ডিম্বাণু সংরক্ষণ: কটাক্ষের মুখে নীরবতা ভাঙলেন রাম চরণের স্ত্রী
Published: 21st, November 2025 GMT
দক্ষিণী সিনেমার মেগাস্টার রাম চরণ। ২০১২ সালে ১৪ জুন উপাসনার সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়েন তিনি। বিয়ের ১০ বছর পর প্রথম সন্তানের বাবা-মা হন এই দম্পতি। আবারো বাবা-মা হতে যাচ্ছেন তারা। কয়েক দিন আগে আইআইটি হায়দরাবাদে ডিম্বাণু সংরক্ষণ নিয়ে মন্তব্য করার পর কটাক্ষের শিকার হন উপাসনা, তৈরি হয় বিতর্ক। সময়ের সঙ্গে তা বাড়তে থাকে। এ পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে নিজের অবস্থান পরিস্কার করলেন উপাসনা।
রাম চরণের স্ত্রী উপাসনা তার মাইক্রোব্লগিং সাইট এক্সে (টুইটার) দীর্ঘ একটি বার্তা দিয়েছেন। তার শুরুতে তিনি বলেন, “আমি একটি সুস্থ বিতর্ক তৈরি করতে পেরে আনন্দিত। আপনাদের সম্মানজনক প্রতিক্রিয়ার জন্য ধন্যবাদ।”
আরো পড়ুন:
বারাণসী: বাজেট ১৮০৩ কোটি, প্রচারে ব্যয় ২৭৭ কোটি টাকা!
ঘনিষ্ঠ দৃশ্যে নগ্ন মোহনলাল, শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা নিয়ে মীরা
এরপর উপাসনা বলেন, “বিশেষ সুবিধা যে আনন্দ ও চাপ নিয়ে আসে, সে বিষয়ে আমার মতামত শোনার জন্য সঙ্গে থাকুন। আমার ছবিগুলো দেখতে ভুলবেন না! সেখানে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য রয়েছে, যা আপনাদের সঠিক মন্তব্য করতে সাহায্য করবে। আর সকল বিচক্ষণদের বলছি, আরো বেশি নারীকে কর্মক্ষেত্রে আনার জন্য চলুন একসঙ্গে কাজ করি।”
এই নোটের সঙ্গে উপাসনা তার ব্যক্তিগত ‘ফ্যাক্ট চেক’ শেয়ার করেন, যেখানে নিজের বিয়ে, প্রজনন ও সময়–ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে কিছু অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। উপাসনা বলেন, “আমি ২৭ বছর বয়সে ভালোবাসা ও একসঙ্গে থাকার জন্য বিয়ে করেছি—এটা নিজের সিদ্ধান্ত ছিল। ২৯ বছর বয়সে ডিম্বাণু সংরক্ষণ করি; এটি ব্যক্তিগত ও স্বাস্থ্যগত কারণে করেছি। ৩৬ বছর বয়সে আমার প্রথম সন্তানের জন্ম হয় এবং এখন ৩৯ বছরে আমি যমজ সন্তানের অপেক্ষায় আছি। আমার কাছে বিয়ে ও ক্যারিয়ার একে অপরের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়—দুটোই পরিপূর্ণ জীবনের জন্য সমান অর্থপূর্ণ। কিন্তু সময় নির্ধারণ করা আমার সিদ্ধান্ত। এটা বিশেষাধিকার নয়, আমার অধিকার।”
আইআইটি হায়দরাবাদে বক্তব্য রাখতে গিয়ে উপাসনা বলেছিলেন, “নারীদের জন্য সবচেয়ে বড় ইনসুরেন্স হলো—ডিম্বাণু সংরক্ষণ করা। এতে তারা নিজেরাই ঠিক করতে পারেন, কখন বিয়ে করবেন, কখন সন্তান নেবেন, কখন আর্থিকভাবে স্বাধীন হয়ে নিজের সিদ্ধান্ত নেবেন।”
এ মঞ্চে উপাসনা দর্শক সারিতে থাকা সকলের কাছে জানতে চান, কারা কারা বিয়েতে আগ্রহী? মেয়েদের তুলনায় বেশি সংখ্যক ছেলে হাত তুলেন। এরপর উপাসনা জানান, এর মানে দাঁড়াচ্ছে মেয়েরা ক্যারিয়ারের প্রতি অধিক মনোযোগী। এটাই নতুন প্রগতিশীল ভারত। মূলত, তারপরই বিতর্কের মুখে পড়েন উপাসনা। অনেকে তাকে নিয়ে কটাক্ষ করে মন্তব্য করেন।
কলেজ জীবন থেকেই একে অপরকে চিনতেন রাম চরণ ও উপাসনা। বন্ধু মহলে তারা ছিলেন আলোচিত। অম্ল-মধুর সম্পর্কে সবাইকে মাতিয়ে রাখতেন। এরপর এক সময় রাম চরণ দেশের বাইরে যান। তখন পরস্পরের সঙ্গ মিস করতেন তারা। সবাই ধরেই নিয়েছিল প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছেন দু’জন। কিন্তু তখনও পরস্পরকে বন্ধুই ভাবতেন তারা।
রাম চরণের ‘মাগাধীরা’ সিনেমাটি মুক্তির পরই মূলত উপাসনার সঙ্গে এই অভিনেতার প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয়। দু’জনের পরিবারের মধ্যে বেশ মধুর সম্পর্ক ছিল, এজন্য বিয়ে নিয়েও কোনো ঝামেলা হয়নি।
