সাজেক–বাঘাইহাট সড়ক তলিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ, পাঁচ শতাধিক পর্যটক আটকে ছিলেন ৫ ঘণ্টা
Published: 5th, August 2025 GMT
রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের মাচালং বাজার এলাকায় সড়ক তলিয়ে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে অন্তত পাঁচ শতাধিক পর্যটক পাঁচ ঘণ্টা আটকে ছিলেন। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ সড়কের ওই অংশে পাহাড়ি ঢলের পানি উঠে গেলে সাজেক–বাঘাইহাট সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
স্থানীয় প্রশাসন ও ইউনিয়ন পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে কাচালং ও মাচালং নদের পানি হঠাৎ বেড়ে যায়। এতে মাচালং বাজার অংশে সড়ক পাঁচ থেকে আট ফুট পানিতে তলিয়ে যায়। ঠিক এমন সময় বাঘাইহাট থেকে তিন শতাধিক ও সাজেক থেকে দুই শতাধিক পর্যটক ওই এলাকায় পৌঁছান।
সড়ক ডুবে যাওয়ায় দুই দিক থেকে আসা পর্যটকেরা আটকে পড়েন। পরে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনীর সহায়তায় ইঞ্জিনচালিত নৌকা ও বাঁশের ভেলায় তাঁদের পারাপার করা হয়। এ সময় বেলা ১১টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত তাঁরা মাচালং এলাকায় আটকে ছিলেন।
সাজেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান অতুলাল চাকমা প্রথম আলোকে বলেন, পর্যটকদের নিরাপদে গন্তব্যে পৌঁছে দিতে সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের সহায়তায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। সবাই নিরাপদে চলে গেছেন।
সাজেক ভ্যালির রিসোর্ট ও কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেববর্মণ বলেন, হঠাৎ সড়কটি ডুবে যাওয়ায় দুই দিক থেকে আসা পর্যটকেরা বিষয়টি জানতেন না। পরে তাঁরা বেশ কয়েক ঘণ্টা মাচালং বাজার এলাকায় আটকে থাকেন।
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরীন আক্তার বলেন, আটকে পড়া পর্যটকদের বাঁশের ভেলা ও নৌকায় পার করা হয়। বর্তমানে তাঁরা নিরাপদে আছেন। তবে সড়কে এখনো পানি থাকায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুনপাহাড়ধসে বন্ধ সাজেক সড়ক, পর্যটকবাহী গাড়িসহ আটকা বহু যান২৪ জুলাই ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর যটক এল ক য় শত ধ ক
এছাড়াও পড়ুন:
দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত
নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ পর্যটকদের জন্য খুলে দিয়েছে সরকার। সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছিল, কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন দুই হাজার পর্যটক যেতে পারবেন। কিন্তু দুই দিনে একজন পর্যটকও যেতে পারেননি। কারণ, পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ। কবে থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হবে, তা নিয়েও কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।
কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকেই পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াতের কথা। এ জন্য ১ হাজার ৭০০ জন ধারণক্ষমতার দুটি জাহাজ—এমভি কর্ণফুলী ও এমভি বার আউলিয়া চলাচলের অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু গতকাল শনিবার ও আজ রোববার ওই রুটে কোনো জাহাজ চলেনি। আরও চারটি জাহাজ চলাচলের অনুমতির জন্য আবেদন করেছে।
সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত যাপন করা যাবে না, তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাতযাপনের সুযোগ থাকবে। বিআইডব্লিউটিএ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবে না। পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকতে হবে। কিউআর কোডবিহীন টিকিট নকল বলে গণ্য হবে।
সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে রাতের বেলায় সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সৈকতে মোটরসাইকেল বা সি-বাইকসহ মোটরচালিত যান চলাচলও বন্ধ। নিষিদ্ধ পলিথিন বহন এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক (চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, পানির বোতল ইত্যাদি) ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
পর্যটক নেই, ফাঁকা ঘাটআজ সকাল সাতটায় নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, কোনো যাত্রী নেই। বাঁকখালী নদীতেও পর্যটকবাহী কোনো জাহাজ দেখা যায়নি। ঘাটে অবস্থান করছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। জানা যায়, গতকাল সকালে তিনজন পর্যটক টিকিট কেটে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, পরে জাহাজ না থাকায় ফিরে যান।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য সেন্ট মার্টিন উন্মুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় গত দুই দিনে কোনো পর্যটক যেতে পারেননি। নভেম্বরে দিনে গিয়ে দিনে ফেরার নিয়ম থাকায় সময় ও সুযোগ কম, আবার দীর্ঘ জাহাজযাত্রার কারণে অনেকেই নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। তারপরও আমরা সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে ঘাটে অবস্থান করছি।’
জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, টানা ৯ মাস বন্ধ থাকার পর ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে উখিয়ার ইনানী নৌবাহিনীর জেটিঘাট কিংবা টেকনাফের কোনো স্থান থেকে এখনো জাহাজ চলাচলের অনুমতি নেই।
জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে।
গত ডিসেম্বরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ছেড়ে কক্সবাজারের পথে পর্যটকবাহী একটি জাহাজ