প্রতিবেশীদের অভিযোগে জাকারবার্গের স্কুল বন্ধ
Published: 9th, November 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার পালো আল্টো শহরে ক্রিসেন্ট পার্ক এলাকায় মার্ক জাকারবার্গের বিশাল বাড়িতে কয়েক বছর ধরে একটি স্কুলের কার্যক্রম চলছে। নিজের বাড়িতে চলমান সেই স্কুলের কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছেন মেটার চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মার্ক জাকারবার্গ। প্রায় চার বছর ধরে অভিযোগের পর স্কুল বন্ধ করলেন তিনি। আশপাশের প্রতিবেশীদের ক্ষোভের মুখে স্কুল বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছেন তিনি।
মার্ক জাকারবার্গ বিকেন বেন নামে স্কুলটি ২০২১ সালে চালু করেন। জাকারবার্গের এক পোষা মুরগির নাম ছিল বিকেন বেন। এ প্রতিষ্ঠানে ৩০ থেকে ৪০টি শিশুকে বিশেষ পদ্ধতিতে পাঠদান করা হতো। যদিও স্কুলের জন্য প্রশাসনের কোনো অনুমতি ছিল না; প্রথম দিকে কেউ স্কুলের খোঁজ পাননি। প্রতিবেশীরা খেয়াল করেন, প্রতিদিন সকালে বাড়ির সামনে বেশ কয়েকটি গাড়ি এসে থামছে। গাড়ি থেকে শিশুরা বাড়িতে নিয়মিত যাতায়াত শুরু করে। প্রথমে কেউ এ বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেননি। শিশুদের কোনো খেলার আয়োজন বা টিউশন ক্লাস মনে করেছিলেন অনেকেই। ধীরে ধীরে বোঝা যায়, সেখানে নিয়মিত ক্লাস চলছে শিশুদের জন্য। শিশুদের উন্মুক্ত ধরনের পাঠ্যসূচিতে গুরুত্ব দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এমন ধরনের মন্টেসরি স্কুল জনপ্রিয়। এসব স্কুলে হাতে–কলমে শিক্ষাকেই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। নিয়মিত স্কুলের মতো পরীক্ষা বা পাঠ্যক্রম নেই।
২০২২ সালের দিকে স্কুল নিয়ে প্রতিবেশীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। অভিযোগ ওঠে, প্রশাসনের কাছ থেকে জাকারবার্গ সুবিধা নিচ্ছেন। নিয়ম ভঙ্গ করে স্কুল চলছে সেখানে। ক্ষুব্ধ এক বাসিন্দা অভিযোগ করে লিখেছেন, কোটিপতি এক পরিবারের স্বার্থ রক্ষায় প্রশাসন ব্যস্ত। কী ঘটছে সেখানে, সে সম্পর্কে কেউ কিছু জানেন না। এটি সত্যিই বিস্ময়কর! প্রযুক্তিবিষয়ক সাময়িকী উইয়ার্ডের কাছে প্রতিবেশীদের অভিযোগ ও শহর প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগসংক্রান্ত নথি রয়েছে। প্রায় ১ হাজার ৬৬৫ পৃষ্ঠার সরকারি নথি পাওয়া গেছে। সেসব নথি থেকে জানা গেছে, বেশ কয় বছর ধরেই মার্ক জাকারবার্গের বাড়ি ঘিরে ক্ষোভ চলছে।
শুধু স্কুল নিয়ে প্রতিবেশীদের অভিযোগ ছিল না; জাকারবার্গের বাড়িতে এক দশক ধরে চলছে নির্মাণকাজ। আবার অতিরিক্ত নিরাপত্তা তৎপরতাসহ বাড়তি শব্দে অতিষ্ঠ ক্রিসেন্ট পার্ক এলাকার বাসিন্দারা। মার্ক জাকারবার্গ ওই এলাকায় অন্তত ১১টি সম্পত্তি কিনে একটি বিশাল প্রাঙ্গণ তৈরি করেছেন বলেই নির্মাণকাজ চলছে অনেক দিন ধরেই। শহরের ভবন পরিদর্শকেরা সেখানে গেলেও তাঁদের পেছনে নিরাপত্তারক্ষীরা গাড়ি নিয়ে চলতেন।
২০২৪ সালে স্কুলের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা পড়ে। তখন শহর কর্তৃপক্ষ সমঝোতার পথ খোঁজার চেষ্টা করে। শহরের পরিকল্পনা পরিচালক জোনাথন লাইট প্রস্তাব দেন, কিছু শিক্ষামূলক কার্যক্রম সাময়িকভাবে চালু রাখা যায়। যদিও সে প্রস্তাব আরও ক্ষোভ বাড়িয়ে দেয়। এক বাসিন্দা তখন বলেন, ‘আমি বা অন্য কোনো সাধারণ নাগরিক চার বছর ধরে নিয়ম ভঙ্গ করলে এমন আচরণ পেতাম?’