২০১১ সালের ১১ ডিসেম্বর হায়দরাবাদের টেম্পল ট্রি ফার্মসে রাম চরণ ও উপাসনার বাগদান হয়। জাঁকজমকপূর্ণ এই আয়োজনে ছিলেন দুই পরিবারের সদস্য ও ঘনিষ্ঠজনরা। তাদের বাগদান নিয়ে ভক্তদের মধ্যে বেশ উন্মাদনা ছিল। তাকে নিয়ে মিডিয়ার মাতামাতিতে বেশ বিব্রত ছিলেন উপাসনা। তবে সবকিছু বেশ ভালোভাবেই সামাল দিয়েছেন রাম চরণ।
২০১২ সালের ১৪ জুন পরিবার ও ঘনিষ্ঠজনদের উপস্থিতিতে এই জুটির বিয়ে ও বিবাহোত্তর সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত হয়। বিয়ের পর যৌথ সিদ্ধান্তে ডিম্বাণু সংরক্ষণ করেন রাম চরণ-উপাসনা। এই ডিম্বাণু থেকেই তাদের প্রথম সন্তানের জন্ম হয়। এ নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন উপাসনা।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র ন র ম চরণ সন ত ন র ন র জন র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারের পেনোয়ার গান কেন আপনাকে শুনতে হবে
ফেসবুকে স্ক্রল করতে করতে একটা গানের ভিডিওতে চোখ আটকে যায়। ক্লিক করে শুনতে শুরু করি। গানের নাম, ‘এ রুহের তলে’। সুরের মধ্যে কেমন একটা প্রশান্ত ভাব। গানের দৃশ্যায়নও ভিন্ন। গর্জনের বন, লতাগুল্ম আর সাগরের দৃশ্য যেন গানের কথা ও সুরকে আরও গভীর করে তোলে। এরপর গানটি শেষ হলে আরও একবার বাজাই। সেটি শেষ হলে আরও একবার। এভাবে প্রায় ঘণ্টাখানেক এই গানের আবেশেই কেটে গেল।
গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসের কথা। কক্সবাজারের ব্যান্ড দল পেনোয়ার ‘এ রুহের তলে’ রিলিজ হওয়ার পরপরই শুনেছিলাম। এরপর আজ অবধি শুনেছি ১৩টি গান। শুনে মনে হয়েছে, কক্সবাজারের একটা ব্যান্ড এমন সুর, কথা আর গভীরতায় প্রচলিত গানের ধারা ভেঙে বেরিয়ে এল কী করে। অবাক হয়ে শুনেছি ‘কুহু ডাকের হন’ গানটি। গানটির শুরু এমন, ‘আধা রাইত্তা জোনাক ফরর কুহু ডাকের হন/ হইলজা ধরি টান মারের অচিন দরদ বন’। চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় এমন গভীর গীতিকাব্য আগে তো শুনিনি। হালকা গিটারের টুংটাং, তবলা-মাদলের মূর্ছনার বাইরে কোনো উচ্চকিত বাদ্যযন্ত্রের আড়ম্বর নেই। গানের ভেতরে কেমন গমগমে নীরবতা জড়িয়ে আছে। যেন শ্রোতার ‘কলজে’ ধরে টান মারে আক্ষরিক অর্থেই।
‘রিক্ত গোলাপ’, ‘শুনতে যা চাও’, ‘প্রিয় মুখ’ কোন গানের কথা রেখে কোন গানের কথা বলি। পেনোয়ার ধীরলয়ের গড়িয়ে যাওয়া সুর ‘বিটলস’ আর ‘মহিনের ঘোড়াগুলি’ ব্যান্ডের কথা মনে পড়িয়ে দেবে আপনাকে। কবিতা তাদের গানে সুরের হাত ধরেছে। কেবল তা–ই নয়, কক্সবাজারের লোকজ সুর, পাহাড় আর সাগরে ঘেরা প্রকৃতির উদারতা সবই ধারণ করছে। বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের ধারায় পেনোয়া অবশ্যই নতুন এক সংযোজন।কক্সবাজারের নাগরিকতার একটা ছবি যেন উঠে আসে ‘রাতের সাঁতার’ গানে। গানের দৃশ্যচিত্রে একটা ঘোড়া যেন শ্রোতাদের নিয়ে যায় অন্য এক ভ্রমণে। ইংরেজিতে যাকে বলে ‘গুজবাম্প’ বাংলায় তার নাম রোমহর্ষের কাছাকাছি কিছু। তবে বিষয়টি হলো গায়ের রোম খাঁড়া হয়ে যাওয়া। এই গানের কয়েকটি লাইন আমাকে এমন অভিজ্ঞতাই এনে দিয়েছিল। মনে হয়েছে এ তো পুরোই কবিতা। কেন বলছি সে কথা, তা বোঝাতে গানের লাইন কটি তুলে দিচ্ছি। ‘মুখে চাঁদের শিরনি লেগে থাকে মানুষের/ আসে আরও আরও চাঁদ পেয়ালা ভরে।/ আর অন্তরে যেন দুলছে কার মাজার!/ কারা করে কোলাহল বোবাদের জিকিরে।’
‘রিক্ত গোলাপ’, ‘শুনতে যা চাও’, ‘প্রিয় মুখ’ কোন গানের কথা রেখে কোন গানের কথা বলি। পেনোয়ার ধীরলয়ের গড়িয়ে যাওয়া সুর ‘বিটলস’ আর ‘মহিনের ঘোড়াগুলি’ ব্যান্ডের কথা মনে পড়িয়ে দেবে আপনাকে। কবিতা তাদের গানে সুরের হাত ধরেছে। কেবল তা–ই নয়, কক্সবাজারের লোকজ সুর, পাহাড় আর সাগরে ঘেরা প্রকৃতির উদারতা সবই ধারণ করছে। বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের ধারায় পেনোয়া অবশ্যই নতুন এক সংযোজন।
অনুশীলনের ফাঁকে পেনোয়ার সদস্যরা