মাস্টারকার্ডের সম্মাননা পেল ১৮ প্রতিষ্ঠান
Published: 22nd, November 2025 GMT
আর্থিক সেবা খাতে উদ্ভাবন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও দেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রগতিতে অবদানের জন্য এ বছর ১৮টি প্রতিষ্ঠান ‘মাস্টারকার্ড এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছে। মোট ১৯টি শ্রেণিতে এসব প্রতিষ্ঠানকে মোট ৩৩টি পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের কার্যক্রমের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ পুরস্কার দেয় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কার্ড সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান মাস্টারকার্ড।
আজ শনিবার সন্ধ্যায় ঢাকার র্যাডিসন ব্লু হোটেলে আয়োজিত পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
এ বছর বিজয়ীদের মধ্যে সর্বোচ্চ চারটি শ্রেণিতে পুরস্কার পেয়েছে মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক ও ইস্টার্ন ব্যাংক। এরপর তিনটি শ্রেণিতে পুরস্কার পেয়েছে সিটি ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) ও ব্র্যাক ব্যাংক। দুটি শ্রেণিতে পুরস্কার পেয়েছে ঢাকা ব্যাংক। একটি করে শ্রেণিতে পুরস্কার পেয়েছে মার্কেন্টাইল ব্যাংক, এসএসএল কমার্জ, আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, এবি ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, পাঠাও পে, এসিআই লজিস্টিকস (স্বপ্ন) ও বিকাশ।
মাস্টারকার্ড জানায়, এটি অ্যাওয়ার্ড আয়োজনের সপ্তম সংস্করণ। ব্যাংকিং, পেমেন্টস ও ফিনটেক খাতের উদ্ভাবন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও বাংলাদেশের ডিজিটাল অর্থনীতির অগ্রগতি—এই ক্ষেত্রগুলোতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ২০১৯ সালে এ অ্যাওয়ার্ড চালু করা হয়। এবারের আয়োজনের মাধ্যমে মাস্টারকার্ড বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রমের এক যুগ পূর্তিও উদ্যাপন করেছে।
আমাদের আর্থিক খাতের আকার খুবই ছোট। এ কারণে আর্থিক খাত থেকে অর্থনীতিতে যে সুবিধা আসার কথা, তা আমরা পাচ্ছি না। দুর্নীতি, সম্পদের অপব্যবহার এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার ব্যর্থতা এ ক্ষেত্রে বড় বাধা—আহসান এইচ মনসুর, গভর্নরঅনুষ্ঠানে গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘দেশের আর্থিক খাত বহু দিক থেকেই পিছিয়ে রয়েছে। তবে সামনে এগিয়ে যেতে হবে—এ নিয়ে কোনো দ্বিধা বা দোদুল্যমানতা থাকা উচিত নয়। কার্ড নেওয়ার ক্ষেত্রে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া, টিআইএন নম্বরের বাধাসহ বিভিন্ন জটিলতা আমরা দূর করেছি। গত সপ্তাহেই আন্তর্জাতিক এয়ারলাইনসের টিকিট ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনার ক্ষেত্রে যে সমস্যা ছিল, তা সমাধান করেছি। এভাবে আমরা ডিজিটাল লেনদেনের নানা বাধা দূর করছি।’
বাংলাদেশের আর্থিক খাতের সামগ্রিক উন্নয়নকে ‘হতাশাজনক’ উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, ‘এর পেছনে রয়েছে সুশাসনের ব্যর্থতা, নিয়ন্ত্রক সংস্থার সীমাবদ্ধতা ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের অভাব। আইনকানুন কঠোর হলেও অনেক অনিয়ম ভেতরে-ভেতরে ঘটে যায়, যা অনাকাঙ্ক্ষিত। এটা অনেকটা “বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরোর” মতো অবস্থা। আমাদের আর্থিক খাতের আকার খুবই ছোট। এ কারণে আর্থিক খাত থেকে অর্থনীতিতে যে সুবিধা আসার কথা, তা আমরা পাচ্ছি না। দুর্নীতি, সম্পদের অপব্যবহার এবং নিয়ন্ত্রক সংস্থার ব্যর্থতা এ ক্ষেত্রে বড় বাধা।’
অনুষ্ঠানে মাস্টারকার্ডের সাউথ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট গৌতম আগরওয়াল বলেন, ১৮ কোটি মানুষের বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ১৫ কোটি মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) হিসাব সক্রিয়, ইন্টারনেট ব্যবহার ৭০-৭৪ শতাংশ এবং প্রতিবছর ২৫০ কোটি থেকে ২৬০ কোটি ডলার প্রবাসী আয় দেশে আসে। এত অগ্রগতি সত্ত্বেও মোট লেনদেনের এখনো ৭৪ থেকে ৮০ শতাংশ নগদ লেনদেননির্ভর, যা ডিজিটালাইজেশনের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
