ইরানকে কেন সহায়তা করছেন না, জানালেন পুতিন
Published: 23rd, June 2025 GMT
মধ্যপ্রাচ্যে সূক্ষ্ম ভারসাম্য বজায় রেখেছে রাশিয়া। একদিকে তারা ইসরায়েলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক উপভোগ করছে, অন্যদিকে ইরানের সঙ্গে শক্তিশালী সামরিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছে।
মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোয় আকস্মিক বিমান হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র নিজদের সরাসরি এই সংঘাতে জড়িয়ে ফেলেছে।
এমতাবস্থায় ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে রাশিয়ার ভূমিকা স্পষ্ট করতে হয়েছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে।
আরও পড়ুনমধ্যপ্রাচ্যে কি আরেক মিত্রকে হারাতে যাচ্ছে রাশিয়া১৮ জুন ২০২৫রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসের খবরে বলা হয়েছে, মিত্রদের প্রতি মস্কোর প্রতিশ্রুতি নিয়ে যাঁরা প্রশ্ন তুলেছেন বা তুলছেনম তাঁদের ‘উসকানিদাতা’ বলে আখ্যায়িত করেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন—তিনি ইরানের দীর্ঘদিনের মিত্র।
পুতিন বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদের সঙ্গে রাশিয়া একটি সূক্ষ্ম ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখেছে।
সেন্ট পিটার্সবার্গে আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ফোরামের প্লেনারি অধিবেশনে বক্তব্য দেওয়ার সময় পুতিন বলেন, ‘আমি আপনাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেতে চাই, সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ও রুশ ফেডারেশনের প্রায় ২০ লাখ মানুষ বর্তমানে ইসরায়েলে বসবাস করছেন। এটি আজ বলতে গেয়ে প্রায় একটি রুশভাষী দেশ এবং নিঃসন্দেহে, রাশিয়ার সমসাময়িক ইতিহাসে আমরা সব সময় বিষয়টি বিবেচনায় রাখি।’
পুতিন আরও বলেন, রাশিয়ার জনসংখ্যার প্রায় ১৫ শতাংশ ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করেন এবং মস্কো ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) একজন পর্যবেক্ষক সদস্য।
এসব কারণে রাশিয়া দীর্ঘ দশক ধরে মধ্যপ্রাচ্যে একটি সূক্ষ্ম ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে চলছে। মস্কো একদিকে ইসরায়েলের সঙ্গে উষ্ণ সম্পর্ক উপভোগ করছে, অন্যদিকে ইরানের সঙ্গে শক্তিশালী অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্কও গড়ে তুলেছে।
পুতিন এসব বিষয়ের ওপর জোর দিয়ে বলেন, রাশিয়ার সঙ্গে ইরানের একটি আস্থাপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে এবং বুশেহরে ইরানের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে সহায়তা করেছে রাশিয়া।
আরও পড়ুনপুতিন কেন ইরানকে রক্ষা করছেন না?২২ জুন ২০২৫যুক্তরাষ্ট্রের হামলার নিন্দাইরানকে সহায়তা না করলেও দেশটির পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার নিন্দা জানিয়ে একে ‘আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলেছে রাশিয়া।
আল–জাজিরার খবরে বলা হয়, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে রোববার এ নিয়ে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, ‘একটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের ভূখণ্ডে ক্ষেপণাস্ত্র ও বোমা হামলা চালানোর এই দায়িত্বজ্ঞানহীন সিদ্ধান্ত—তা এর পেছনে যে যুক্তিই দেওয়া হোক না কেন, আন্তর্জাতিক আইন, জাতিসংঘ সনদ এবং জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাবগুলোর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি। চলমান পরিস্থিতিকে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পথে ফিরিয়ে নেওয়ার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে প্রচেষ্টা বাড়ানোর ওপর জোর দিচ্ছি।’
