বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে রাজশাহী ও ময়মনসিংহে রেলপথ অবরোধ
Published: 22nd, November 2025 GMT
৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে রাজশাহী ও ময়মনসিংহে রেলপথ অবরোধ করেছেন প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা।
আজ শনিবার বিকেল পৌনে চারটার দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা-রাজশাহী রেলপথ অবরোধ করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির একদল শিক্ষার্থী। আর ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা বিকেল পাঁচটার দিকে ক্যাম্পাস সংলগ্ন রেলপথ অবরোধ করেন। এর মধ্যে বাকৃবির শিক্ষার্থীরা রাত আটটার দিকে অবরোধ তুলে নিলেও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাত পৌনে ১১টার দিকে এ প্রতিবেদন লেখার সময় অবরোধ চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়বিকেল পৌনে চারটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়সংলগ্ন স্টেশন বাজার রেললাইন অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। এতে রাজশাহী থেকে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের রেল যোগাযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, ৪৭তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় অস্বাভাবিকভাবে কম। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। তাঁরা দাবি করেন, প্রথমবার লিখিত পরীক্ষায় বসতে যাওয়া পরীক্ষার্থীদের জন্য মাত্র দুই মাস সময় দেওয়া বৈষম্যমূলক। এত কম সময়ে ১ হাজার ১০০ নম্বরের সিলেবাস শেষ করা সম্ভব নয়।
অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীরা ‘সময় চাই, সময় চাই, যৌক্তিক সময় চাই’, ‘এক দুই তিন চার, পিএসসি স্বৈরাচার’, ‘সবাই পায় ছয় মাস, আমরা কেন দুই মাস’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রোনমি অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার এক্সটেনশন বিভাগের শিক্ষার্থী আনিকা আকতার বলেন, ‘প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পর লিখিতের জন্য মাত্র দুই মাস সময় দেওয়া হয়েছে, এটা অযৌক্তিক। আমরা শুধু যৌক্তিক সময় চাই।’
মেহেদি হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে যৌক্তিক সময়ের দাবিতে আন্দোলন করছি। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পরীক্ষার্থীরা আমাদের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়েছে। তবু পিএসসির অবস্থান একই রয়ে গেছে। আমরা চাই, পরীক্ষার সময় পেছানো হোক, যাতে সবাই সমানভাবে প্রস্তুতি নিয়ে প্রতিযোগিতা করতে পারে।’
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়৪৭ তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সময়সূচিকে ‘অবাস্তব ও বৈষম্যমূলক’ উল্লেখ করে তিন ঘণ্টা রেললাইন অবরোধ করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) পরীক্ষার্থীরা। আজ বিকেল পাঁচটা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত তাঁরা এ কর্মসূচি পালন করেন। এর ফলে ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী তিস্তা ও মহুয়া এক্সপ্রেস এবং ঢাকা থেকে মোহনগঞ্জগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের চলাচল বিঘ্নিত হয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, শনিবার বিকেলে ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হল থেকে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ আব্দুল জব্বার মোড়ে আসেন। পরে তারা আব্দুল জব্বার মোড় সংলগ্ন রেললাইনের ওপর অবস্থান করেন।
৪৭ তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি পেছানোর দাবিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রেলপথ অবরোধ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ল খ ত পর ক ষ পর ক ষ র সময় র লপথ অবর ধ পর ক ষ র থ সময় চ ই ব স এস
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রীপুরে ভূমিকম্পে আহত ২৯ জনের চিকিৎসা চলছে, কারখানার কার্যক্রম স্বাভাবিক
ভূমিকম্পের সময় গাজীপুরের শ্রীপুরের ডেনিমেক লিমিটেড নামের তৈরি পোশাক কারখানার ভবন থেকে বের হতে গিয়ে আহত ব্যক্তিদের মধ্যে ২৯ জনের চিকিৎসা চলছে। আজ শনিবার পুরোদমে চলেছে কারখানার কার্যক্রম। সংস্কার করা হচ্ছে ক্ষতিগ্রস্ত প্রধান ফটক।
শনিবার দুপুরে ডেনিমেক পোশাক কারখানার সামনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে মূল ফটকের সামনে কারখানার কর্তৃপক্ষের লোকজন উপস্থিত হয়েছেন। ফটকের একটি অংশ সংস্কার করতে কাজ করছেন তাঁরা। গতকাল শুক্রবার ভূমিকম্পের সময় মূল ফটক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আতঙ্কিত হয়ে বের হওয়ার সময় লোকজনের চাপে মূল ফটকটি খোলা যায়নি। পরে সেটি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে শ্রমিকেরা বাইরে বের হয়ে আসেন। এ সময় তাড়াহুড়ো করে বের হওয়ার সময় আহত হয়েছিলেন কারখানার অনেক শ্রমিক।
আরও পড়ুনগাজীপুরে ভূমিকম্পের সময় আহত ২৫২ জন হাসপাতালে ভর্তি, বেশির ভাগ শ্রমিক২১ নভেম্বর ২০২৫কারখানার দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানায়, আজ দুপুর নাগাদ ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৮ জন ও তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১১জন চিকিৎসা নিচ্ছেন।
কারখানার শ্রমিক মো. রাসেল মিয়া বলেন, হঠাৎ ঝাঁকুনি অনুভব করায় শ্রমিকেরা দ্রুত কারখানার বিভিন্ন তলা থেকে বাইরে বের হতে থাকেন। এ সময় কারখানার ভেতরের ফটক খোলা থাকলেও বাইরের মূল ফটক বন্ধ ছিল। বিপুলসংখ্যক শ্রমিক কারখানার ভবন থেকে বের হয়ে ফটকের ভেতরের দিকের খোলা জায়গায় ভিড় করেন। এতে মানুষের চাপে মূল ফটক খোলা যায়নি। একপর্যায়ে শ্রমিকেরা সম্মিলিতভাবে ধাক্কা দিলে ফটকটি কাঠামো থেকে ছুটে যায়। পরে শ্রমিকেরা কারখানার বাইরের সড়কে বের হয়ে আসেন।
অপর শ্রমিক আবদুল ওয়াহাব বলেন, অনেকেই পদদলিত হয়ে আহত হয়েছেন। কারও হাতে, কারও পায়ে, কারও কোমরে আঘাত পেয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগ নারী শ্রমিক। তবে আহতরা প্রায় সবাই চিকিৎসা নিয়ে কাজে ফিরেছেন।
ডেনিমেক লিমিটেড কারখানার পরিচালক (প্রশাসন) রুবেল মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, আহত ব্যক্তিদের মধ্যে দুটি হাসপাতালে মোট ২৯ জন চিকিৎসাধীন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই শনিবারই হাসপাতাল থেকে ছাড় পাওয়ার কথা। তাঁদের চিকিৎসার ব্যয়, পারিবারিক সাপোর্ট, যাতায়াতসহ সব ধরনের সহযোগিতা কারখানার পক্ষ থেকে করা হচ্ছে। কারখানা যথানিয়মে চলমান আছে।
শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের তথ্য অনুযায়ী ওই ঘটনায় হাসপাতালটিতে প্রায় ১৫০ জন আহত শ্রমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে ময়মনসিংহ, ঢাকা ও শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। অনেকে রাতের মধ্যেই চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন।