ইরানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত বাড়বে: জামায়াত
Published: 23rd, June 2025 GMT
ইরানে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের হামলায় মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ও সংঘর্ষ আরও বাড়বে বলে মনে করে জামায়াতে ইসলামী। আজ সোমবার ইরানে আগ্রাসী হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান।
গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে জামায়াত আমির বলেন, সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটের ইন্টেলিজেন্স কমিটির শুনানিতে দেশটির জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড বলেছেন, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এখনো বিশ্বাস করে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না। অথচ ইরানের পরমাণু অস্ত্র বানানোর মিথ্যা অজুহাতে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের ওপর হামলা করেছে। মিথ্যা ও অনুমাননির্ভর তথ্যের ওপর ভিত্তি করে ইরানের মতো একটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্রের ওপর এই আগ্রাসী হামলা বিশ্ববাসীকে হতবাক করেছে। এই হামলা বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি। এর ফলে মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ও সংঘর্ষ আরও বাড়বে।
ইরানের ওপর এই হামলা আন্তর্জাতিক আইন, রীতিনীতি ও জাতিসংঘ সনদের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেন জামায়াতে ইসলামীর আমির। বিবৃতিতে তিনি বলেন, ১৩ জুন ইসরায়েল ও ২১ জুন রাতে যুক্তরাষ্ট্র ইরানে অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ইরানের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে। এ হামলা অযৌক্তিক ও অবৈধ। এ হামলার ফলে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
অবিলম্বে মধ্যপ্রাচ্যসহ গোটা বিশ্বে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের বেপরোয়া, অন্যায়, অযৌক্তিক ও আগ্রাসী হামলা বন্ধ করার লক্ষ্যে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য জাতিসংঘসহ বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইসর য় ল ইসল ম র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
আইএমএফের দুই কিস্তির ১৩০ কোটি ডলার মিলবে দু-এক দিনের মধ্যে
বাংলাদেশের জন্য চলমান ঋণ কর্মসূচির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড়ের প্রস্তাব অনুমোদনে করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে সংস্থাটির নির্বাহী পর্ষদের সভায় এ অনুমোদন করা হয়। আগামী দু-এক দিনের মধ্যে একসঙ্গে দুই কিস্তির ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার বাংলাদেশ পাবে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।
২০২৩ সালের ৩১ জানুয়ারি আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য সাড়ে তিন বছর মেয়াদি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব অনুমোদন করে। বাংলাদেশের সামষ্টিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, ঝুঁকিতে থাকা ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে সুরক্ষা দেওয়া এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবেশসম্মত প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়তা দিতে ঋণ কর্মসূচি অনুমোদন করা হয়। চলতি হিসাবের ঘাটতি বেড়ে যাওয়া, টাকার দরপতন ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়ায় ওই সময় আইএমএফের কাছে ঋণ চেয়েছিল তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।
আইএমএফের ঋণ কর্মসূচির মধ্যে বর্ধিত ঋণ সহায়তা (ইসিএফ) ও বর্ধিত তহবিল সহায়তা (ইএফএফ) বাবদ ঋণ রয়েছে ৩৩০ কোটি ডলার। আর রেজিলিয়েন্স অ্যান্ড সাসটেইনেবিলিটি ফ্যাসিলিটি (আরএসএফ) বাবদ রয়েছে ১৪০ কোটি ডলার। আরএসএফ হলো আইএমএফের একটি নতুন তহবিল, যেখান থেকে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশকেই প্রথম ঋণ দেওয়া হচ্ছে।
২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আইএমএফের কাছ থেকে প্রথম কিস্তির ৪৭ কোটি ৬৩ লাখ ডলার পায় বাংলাদেশ। একই বছরের ডিসেম্বরে দ্বিতীয় কিস্তির ৬৮ কোটি ১০ লাখ ডলার এবং ২০২৪ সালের জুনে তৃতীয় কিস্তির ১১৫ কোটি ডলার পেয়েছে। তিন কিস্তিতে আইএমএফের কাছ থেকে এখন পর্যন্ত ২৩১ কোটি ডলার পেয়েছে বাংলাদেশ। বাকি আছে ২৩৯ কোটি ডলার। ১৩০ কোটি পাওয়া গেলে ১০৯ কোটি ডলার বাকি থাকবে। তবে এ কর্মসূচির সঙ্গে নতুন করে প্রায় ৭৬ কোটি যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।
আইএমএফের ঋণের চতুর্থ কিস্তির অর্থ গত বছরের ডিসেম্বরে পাওয়ার কথা থাকলেও শর্ত পরিপালন নিয়ে, বিশেষত টাকা-ডলার বিনিময় হার বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়। ফেব্রুয়ারিতে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এপ্রিলে আইএমএফের একটি প্রতিনিধিদল শর্ত পালনের অগ্রগতি পর্যালোচনায় ঢাকায় আসে। তবে সমঝোতা না হওয়ায় চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তির অর্থ ছাড় আটকে যায়। এর পর ওয়াশিংটনে ২১ থেকে ২৬ এপ্রিল অনুষ্ঠিত আইএমএফ-বিশ্বব্যাংকের বসন্তকালীন বৈঠকে এ বিষয়ে আরও আলোচনা হয়।
সবশেষ গত মাসে এ নিয়ে আইএমএফের সঙ্গে কয়েকটি ভার্চুয়াল বৈঠক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। ১২ মে দুই পক্ষ চূড়ান্ত সমঝোতা হয় এবং বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ। ১৪ মে আইএমএফ জানায়, দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে এবং পর্ষদ সভার অনুমোদন সাপেক্ষে ঋণের অর্থ ছাড় করা হবে জুনে।