আগরওয়াল আরও বলেন, ভারতের ক্ষেত্রেও একই পথ পাড়ি দিতে হয়েছে; ১১ বছর আগে দেশটিতে ডিজিটাল লেনদেন ছিল মাত্র ২-৫ শতাংশ, যা ক্রমে বেড়ে ৩০-৩৫ শতাংশে পৌঁছেছে। বাংলাদেশের বর্তমান অবস্থান তাই ব্যাপক সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয়। ১৮ কোটি মানুষের এই দেশ ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রে একদিন বিশ্বের সামনে উদাহরণ হয়ে উঠতে পারে। এই সম্ভাবনা উপলব্ধি করেই মাস্টারকার্ড ১৩ বছর ধরে বাংলাদেশে ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ করে যাচ্ছে।
সূচনা বক্তব্যে মাস্টারকার্ডের এদেশীয় ব্যবস্থাপক সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন, ‘কয়েক দিন আগেই আমরা বাংলাদেশে মাস্টারকার্ডের ১২ বছর তথা এক যুগ পূর্তি উদ্যাপন করেছি। বর্তমানে আমাদের পুরো কার্যালয় বাংলাদেশিদের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। আমরা এই দেশে আরও বেশি উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি নিয়ে আসতে চাই। গত ১২ মাসে মোট ৩০টি পণ্য চালু করেছি।’
সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল বলেন, ‘মাস্টারকার্ড একটি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান। ২২২টি দেশে আমাদের কার্যক্রম রয়েছে। বিশ্বের প্রতি ৫টি ফিনটেকের মধ্যে ৪টি মাস্টারকার্ডকে তাদের কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বেছে নেয়।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম স ট রক র ড র প রস ক র প য় ছ র আর থ ক খ ত অন ষ ঠ ন ল নদ ন আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
ভূমিকম্প মোকাবিলায় ২ সপ্তাহ বন্ধ থাকবে ঢাবি, হল খালি করার নির্দেশ
আগামী দুই সপ্তাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সব ধরনের একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) ভিপি সাদিক কায়েম।
এদিকে বিষয়টি নিশ্চিত করে আগামীকাল রবিবার বিকেল ৫টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল খালি করার নির্দেশ দিয়েছে ঢাবি প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ।
আরো পড়ুন:
শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় জবিতে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রবিবার
ভূমিকম্প আতঙ্ক: রবিবার বন্ধ থাকবে ঢাবি
শনিবার (২২ নভেম্বর) ফেসবুকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে ঢাবি বন্ধের বিষয়টি জানান ভিপি।
ফেসবুকে ভিপি সাদিক কায়েম লেখেন, “পরপর দুইদিন ভূমিকম্প সংঘটিত হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনসমূহের কথা মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত কনসার্নগুলো আমরা মাননীয় ভিসি, প্রোভিসি, ট্রেজারার স্যারদের অবগত করি।”
তিনি আরো লেখেন, “এর প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জরুরি SMT এবং সিন্ডিকেট মিটিং আহ্বান করেন। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে মিটিংয়ে প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে সকল হলের প্রতিটি কক্ষে পরীক্ষা-নীরিক্ষা করে সংস্কার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
“শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা ও ভূমিকম্প পরবর্তী মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে এই সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রমও বন্ধ থাকবে,” যোগ করেন সাদিক।
এদিকে, ভূমিকম্প পরবর্তী সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করেন।
সভা শেষে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তাতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। হলগুলো পুরোনো অবস্থায় আছে, এই হলগুলোর প্রতিটি রুমের ক্ষয়ক্ষতি পর্যবেক্ষণ ও সংস্কার করা প্রয়োজন।”
তিনি বলেন, “পর্যবেক্ষণ ও সংস্কারের জন্য ইঞ্জিনিয়ারদের ভাষ্যমতে চার সপ্তাহ সময় প্রয়োজন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছে। এর মধ্যে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে সংস্কার করতে বলেছে। এজন্য সব হল খালি করা প্রয়োজন। এই দুই সপ্তাহ ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। আগামীকাল রবিবার বিকেল ৫টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল খালি করার নিদের্শনা দেওয়া হলো।”
তিনি আরো বলেন, “যেহেতু তাদের রুম পর্যবেক্ষণ করতে হবে, সেহেতু হল খালি করার সময় শিক্ষার্থীদের সংশ্লিষ্ট হল প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকদের কাছে চাবি গচ্ছিত রাখতে বলা হলো। একইসঙ্গে রুমের মূল্যবান জিনিস সরিয়ে নিতে বলা হলো।”
খুব দ্রুতই এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে জানান প্রক্টর।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী