খুলনায় এনসিপির সমাবেশে ২০ হাজার লোক সমাগমের প্রস্তুতি
Published: 9th, July 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম এবং মুখ্য সমন্বয়ক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে আগামী ১১ জুলাই খুলনায় জুলাই বিপ্লবীদের মিলনমেলা বসছে। ওইদিন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে খুলনা সফর করবেন।
এনসিপির নেতারা এদিন জুলাই শহীদদের কবর জিয়ারত, শহীদ ও আহতদের পরিবারের খোঁজখবর নেয়া এবং সমাবেশে যোগ দেবেন।
বুধবার (৯ জুলাই) খুলনা প্রেস ক্লাবে দলটির জেলা ও মহানগর শাখার পক্ষ থেকে আলাদা সংবাদ সম্মেলনে প্রোগ্রাম বাস্তবায়নের বিষয়ে তুলে ধরা হয়। সেখানে জানানো হয়, ১৫ থেকে ২০ হাজার লোক সমাবেশে যোগ দেবেন। খুলনার শিববাড়ি ও খালিশপুর পিপল চত্বরে এ কর্মসূচি পালিত হবে।
আরো পড়ুন:
দেশ সংস্কার না করে কোনো নির্বাচন নয়: নাহিদ
বাংলাদেশপন্থি মত ধারণ করেই জুলাই অভ্যুত্থান হয়েছে: নাহিদ
এনসিপির জেলা শাখার পক্ষ থেকে জানানো হয়, এনসিপির এই পদযাত্রা হবে শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক কর্মসূচি; যার মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ইতিবাচক বার্তা পৌঁছানো হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগণের অধিকার, ন্যায়বিচার ও সামাজিক সম্প্রীতির লক্ষ্যে এনসিপি এ পদযাত্রা করছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, সামান্তা শারমিন, নাসির পাটোয়ারী, তাসনিম জারা, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম, তানজিল মাহমুদ, মেজবাহ কামাল মুন্না, ফরিদুল হক, সাকিব শাহরিয়ার ও ওয়াহিদুজ্জামানসহ নেতারা নতুন বাংলাদেশ গড়ার বার্তা নিয়ে জনগণের দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছেন। জনগণের আকাঙক্ষা, মতামত ও দাবি-দাওয়া নিয়ে গঠিত হবে এনসিপির আগামী দিনের রাজনীতি এবং নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা। ইতোমধ্যে খুলনা মহানগরীর সর্বোস্তরের সংগঠক এনসিপির এই জুলাই পদযাত্রাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক গণসংযোগ শুরু করেছে।
এনসিপির খুলনা জেলা শাখার প্রধান সমন্বয়ক মাহমুদুল হাসান (ফয়জুল্লাহ) বলেন, ‘‘ছাত্র-জনতার জুলাই অভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের স্বৈরশাসনের পতনের বছরপূর্তির দ্বারপ্রান্তে আমরা। ফ্যাসিবাদী প্রথার বিলোপ, রাষ্ট্র সংস্কার ও নতুন বাংলাদেশ গঠনের প্রত্যয়ে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা ও তার দলকে পদচ্যুত করা হয়। সেই পরিবর্তনের বার্তা, রাষ্ট্র সংস্কার, জুলাই ঘোষণাপত্র প্রণয়ন, গুম-খুন ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে গণঅভ্যুত্থানের অগ্রসৈনিকেরা জুলাই পদযাত্রা করছে। যার ধারাবাহিকতায় আগামী ১১ জুলাই কেন্দ্রীয় নেতারা খুলনাবাসীর সামনে উপস্থিত হবেন।’’
২৪ এর জুলাই-আগস্টে যে শিববাড়ি মোড় থেকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের স্ফুলিঙ্গ সারা খুলনায় ছড়িয়ে পড়েছিল, সেই শিববাড়ি মোড়ে জুলাই বিপ্লবীদের পুনর্মিলনী হবে বলে জানান তিনি।
নেতারা জানান, এই পদযাত্রা বিকাল ৫টায় শিববাড়ি মোড় থেকে শুরু হয়ে খালিশপুরের পিপলস মোড়ে গিয়ে সন্ধ্যা ৭টায় শেষ হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন এনসিপি খুলনায় পদযাত্রা বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব ডা.
