‘বনলতা সেন’ ছবির শুটিং, ডাবিং, সম্পাদনা, রংবিন্যাস, আবহসংগীতের কাজ—সবই শেষ। শিগগিরই ‘বনলতা সেন’ চলচ্চিত্র সার্টিফিকেশন বোর্ডেও জমা পড়বে। পরিচালক মাসুদ হাসান উজ্জ্বল জানালেন, এখন পর্যন্ত যে পরিকল্পনা, তাতে আগামী সেপ্টেম্বরে ছবিটি মুক্তি দিতে চান। সেভাবেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
মাসুদ হাসান উজ্জ্বলের এটি দ্বিতীয় চলচ্চিত্র। নাটক ও বিজ্ঞাপনচিত্র দিয়ে হাত পাকানোর পর তাঁর প্রথম চলচ্চিত্র ছিল ‘উনপঞ্চাশ বাতাস’। ছবিটি ২০২০ সালের শেষ দিকে মুক্তি পায়। ‘বনলতা সেন’ সরকারি অনুদানের ছবি। ছবির পরিচালক উজ্জ্বল প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুটিংয়ে যা প্রয়োজন, তা–ই করেছি। গল্পে কোনো আপস করিনি। তাই শুটিং শেষ করতে আট মাসের মতো সময় লেগেছে।’
ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্র করেছেন মাসুমা রহমান নাবিলা। তবে শুরুতে তাঁকে অন্য একটি চরিত্রের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। উপস্থাপিকা নাবিলার এটি চতুর্থ চলচ্চিত্র। শাকিব খানের বিপরীতে ‘তুফান’ ছবিতে অভিনয় করেছেন সর্বশেষ। ২০২৪ সালে মুক্তি পাওয়া ছবিটি হিট হয়।
আরও পড়ুনভিকির সিরিজে নিশো–নাবিলা৩০ এপ্রিল ২০২৫নাবিলা বললেন, ‘শুরুতে শুধু ওই চরিত্রের সারসংক্ষেপ দেওয়া হয়। বলেছিলাম, পুরো স্ক্রিপ্ট দেওয়া যায় কি না। তাহলে বুঝতাম, আমার চরিত্রের উপস্থাপনটা কী রকম বা কী। পুরো চিত্রনাট্য পড়ে তো আমি মুগ্ধ। পুরো গল্পটা চোখের সামনে ভেসে উঠল। যা-ই হোক, আমাকে যে চরিত্রের কথা বলেছে, ওই ধরনের চরিত্র চাইছিলাম না। ওনাকে সুন্দর করে বললাম, এই চরিত্রটা আমি এখন করতে চাইছি না। তবে আপনি যদি আমাকে বনলতা সেন বলতেন, তাহলে এককথায় রাজি হয়ে যেতাম (হাসি)। অনেক দিন পর তিনি আমাকে ডাকলেন। অডিশন নিলেন তিনবার।’ শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা দারুণ জানিয়ে বললেন, ‘উজ্জ্বল ভাই তো অনেক বড় ক্যানভাসে কাজ করেন। তাঁর সিনেমা হচ্ছে কবিতার মতো। এত সুন্দর করে বানান।’
ছবিটি নিয়ে নির্মাতা আরও বলেন, ‘আমার আফসোস—উইলিয়াম ওয়ার্ডসওয়ার্থ, এডগার অ্যালান পো কিংবা টি এস এলিয়টের থেকে জীবনানন্দ দাশ কোনো অংশে কম নন। এত দিনে গোটা বিশ্বের তাঁকে জানা উচিত ছিল। আমি জীবনে প্রথম এমন বিস্ময়কর এক কবিকে ট্রিবিউট করার সুযোগ পেয়েছি। কেবল আমি কেন, গোটা বাঙালি জাতির জন্য জীবনানন্দ দাশ উদ্যাপনের একটা বিরাট সুযোগ। এই উদ্যাপন জাতীয় পর্যায়ের হওয়া উচিত। কারণ, এ বছরই ছিল কবি জীবনানন্দ দাশের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী। আমি অপেক্ষায় আছি কবে সেই পরিবেশ তৈরি হয়, যখন এমন এক কবিকে উদ্যাপন করে আমরা ধন্য হব।’
নাবিলা। ছবি: ফেসবুক থেকে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে’—তিন দিন আগে হুমকি পেয়েছিলেন সরোয়ার
চট্টগ্রামে ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলাকে গুলি করার তিন দিন আগে তাঁকে হুমকি দিয়েছিলেন আরেক ‘সন্ত্রাসী’ মো. রায়হান। ওই সময় সরোয়ারকে হুমকি দিয়ে বলা হয়, তাঁর সময় শেষ, যা খাওয়ার যেন খেয়ে নেন। সরোয়ারের বাবা আবদুল কাদের প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
