কোরবানির মাংস রান্নায় ‘দামি’ এই চার মসলা সম্পর্কে কতটুকু জানেন
Published: 7th, June 2025 GMT
দেখতে অনেকটা তারার মতো। হাতে নিতেই নাকে আসবে মিষ্টি গন্ধ। পাশে রাখা সুপারির মতো মসলাটি হাতে নিলে অনেকটা একই গন্ধ পাওয়া যাবে। এর পাশে রাখা আরেকটি মসলার গন্ধ আবার কিছুটা ঝাঁঝালো। আবার পেছনে মিষ্টি স্বাদের বীজগুলো দেখলে মনে হবে, অনেকটা জিরার মতো। মসলার বাজারে অনেকটা কম জনপ্রিয় এই মসলাগুলো হলো—জায়ফল, জয়ত্রী, মৌরী ও তারা মসলা।
পবিত্র ঈদুল আজহার আগে প্রতিবছর গরমমসলার চাহিদা বেশি থাকে। তবে গরমমসলার কাতারে থাকা এই চার মসলার আলোচনায় আসে অনেকটা কম। মূলত অন্য মসলার মতো বেশি ব্যবহার না হওয়ায় ক্রেতা ও ব্যবসায়ীদের মধ্যেও এই মসলাগুলো নিয়ে আলোচনা কম। তবে কোরবানিতে মাংস রান্নায় প্রতিটি মসলাই ব্যবহার করেন অনেকেই। পরিমাণে কম লাগে বলে এগুলো বিপুল পরিমাণে বিক্রিও হয় না। সারা বছর অল্প করে করে বিক্রি করেন দোকানিরা।
জায়ফল, জয়ত্রী, মৌরি ও তারা মসলা চারটি গরম ও সুগন্ধি মসলা, যা খাবারের স্বাদ বাড়াতে ব্যবহৃত করা হয়। এর মধ্যে জায়ফল সাধারণত মাংসের স্বাদ ও গন্ধ বাড়াতে ব্যবহার করা হয়। দেখতে অনেকটা সুপারির মতো এ মসলা মূলত একটি গাছে ফল। স্বাদের কিছুটা তেতো স্বাদের হলেও গন্ধে কিছুটা মিষ্টি। অন্যদিকে জয়ত্রী হলো জায়ফলের লালচে খোসা বা আবরণ। সুগন্ধিতে জায়ফলের মতো হলেও কিছুটা ঝাঁজালো। মাংসের স্বাদ ও ঘ্রাণ বাড়াতে এই দুই মসলা ব্যবহার করা হয়।
জায়ফল, জয়ত্রী, মৌরি ও তারা মসলা—চারটি গরম ও সুগন্ধি মসলা, যা খাবারের স্বাদ বাড়াতে ব্যবহৃত করা হয়। এর মধ্যে জায়ফল সাধারণত মাংসের স্বাদ ও গন্ধ বাড়াতে ব্যবহার করা হয়।জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালের প্রথম পাঁচ মাসে দেশে জায়ফল আমদানি হয়েছিল ২ লাখ ২৭ হাজার ৭৫০ কেজি। তবে এ বছর একই সময়ে এ মসলার আমদানি কমেছে প্রায় ২২ শতাংশ। গত জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত জায়ফল আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৭৭ হাজার ৯০০ কেজি, যা আগের বছরের থেকে ৪৯ হাজার ৮৫০ কেজি কম। যদিও চাহিদা আগের মতোই আছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
জায়ফলের আমদানি কমলেও এর খোসা; অর্থাৎ জয়ত্রীর আমদানি বেড়েছে ২৪ শতাংশ। ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত জয়ত্রী আমদানি হয়েছিল ১ লাখ ১১ হাজার ৯২০ কেজি। এ বছর একই সময়ে আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৩৮ হাজার ৭৫০ কেজি। কিছুটা ঝাঁজালো স্বাদের হওয়ায় মাংস রান্নায় এর চাহিদা জায়ফলের চেয়ে বেশি। বছর ঘুরতে এর আমদানি বেড়েছে ২৬ হাজার ৮৩০ কেজি।
স্থানীয়ভাবে মিষ্টি জিরা হিসেবে পরিচিত মৌরি বা মৌরি বীজ মিষ্টি স্বাদের। কিছুটা প্রকট গন্ধবিশিষ্ট তারা মসলাও হালকা মিষ্টি খেতে। এসব মসলা সারা বছর কমবেশি বিক্রি হলেও কোরবানির সময় আলাদা চাহিদা থাকে। বিরিয়ানি, কারি, মেজবানি রান্না—সবকিছুতেই এ মসলার ব্যবহার করা হয়। রান্নায় আলাদা স্বাদ ও গন্ধের জন্য অভিজ্ঞ রন্ধনশিল্পীরাও এগুলো ব্যবহারের পরামর্শ দেন। তবে অধিকাংশই মনে করেন, মাংসের ক্ষেত্রেই এগুলো ব্যবহার করা ভালো।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য অনুযায়ী, মৌরির আমদানি কিছুটা বেড়েছে আর তারা মসলার আমদানি কমেছে। প্রথম পাঁচ মাসের হিসাবে গত বছর মৌরি ৪৯ হাজার ৯৯০ কেজি এবং তারা মসলা ৩৫ লাখ ৬৫ হাজার ৯৯০ কেজি আমদানি হয়েছিল। এ বছর মৌরি সামান্য বেড়ে ৫২ হাজার ১৮০ কেজি এবং তারা মসলা কমে ৩০ লাখ ৩৫ হাজার ৭১৫ কেজি হয়েছে।
পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি জায়ফল ৬০০, জয়ত্রী ২ হাজার ৭০০, মৌরি ১৭০ ও তারা মসলা ২ হাজার টাকার আশাপাশে বিক্রি হচ্ছে। দোকানিরা মূলত ৫০ গ্রাম বা ১০০ গ্রাম হিসাবে এগুলো বিক্রি করেন।আমদানির প্রভাব নেই ভোগ্যপণ্যের বৃহত্তর আড়ত খাতুনগঞ্জে কম মসলার বেচাকেনা। চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের বন্দর, কাস্টমস ও ভ্যাটবিষয়ক সম্পাদক রাইসুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, মসলার আমদানি বেড়েছে, এটা সত্য। তবে বাজারে তেমন বেচাকেনা নেই। চাহিদা না থাকায় দামও কমেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি জায়ফল ৬০০, জয়ত্রী ২ হাজার ৭০০, মৌরি ১৭০ ও তারা মসলা ২ হাজার টাকার আশাপাশে বিক্রি হচ্ছে। দোকানিরা মূলত ৫০ গ্রাম বা ১০০ গ্রাম হিসাবে এগুলো বিক্রি করেন। খুচরায় প্রতি ১০০ গ্রাম জায়ফল ৭০ থেকে ৮০, জয়ত্রী ২৮০ থেকে ৩০০, মৌরি ২০ থেকে ৩০ ও তারা মসলা ২০০ থেকে ২৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আবার সব দোকানে এসব মসলা পাওয়ার দুষ্কর।
চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাট এলাকার মুদিদোকানি সাহাবউদ্দিন বলেন, বিয়ের অনুষ্ঠান, মেজবান আর কোরবানের সময় চাহিদা ভালোই থাকে এসব মসলার। তবে খুব বেশি পরিমাণ বিক্রি হয় না দেখে এগুলো পাইকারি থেকে আনা হয় কম। মিষ্টি জিরা (মৌরি) বেশি চলে ঘ্রাণের কারণে।
আরও পড়ুনআদার ব্যাপারীদের এখন জাহাজের খবর রাখতেই হয়৪ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর র আমদ ন ক রব ন জ য ফল র র মত জয়ত র মসল র
এছাড়াও পড়ুন:
বোনের বাড়িতে কোরবানির মাংস নিয়ে যাওয়া হলো না হৃদয়ের
মোটরসাইকেল নিয়ে বোনের বাসায় কোরবানির মাংস নিয়ে যাচ্ছিলেন মোহাম্মদ হৃদয় (২২)। পথে দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারালেন এ তরুণ। আজ শনিবার বিকেল পাঁচটার দিকে চট্টগ্রামের কাপ্তাই রাস্তার মাথা এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
হৃদয়ের মৃত্যুর খবর প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন তাঁর চাচাতো ভাই মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। তিনি জানান, হৃদয়ের বাড়ি বোয়ালখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডে। হৃদয়রা দুই ভাই। হৃদয় একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলেন।
মহিউদ্দিন বলেন, আজ বোনের বাড়িতে কোরবানির মাংস নিয়ে যাচ্ছিলেন হৃদয়। বোনের বাড়ি নগরের বাকলিয়া এলাকায়। কিন্তু দুর্ঘটনায় বোনের বাড়িতে আর যাওয়া হলো না হৃদয়ের। মোটরসাইকেলের পেছনে ছিল ভাগনে মোহাম্মদ জাবেদ। এ ঘটনায় সে-ও আহত হয়েছে। জাবেদ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মহিউদ্দিন বলেন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই হৃদয়ের মৃত্যু হয়। পরে মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ঈদের দিন হৃদয়ের এমন মৃত্যুর খবরে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।