ইসরায়েলের হামলার মধ্যে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি রোববার রাশিয়া গেছেন। আজ সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে তাঁর বৈঠক করার কথা রয়েছে।
গত সপ্তাহে ইরানের ওপর ইসরায়েলের হামলার পর মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে যে সংঘাত শুরু হয়েছে তা বন্ধে মধ্যস্থতা আলোচনায় সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছিলেন পুতিন। কিন্তু ট্রাম্প পুতিনকে অন্যের সংঘাত বন্ধে সহায়তা করার পরিবর্তে নিজেদের যুদ্ধ বন্ধ করতে বলেছেন।
আরও পড়ুনসবার স্বার্থ রক্ষা করে ইরান-ইসরায়েল চুক্তি সম্ভব: পুতিন১৯ জুন ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র
এছাড়াও পড়ুন:
দাপুটে জয়ে ক্যাম্প ন্যুতে বার্সেলোনার প্রত্যাবর্তন
ফেরান তোরেসের দুর্দান্ত জোড়া গোল আর শুরুর দিকেই রবার্ট লেভানদোভস্কির আঘাত; সব মিলিয়ে দুই বছর পর ন্যু ক্যাম্পে ফিরে এসে একেবারে রাজকীয় ভঙ্গিতেই নিজেদের উপস্থিতি জানান দিল বার্সেলোনা। ১০ জনের বিলবাওকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে লা লিগায় টানা তিন জয়ের আনন্দে ভাসল কাতালানরা।
নবায়ন কাজের কারণে দীর্ঘ বিরতির পর ন্যু ক্যাম্পে এটি ছিল বার্সার প্রথম ম্যাচ। শুরুতেই যেন সেই অপেক্ষার সব ক্ষত মুছে দিলেন লেভানদোভস্কি। ম্যাচের মাত্র চার মিনিটে প্রতিপক্ষের বক্সের বাইরে বল কাড়ার পর নিচু শটে উনাই সিমোনকে পরাস্ত করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
দ্রুততম ৪৪ গোলে রোনালদোর রেকর্ড ভাঙলেন এমবাপ্পে
মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে বার্সেলোনাকে হারাল রিয়াল
এরপর দানি ওলমোর প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেয় বিলবাওয়ের রক্ষণ দেয়াল। লামিন ইয়ামালের শটও রুখে দেন সিমোন। অন্যদিকে আক্রমণে উঠেও সুযোগ নষ্ট করেন উনাই গোমেজ ও নিকো উইলিয়ামস। আয়েরিক লাপোর্তের হেডও পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।
এরপর ফেরান তোরেস ও ফিরমিন লোপেজও গোলের খোঁজে সক্রিয় হন। গার্সিয়া চোট কাটিয়ে একাদশে ফিরেই বিলবাওয়ের নিশ্চিত গোল ঠেকান।
হাফটাইমের ঠিক আগে ইয়ামালের দারুণ বাঁকানো পাসে সুযোগ পান তোরেস। নিচু শটে সিমোনকে পরাস্ত করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তিনি। সিমোন ছুঁয়ে দিলেও গোল ঠেকাতে পারেননি।
বিরতির পর মাত্র তিন মিনিটের মাথায় লোপেজ দারুণ এক প্রচেষ্টায় সোজা শটে তৃতীয় গোলটি করেন। ৫৪ মিনিটে লোপেজের ওপর বিপজ্জনক ট্যাকল করে ওইহান সানসেট লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে বিলবাওয়ের দুর্ভাগ্য আরও ঘনীভূত হয়।
এরপর ডানি ভিভিয়ান হুমকি তৈরি করলেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। পাল্টা আক্রমণে ওলমোর শটও অল্পের জন্য বাইরে যায়। ভিভিয়ান পরে আরেকবার হেডে গোল করতে উদ্যত হয়েছিলেন, তবে গার্সিয়ার গ্লাভসে আটকে যায় বল।
অবশেষে ৯০ মিনিটে ইয়ামালের সূক্ষ্ম পাস ধরে ঠান্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে ম্যাচের শেষ শব্দটি লিখে দেন ফেরান তোরেস।
দুই বছর পর ঘরের মাঠে ফিরল বার্সেলোনা। আর তোরেস-ইয়ামালরা যেন সেই আনন্দকে ফুটিয়ে তুললেন মাঠজুড়ে গোলের আতশবাজিতেই।
ঢাকা/আমিনুল