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. জানে আলম বলেন, ‘‘ভূমিকম্পে কিছু ক্ষতি চোখে দেখা যায়, আবার কিছু ক্ষতি চোখে দেখা যায় না। শুক্রবার যে ভূমিকম্প হয়েছে, এই মাপের ভূমিকম্প আবার হলে কয়েক গুণ বেশি ক্ষতি হবে। কারণ অনেক ভবণ দুর্বল হয়েছে। যা চোখের দৃষ্টিতে দেখা যাচ্ছে না। এটি সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘মধুপুর, ধনবাড়ী, ঘাটাইল, সখীপুরসহ আশপাশের ফায়ার সার্ভিস অফিসে সবচেয়ে দক্ষ ও কর্মঠ কর্মীদের পদায়ন করা আছে।’’ 

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এএসএম সাইফুল্লাহ বলেন, ‘‘মধুপুরের ফল্টটি অনেক পুরনো। প্রায় একশ বছর হয়েছে। এখানে বড় ধরনের ভূমিকম্প হয়নি। আমাদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, ছোট ছোট ভূমিকম্প বড় ধরনের ভূমিকম্পের বার্তা দেয়। যে কারণে মধুপুর ফল্টের আওতাধীন এলাকাগুলোকে ঝুঁকিপূর্ণ বলা হয়। এর প্রভাব পড়তে পারে চারদিকে ১০০ কিলোমিটার এলাকায়। এর আগে ভূমিকম্প হয়ে মধুপুরে বড় ফাঁটল হয়।’’

তিনি বলেন, ‘‘দেশের নগরায়নে যে বহুতল ভবন করা হয়, সেখানে বিল্ডিং কোড মানা হয়ই না। টাঙ্গাইল শহরেও না, ঢাকার শহরেও না। বহুতল ভবনের উচ্চতা অনুযায়ী চারপাশে জায়গা রাখার কথা, সেগুলোও মানা হয় না। টাঙ্গাইলের ভবনগুলোর ক্ষেত্রেও সমীক্ষা ছাড়াই প্লান পাস করে দেওয়া হয়। যে প্লান পাস হয়, তার চেয়ে উচু ভবন তৈরি হচ্ছে। যে কোনো দুর্যোগে বিপদগ্রস্ত মানুষকে উদ্ধার করা যাবে না। কারণ তাদের উদ্ধার করতে যে জায়গা প্রয়োজন, সেই জায়গা রাখা হয়নি। রাস্তাগুলোও খুব সংকুচিত। তাই দুর্যোগ হলে মানুষ আটকা পড়ে প্রাণহানি ঘটবে, জীবননাশের শঙ্কা থাকবে।’’ 
অধ্যাপক ড. এএসএম সাইফুল্লাহ বলেন, ‘‘একবার ভূমিকম্প হলে অনেক আলোচনা হয়। পরে তা কার্যকর হয় না। ভূমিকম্পের হতাহতের ঘটনা বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, উপর থেকে র‌্যালিং ভেঙে পড়ে মানুষ মারা গেছে। কারণ র‌্যালিং নিয়ম অনুযায়ী তৈরি করা ছিল না। আবার কেউ দেয়াল ভেঙে মারা গেছে। এমন তো হওয়ার কথা না। বড় ধরনের ভবন ধসে গেলে কী হবে, সেটা এখান থেকে বোঝা যাচ্ছে।’’ 

তিনি আরো বলেন, ‘‘চিলিতে ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে মাত্র ৫ হাজার মানুষ মারা গেছে। কারণ সেখানে বিল্ডিং কোড মানা হয়। প্রতিটি বিল্ডিংয়ের পাশে অতিরিক্ত জায়গা থাকার কথা। কিন্তু আমাদের দেশে এক বিল্ডিংয়ের সঙ্গে আরেক বিল্ডিং লাগানো। মানুষ বিল্ডিং থেকে বের হয়ে যাবে কোথায়। বাধ্য হয়ে ওই লোকটি ভবনের নিচে পড়ে মারা যাবে। এ সব বিষয়ে মানুষকেও সচেতন করা হয় না ও গুরত্ব দেওয়া হয় না। আবার এ বিষয়ে পড়াশোনা নেই বললেই চলে।’’

ঢাকা/কাওছার/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এক সেকেন্ডের ব্যবধানে ২ বার ভূমিকম্প: আবহাওয়া অধিদপ্তর
  • সন্ধ্যায় রাজধানীতে দুইবার ভূমিকম্প
  • ‘মধুপুর ফল্টের কারণে ঢাকা উচ্চমাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে’
  • ঢাকা ও আশপাশে ২ দিনে ৩ ভূমিকম্প
  • সাড়ে ৩১ ঘণ্টায় তিনবার ভূমিকম্প
  • ঢাকা ও আশপাশের জেলায় ভূমিকম্প, উৎপত্তিস্থল নরসিংদী
  • বাইপাইলে নয়, ৩.৩ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল নরসিংদী
  • বাইপাইলে মৃদু কম্পন, উৎপত্তিস্থল সেখানেই
  • ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি জাতিসংঘ ও যুক্তরাষ্ট্রের সংহতি প্রকাশ