কিশোরগঞ্জে কবর তৈরির কারিগর মনু মিয়া। কোনো ধরনের পারিশ্রমিক কিংবা বকশিশ না নিয়ে এ পর্যন্ত খনন করেছেন ৩ হাজার ৫৭টি কবর। কারও মৃত্যুসংবাদ কানে আসামাত্রই খুন্তি, কোদালসহ প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতি নিয়ে লাল রঙের ঘোড়ায় করে ছুটে যান কবরস্থানে। সেই ঘোড়াটি আর জীবিত নেই। দুষ্কৃতকারীরা ঘোড়াটি হত্যা করেছে।

মনু মিয়ার ঘোড়াটি হত্যার খবর ছুঁয়ে গেছে অভিনেতা খায়রুল বাসারকেও। সোমবার একটি ভিডিও পোস্ট করে ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘মনু মিয়াকে আমি ঘোড়া কিনে দিতে চাই। ঘোড়া কিনে দেওয়ার বিনিময়ে আমার কবর খোঁড়া পর্যন্ত আল্লাহ উনাকে বাঁচিয়ে রাখুন। কেউ যদি মনু মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দিতে পারেন কৃতজ্ঞ থাকব।’

খোঁজ পেয়ে সোমবার রাতেই হাসপাতালে মনু মিয়ার সঙ্গে দেখা করেন খায়রুল বাসার। দীর্ঘক্ষণ কথাও বলেন তার সঙ্গে। সেই ছবিও সামাজিক মাধ্যমে শেয়ার করে মনু মিয়াকে নায়ক বলে সম্বোধন করেন বাসার। 

খায়রুল বাসার লিখেছেন, ‘আজ এক নায়কের সাথেই দেখা হলো আমার। আমি নিজ চোখে এক নায়ককেই দেখে আসলাম, বুক মেলালাম এক নায়কের সাথে! আজন্ম এক নায়ক মনু মিয়া। এই নায়কের গল্প বলবো শিগগিরেই। এটুকু বলি, মনু মিয়া অসহায় না বরং অসহায়ের সহায় হয়ে ওঠার প্রচণ্ড শক্তি আছে তার। এই দিশাহীন সমাজে এক আদর্শের নাম মনু মিয়া।’

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

তারাগঞ্জে ভাতার কার্ড না পেয়ে ঘুষের টাকা ফেরত চাওয়ায় মারধরের অভিযোগ

স্ত্রীর মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ডের আশায় দেড় বছর আগে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানকে আট হাজার টাকা ঘুষ দিয়েছিলেন এক অটোরিকশাচালক। দীর্ঘদিনেও কার্ড না হওয়ায় সেই টাকা ফেরত চাওয়ায় তাঁকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার সয়ার ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে আহত ভুক্তভোগী মো. রশিদুল কাজী (৩৭) ওই ইউপির চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেনসহ তিনজনের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সয়ার ইউনিয়নের দামোদরপুর সরকারপাড়ার অটোরিকশাচালক মো. রশিদুল কাজী তাঁর স্ত্রী রাবেয়া বেগমের মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করার জন্য দেড় বছর আগে ইউপি চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেনকে আট হাজার টাকা দেন। তবে দীর্ঘদিনেও ভাতার কার্ড না করায় রশিদুল টাকা ফেরত চাইলে চেয়ারম্যান নানা অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন।

রশিদুল কাজীর অভিযোগ, গত মঙ্গলবার বিকেল চারটার দিকে চেয়ারম্যান টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে তাঁকে ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে নেন। সেখানে উপস্থিত হলে চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন, আকবার হোসেন ও সাদেকুল মিলে ইউনিয়ন পরিষদের কক্ষে তাঁকে বেদম মারধর করেন। এ সময় ইউনিয়ন পরিষদের কিছু চৌকিদারও মারধরে অংশ নেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন তিনি।

ভুক্তভোগী রশিদুল কাজী বলেন, ‘আমি একজন অটোচালক। স্ত্রীর জন্য মাতৃত্বকালীন ভাতার কার্ড করতে গেলে আট হাজার টাকা নেন চেয়ারম্যান। কিন্তু দীর্ঘদিনেও কার্ড করে দেননি। টাকা চাওয়ায় আমাকে মারধর করেছেন। প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছেন।’

অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আল ইবাদত হোসেন বলেন, ‘মঙ্গলবার ইউনিয়ন পরিষদের কোর্ট চলছিল, সেখানে হুট করে ঢুকে রশিদুল আমার চেয়ারের কাছে দাঁড়ায়। আমি তাকে পরে ডেকে নেব বলে বসতে বলি। এরপর সে উত্তেজিত হয়ে আমাকে গালিগালাজ করে। সহ্য করতে না পেরে একটা থাপ্পড় মেরেছি। এরপর চৌকিদাররা তাকে নিয়ে যাওয়ার সময় সিঁড়িতে পড়ে আঘাত পায়। তাকে চিকিৎসকও দেখিয়েছি। সে ও চিকিৎসক দুজনই বলেছে, কোনো সমস্যা নেই। ঝামেলা সেদিনই মিটে গেছে। আর টাকা নেওয়ার যে অভিযোগ করেছে, তা ঠিক নয়।’

এ বিষয়ে তারাগঞ্জের ইউএনও রুবেল রানা বলেন, অভিযোগ পেয়েছেন। চেয়ারম্যানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগী চাইলে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পারেন।

তারাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ ফারুক বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়িত্বরত কর্মকর্তার কাছে এনেছিলেন ওই ব্যক্তি। অভিযোগটি ইউএনও বরাবর হওয়ায়, সেটি ইউএনওকে দিতে বলা হয়। থানায় অভিযোগ দিলে বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