চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা। এডিস মশাবাহিত রোগটিতে আক্রান্ত হচ্ছে সববয়সী মানুষ। ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া শিশুর সংখ্যাও কম নয়। প্রতিনিয়ত এই রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমনে বাড়ছে উদ্বেগ ও আতঙ্ক। 

চিকিৎসকরা বলছেন, ঈদের আগ থেকেই মশাবাহিত ডেঙ্গু সংক্রমিত হয়েছে এ জেলায়। সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরএলাকার বেশ কয়েকটি মহল্লার বাসিন্দারা। তবে এ জেলায় এখন পর্যন্ত কেউই ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়নি। 

এদিকে ডেঙ্গু প্রতিরোধে সকলকে সচেতন থাকার পরামর্শ দিচ্ছে জেলার স্বাস্থ্য বিভাগ।

সংশ্লিষ্টরা জানান- চাঁপাইনবাবগঞ্জের ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে চলতি মাসের ১ থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ১৫৩ জন। এ সময়ের মধ্যে হাসপাতালটির বর্হিবিভাগে আরও ৫০ জনের শরীরে ডেঙ্গুজ্বর শনাক্ত হয়েছে। 

এছাড়া ১৭ জুন হাসপাতালটির আন্তঃবিভাগ ও বর্হিবিভাগে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে মোট ৩৫ জন এবং ১৮ জুনে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ২১ জন। গত বৃহস্পতিবার (১৯ জুন) ২৫ জনের শরীরের ডেঙ্গুজ্বর শনাক্ত হয়। সবশেষ গতকাল শুক্রবার (২০ জুন) হাসপাতলটিতে ২১ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন।

জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, ঈদুল আজহার আগ থেকেই জেলায় ডেঙ্গুজ্বরের সংক্রমণ শুরু হয়। এরপরেই চলতি মাসের শুরু থেকে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমশই বাড়তে থাকে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার আরামবাগ, বালুবাগান, পিটিআই, মাদ্রাসাপাড়া ও মিস্ত্রিপাড়া এলাকা থেকে বেশি ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্ত রোগী পাওয়া যাচ্ছে। 

তারা জ্বর ও শরীর ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। শারিরীক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে না হওয়ায় ইতিমধ্যে অনেককে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হচ্ছে।

বৃষ্টি বাড়লেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। তখন ব্যাপকভাবে মশার বিস্তার ঘটে। এতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। তবে এবার বিষয়টি ভিন্ন। কারণ বৃষ্টি ছাড়াও ডেঙ্গু তার প্রভাব বিস্তার করছে। সচেতন নাগরিকরা মনে করেন, অসচেতনতা থেকেই ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

জুন-জুলাই মাসে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ে এমন মন্তব্য করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মো.

মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘‘জেলায় এবার যখন প্রথম ডেঙ্গু শনাক্ত হয়, তখন বৃষ্টি ছিল না। তাপপ্রবাহ চলছিল। এরপরেই ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ড্রেনেজ ব্যবস্থা অপ্রতুল হওয়ার কারণে এমনটা হতে পারে। এ বছর ডেঙ্গু প্রকোপে চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার পিটিআই, আরামবাগ, বালুবাগানসহ আশপাশের মহল্লাগুলোয় ডেঙ্গু রোগির সংখ্যা বেশি। এখানে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। ক্রিটিক্যাল রোগীদের রাজশাহীতে রেফার্ড করা হচ্ছে।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘সামেন বর্ষা মৌসুম থাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তবে আমাদের কাছে এসব রোগীদের চিকিৎসা দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত ওষুধ-সরঞ্জাম আছে। আশা করছি কোনো সমস্যা হবে না।’’

ডেঙ্গু বেড়ে যাওয়ার শঙ্কা নিয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. একেএম শাহাব উদ্দিন বলেন, ‘‘বর্তমানে জেলায় ডেঙ্গুজ্বরে আক্রান্তের সংখ্য বাড়ছে। এই রোগ প্রতিরোধে আমরা নিয়মিত কাজ করছি। আক্রান্তদের জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি সাধারণ মানুষকে সচেতন করার জন্য মাইকিং হচ্ছে। সাধারণ মানুষ সচেতন হলে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা কমতে পারে।’’

ঢাকা/শিয়াম/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প ইনব বগঞ জ ড ঙ গ জ বর ত হয় ছ

এছাড়াও পড়ুন:

