রাতের বেলা মোটেলে নিজের ঘরে ঘুমিয়ে আছেন—দরজার বাইরে কারও চলাফেরার শব্দে ঘুম ভেঙে গেল। ভাবছেন, কোনো পরিচ্ছন্নতাকর্মী এসেছেন, এত রাতে! এসব যখন মাথায় ঘুরছে, ততক্ষণে হইচইয়ের শব্দ বাড়ছে। কয়েক মিনিটের মধ্যে পুরো মোটেল জেগে ওঠে। কারণ, এক অতিথির কক্ষের বাইরে ঘোরাফেরা করছে ছয় ফুট লম্বা এক কুমির।

ঘটনাটি ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের আলেকজান্দ্রিয়ার ফেয়ারফ্যাক্স কাউন্টির বাজেট হোস্ট ট্রাভেলার্স মোটেলে। আতঙ্কিত একাধিক ব্যক্তি পুলিশে ফোন দিয়ে জানান, একটি কুমির মোটেলের ভেতরে ঘোরাফেরা করছে। খবর পেয়ে পুলিশ ছুটে এসে দেখে, ঘটনা সত্যিই—একটি জীবন্ত কুমির এক অতিথির কক্ষের দরজার সামনে চুপচাপ শুয়ে আছে।

পরে জানানো হয়, কুমিরটি নিউইয়র্ক থেকে

নর্থ ক্যারোলাইনার এক চিড়িয়াখানায় নেওয়া হচ্ছিল, পথে মালিকের চোখ ফাঁকি দিয়ে সেটি বেরিয়ে যায়। ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে কুমিরসহ এমন বিপজ্জনক প্রাণী ও বিদেশি প্রাণী পোষা আইনত নিষিদ্ধ।

ফেয়ারফ্যাক্স পুলিশ বিভাগ বলেছে, তাদের কর্মকর্তারা নিরাপদে কুমিরটিকে ধরে ফেলেছেন এবং মালিকসহ কাউন্টির সীমান্তের বাইরে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। প্রাণী সুরক্ষা পুলিশ তাদের সঙ্গে পুরো অভিযানে অংশ নেয়।

ফেয়ারফ্যাক্স পুলিশ বিভাগ তাদের ক্যামেরায় ধারণ করা কুমির ধরার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছে। ভিডিওটি ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগের নানা মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওতে ফেয়ারফ্যাক্স পুলিশ বিভাগের এক কর্মকর্তাকে বিস্ময়ের সঙ্গে বলতে শোনা যায়, ‘হায় হায়! এ তো আসলেই একটা কুমির! মোটেলের বাইরে সত্যি একটা কুমির আছে!’

ঘটনাটি দ্রুতই মোটেলের অতিথি ও আশপাশের স্থানীয় মানুষের মনোযোগ কাড়ে, কৌতূহলী মানুষের ভিড় বৃদ্ধি পায়। ভিডিওর একপর্যায়ে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে পাশে থাকা একজনকে সতর্ক করে বলতে শোনা যায়, নিরাপদ রাখতে চাইলে নিজের কুকুরটিকে ভেতরে নিয়ে যান।

তবে ওই ব্যক্তি সতর্কতার চেয়ে কৌতূহলে যেন বেশি মজে ছিলেন। তিনি জবাব দেন, ‘জানি, কিন্তু আমি ওটাকে দেখতে চাই।’

মোটেলের অতিথিরা এ ঘটনার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা বহুদিন মনে রাখবেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

রয়েল টিউলিপে এনসিপি নেতাদের অবস্থান, ষড়যন্ত্রের অভিযোগে বিএনপির

কক্সবাজারে ইনানীর সি পার্ল বিচ রিসোর্টে (পুরোনো নাম রয়েল টিউলিপ) জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নেতাদের অবস্থান এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিবাদে সভা করেছে বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের অভিযোগ, রয়েল টিউলিপে বসে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। 

মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) দুপুর ২টার দিকে রয়েল টিউলিপের সামনে প্রতিবাদ সভা করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। এর আগে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজারে পৌঁছান এনসিপির পাঁচ নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ, সার্জিস আলম, ডা. তাসমিন জারা, নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ও খালেদ সাইফুল্লাহ। 

প্রতিবাদ সভার নেতৃত্ব দেন উখিয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক সেলিম সিরাজী। তিনি বলেন, “বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এখনো ষড়যন্ত্র থেমে নেই। যারা ভোটে ক্ষমতায় আসতে পারবে না, তারা এখানে বসে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। খুনি শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার এক বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। সেই আনন্দের মুহূর্তে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের কারণে আমাদের এখানে প্রতিবাদে আসতে হয়েছে।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কক্সবাজার জেলা পুলিশের এক কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, “এনসিপির নেতারা মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সকাল ১১টা ২৫ মিনিটে বাংলাদেশ বিমান এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে কক্সবাজার আসেন। পরে ইনানীর সি পার্ল বিচ রিসোর্টের (রয়েল টিউলিপ) ৫০০১, ৫০০২ ও ৫০০৩ নম্বর কক্ষে অবস্থান নেন।”

তিনি আরও বলেন, “এই রিসোর্টে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নেই। এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলমের স্ত্রীসহ তারা ঘুরতে এসেছেন।’’

ওই রিসোর্টের কক্ষ আগে থেকে বুকিং করা ছিল না বলেও জানান তিনি। 

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এনসিপির পাঁচ নেতার হঠাৎ কক্সবাজার আগমনের বিষয়টি প্রশাসন কিংবা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও অবগত করা হয়নি।

রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়েছে যে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বাংলাদেশস্থ রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করতে কক্সবাজারে গিয়েছেন এই পাঁচ নেতা।

এনসিপি নেতাদের বহন করে বিমানবন্দর থেকে রয়েল টিউলিপে নিয়ে যাওয়া গাড়ির চালক নুরুল আমিন জানান, তার গাড়িতে করে হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম ও নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীসহ দুইজন নারী- একজন সারজিস আলমের স্ত্রী এবং অপরজন সমন্বয়ক (তাসনিম জারা) রয়েল টিউলিপে যান।

কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মো. সাইফ উদ্দিন শাহীন বলেন, “এনসিপির পাঁচ নেতা রয়েল টিউলিপে অবস্থান করছেন। তবে, এখানে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাস নেই। পুরো হোটেলে মাত্র তিনজন বিদেশি আছেন, তারা সবাই চীনের নাগরিক।”এদিকে এনসিপি নেতা খালেদ সাইফুল্লাহ একটি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, “আমরা এখানে পিটার হাস কিংবা অন্য কারো সাথে কোন মিটিং করিনি। এমনকি পিটার হাসের সঙ্গে আমাদের দেখাও হয়নি। আমরা কয়েকজন এখানে ঘুরতে এসেছি।” 
 

তারেকুর//

সম্পর্কিত নিবন্ধ