গণভবন জয় করেছি, জাতীয় সংসদও জয় করব: নাহিদ
Published: 6th, July 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘৫ আগস্ট আমাদের লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদের পতন। এবার আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বাংলাদেশের পুনর্গঠন। ৫ আগস্ট লক্ষ্য ছিল গণভবন। এবার আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে জাতীয় সংসদ। আমরা গণভবন জয় করেছি। এবার জাতীয় সংসদকেও আমরা জয় করব। সামনের নির্বাচনে তরুণদের বিজয় উদ্যাপন হবে।’
আজ রোববার রাত সোয়া আটটার দিকে রাজশাহী নগরের সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে এক পথসভায় নাহিদ ইসলাম এ কথা বলেন।
নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘কিন্তু তার আগে অবশ্যই সংস্কারের সুরাহা, বিচারের সুরাহা হতে হবে। খুনি হাসিনার বিচার আমরা দেখতে চাই। সংস্কার দেখতে চাই। নতুন সংবিধান দেখতে চাই। এই প্রজন্ম বাংলাদেশের জনগণের কাছে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান।’
এর আগে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে নগরের রেলগেট এলাকায় জুলাই পদযাত্রা শুরু করে জাতীয় নাগরিক পার্টি। পরে পদযাত্রাটি নিউমার্কেট, অলকার মোড়, গণকপাড়া, সাহেব বাজার, আলুপট্টি হয়ে সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টে বড় মসজিদের সামনে পথসভায় মিলিত হয়।
পথসভায় নাহিদ বলেন, ‘আমরা রাজপথে নেমেছিলাম অনেক স্বপ্ন নিয়ে। আমার ভাই আবু সাঈদ পুলিশের বুলেটের সামনে বুক পেতে দিয়েছিল। অনেক স্বপ্ন নিয়ে রাজশাহীর ভাইয়েরা শহীদ হয়েছিলেন। আমাদের স্বপ্ন কেবল শেখ হাসিনার পতন ছিল না। ছিল সংস্কারের মাধ্যমে বাংলাদেশের পুনর্গঠন।’ তিনি আরও বলেন, ‘৫ আগস্টের পর নানা শক্তির ষড়যন্ত্রের কারণে সংস্কারের পথ রুদ্ধ হয়েছে। আমরা স্বীকার করছি, আমাদের ভুল হয়েছিল। আমাদের সীমাবদ্ধতা ছিল। কিন্তু আজকে আমরা শপথবদ্ধ, এই ভুল আমরা আর করব না। আমরা আর সুযোগ দেব না। স্বৈরতন্ত্রের, পরিবারতন্ত্রের অবসান ঘটাতে হবে। মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নতুন রাজনীতি ও নতুন বন্দোবস্ত গড়ে তুলব।’
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘যারা বলে জুলাই কেবল আবেগের বিষয়, যারা বলে জুলাইয়ের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি দেওয়ার প্রয়োজন নেই, তাদের দেখিয়ে দিতে হবে, ৩ আগস্ট আবার মুজিববাদী সংবিধানের বিরুদ্ধে একত্র হব। যারা জুলাইকে সংবিধানে জায়গা দিতে চায় না, আইনি কাঠামোতে জায়গা দিতে চায় না, তারা মুজিববাদের ফেরার রাস্তা তৈরি করতে চায়। তারা মুজিববাদের নতুন পাহারাদার হিসেবে নিজেদের ঘোষণা করেছে। মুজিববাদের পাহারাদারদের বিরুদ্ধে আমাদের অবশ্যই প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।’
দলটির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য দেন সদস্যসচিব আখতার হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনীম জারা, উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ, উত্তরাঞ্চলের সংগঠক ইমরান ইমন, রাজশাহী মহানগরের প্রধান সমন্বয়কারী মো.
