নারীদের ওয়ানডে বিশ্বকাপে আরও একটি দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া দল। আজ বুধবার (২২ অক্টোবর) রাতে নিজেদের ষষ্ঠ ম্যাচে ইংল্যান্ডের মেয়েদের তারা হারিয়েছে ৬ উইকেটের ব্যবধানে।

ইন্দোরে ইংল্যান্ডের মেয়েরা আগে ব্যাট করতে নেমে ৯ উইকেটে ২৪৪ রান করে ৫০ ওভারে। জবাবে সাদার‌ল্যান্ড ও গার্ডনারের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ৪০.

৩ ওভারে মাত্র ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে নোঙর করে অজি মেয়েরা।

আরো পড়ুন:

রাবাদার ব্যাটে ইতিহাস: ১১ নম্বরে ভাঙলেন ১১৯ বছরের পুরনো রেকর্ড

আফগানিস্তানকে ইনিংস ব্যবধানে হারিয়ে জিম্বাবুয়ের বিরল জয়

রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ওভারেই উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। ফোবি লিচফিল্ড ১ রানে ফেরেন সাজঘরে। তৃতীয় ওভারে গিয়ে জর্জিয়া ভোলের উইকেটও হারায় তারা। ৬ রানের বেশি করতে পারেননি এই উদ্বোধনী ব্যাটার। ২৪ রানের মাথায় এলিসা পেরিও ফিরেন। আজ তিনি ৩ চারে ১৩ রানের বেশি করতে পারেননি। ৬৮ রানের মাথায় বেথ মুনি আউট হন ব্যক্তিগত ২০ রানে। তাতে মনে হচ্ছিল ম্যাচটি কঠিন হয়ে যাবে অস্ট্রেলিয়ার মেয়েদের জন্য। কিন্তু না।

সেখান থেকে অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড ও অ্যাশলে গার্ডনার পঞ্চম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন ১৮০ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। গার্ডনার ৭৩ বলে ১৬ চারে ১০৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। আর সাদারল্যান্ড ৯টি চার ও ১ ছক্কায় ১১২ রানে অপরাজিত থাকেন ৯৮ রানে।

ইংল্যান্ডের লিন্ডসে স্মিথ ৮ ওভারে ৪৩ রানে ২টি উইকেট নেন।

তার আগে ইংল্যান্ডের ইনিংসে ট্যাম বেউমন্ড ১০টি চার ও ১ ছক্কায় সর্বোচ্চ ৭৮ রান করেন। অ্যালিস ক্যাপসি ৫ চারে করেন ৩৮ রান। এছাড়া চার্লি ডিন ২৬, সোফিয়া ২২, হেদার নাইট ২০ ও অ্যামি জোনস করেন ১৮ রান।

অস্ট্রেলিয়ার সাদারল্যান্ড ১০ ওভারে ১ মেডেনসহ ৬০ রানে নেন ৩টি উইকেট। সোফি মলিনেয়াক্স ১০ ওভারে ৫২ রানে নেন ২টি উইকেট। আর গার্ডনার ৯ ওভারে ৩৯ রানে নেন ২টি। বোলিংয়ে সর্বোচ্চ ৩ উইকেট ও ব্যাট হাতে অপরাজিত ৯৮ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা হন সাদারল্যান্ড।

এই জয়ে ৬ ম্যাচের টানা পাঁচটি জিতে ১১ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে অবস্থান নিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার মেয়েরা। সমান ম্যাচ থেকে ৯ পয়েন্ট নিয়ে ইংল্যান্ড আছে তৃতীয় স্থানে। ১০ পয়েন্ট নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা দুইয়ে।

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র ডন র উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় পার্টির ভবিষ্যৎ কী

প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো যখন প্রার্থী ঘোষণা করে মাঠে নেমে গেছে, জাতীয় পার্টি (জাপা) তখনো নিশ্চিত নয় যে তারা আদৌ আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কি না। এ প্রশ্নে অন্তর্বর্তী সরকার শেষ পর্যন্ত কী অবস্থান নেয়, সেটিও দলটির কাছে স্পষ্ট নয়। এর সঙ্গে রয়েছে জি এম কাদের ও আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বে বিভক্ত জাতীয় পার্টির দুই অংশের পরস্পরবিরোধী তৎপরতা। এসব কারণে দলটির ভবিষ্যৎ কী—সে আলোচনাও সামনে এসেছে।

গত ১৪ মাসে জাতীয় পার্টির রাজনৈতিক অবস্থান অনেকটাই কোণঠাসা। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলের সভা-সমাবেশে পুলিশের বাধা, কার্যালয়ে হামলা এবং রাজনৈতিক প্রক্রিয়া থেকে দূরে থাকার মতো ঘটনাগুলো এতে বড় ভূমিকা রেখেছে। অন্যদিকে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন দল ইতিমধ্যে দলীয় মনোনয়ন প্রায় চূড়ান্ত করে নির্বাচনী প্রচারে নেমে গেছে।

তিন নির্বাচনের ‘দোসর’–বিতর্ক

বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে (২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪) জাতীয় পার্টি আওয়ামী লীগ সরকারের সুবিধাভোগী বা ফ্যাসিবাদের ‘দোসর’ হিসেবে সমালোচিত। এ দায় তারা এড়াতে পারছে না। ফলে ফ্যাসিবাদের ‘দোসর’, এই তকমা দলটির রাজনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা গভীরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এ সুযোগে জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ইসলামী আন্দোলন ও গণ-অধিকার পরিষদ প্রকাশ্যেই চাচ্ছে, জাতীয় পার্টি যেন নির্বাচন করার সুযোগ না পায়।

যদিও তিনটি নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় জাতীয় পাটিকে ফ্যাসিবাদের ‘দোসর’ বলার বিষয়ে দলটির নেতাদের ভিন্ন ব্যাখ্যা আছে। তাঁদের দাবি, ভোটে গিয়ে জাতীয় পার্টি কোনো অন্যায় করেনি। তাঁরা সংসদের ভেতরে–বাইরে আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যায়-অপরাধের যথাযথ সমালোচনা করেছেন। এর মধ্যে জি এম কাদের ‘দোসর’ পরিচয়ের দায় নিতে শুরু থেকেই অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছেন।

এ ছাড়া আনিসুল ইসলাম মাহমুদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টির নির্বাহী চেয়ারম্যান মো. মুজিবুল হক (চুন্নু) প্রথম আলোকে বলেন, ‘২০২৪ সালের নির্বাচনে নৈতিকভাবে না যাওয়া উচিত ছিল। তবে নির্বাচনে গিয়ে আমরা আইনগতভাবে কোনো অন্যায় করিনি। এ জন্য আমাদের স্বৈরাচারের দোসর বলা হচ্ছে। আমরা যদি দোসর হই, এর বিচারটা জনগণের হাতে দেওয়াই তো ভালো।’

নির্বাচন করতে প্রস্তুত দুই পক্ষই

বিভক্ত জাতীয় পার্টির দুই অংশের উচ্চপর্যায়ের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে যে ধারণা পাওয়া গেছে, সেটি হলো তাঁরা এখন পর্যন্ত মনে করতে পারছেন না যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার একটি সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করতে পারবে।

তবে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর পরিস্থিতি অনুকূল বা প্রতিকূল যা-ই হোক, দলটির উভয় অংশই নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। এ ক্ষেত্রে জি এম কাদেরের নেতৃত্বাধীন অংশটি এককভাবে আর আনিসুল ইসলামের অংশটি জোটগত ভোটে বেশি আগ্রহী।

এ বিষয়ে আনিসুল ইসলাম মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কিছু সমমনা দলের সঙ্গে কথা বলছি। এটা এখনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর মতো কিছু হয়নি। দেখা যাক, কী হয়।’

তবে এখন পর্যন্ত জাতীয় পার্টির জন্য যে পরিবেশ-পরিস্থিতি, তাতে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ কতটা পাবে, তা নিয়ে নেতাদের মধ্যে বেশ সংশয় আছে।

এ বিষয়ে জি এম কাদের প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিস্থিতি যা-ই হোক, আমাদের হয় নির্বাচন করতে হবে, না হয় ঠেকানোর চেষ্টা করতে হবে। আমরা এককভাবে নির্বাচন করার চেষ্টা করব। কারও সঙ্গে মৌখিক সমঝোতাও করতে পারি।’

জানা গেছে, পরিস্থিতি নজরে রেখে জাতীয় পার্টির দুই পক্ষই ভোটে থাকার জুতসই উপায় খুঁজছে। নেতাদের ধারণা, জোটের মাধ্যমে ভোটে গেলে তাঁদের আসন-সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে। তবে এসব সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর রাজনৈতিক পরিবেশ কতটা স্থিতিশীল হয়, তার ওপর।

প্রতীক নিয়ে সংকটজাতীয় পার্টি লোগো

সম্পর্কিত নিবন্ধ