এদিকে, দুপুরে খুলনা প্রেস ক্লাবে দলের মহানগর সংগঠকদের পক্ষ থেকে আয়োজিত অপর সংবাদ সম্মেলনে নগর সংগঠক আহম্মদ হামীম রাহাত বলেন, ১১ জুলাই এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা পরিবর্তনের নতুন বার্তা নিয়ে খুলনা শহরে আসছেন।
তিনি বলেন, ১১ জুলাই নাহিদ-হাসনাত আব্দুল্লাহরা খুলনার বাইতুন নূর জামে মসজিদের জুমার নামাজ আদায় করবেন। এরপর খুলনায় শহীদদের কবর জিয়ারত এবং শহিদ ও আহতদের পরিবারের খোঁজ খবর নেবেন। বিকেলে নগরীর পিটিআই মোড় থেকে পদযাত্রা শুরু হবে। সন্ধ্যা ৭টায় খালিশপুর পিপলস মোড়ে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হ দ ইসল ম গণঅভ য ত থ ন ই পদয ত র ১১ জ ল ই এনস প র
এছাড়াও পড়ুন:
প্রশাসনিক স্থবিরতার কারণেই ‘মব কালচার’ বৃদ্ধি পাচ্ছে: রিজভী
প্রশাসনিক স্থবিরতার কারণেই ‘মব কালচারের’ প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।
রিজভী বলেন, ‘বর্তমান সময়ে নানাবিধ সামাজিক অপরাধের বিভিন্ন মাত্রার প্রকাশ দেখা যাচ্ছে। প্রশাসনিক স্থবিরতার কারণেই মব কালচারের প্রকোপ বৃদ্ধি পাচ্ছে। অবৈধ কালো টাকা এবং গোপন অপতৎপরতার প্রভাবে মব কালচারের নামে সমাজে বিশৃঙ্খলার চেষ্টা চলছে। আবার অন্যদিকে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্বার্থান্বেষী মহল বিএনপির নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এই পরিকল্পিত অপপ্রচার, অপতৎপরতা, কৃত্রিমভাবে তৈরি সামাজিক অশান্তি গণতন্ত্রের পথচলাকে বাধাগ্রস্ত করা এবং নির্বাচন পেছানোর সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনা বলে জনগণ মনে করে। শেখ হাসিনার আমলে অদ্ভুত উন্নয়নের বয়ানের মতো এখন নির্বাচন পেছানো নিয়ে নানা ধরণের বয়ান দেওয়া হচ্ছে।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির নাম ভাঙিয়ে যারা অপকর্মের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিকভাবে দল থেকে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। দলের ভেতরে থেকে অপকর্মের সঙ্গে যুক্ত হলে তাকে কোনোভাবেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। ইতোমধ্যে বেশ কিছু নেতাকর্মীকে বহিষ্কার, অব্যাহতি প্রদান, পদ স্থগিত, কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়েছে।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমরা লক্ষ্য করেছি, দলের পক্ষ থেকে এমন চলমান সাংগঠনিক ব্যবস্থার বিষয়ে গণমাধ্যমে খুব একটা উল্লেখ করা হয়নি। উপরন্তু, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ঢিলেঢালা ভূমিকা রহস্যজনক। দলের পক্ষ থেকে বারবার অপরাধী ও বিশৃঙ্খলাকারিদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হলেও প্রশাসন নির্বিকার থাকছে। দুস্কৃতিকারিদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দল থেকে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করা হলেও প্রশাসন কোন সহযোগিতা করছে না।’
তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত পুলিশ প্রশাসন খুব একটা সক্রিয় হয়নি। বরং কোনো কোনো ক্ষেত্রে কেউ কেউ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে কলকাঠি নাড়ছেন বলে স্পষ্টত প্রতীয়মান হয়। এ রকম পরিস্থিতি চলতে থাকলে সমাজ সংস্কৃতি, সভ্য আচরণ বিপন্ন হয়ে পড়বে। প্রশাসনিক এই নিষ্ক্রিয়তার কারণে জনগণের এখন জীবনমরণের প্রশ্ন।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘গণতন্ত্রের স্থায়ী পুনরুজ্জীবন ও ঐতিহাসিক সার্থকতা নির্ভর করছে রাষ্ট্র ও সমাজে শান্তি ও স্থিতির ওপর। আর এ ক্ষেত্রে দক্ষ প্রশাসন খুবই জরুরি। কিন্তু আওয়ামী আমলের কালো টাকা ও তাদের দোসরদের ‘আন্ডারগ্রাউন্ড’ তৎপরতার কারণে দুস্কৃতিকারিরা আশকারা পাচ্ছে এবং সমাজে নৈরাজ্য তৈরীর সম্ভাবনা সৃষ্টির আলামত দেখা যাচ্ছে।’’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘বিএনপি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠন। বহুদলীয় গণতন্ত্র ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সুরক্ষার মূলমন্ত্র বুকে ধারণ করে এই দলের সকল পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। গণতন্ত্রের মূল নীতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরেই শত প্রতিকুলতা ও ঝড়-ঝাপটা অতিক্রম করে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালিয়ে এসেছে। স্বজাতির সব ধর্ম ও বর্ণের সজ্জন মানুষ ও বিভিন্ন শ্রণি-পেশায় যুক্ত ব্যক্তিরা এই দলের সদস্য হতে পারেন। সমাজবিরোধী কোন ব্যক্তি, দখলবাজ, চাঁদাবাজদের স্থান এই দল বরদাস্ত করে না।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপির নাম ভাঙিয়ে কেউ অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে পারে, কিন্তু দল যখনই এ ধরনের ঘটনা অবহিত হয় তখনই তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে দ্বিধা করেনি। বিএনপি জন্মলগ্ন থেকেই গণতান্ত্রিক সংবিধান ও সুশাসনের জন্য আইনী ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো নির্মাণ করার মাধ্যমে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা এবং এরজন্য নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম করে এসেছে। এই দল মনে করে একটি আদর্শ রাষ্ট্র ও সমাজে নেতৃস্থানীয় মানুষদের যোগ্যতা, দক্ষতা, ন্যায়পরায়ণতা, সৎ ও মানবিক গুণাবলী থাকা ব্যক্তি অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বিএনপি যতবারই ক্ষমতায় এসেছে ততবারই উল্লিখিত বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। জাতীয়তাবাদী শক্তির সমবেত ধ্বণীই হচ্ছে সুশাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা।’