নওগাঁ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন
Published: 18th, November 2025 GMT
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁ-২ (ধামইরহাট-পত্নীতলা) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে দলটির একাংশের নেতা–কর্মীরা বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার পৌর বাজার এলাকায় নওগাঁ-জয়পুরহাট মহাসড়কে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এতে পত্নীতলা ও ধামইরহাট উপজেলার ১৯টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা থেকে বিএনপির একাংশের নেতা–কর্মীরা অংশ নেন।
সারা দেশে ঘোষিত বিএনপির প্রাথমিক ২৩৭টি মনোনয়নের মধ্যে নওগাঁ-২ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য সামসুজ্জোহা খানকে প্রাথমিকভাবে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। মনোনয়ন পরিবর্তন করে এই আসনে আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী খাজা নাজিবুল্লাহ চৌধুরীকে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন তাঁর অনুসারী নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা।
আজ বেলা ১১টার দিকে ধামইরহাট উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে থেকে আমইতাড়া মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সড়কের উভয় পাশে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে উপজেলা পরিষদের সামনে নওগাঁ-জয়পুরহাট মহাসড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, নওগাঁ-২ আসনে সামসুজ্জোহা খানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে তাঁর বিরুদ্ধে মানুষদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর তাঁর অনুসারী নেতা–কর্মীদের চাঁদাবাজি ও মামলাবাজির কারণে তাঁর জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায় নেমে গেছে। বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতা–কর্মীরাও সামসুজ্জোহার ওপর ক্ষুব্ধ। আওয়ামী লীগের শাসনামলে কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি মাঠে ছিলেন না। নেতা–কর্মীরা মামলা-হামলার শিকার ও কারাবরণ করলেও তিনি কোনো খোঁজ নেননি। আওয়ামী লীগের শাসনামলে নাজিবুল্লাহ সব আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে মাঠে ছিলেন। পরিচ্ছন্ন নেতা হিসেবে সাধারণ মানুষের মধ্যেও তাঁর জনপ্রিয়তা রয়েছে। নাজিবুল্লাহকে মনোনয়ন দিলে এই আসনে ধানের শীষ বিপুল ভোটে জয়ী হবে।
ধামইরহাট উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আখরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘নওগাঁ-২ আসন বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা আসনটিতে যে প্রার্থীকে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছেন, তাতে আসনটি জামায়াতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর যাঁরা রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করেছি, বিগত সরকারের সময়ে মামলা খেয়েছি, ঘরছাড়া হয়েছি, তাঁদের কোনো খোঁজখবর রাখেননি সামসুজ্জোহা। আমাদের দুঃসময়ে নাজিবুল্লাহ চৌধুরী পাশে ছিলেন। এই আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তন করে নাজিবুল্লাহ চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে নওগাঁ-২ (ধামইরহাট-পত্নীতলা) আসনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া সামসুজ্জোহা খান বলেন, ‘যাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসব। আশা করি, তাঁরা দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে বিএনপির পক্ষে এক হয়ে কাজ করবেন।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ধামইরহাট পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির সদস্য ও নজিপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আনোয়ার হোসেন, ধামইরহাট উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আখরাজুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক দেওয়ান ফেরদৌস, ধামইরহাট উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক রুহুল আমিন, ধামইরহাট পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজোয়ান হোসেন প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ধ মইরহ ট উপজ ল ধ মইরহ ট প ব এনপ র প ব এনপ র স কর ম র ২ আসন
এছাড়াও পড়ুন:
মান্নানের মনোনয়ন বাতিল ও বহিস্কারের দাবিতে সিদ্ধিরগঞ্জে বিক্ষোভ
সারাদেশে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সকল নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজি করে এমন মন্তব্যের প্রতিবাদে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সিদ্ধিরগঞ্জ ও সোনারগাঁও) আসনের বিএনপির মনোনিত প্রার্থী আজহারুল ইসলাম মান্নানের মনোনয়ন বাতিল ও বহিস্কারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে সিদ্ধিরগঞ্জের বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাড়কের চিটাগংরোডস্থ ডাচ্বাংলা ব্যাংকের সামনে এই মানববন্ধন করা হয়। পরে চিটাগংরোড থেকে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে মৌচাক বাসস্ট্যান্ড গিয়ে শেষ হয়।
মানবন্ধনে উপস্থিত নেতাকর্মীরা বলেন, সে বিএনপির সকল নেতাকর্মীদের চাঁদাবাজ আখ্যা দিয়েছে এমনকি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের লোকজনকে চাঁদাবাজ বলেছেন। এসব বেফাস মন্তব্য করায় বিএনপির দলীয় নেতাকর্মীদের ভাবমূর্তি খুন্ন হয়েছে বলে দাবি করেন।
তারা আরও বলেন, আমরা চাই‘না আওয়ামী লীগের মতো বিএনপি মানুষের কাছে হাঁসি ঠাট্টার পাত্র হোক। যে লোক বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা ও তার কর্মীদের চাঁদাবাজ বলে, তার কোন অধিকার নেই মনোনয়ন পাওয়ার। তাকে দল থেকেও বহিষ্কার করতে হবে।
তাছাড়া মান্নানের পর্যাপ্ত শিক্ষাগত যোগ্যতা নেই সংসদ নির্বাচনের জন্য। তাহলে সে কীভাবে মনোনয়ন পায়? এসময় বিএনপির নেতাকর্মীরা মান্নান অনুসারীদের সোনারগাঁও জুড়ে চাঁদাবাজী, লুটপাট, সন্ত্রাস, নৈরাজ্যকারী উল্লেখ করেন। তাই অবিলম্বে মান্নানকে দল থেকে বহিষ্কার ও তার প্রার্থীতা বাতিল করার জোর দাবি জানান তারা।
এসময়ে বক্তব্য রাখেন মহানগর যুবদলের সদস্য শহীদ উল্লাহ, ৪ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব আলী মুন্সি, থানা ছাত্র দলের সাবেক সভাপতি এ.কে হীরা প্রমূখ।
উপস্থিতি ছিলেন থানা বিএনপির সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, সহ-সভাপতি ডিএইচ বাবুল, সেলিম মাহমুদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ হালিম জুয়েল, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক টিএইচ তোফা, জাসাস মহানগরের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন স্বাধীনসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।