সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের একাংশ বেতন বৃদ্ধিসহ তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করছেন। এর মধ্যে আজ বুধবার ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেছেন তাঁরা। এর ফলে আজ তৃতীয় দিনের মতো দেশের অনেক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা হয়নি। তবে ঢাকাসহ অনেক বিদ্যালয়ে সময়সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা হয়েছে। কোথাও কোথাও প্রধান শিক্ষকেরা ‘কোনোমতো’ পরীক্ষা চালিয়ে নিচ্ছেন।

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকেরা পাঠদান করেন। সারা দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬৯টি। এসব বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা এক কোটির বেশি। শিক্ষক রয়েছেন পৌনে চার লাখের বেশি। সহকারী শিক্ষকের অনুমোদিত পদ ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২১৬টি, বর্তমানে কর্মরত ৩ লাখ ৫২ হাজার ২০৮ জন।

গত ২৭ নভেম্বর থেকে তিন দফা দাবিতে কর্মবিরতি শুরু করে ‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’। গত সোমবার তারা বার্ষিক পরীক্ষা বর্জন কর্মসূচিও শুরু করে। এই পরিষদ এখন বিদ্যালয়ে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি শুরু করেছে।

আরও পড়ুনবার্ষিক পরীক্ষার মধ্যে শিক্ষকদের কর্মবিরতি, ক্ষতির মুখে প্রাথমিক ও মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা ৭ ঘণ্টা আগেসরেজমিন চিত্র

মেহেরপুরের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ফটক ও শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন আন্দোলনরত সহকারী শিক্ষকেরা। সকালে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, পরীক্ষা দিতে আসা শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। কিন্তু ফটক, অফিসকক্ষ ও শ্রেণিকক্ষে তালা ঝুলে থাকায় তারা ভেতরে ঢুকতে পারেনি। অনেকে অভিভাবকের সঙ্গে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। বার্ষিক পরীক্ষা না হওয়ায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

গাংনী উত্তরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী আজমাইল হোসেন বলে, ‘পরীক্ষা দিতে এসে দেখি কক্ষে তালা ঝুলছে। এখন বাড়ি ফিরে যাচ্ছি।’

নওপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হামিদুল ইসলাম বলেন, শিক্ষক নেতারা বলেছেন পরীক্ষা বন্ধ রাখতে। এ কারণে পরীক্ষা হচ্ছে না। গাংনী উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম জয়নুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার বিষয়টি তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। নির্দেশনা পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আজ সিলেটের তিনটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সহকারী শিক্ষকেরা বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়েছেন। তবে তাঁরা কোনো ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করছেন না। ১ ডিসেম্বর থেকে বিদ্যালয়গুলোতে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার ধর্মপাশা ২ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নজমুল হায়দার ও মধ্যনগর উপজেলার সাউদপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.

রফিকুল ইসলাম জানান, ২ ডিসেম্বর থেকে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। সহকারী শিক্ষকেরা কর্মবিরতিতে থাকায় প্রধান শিক্ষকেরা কোনো রকমে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চালিয়ে নিচ্ছেন। কিন্তু এতে সমস্যা হচ্ছে।

তবে ঢাকার অনেক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা হয়েছে। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নীলক্ষেত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে শিশুরা পরীক্ষা দিচ্ছে। প্রধান শিক্ষক জান্নাতুল নাঈমা বলেন, তাঁদের বিদ্যালয়ে সময়সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা হচ্ছে। ১০ ডিসেম্বর শেষ হবে পরীক্ষা।

প্রায় একই দাবিতে সহকারী শিক্ষকদের আরেকটি সংগঠন ‘সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে ২৩ থেকে ২৭ নভেম্বর কর্মবিরতি পালন করেছিল। ঐক্য পরিষদের একজন আহ্বায়ক মো. আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে তাঁরাও বিদ্যালয়ে ‘তালাবদ্ধ’ কর্মসূচি শুরু করবেন।

খুলনা সিটি করপোরেশন এলাকার বাস্তুহারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় বসেছে। ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব র ষ ক পর ক ষ শ ক ষকদ র ড স ম বর সহক র সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

নেগেটিভ ইক্যুইটি ও লস প্রভিশনিংয়ের সময় পাচ্ছে আরো ১১ প্রতিষ্ঠান

পুঁজিবাজারের মধ্যস্থতাকারী আরো ১১ প্রতিষ্ঠানের নেগেটিভ ইক্যুইটি ও আনরিয়েলাইজড লসের প্রভিশন সংরক্ষণ ও সমন্বয়ের জন্য শর্তসাপেক্ষে সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

