মুশফিকুরের শততম টেস্ট: শত রঙে ছড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যাশা
Published: 18th, November 2025 GMT
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পা রাখলেই এখন শোনা যাবে একটাই নাম, মুশফিকুর রহিম। যার সাফল্য মুকুটে বুধবার যুক্ত হতে যাচ্ছে নতুন এক পালক। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলার অপেক্ষায় তিনি।
২০০৫ সালে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, ২০২৫ সালে সেই পথ মিশেছে মিরপুরে। নিজেদের হোম ভেন্যু মিরপুরের জন্য বাড়তি রঙে সেজেছে। স্টেডিয়ামের ভেতরে-বাইরে তুলির আঁচড়ে ছড়িয়ে পড়েছে ক্রিকেট আলপনা।
আরো পড়ুন:
মুশফিকুরের পর্দার আড়ালের পরিশ্রমের গল্প শোনালেন আয়ারল্যান্ডের কোচ
‘একশটা টেস্টই যেন শেষ না হয়’
তার সতীর্থরাও তাকে নিয়ে গর্বিত। শততম টেস্টের মাইলফলক ছোঁয়া ম্যাচটি মুশফিকুর নিজের মতো করে রাঙিয়ে তুলুক এমনটাই প্রত্যাশা তাদের।
তামিম বলেছেন, “তোকে নিয়ে বলার আছে অনেক কিছু্ই। সেই ছেলেবেলা থেকে একসঙ্গে খেলছি, বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে, বিভিন্ন পর্যায়ে, রুমমেট ছিলাম অনেকবার। কাছ থেকে দেখেছি তোকে। কোনো এক সময় কোনো এক উপলক্ষে কোনো প্ল্যাটফর্মে নিশ্চয়ই বলব সবকিছু। তবে আজকের দিনের জন্য শুধু একটিই কথা, বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১০০ টেস্ট খেলার মাইলফলক তোর চেয়ে বেশি আর কেউ ডিজার্ভ করে না। আশা করি, ভবিষ্যতে এই অর্জনে তোর পাশে নাম লেখাবে আরো অনেকেই। কিন্তু তুই প্রথম, এটা তোরই প্রাপ্য।”
মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ শুধু মুশফিকুর রহিমের সতীর্থই নন, পরিবারের একজন। সম্পর্কে তারা ভায়েরা-ভাই। মুশফিকুরের অর্জনে মাহমুদউল্লাহ খুঁজে পেয়েছেন পরিবারের গর্ব, “আশা করি ভালো আছ। তোমার শততম টেস্টের জন্য আমি শুভকামনা জানাচ্ছি। আমি মনে করি একটা বিরাট অর্জন তোমার জন্য। একই সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য। এছাড়া আমাদের সবার বিশেষ করে আমাদের পরিবারের জন্য বিরাট একটি গর্বের মুহূর্ত। আমার জন্যও তা-ই। আমি তোমার সঙ্গে অনেক বছর ক্রিকেট খেলেছি। এটা অনেক অনেক বড় অর্জন। যেটা বলতে চাই শুধু, অনেক অনেক শুভকামনা। তোমার অনুপ্রেরণা, তাড়না, পরিশ্রম সবকিছু তোমার মাইলফলকের হয়ে কথা বলছে। তোমার জন্য অনেক অনেক খুশি। ভালো থেক। আশা করি ভালো যাবে সময়টা।”
উইকেটরক্ষক ব্যাটার লিটন বলেছেন, “অনেক অনেক অভিনন্দন আপনার বিশাল অর্জনের জন্য। আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি। আমি অনেক দিন ধরে আপনার সঙ্গে ড্রেসিংরুম শেয়ার করি। আমি খুবই ভাগ্যবান যে আপনার সঙ্গে বাংলাদেশ দলকে প্রতিনিধিত্ব করতে পেরেছি। আপনার একশতম টেস্ট যেন স্মরণীয় হয়ে থাকে এই দোয়া করি। শুভ কামনা।”
বাংলাদেশ দলের সাবেক অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরন ২০১৮ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত বাংলাদেশ দলে কাজ করেছেন। মুশফিকুরকে শুভেচ্ছা জানিয়ে এই ভারতীয় বলেছেন, “মুশি ভাই! ১০০ টেস্ট। অবিশ্বাস্য এক মাইলস্টোন। পরিশ্রম, কঠোরতা ও শৃঙ্খলা—এ সবকিছুর মধ্য দিয়ে এগিয়ে গর্বের সঙ্গে বয়ে চলছে বাংলাদেশ ক্রিকেটকে। দেশের প্রথম হওয়ায় এটা আরো আইকনিক হয়ে উঠেছে। এগিয়ে যাও চ্যাম্প! তুমি চারপাশে সবার প্রেরণা। বিশেষ এই দিনে সেখানে থাকতে পারলে ভালো লাগত। অবিস্মরণীয় করে তোলো।”
ঢাকা/ইয়াসিন/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শততম ট স ট অন ক অন ক প রথম আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
