ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় সব পক্ষের প্রতিনিধিত্ব নেই: এনসিপি
Published: 17th, June 2025 GMT
জাতীয় ঐকমত্য কমিশন কোন পদ্ধতিতে রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনায় ডাকছে, তা সুস্পষ্ট করার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম।
এনসিপির এই নেতা বলেন, ঐকমত্য কমিশন যাদের আহ্বান করেছে, তারা দেশের শতভাগ মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করতে পারছে না। যদি এসব রাজনৈতিক দল জন আকাঙ্ক্ষা নিয়ে আসতে পারত, তাহলে গণ–অভ্যুত্থানের আগে ৫৪ দল মিলে যে আন্দোলন করেছিল, সেটা ফলপ্রসূ হতো।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার বিরতিতে এনসিপির পক্ষ থেকে তিনি এ কথা বলেন।
চব্বিশের গণ–অভ্যুত্থানে তিন ধরনের অংশীজন ছিল উল্লেখ করে আরিফুল ইসলাম বলেন, সব রাজনৈতিক দল মিলে একটি স্টেকহোল্ডার, জনতা আরেকটি স্টেকহোল্ডার এবং সব শিক্ষার্থী মিলে আরেকটি স্টেকহোল্ডার ছিলেন। কিন্তু আলোচনায় শুধু রাজনৈতিক দলগুলো অংশ নিয়েছে।
জুলাই গণ–অভ্যুত্থান শুধু কোনো রাজনৈতিক দলের চেষ্টায় হয়নি উল্লেখ করে এই নেতা বলেন, এখানে সব পেশাজীবী এবং জনতার অংশগ্রহণ ছিল, যাদের আসলে কোনো প্রতিনিধি নেই।
আরিফুল ইসলাম বলেন, ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় বিভিন্ন দলকে কোনো একটি বড় দলের সুপারিশে ডাকা হচ্ছে কি না, সেটা নিয়ে তাঁর দল জাতীয় নাগরিক পার্টির মধ্যে সন্দেহ রয়েছে। তিনি বলেন, শুধু একটি দলের বক্তব্যের প্রতি এসব দলের হ্যাঁ অথবা না–বোধক সমর্থন থাকে। যখনই বিপরীত কোনো মন্তব্য আসে, তখন সেখানে হট্টগোলের চেষ্টা করা হয়।
আজকের আলোচনায় জাতীয় সংসদে নারী আসন নির্ধারণের বিষয়ে এনসিপির মতামত তুলে ধরে আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা চাই, নারীদের আসন ভোটের মাধ্যমে নির্ধারিত হোক। তবে পদ্ধতি এবং সংখ্যা নিয়ে আলোচনা চলমান আছে।’
সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ নিয়ে এনসিপির অবস্থান তুলে ধরে আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা ৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের পক্ষে ছিলাম। কিন্তু ঐকমত্যের স্বার্থে অর্থবিল ও আস্থা ভোট বাদে অন্য বিষয়ে দলের বিপক্ষে ভোট দেওয়া যাবে বলে আমরা মত দিয়েছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এনস প র
এছাড়াও পড়ুন:
দেশকে বিপর্যয়ে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে: ইসমাইল জবিউল্লাহ
জাতীয় সংসদে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতি নিয়ে আন্দোলনের নামে নির্বাচন নস্যাৎ, গণতন্ত্র ব্যাহত ও দেশকে বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্র হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ইসমাইল জবিউল্লাহ।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) লক্ষ্মীপুর সদর (পূর্ব) উপজেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
ইসমাইল জবিউল্লাহ বলেন, এই সুযোগে পালিয়ে যাওয়া ফ্যাসিবাদ আবার ফিরে এসে বিশৃঙ্খলা ও নাশকতা সৃষ্টি করতে পারে। অহেতুক আন্দোলনের নামে বিভাজন ও উত্তেজনা গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থী।
জামায়াতে ইসলামী আস্থাহীন দল, উল্লেখ করে তিনি বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় জামায়াত একবারও জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতির কথা বলেনি। তারা শুধু উচ্চকক্ষের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতির কথা বলেছে। কাজেই এই আন্দোলনের পেছনে অন্য উদ্দেশ্য আছে।
তিনি বলেন, প্রশ্ন হলো—হঠাৎ করে কেন পিআর পদ্ধতি নিয়ে মাঠে নামছেন? আমরা যখন সবাই মিলে ঐকমত্য কমিশনে বসে এখনো কথা বলছি, এখনো যখন আলোচনা হচ্ছে, সেই আলোচনার টেবিল বাদ দিয়ে বাইরে আন্দোলনের নামে দেশে অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা জনগণ কখনো মেনে নেবে না। এ ব্যাপারে আমাদেরকে সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আরো বলেন, পিআর পদ্ধতি ইতোমধ্যে পঁচে গেছে। আপনি কাকে ভোট দেবেন, আপনি সেটাই জানেন না। আপনি ভোট দেবেন লক্ষ্মীপুরে শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিকে। কেন দেবেন, কারণ তাকে আপনি চেনেন। শুধু ধানের শীষ নিয়ে কথা না, ওই ব্যক্তিটাকেও আপনি চেনেন, তার ভালো-মন্দ জানেন, বিপদে-আপদে তার কাছে যাবেন, সে আপনার এমপি। আপনি বলতে পারবেন, লক্ষ্মীপুরের এমপিকে আপনি চেনেন। পিআর পদ্ধতিতে আপনি লক্ষ্মীপুর থেকে উনাকে না দিয়ে পঞ্চগড়ে ভোট দিয়ে দিতে পারে, আপনি জানবেন না। এই কথাগুলো উনারা বোঝেন না, এটা ঠিক নয়। আমি মনে করি, এরা জ্ঞানপাপী, বুঝেও না বোঝার ভান করছেন উনারা।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলা পূর্ব বিএনপির আহ্বায়ক মাইন উদ্দিন চৌধুরী রিয়াজের সভাপতিত্বে সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভূঁইয়া।
সদর উপজেলা পূর্ব বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ মোহাম্মদ এমরান ও সদস্য সচিব মোখলেছুর রহমান হারুনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি ছিলেন লক্ষ্মীপুর-৪ (রামগতি ও কমলনগর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম আশরাফ উদ্দিন নিজান, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব সাহাব উদ্দিন সাবু, যুগ্ম আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ওয়াহিদ উদ্দিন চৌধুরী হ্যাপি প্রমুখ।
ঢাকা/লিটন/রফিক