এই তালিকায় স্টকব্রোকার, ডিলার ও মার্চেন্ট ব্যাংকসহ একাধিক বাজার মধ্যস্থতাকারী রয়েছে।

আরো পড়ুন:

দুই কোম্পানির ক্রেডিট রেটিং নির্ণয়

প্রিমিয়ার ব্যাংক পারপেচুয়াল বন্ডের কুপন প্রদানের রেকর্ড ডেট ঘোষণা

মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে ৯৮৬তম কমিশন সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালাম স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-ফিন্ট্রা সিকিউরিটিজ লিমিটেড, শেলটেক ব্রোকারেজ লিমিটেড, জয়তুন সিকিউরিটিজ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড, বিডিবিএল ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড, হযরত আমানত শাহ সিকিউরিটিজ লিমিটেড, জিএমএফ সিকিউরিটিজ লিমিটেড, ওয়াইফাং সিকিউরিটিজ লিমিটেড, বিআরবি সিকিউরিটিজ লিমিটেড, বিএনবি সিকিউরিটিজ লিমিটেড, বিএমএসএল ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও মিডাস ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড।

বিএসইসির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কমিশন সভায় স্টক ব্রোকার, স্টক ডিলার ও মার্চেন্ট ব্যাংকার কর্তৃক কমিশনের নিকট দাখিলকৃত বোর্ড অনুমোদিত নেগেটিভ ইক্যুইটি ও আনরিয়েলাইজড লসের প্রভিশন সংরক্ষণ ও সমন্বয় সংক্রান্ত অ্যাকশন প্ল্যান বিবেচনাপূর্বক উল্লিখিত ছকের স্টক ব্রোকার, স্টক ডিলার ও মার্চেন্ট ব্যাংকারদের নেগেটিভ ইক্যুইটি ও আনরিয়েলাইজড লসের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ ও সমন্বয় করার সময়সীমা বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

স্টক ব্রোকার, স্টক ডিলার ও মার্চেন্ট ব্যাংকাদের নেগেটিভ ইকুইটি ও আনরিয়েলাইজড লস এর প্রভিশন ও সমন্বয়ের সময়সীমা কমিশনের আদেশ (বিএসইসি/এসএমএমআইডি/এনই/এপি/২০২৫/১০৮/৬২৯; তারিখ ১৩ নভেম্বর ২০২৫) পরিপালন সাপেক্ষে বর্ধিত করার সিদ্ধান্ত হয়েছে যার মধ্যে উল্লেখ্যযোগ্য হলো নেগেটিভ ইক্যুইটি ও আনরিয়েলাইজড লস এর বিপরীতে বর্ধিত সময়কালে প্রভিশন সংরক্ষণ ও সমন্বয়ের ক্ষেত্রে স্টক ব্রোকার, স্টক ডিলার ও মার্চেন্ট ব্যাংকারের নিট সম্পদের ঘাটতি সংক্রান্ত বিধান পরিপালনে সাময়িক শিথিলতা থাকবে। এতদসংক্রান্ত কমিশনের আদেশটি কমিশনের ওয়েবসাইটের ‘সিকিউরিটিজ ল’স মেনুর ‘সিকিউরিটিজ ল’স, রুলস, রেগুরেশনস সাব মেনুতে পাওয়া যাবে।

এর আগে গত ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ৯৮৪তম কমিশন সভায় ২৮ প্রতিষ্ঠানকে নেতিবাচক ইক্যুইটি ও অবাস্তব লোকসানের বিপরীতে প্রভিশন সংরক্ষণ ও সমন্বয়ের জন্য শর্তসাপেক্ষে সময় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি।

পরবর্তীতে ২৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ৯৮৫তম কমিশন সভায় পুঁজিবাজারের মধ্যস্থতাকারী আরো ৮ প্রতিষ্ঠানের নেগেটিভ ইক্যুইটি ও আনরিয়েলাইজড লসের প্রভিশন সংরক্ষণ ও সমন্বয়ের জন্য শর্তসাপেক্ষে সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি।

ঢাকা/এনটি/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী পরিচালক নিয়োগ পরীক্ষার সময়সূচি পরিবর্তন
  • নেগেটিভ ইক্যুইটি ও লস প্রভিশনিংয়ের সময় পাচ্ছে আরো ১১ প্রতিষ্ঠান