‘একশটা টেস্টই যেন শেষ না হয়’
যে ক্ষণটার জন্য অপেক্ষা ছিল, যে সময়টার জন্য প্রতীক্ষা ছিল তার খুব কাছাকাছি ক্রিকেটাঙ্গন। বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার মুশফিকুর রহিম যিনি টেস্ট ক্রিকেটের তিন অঙ্কে পৌঁছতে যাচ্ছেন। ১৯ নভেম্বর ঢাকায় আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্ট। এই টেস্টেই শততম টেস্টে মাইলফলক স্পর্শ করবেন মুশফিকুর।
সময় তাই যত ঘনিয়ে আসছে ততই মুশফিকুরকে ঘিরে বাড়ছে উচ্ছ্বাস, উন্মাদনা ও রোমাঞ্চ। যা ছুঁয়ে যাচ্ছেন মুশফিকুরের কোচদেরও। যাদের সঙ্গে ক্যারিয়ারের বিভিন্ন সময় কাজ করেছেন, তাদের সবার চাওয়া মাইলফলক ছোঁয়া এই সময়টা তিনি উপভোগ করুক প্রাণ খুলে। নিজের আনন্দে খেলুক। শুধু তা-ই নয়, একশ টেস্টেই যেন থমকে না যায় মুশফিকুর ব্যাট। অন্তত এক-দুই বছর তাকে টেস্ট অঙ্গনে দেখতে চান প্রত্যেকে।
আরো পড়ুন:
মুশফিকুরের শততম টেস্ট নিয়ে আশরাফুলের উচ্ছ্বাস
লর্ডসে প্রথম, মিরপুরে শততম টেস্ট মুশফিকুর
সোহেল ইসলাম
কোচ, বিসিবির গেম ডেভেলাপমেন্ট বিভাগ
‘‘আমাদের দেশে যারা টেস্ট খেলে তাদের টেস্টের সংখ্যা কম। এটা যদি ইংল্যান্ড হইতো বা অস্ট্রেলিয়াতে হতো বা ভারতেরও হতো, ওর যতদিন ধরে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার, এতদিনে দেড়শ টেস্ট খেলে ফেলতো। সেই হিসাবে ইদানিং আমাদের একটু টেস্ট সংখ্যা বেড়েছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কারণে। আগে তো অনেক কম হইতো। সেখান থেকে একশটা টেস্ট খেলা মানে বিশাল কিছু।’’
‘‘ওর সফরটা দেখেন আপনি। শুধু একশ টেস্ট বলবেন…ও কতদিন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলছে। এমন না যে অযথাই খেলছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কিন্তু আপনার পারফর্ম করে খেলতে হয়। আপনি পারফর্ম ছাড়া থাকলে আপনাকে কিন্তু খেলাবে না।’’
‘‘মুশফিকুরকে তার পারফরম্যান্সটা ধরে রাখতে হয়েছে। আমাদের দেশের প্রথম একজন যে একশ টেস্ট খেলতে যাচ্ছে। এজন্য ও নিজেকে প্রস্তুত রেখেছে। ওই ক্ষুধাটা তার ছিল। ওই জেদটা তার ছিল। আমি আশা করব, যদি দলের চাহিদা থাকে এবং তারও খেলার ইচ্ছা তাহলে যেন আরো খেলা চালিয়ে যায়। আরো বেশিদিন মাঠে থাকে। মানে একশটা টেস্ট যেন শেষ না হয়।’’
মিজানুর রহমান বাবুল
কোচ, বিসিবির গেম ডেভেলাপমেন্ট বিভাগ
‘‘মুশফিকুরকে শুভকামনা। একজন পারফেক্ট ব্যাটসম্যান। একজন পারফেক্ট স্পোর্টসম্যান। যাকে আপনি অনুসরণ করলে, যাকে আপনি মেনে চললে, আদর্শ ভাবলে ক্যারিয়ারে উন্নতি করতে পারবেন। বাংলাদেশের ক্রিকেট যেভাবে চলে, যে ধাঁচে এগিয়ে যায় সেখানে একজনের ক্যারিয়ার শীর্ষ পর্যায়ে ২০ বছর টিকে থাকা মুশকিল। মুশফিকুর প্রমাণ করেছে যদি আপনার নিবেদন থাকে, ভালো করার ইচ্ছা থাকে তাহলে আপনি পারবেন।’’
‘‘ব্যাটসম্যান মুশফিকুর সব সময়ই বাংলাদেশ দলের সেরা। মিডল অর্ডারে লম্বা সময় বাংলাদেশকে সার্ভ করেছে। দেখুন তাকে চ্যালেঞ্জ করে কেউ তাকে রিপ্লেস করতে পারেনি। পারফর্ম করেই সে টিকে আছে এবং খেলে যাচ্ছে। আমি চাই সে সেই ধারাবাহিকতাই ধরে রাখুক। এখনো ফিট আছে। অন্যদের চেয়ে বেশি পরিশ্রম করছে। খেলার প্রতি ভালোবাসা না থাকলে এটা হয় না।’’
‘‘শততম টেস্টটায় সেঞ্চুরি লাগবেই, এমনটাই নয়। হলে ভালো। না হলেও চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। থামলে হবে না। ওর অভিজ্ঞতাটা এই দলের প্রয়োজন এখন। যতদিন খেলতে মন চায় খেলুক। ও তো পারফর্ম না করে আর খেলবে না। তরুণ একজন ক্রিকেটার যদি তার ডেডিকেশন সম্পর্কে জানতে পারে সেটাই হবে বড় পাওয়া।’’
ঢাকা/ইয়াসিন