সকালে না সন্ধ্যায়, কখন রক্তচাপ মাপবেন
Published: 30th, June 2025 GMT
দিনের প্রহর এগোনোর সঙ্গে সঙ্গে রক্তচাপ কিছুটা পরিবর্তিত হয়। সকালে রক্তচাপ যা থাকে, বিকেল বা সন্ধ্যায় একই রকম থাকে না। সারা দিনের যেকোনো সময় খাবার খাওয়া হলে তার কিছুক্ষণের মধ্যে রক্তচাপ একটু বেড়ে যায়। ক্যাফেইন, ধূমপান, অ্যালকোহল, অনিদ্রা ও মানসিক চাপের মতো আরও কিছু বিষয় রক্তচাপ বাড়ায়। বুঝতেই পারছেন, এসব বিষয় খেয়াল রেখে তবেই রক্তচাপ মাপতে হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানালেন রাজধানীর পপুলার মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা.
নওসাবাহ্ নূর।
সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময়টা রক্তচাপ মাপার জন্য অনেক দিক থেকেই ভালো। ঘুম থেকে উঠে আপনি মনের দিক থেকে অনেকটাই সতেজ থাকেন। এই সময় পেটে কোনো খাবার থাকে না। আগের দিন চা, কফি, চকলেট বা ক্যাফেইনসমৃদ্ধ অন্য কোনো খাবার খেয়ে থাকলে সেটির প্রভাবও থাকবে না। এই সময়টায় আপনি প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ধূমপানের প্রভাব থেকেও মুক্ত, যদি না কেউ আপনার ঘর বা বারান্দার কাছে ধূমপান করে থাকেন। তবে বিপত্তি বাধতে পারে অন্য কারণে। প্রস্রাবের চাপ থাকা অবস্থায় রক্তচাপ বাড়তে পারে। আবার বাথরুম থেকে ঘর পর্যন্ত হেঁটে আসতে গিয়েও রক্তচাপের খানিকটা তারতম্য হতে পারে।
যদি মাপেন সকালেদিনের অন্যান্য সময়ের থেকে সকালেই সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপা সহজ। সকালে উঠে বাথরুমের কাজ সেরে নিন। দাঁত ব্রাশ ও গোসল করলেও ক্ষতি নেই। তবে শারীরিক শ্রম হয়, এমন কোনো কাজ করবেন না। এমনকি ছাদ কিংবা বারান্দার বাগানেও পানি দিতে যাবেন না। বরং বাথরুম থেকে বের হয়ে একটা চেয়ারে সোজা হয়ে বসে বিশ্রাম করুন। পা জোড়া রাখুন মেঝেতে, সমানভাবে। এক পায়ের ওপর অন্য পা তুলে বসবেন না। চেয়ারটি যেন থাকে একটি টেবিলের কাছে, যেখানে অনায়াসে হাত রাখতে পারবেন আপনি। টেবিলের বিকল্প হিসেবে চেয়ারের চওড়া হাতলও কাজে লাগানো সম্ভব।
৫ থেকে ১০ মিনিট পর চেয়ারে বসা অবস্থায়ই রক্তচাপ মাপুন। রক্তচাপ মাপার আগে কিছু খাবেন না, চা-কফি বা স্যালাইন তো নয়ই। রক্তচাপের ওষুধ সেবন করবেন না, ধূমপান বা অ্যালকোহল গ্রহণ করবেন না। এমনকি রক্তচাপ মাপার আগে সংবাদপত্র পড়া, টেলিভিশন দেখা বা ইন্টারনেট ব্যবহার থেকেও বিরত রাখুন নিজেকে। কারণ, খারাপ খবর পেলে রক্তচাপ বাড়তে পারে। এভাবে নিয়ম মেনে রক্তচাপ মাপা হলে আপনি সঠিক ‘রিডিং’ পাবেন।
আরও পড়ুনউচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ৭টি সহজ ঘরোয়া উপায়২৩ জুন ২০২৫অন্য সময়েসারা দিনে একবার রক্তচাপ মাপার প্রয়োজন হলে সকালে মাপাই যথেষ্ট। তবে কারও কারও ক্ষেত্রে একাধিকবার রক্তচাপ মাপার নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসক নির্দেশনা দেবেন তা সন্ধ্যায় মাপতে হবে, নাকি রাতে ঘুমের আগে। সে ক্ষেত্রেও কিন্তু একই ধরনের বিষয় মেনে চলতে হবে। চাপ থাকলে প্রস্রাব করে নিন রক্তচাপ মাপার আগেই। রক্তচাপ মাপার আগে একইভাবে চেয়ারে বিশ্রাম নিন। মানসিক চাপ দূরে সরিয়ে রাখুন। খাবার, পানীয় বা ওষুধ গ্রহণ করলে, ধূমপান করলে কিংবা শারীরিক শ্রমের কাজ করলে আধা ঘণ্টা অপেক্ষার পর রক্তচাপ মাপুন। বাইরে গেলেও বাড়ি ফেরার আধা ঘণ্টা পর রক্তচাপ মাপা ভালো।
খেয়াল রাখুনস্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে গেলে মানসিক চাপের কারণে রক্তচাপ খানিকটা বাড়তে পারে। তাই বাড়িতে মাপা ভালো।
পরপর কয়েক দিন রক্তচাপ মাপলে দিনের একই সময়ে মাপতে চেষ্টা করুন।