মার্ক জাকারবার্গের আইনজীবীরা স্কুল চালু রাখার জন্য নানা যুক্তি দেন। স্কুলটিকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয় বলা হয়। পারিবারিক উদ্যোগ হিসেবে শিক্ষামূলক কার্যক্রম বলা হয়। স্কুলটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিবন্ধিত পরিবারভিত্তিক ডে কেয়ার হিসেবে ঘোষণা করার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়। শেষ পর্যন্ত তেমন কোনো উদ্যোগ কাজে আসেনি।
চলতি বছরের মার্চে শহর প্রশাসন আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দেশ দেয়, ৩০ জুনের মধ্যে বিকেন বেন স্কুল বন্ধ করতে হবে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয় তখন। সরকারি নথি বলছে, আগস্টে স্কুলটি বন্ধ হয়ে যায়। অন্যদিকে মেটার মুখপাত্র ব্রায়ান বেকার বলেন, স্কুলটি শুধু স্থানান্তরিত হয়েছে। নতুন অবস্থান কোথায়, সে তথ্য মেটা প্রকাশ করেনি।
সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম র ক জ ক রব র গ জ ক রব র গ র স ক ল বন ধ
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা ও মনোনীত প্রার্থীর শোডাউন, প্রশাসনের ১৪৪ ধারা
গাইবান্ধার সাঘাটায় জেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি নাহিদুজ্জামান নিশাত ও গাইবান্ধা-৫ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ফারুক আলমের কর্মী-সমর্থকদের মোটরসাইকেল শোডাউনকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সম্ভাব্য সংঘর্ষ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন।
রবিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে বিষয়টি জানাজনি হয়। এর আগে, শনিবার সাঘাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর মো. আল কামাহ্ তমাল স্বাক্ষরিত এ আদেশ জারি করা হয়।
আদেশে বলা হয়েছে, শোডাউনকে কেন্দ্র করে দুটি গ্রুপ পরস্পর বিরোধী অবস্থানে রয়েছে। এতে সংঘর্ষ ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির আশঙ্কা থাকায় রবিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত সাঘাটা উপজেলা ও এর আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা কার্যকর থাকবে।
এ সময় এলাকায় সব ধরনের সভা-সমাবেশ, মিছিল, মাইকিং, আগ্নেয়াস্ত্র বা দেশীয় অস্ত্র বহন, পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির একত্রে চলাফেরা নিষিদ্ধ থাকবে। তবে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রে এই নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য নয়।
স্থানীয় সূত্র জানায়, গাইবান্ধা-৫ আসনের বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ফারুক আলমের কর্মী-সমর্থক এবং বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা নাহিদুজ্জামান নিশাদের কর্মী-সমর্থকরা একই দিনে শোডাউনের ঘোষণা দিলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এরই প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করেছেন।
চলতি বছরের ২৪ আগস্ট দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ ও সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপের অভিযোগে জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি নাহিদুজ্জামান নিশাতকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। পরে গত ৩ নভেম্বর গাইবান্ধা-৫ আসনে ফারুক আলম সরকারকে ধানের শীষের প্রার্থী ঘোষণা করে বিএনপি।
ঢাকা/মাসুম/রাজীব