রাজধানীর উত্তর শাহজাহানপুরের ভাড়া বাসা থেকে আইভী আক্তার রিতু (২৩) নামে এক নারীর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

সংশ্লিষ্টদের ধারণা, চার-পাঁচ দিন আগে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য শুক্রবার তাঁর মৃতদেহ পাঠানো হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে। তিনি এক পুরুষের সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ওই বাসায় থাকতেন। ঘটনার পর থেকে সেই পুরুষের খোঁজ মিলছে না।

শাহজাহানপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শাহ আলম সমকালকে বলেন, ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে রিতুর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে। সার্বিক পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, তিনি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। ওই অবস্থাতেই কয়েক দিন ধরে মৃতদেহ ঝুলে ছিল। দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পুলিশ অর্ধগলিত অবস্থায় মৃতদেহ পায়। এ ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যু (ইউডি) মামলা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, উত্তর শাহজাহানপুরের ৬০৯ নম্বর ভবনের তৃতীয় তলায় থাকতেন রিতু। তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন বলে শুনেছেন প্রতিবেশীরা। তবে তিনি বা তাঁর কথিত স্বামী লোকজনের সঙ্গে খুব একটা কথা বলতেন না বলে কেউ তাদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানাতে পারেননি। বাড়িওয়ালা এখন দেশের বাইরে। খবর পেয়ে মৃতের স্বজন এলেও রিতু কী করতেন, বিয়ে হয়েছে কিনা– এসব প্রশ্নের উত্তর তারা দিতে পারেননি। 

এক প্রতিবেশীর ভাষ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ১৩ জুন তিনি রিতুকে ঘরে ঢুকতে দেখেছেন। এর পর থেকে দরজা বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার সকালে ওই ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকলে প্রতিবেশীদের সন্দেহ হয়। ভবনটিতে অবসরপ্রাপ্ত এক পুলিশ কর্মকর্তাও থাকেন। পরে তাঁর মাধ্যমে খবর পেয়ে শাহজাহানপুর থানা পুলিশ সেখানে যায়। সেদিন বিকেল ৩টার দিকে দরজা ভেঙে অর্ধগলিত মৃতদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়।

এদিকে ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারের বোর্ড মিল এলাকার বাসায় উজ্জ্বল হোসেন (২৮) নামে এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। 

শুক্রবার দুপুরে নিজ ঘরে তাঁকে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক দুপুর ২টার দিকে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশের ধারণা, উজ্জ্বল গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

মৃতের ভগ্নিপতি সাজেদুল ইসলাম জানান, উজ্জ্বলের গ্রামের বাড়ি যশোরের শর্শা উপজেলার জামতলা বাজার এলাকায়। বাবার নাম আব্দুল মালেক। পারিবারিক কলহের কারণে তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন। এর পর আজ দুপুরে তিনি ঘরে ঢুকে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেচিয়ে ফাঁস দেন। পরে স্বজন তাঁকে দেখতে পেয়ে উদ্ধার করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কী কারণে তিনি ‘আত্মহত্যা’ করেন; নিশ্চিত করতে পারেননি স্বজন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: মরদ হ তদন ত অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় ইসরায়েলি বর্বরতা অব্যাহত, শুক্রবারের হামলায় আরও ৮২ ফিলিস্তিনি নিহত

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধের মধ্যেও ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বর্বরতা অব্যাহত রেখেছে দখলদার ইসরায়েল। স্থানীয় সময় শুক্রবার উপত্যকাটিতে আরও ৮২ জন নিহত হয়েছেন।

এরমধ্যে মধ্য গাজায় প্রাণ হারিয়েছেন ৩৭ জন। তাদের ২৩ জন ত্রাণ আনতে গিয়ে দখলদারদের হাতে নিহত হয়েছেন। গাজা সিটিতে নিহত হয়েছেন আরও ২৩ জন। আর দক্ষিণ গাজায় প্রাণ গেছে ২২ জনের। এদের মধ্যে ১১ জন ত্রাণ আনতে গিয়েছিলেন।

এদিকে গাজা যুদ্ধ চলমান থাকায় টানা দ্বিতীয় বছরের মতো শিশুদের বিরুদ্ধে গুরুতর সহিংসতার কারণে ইসরায়েলকে ‘কালো তালিকাভুক্ত’ করেছে জাতিসংঘ। বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০২৪ সালে যুদ্ধপীড়িত অঞ্চলে শিশুদের ওপর সহিংসতা ‘চরম মাত্রায়’ পৌঁছেছে। এর মধ্যে গাজা এবং অধিকৃত পশ্চিম তীরে সবচেয়ে বেশি সহিংসতা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।

‘সশস্ত্র সংঘাতে শিশু’বিষয়ক বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের তুলনায় গত বছর বিশ্বব্যাপী শিশুদের বিরুদ্ধে গুরুতর সহিংসতার ঘটনা ২৫ শতাংশ বেড়েছে। ২০২৪ সালে মোট ৪১ হাজার ৩৭০টি গুরুতর সহিংসতা যাচাই করে দেখা গেছে, এর মধ্যে শিশুদের হত্যা, শারীরিকভাবে আহত করা, যৌন সহিংসতা এবং স্কুল-হাসপাতালে হামলার মতো ঘটনা রয়েছে।

এর মধ্যে শুধু ফিলিস্তিন ভূখণ্ড ও ইসরায়েলে ২ হাজার ৯৫৯ শিশুর বিরুদ্ধে ৮ হাজার ৫৫৪টি গুরুতর সহিংসতার ঘটনা নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘ। এই সংখ্যা অনুযায়ী, গাজায় গত এক বছরে  ১ হাজার ২৫৯  ফিলিস্তিনি শিশু নিহত হয়েছে এবং ৯৪১ জন আহত হয়েছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, নিহত শিশুর সংখ্যা আরও অনেক বেশি। জাতিসংঘ জানিয়েছে, ২০২৪ সালে গাজায় আরও ৪ হাজার ৪৭০ শিশু নিহতের তথ্য যাচাই চলছে। অধিকৃত পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে ৯৭ ফিলিস্তিনি শিশুর মৃত্যুর তথ্যও নিশ্চিত করেছে জাতিসংঘ। সেখানে ৩ হাজার ৬৮৮টি শিশু অধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা নথিভুক্ত হয়েছে।

সূত্র: আলজাজিরা

সম্পর্কিত নিবন্ধ