মনে রাখবেন, হঠাৎ মাথা ঘোরালে, অসুস্থ অনুভব করলে যেকোনো সময়ই রক্তচাপ মাপার প্রয়োজন হতে পারে। তখন এত সব প্রস্তুতির জন্য অপেক্ষা করা যাবে না।
আরও পড়ুনম্যানুয়াল নাকি ডিজিটাল, রক্তচাপ মাপার যন্ত্র কোনটি ভালো১৭ মে ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সময় দিন নিজেকে
সকালে উঠেই কেন যেন মনটা খারাপ হয়ে গেল আপনার? কিছুতেই মন বসাতে পারছেন না কাজে? একান্ত প্রিয় মানুষটাও রুটিন অনুযায়ী ফোন করলেন। জানালেন কুয়াশা ঘেরা শীতের শিশিরমাখা শুভেচ্ছা। মিষ্টি মুখে বাবাও মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন। চুলে বিলি কাটলেন মাও।
খাপছাড়া মন
বারান্দায় বসে আছেন আপনি। একা। আনমনে কত কী যে ভাবছেন! অথচ কী ভাবছেন– তাও বুঝতে পারছেন না। এই ভাবছেন তো এই ভুলে আবার ভাবনার বেড়াজাল থেকে নিজেকে মুক্ত করে নিচ্ছেন। এই ভাবছেন তো এই আবার তালগোল পাকিয়ে নিজের ওপর নিজেই তিতিবিরক্ত হচ্ছেন। এমন ঘটনা হঠাৎ উদয় হলো আপনার মনের আকাশে– তাও নয়; প্রায়ই এমন হয়। ভাবনারা এই আসে, এই আবার টুপ করে ডুব দিয়ে হারিয়ে যায় দূরে কোথাও। নাগালের বাইরে থেকে যেতে চায়। আবার ধরা দিতে দিতেও দেয় না।
উড়ালপঙ্খি মন
এমন উড়ালপঙ্খি মন শুধু আপনার নয়; সব তরুণ-তরুণীরই। এ যে মনের স্বাধীনতা! আপনি যেমন একটু স্বাধীনতা পেলে অনেক কিছু করতে পারেন, তেমনি মনও স্বাধীনতা পেলে অনেক কিছু করতে পারে। একেবারে বিপ্লব ঘটিয়ে দিতে পারেন! জানেন নিশ্চয়ই, মানুষ যত বড়ই হোক, যত ক্ষমতা পকেটে নিয়েই হাঁটুক না কেন, সে কিন্তু তার মনের লাগামটা ধরতে পারে না। পারে না নির্দেশ দিয়ে মনটাকে সোজা চালিয়ে নিয়ে যেতে। আসলে পারার কথাও না। মনটাকে সঠিক ট্র্যাকে চালাতে পারে কেবল মনই।
মনের লাগাম
মন যখন যা চায়, তাকে তা করতে দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। নিজের হাতে মনের লাগাম না ধরে মনের হাতেই মনের লাগাম ছেড়ে দেওয়া উচিত। তবেই মন আপনাকে আপনার ভেতর থেকে বের করে মনের পিঠে ছড়িয়ে টেনে নিয়ে যাবে আপনার স্বপ্নের সোনালি গন্তব্যের দিকে।
জানি, এই সময়টা স্কুল, কলেজ কিংবা
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অনেকেই ছুটি পেয়েছেন। কিংবা চাইলেই ছুটি নিতে পারেন। সদ্য কাটিয়ে আসা ঈদের ছুটিতে অনেকে আবার মনের ডানায় চড়ে কত জায়গায় ঢুঁ মেরে এসেছেন এবং আসছেন প্রতিনিয়ত। কল্পনায় নয়, অনেকে বাস্তবেই দলবলে সশরীরে সগৌরবে পাড়ি দিচ্ছেন প্রকৃতির আলিঙ্গনে নিজেকে জড়াতে। এই তো সময়।
লাভের হিসাব
ব্যাংকে টাকা রাখলে যেমন মাসের পর মাস মুনাফা পাওয়া যায়, তেমন করে এখনকার সময়টা মনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিয়ে আসুন; দেখবেন, সারা বছর এই ঘোরাঘুরি, এই প্রকৃতি আপনায় ভালোবাসা বিলিয়ে যাবে। দূর করে দেবে হঠাৎ উড়ে আসা মন খারাপের সময়গুলোকে। অথবা কিছুই করতে ইচ্ছে না হলে মনকে বলে দিন– আজ আমি কিছুই করব না; কিংবা বলতে পারেন– আজ আমি কোথাও যাব না। দরকার কী সব কাজে সবার সঙ্গে তাল মেলানোর? আবার মন বলছে ঘরে বসে থাকতে। থাকুন না আনমনে ঘরে বসে!
শান্তির পরশ
আপনি যদি এই কাজে শান্তি পান, তাতে কার কী আসে যায়? একটা দিন থাকুন না না নিজের মতো করে। ভুলে যান না সব রুটির-ফুটিন! ভোরে ঘুম থেকে উঠে সন্ধ্যা পর্যন্ত যদি বারান্দায় বসে মজা লুটতে পারেন আপনি; তবে লুটে নিন প্রাকৃতিক মজা! যদি মজা না আসে তো মনটাকে একটা কাজ দিয়ে দিন।
পৃথিবী আনন্দময় হোক
আরেকটা কথা, সোশ্যাল মিডিয়ায় সবসময় নিজেকে ডুবিয়ে রাখবেন না। এতে মানসিক রোগী হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে প্রবল! যারা এর ধারক-বাহক, মানে এসব পরিচালনা করেন তারা সবাই কিন্তু নিজেকে প্রকৃতির কাছাকাছিই রাখেন। দিন শেষে প্রকৃতিই সব! u