চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী দক্ষতা অর্জনে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
Published: 1st, July 2025 GMT
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রশিক্ষণসহ উদ্ভাবন ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী দক্ষতা অর্জনে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে বলে জানিয়েছেন যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। গতকাল সোমবার মরক্কোর মারাকেশ শহরে দেশটির যুব, সংস্কৃতি ও যোগাযোগবিষয়ক মন্ত্রী মোহাম্মেদ মেহদি বেনসাইদের সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।
বৈঠকে ক্রীড়া উপদেষ্টা বলেন, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক তরুণ, যাদের দক্ষতা উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার সার্বিকভাবে কারিগরি, প্রযুক্তিনির্ভর এবং যুগোপযোগী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে। বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রশিক্ষণসহ উদ্ভাবন ও চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের উপযোগী দক্ষতা অর্জনে সরকার বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে মরক্কোর যুবসমাজের কর্মস্পৃহা ও উদ্ভাবনী শক্তির প্রশংসা করেন আসিফ মাহমুদ। দুই দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও অভিজ্ঞতা বিনিময় এবং যৌথ উদ্যোগের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
মরক্কোর যুবমন্ত্রী মোহাম্মেদ মেহদি বেনসাইদ আগামী সেপ্টেম্বরে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় গ্লোবাল ইয়ুথ সামিটে যোগ দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি জানান। তিনি বাংলাদেশ ও মরক্কোর মধ্যে যৌথভাবে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং দুই দেশের যুব উন্নয়ন ও সাংস্কৃতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে মতবিনিময়ের ওপর জোর দেন।
ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ইয়ুথ ক্যাপিটাল ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামে অংশ নিতে মারাকেশ সফর করছেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। মোহাম্মেদ মেহদি বেনসাইদের সঙ্গে বৈঠকের আগে তিনি মৌরিতানিয়া, জর্ডান, গাম্বিয়া, জিবুতিসহ ওআইসিভুক্ত অন্যান্য দেশের মন্ত্রীদের সঙ্গে কুশলাদি বিনিময় করেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গলিতে গলিতে পড়ে ছিল মানুষের মরদেহ
১৯৮৪ সালের ২ ডিসেম্বর। ভারতের মধ্যপ্রদেশ রাজ্যের ভোপাল শহরের বাসিন্দারা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। সেদিন মধ্যরাতে কীটনাশক কারখানায় দুর্ঘটনার পর হাজারো ঘুমন্ত মানুষের মৃত্যু পরোয়ানা নিয়ে চুপিসারে হাজির হয়েছিল প্রাণঘাতী গ্যাস। যার প্রভাবে ভোরের আলো ফোটার আগেই ঝরে যায় কয়েক হাজার নিরীহ প্রাণ। যে ক্ষত বয়ে বেড়াতে হচ্ছে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে। বিশ্বের অন্যতম ভয়াবহ এই শিল্পবিপর্যয়ের ৪১ বছর কেটে গেছে। এখনো সেই দুঃসহ স্মৃতি তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে সেখানকার বাসিন্দাদের।
কী হয়েছিল সেদিন
সেদিন ছিল ২ ডিসেম্বর। ঘড়ির কাঁটা রাত ১২টা পেরিয়ে গেছে। ভোপালের প্রায় ৯ লাখ বাসিন্দা তখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। যুক্তরাষ্ট্রের মালিকানাধীন ইউনিয়ন কার্বাইড কীটনাশক কারখানায় তখন রাতের পালার কাজ শুরু হয়েছে।
কিছুক্ষণ পরে শ্রমিকেরা শারীরিক প্রতিক্রিয়া অনুভব করতে শুরু করেন। কীটনাশক কারখানায় এ ধরনের শারীরিক প্রতিক্রিয়া ছিল স্বাভাবিক। শ্রমিকেরা পরিস্থিতি দেখার জন্য চা-বিরতি পর্যন্ত অপেক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন। ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।
একটা ট্যাংকের ভেতর চাপ ও তাপ বাড়তে বাড়তে একসময় তা বিপৎসীমার ওপর চলে যায়। সোয়া ১২টার দিকে বিস্ফোরণে কারখানাটি কেঁপে উঠলে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক। অতিরিক্ত চাপে ট্যাংকের একটি ভালভ ভেঙে গেলে ভেতর থেকে গ্যাস বের হতে শুরু করে। বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়া রোধের উদ্দেশ্যে স্থাপিত যন্ত্র ‘ভেন্ট গ্যাস স্ক্রাবার’ নষ্ট থাকায় কারখানা থেকে বেরিয়ে যায় ৪০ টনের বেশি বিষাক্ত মিথাইল আইসোসায়ানেট গ্যাস।
বিষয়টি প্রথমে টের পায় কারখানা এলাকার কিছু বস্তিবাসী। তারা নাকে একটা দুর্গন্ধ অনুভবন করে। এর প্রভাবে তাদের চোখ জ্বালাপোড়া শুরু করে। প্রথম দিকে বিষয়টিকে কেউ গুরুত্ব দেয়নি। কেউ কেউ মনে করে, আশপাশে কোথাও হয়তো শুকনো মরিচ পোড়ানো হচ্ছে।
কিন্তু ধীরে ধীরে পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে। ঝাঁজালো গন্ধ আরও প্রকট হয়ে ওঠে। অল্প সময়ের মধ্যেই সেখানকার বাসিন্দাদের নিশ্বাস নিতে কষ্টে হতে শুরু হয়। তীব্র গন্ধের কারণে অনেকে বমি করতে থাকে।
কারখানার লাগোয়া বাসিন্দাদের কাছে সেই ‘গ্যাসের রাতের’ ঘটনা এখনো দুঃস্বপ্নের স্মৃতি