পথসভা শেষে নগরের গণকপাড়া এলাকায় দলটির মহানগরের কার্যালয় উদ্বোধন করা হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন হ দ ইসল ম ম জ বব দ আম দ র লক ষ য আগস ট নগর র
এছাড়াও পড়ুন:
৩ আগস্ট দেশ পুনর্গঠনে ইশতেহার ঘোষণা হবে: নাহিদ ইসলাম
আগামী ৩ আগস্ট দেশ পুনর্গঠনে ইশতেহার ঘোষণা করা হবে জানিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘২০২৪ সালে আমরা আন্দোলন করেছিলাম, গণ-অভ্যুত্থান করেছিলাম শেখ হাসিনা সরকারের পতনের জন্য। আমাদের এবারের আন্দোলন, এবারের কর্মসূচি নতুন দেশ গঠনের। কারণ, আমরা বলেছিলাম, শুধু শেখ হাসিনার পতন নয়, দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থার পরিবর্তন করতে হবে।’
আজ শনিবার বিকেলে জয়পুরহাট জেলা শহরের শহীদ ডা. আবুল কাশেম ময়দানে এক পথসভায় নাহিদ ইসলাম এসব কথা বলেন। জুলাই পদযাত্রার পঞ্চম দিনে জয়পুরহাট জেলা এনসিপি এ পথসভার আয়োজন করে।
পথসভায় নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ‘শুধু ক্ষমতার পরিবর্তন নয়, দলের পরিবর্তন নয়, মাফিয়া, দুর্নীতিবাজ সিস্টেমের পরিবর্তন করতে হবে। আমরা গত এক বছরে সেই সিস্টেমের পরিবর্তন দেখতে পাইনি। আমরা এলাকায় এলাকায় এখনো চাঁদাবাজি দেখি, সন্ত্রাসী দেখি, মাফিয়া সিস্টেম দেখি।’
এর আগে বিকেল সোয়া চারটার দিকে শহরের সিও কলোনি এলাকা থেকে পদযাত্রা শুরু করেন এনসিপির নেতা-কর্মীরা। পথসভায় বিপুলসংখ্যক লোকের সমাগম হয়। গণ-অভ্যুত্থানের নেতাদের দেখতে প্রধান সড়কের দুই পাশে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন।
পথসভায় নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘বিপ্লবীরা এখনো ঘুমায় নাই। জয়পুরহাটবাসী এখনো ঘুমায় নাই। প্রিয় বন্ধুগণ, ২০২৪-এর জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে এই জয়পুরহাটের সন্তানেরা শহীদ হয়েছে। শহীদ মেহেদী হাসান, শহীদ রিতা আক্তার, শহীদ নজিবুল সরকার, শহীদ মিনহাজসহ সব শহীদকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে এ জেলার যেসব সাহসী সন্তান আহত হয়েছিলেন। আরও স্মরণ করছি আমাদের নারীরা, আমাদের আলেম সমাজসহ যাঁরা গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণ করেছিলেন। আমরা যেভাবে এক দফার ঘোষণা দিয়েছিলাম, এ বছর শহীদ মিনারে ৩ আগস্ট একইভাবে বিচার, সংস্কার, নতুন সংবিধান এবং দেশ পুনর্গঠনে ইশতেহার ঘোষণা হবে। নিশ্চিতভাবে সেই ইশতেহারে জয়পুরহাটবাসীর ভবিষ্যৎ মুক্তির কথাও থাকবে। ইনশা আল্লাহ আপনাদের সঙ্গে দেখা হবে শহীদ মিনারে।’
এ সময় জাতীয় নাগরিক পার্টির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলম, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম সদস্যসচিব তাসনীম জারাসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। পথসভায় ফিরোজ আলমগীরকে এনসিপির জয়পুরহাট জেলা সমন্বয়কারী হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।
বাংলার সাহসী সন্তানদের দেখতে এসেছেন তাঁরাপথসভায় উপস্থিত অন্তত ২৫-৩০ জন মধ্যবয়সী নারী-পুরুষের সঙ্গে কথা হয়। তাঁরা বলেন, গত ১৫ বছর অনেকগুলো রাজনৈতিক দল আন্দোলন-সংগ্রাম করে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পারেনি। ছাত্ররা আন্দোলন করে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে। নাহিদ ইসলাম, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলমের মতো আরও অনেক ছাত্ররা আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তাঁরা বাংলার এসব সাহসী সন্তানকে দেখতে এসেছেন।
সিরাজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, নাহিদ ইসলাম, সারজিস আলম, হাসনাত আবদুল্লাহ, আখতার হোসেন, সামান্তা শারমিন, তাসনীম জারাকে নিজ চোখে দেখার ইচ্ছা ছিল। এ কারণে পথসভায় তাঁদের দেখতে এসেছেন।
গৃহবধূ তামান্না ইসলাম বলেন, ‘আমার মেয়ে সুমাইয়া ডা. তাসনীম জারাকে দেখবে। এ কারণে পথসভায় এসেছি। পথসভায় প্রচুর লোকসমাগম হয়েছে। এর মধ্যেই আমার মেয়ে তাসনীম জারার সঙ্গে সেলফি তুলেছে।’