গতকাল বুধবার রাতে আবদুল কাদেরের সঙ্গে নগরের বায়েজিদ বোস্তামীর চালিতাতলী এলাকার খন্দকারপাড়া এলাকার বাড়িতে কথা হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার ছেলেকে তিন দিন আগে গত রোববার মুঠোফোনে হুমকি দিয়েছিলেন সন্ত্রাসী রায়হান। বলেছিলেন, “তোর সময় শেষ, যা খাওয়ার খেয়ে নে।”’
গতকাল নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার চালিতাতলীর খন্দকারপাড়া এলাকায় নির্বাচনী জনসংযোগ করছিলেন চট্টগ্রাম-৮ আসনের বিএনপির প্রার্থী ও নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ। জনসংযোগের বহর এগোতে এগোতে চলছিল স্লোগান। হঠাৎ গুলির শব্দ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যান নেতা-কর্মীরা। ঘটনাস্থলেই গুলিতে মারা যান সরোয়ার। গুলিবিদ্ধ হন এরশাদ উল্লাহসহ চারজন। সরোয়ারের পিঠে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করা হয় বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতেও দেখা গেছে এমন দৃশ্য। এরশাদ উল্লাহসহ অন্যরা নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ জানায়, সরোয়ারের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, অস্ত্র, হত্যাসহ ১৫টি মামলা রয়েছে।
সরোয়ারের বাবা আবদুল কাদের বলেন, তাঁর ছেলেকে প্রায়ই হুমকি দিতেন বিদেশে পলাতক সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলী, তাঁর সহযোগী সাজ্জাদ হোসেন ওরফে ছোট সাজ্জাদ ও মো. রায়হান। এ জন্য তাঁর ছেলে সতর্ক হয়ে চলাফেরা করতেন। সঙ্গে লোকজনও থাকত। কিন্তু বুধবার তাঁর বাড়ি থেকে দুই থেকে তিন শ গজ দূরে রাস্তার পাশে দোকানে গণসংযোগ চালান বিএনপি নেতা এরশাদ উল্লাহ। যেহেতু নিজের এলাকা কেউ কিছু করবে না, সে জন্য ছেলের আত্মবিশ্বাস ছিল। সরোয়ার নিজেও এরশাদ উল্লাহর সঙ্গে মসজিদে মাগরিবের নামাজ পড়েছেন। পরে গণসংযোগে অংশ নেন তিনি।
আবদুল কাদের যখন কথা বলছিলেন, তখনো তাঁর পাঞ্জাবি ও লুঙ্গিতে লেগে ছিল ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। ছেলেকে যখন গুলি করা হচ্ছিল, তখন তিনিও কাছে ছিলেন। লোকজনের ভিড় থাকায় বুঝতে পারেননি ছেলেকে গুলি করা হয়েছে। পরে ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় রিকশা ও সিএনজি করে হাসপাতালে নিয়ে যান আবদুল কাদের। তিনি বলেন, ‘রিকশাতেই আমার ছেলে আমার কোলে মারা যায়। তবু মনকে বোঝাতে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম।’আবদুল কাদের আরও বলেন, ‘এভাবে বাড়ির কাছে ছেলেকে মেরে ফেলবে, তা কল্পনা করিনি কখনো। বায়েজিদ বোস্তামী থানার ওসি আরিফুর রহমানকেও রাস্তায় পেটানোর হুমকি দিয়েছিলেন সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ।’
আবদুল কাদের যখন কথা বলছিলেন, তখনো তাঁর পাঞ্জাবি ও লুঙ্গিতে লেগে ছিল ছোপ ছোপ রক্তের দাগ। ছেলেকে যখন গুলি করা হচ্ছিল, তখন তিনিও কাছে ছিলেন। লোকজনের ভিড় থাকায় বুঝতে পারেননি ছেলেকে গুলি করা হয়েছে। পরে ছেলেকে রক্তাক্ত অবস্থায় রিকশা ও সিএনজি করে হাসপাতালে নিয়ে যান আবদুল কাদের। তিনি বলেন, ‘রিকশাতেই আমার ছেলে আমার কোলে মারা যায়। তবু মনকে বোঝাতে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলাম।’
চট্টগ্রাম নগরের হামজারবাগের এই স্থানেই গুলি করা হয় সরয়ারকে। ঘটনার পর গতকাল সেখানে বসে কথা বলছিলেন তাঁর বাবা আবদুল কাদের । তাঁর পাঞ্জাবিতে তখনো লেগেছিল ছেলের রক্ত