যশোরে গভীর রাতে অস্ত্রের মুখে ৭ জনকে জিম্মি করে সোনার দোকানে ডাকাতি

যশোরের অভয়নগর উপজেলার একটি সোনার দোকানে ডাকাতি হয়েছে। গতকাল রোববার গভীর রাতে মশিয়াহাটী বাজারের সৌখিন জুয়েলার্সে এ ঘটনা ঘটে।
দোকানটির মালিক গৌতম কর্মকার (৫০)। তিনি মনিরামপুর উপজেলার কুলটিয়া গ্রামের বাসিন্দা।

গৌতম কর্মকার জানান, গতকাল রাত ১০টার দিকে তিনি দোকান বন্ধ করে বাড়িতে যান। গতকাল দিবাগত রাত তিনটার দিকে তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনে একটি কল আসে। অপর প্রান্ত থেকে তাঁকে জানানো হয়, তাঁর সোনার দোকানে ডাকাতি হচ্ছে। কিন্তু ভয়ে তিনি রাতে বাড়ি থেকে বের হননি। আজ সকালে দোকানটিতে গিয়ে তিনি ডাকাতির আলামত দেখতে পান।

গৌতম কর্মকারের দাবি, তাঁর দোকানের লকারে প্রায় ২ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার ও ২৪ ভরি ওজনের রুপার গয়না ছিল। এগুলোর বাজারমূল্য চার লাখ টাকার বেশি। ডাকাত দলটি এগুলোর সব লুট করেছে।

কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গতকাল রাত ২টার দিকে ১০ থেকে ১২ জনের একটি সশস্ত্র ডাকাত দল মশিয়াহাটী বাজারে আসে। তাদের সবার মুখ কাপড়ে দিয়ে বাঁধা ছিল। একপর্যায়ে অস্ত্রের মুখে একজন নারীসহ বাজারের অন্তত সাতজনকে দড়ি দিয়ে হাত বেঁধে এবং মুখে টেপ লাগিয়ে ফেলে রাখে। এরপর সৌখিন জুয়েলার্সের কলাপসিবল গেটের একটি পাশ এবং শাটারের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। পরে লকারের তালা ভেঙে সোনা ও রুপার গয়না নিয়ে যায় তারা। ভোর চারটা পর্যন্ত সেখানে ডাকাতি হয়। এ সময় শব্দ শুনে ঘর থেকে বের হন স্থানীয় বাসিন্দা বিকাশ বিশ্বাস (৬০) ও তাঁর স্ত্রী প্রতিমা বিশ্বাস (৫৫)। ডাকাতেরা অস্ত্রের মুখে ভয় দেখিয়ে প্রতিমা বিশ্বাসের গলার একটি সোনার হার নিয়ে যায়।

মশিয়াহাটী বাজারের পাশে সুজাতপুর গ্রাম। ওই গ্রামের কৌশিক দাস (১৬) জানায়, গতকাল রাতে ঘুম আসছিল না। রাত ২টা ২০ মিনিটের দিকে হেঁটে বাজারের দিকে যাচ্ছিল। বাজারে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে ডাকাতেরা তাকে ধরে ফেলে। এরপর তার দুই হাত দড়ি দিয়ে পেছনে বেঁধে মুখে চওড়া স্কচটেপ লাগিয়ে দেয়।

কৌশিক দাস বলে, ‘ডাকাত দল চলে যাওয়ার পর ভোর চারটার দিকে আমি কৌশলে হাতের বাঁধন খুলে ফেলি। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্যদের হাত ও মুখের স্কচটেপ খুলে দিয়েছি।’

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কে এম রবিউল ইসলাম, বিষয়টি চুরি না ডাকাতি, তা তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টেকনাফে সেতুর নিচে পানিতে ভাসছিল সাবেক ইউপি সদস্যের লাশ
  • অপ্রত্যাশিত আতিথেয়তা
  • অধস্তন আদালতের প্রায় এক হাজার বিচারককে পদোন্নতির প্যানেলভুক্তির সিদ্ধান্ত
  • এনসিপিসহ তিন রাজনৈতিক দল যেসব প্রতীক পাচ্ছে
  • বগুড়ায় ধানক্ষেত থেকে ব্যবসায়ীর লাশ উদ্ধার
  • রোবটদের সঙ্গে আমার বন্ধুত্বের গল্প 
  • আরব আমিরাতকে ৪৯ রানে গুঁড়িয়ে ইতিহাস গড়ল যুক্তরাষ্ট্র
  • চট্টগ্রামে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যুবককে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা
  • যশোরে গভীর রাতে অস্ত্রের মুখে ৭ জনকে জিম্মি করে সোনার দোকানে ডাকাতি
  • ‘দূরে থেকেও আমরা কাছে, এটাই বাস্তব’