নেতানিয়াহুর কারণে যুক্তরাষ্ট্রের মানুষদের কাছে ইসরায়েল এখন বর্জনীয় রাষ্ট্র: বেনেট
Published: 6th, August 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের ভাবমূর্তি ভেঙে পড়েছে বলে মনে করেন ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট। গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
২০২১ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত নিউ রাইট পার্টির এই নেতা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। গতকাল তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও কট্টর ডানপন্থী লিকুদ পার্টির কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, তাঁরা ইসরায়েলকে ‘বর্জনীয়’ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন।
বেনেটের মতে, নেতানিয়াহুর সরকারের কার্যক্রমের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদিদের প্রতি বিদ্বেষ আরও বাড়ছে। নেতানিয়াহু সরকার ইসরায়েলের পক্ষে প্রচার চালানোর কাজটিও ঠিকভাবে করছে না বলে মনে করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসিসহ কয়েকটি শহরে ১০ দিন কাটানোর পর এসব মন্তব্য করেন বেনেট।
সাবেক এ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে নানা সমস্যা, বিশেষ করে অর্থনৈতিক সংকটের জন্য এখন ইহুদিদের দোষারোপ করা হচ্ছে। দুই পক্ষের রাজনীতিবিদেরাই এ দোষারোপ করছেন।
বেনেটের দাবি, তিনি তাঁর জীবনে কখনো এমন ভয়াবহ মাত্রার ইহুদিবিদ্বেষের ঢেউ দেখেননি। তাঁর মতে, যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান দুই দলেরই সমর্থন হারাচ্ছে ইসরায়েল।
বেনেটের দাবি ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ আন্দোলনের অনেক সদস্য ইসরায়েল থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। এ ছাড়া গাজায় ফিলিস্তিনিদের চলমান অনাহারের কারণে বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর পক্ষেও ইসরায়েলকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
আরও পড়ুননেতানিয়াহুকে অবশ্যই বিদায় নিতে হবে, বললেন সাবেক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনেট২৯ জুন ২০২৫সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য–উপাত্তও বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের ভাবমূর্তি নিয়ে বেনেটের মূল্যায়ন সঠিক।
গ্যালাপের একটি নতুন জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ মার্কিন নাগরিক গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধে সমর্থন জানাচ্ছেন। যা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১০ শতাংশ কম।
২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত করা ওই জরিপের তথ্য বলছে, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ৬০ শতাংশ মার্কিন নাগরিক। ৫২ শতাংশ মার্কিন নাগরিক নেতানিয়াহুকে নিয়ে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন, যা দেড় বছর আগের তুলনায় অনেক বড় পরিবর্তন।
গ্যালাপ বলছে, এর আগে ১৯৯০-এর দশক থেকে চালানো বিভিন্ন জনমত জরিপে নেতানিয়াহুর প্রতি এতটা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায়নি। তারা বলেছে, ক্রমাগত ভাবমূর্তির অবনতি হচ্ছে।
বেনেট মনে করেন, ইসরায়েলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার কারণ গাজার যুদ্ধ নয়; বরং দেশের প্রচারণার কাজ ঠিকমতো না হওয়া।
বেনেট বলেন, ‘আমার মনে হয় সরকার এখনো বিপর্যয়ের মাত্রাটা বুঝতে পারেনি। আর সে কারণে দুই বছর হয়ে গেলেও আমরা কোনো তথ্যকেন্দ্র করতে পারিনি, আমাদের কাছে উত্তর নেই, কিছুই নেই। আমাদের বন্ধুরা তথ্য চাইছেন, সত্য জানতে চাইছেন, জবাব চাইছেন; কিন্তু আমরা কিছু বলতে পারছি না। তাঁরা তো জানেন না কাকে ফোন করবেন।’
নেতানিয়াহুর দপ্তরের কর্মকর্তাদেরও আক্রমণ করেছেন বেনেট। তাঁর অভিযোগ, নেতানিয়াহুর দপ্তরে তথ্যসংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা কাতার থেকে অর্থ নিচ্ছেন।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে নেতানিয়াহুর দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্তে উঠে আসে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সঙ্গে কাতারের কর্মকর্তাদের যোগাযোগ রয়েছে। ওই দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে বিদেশি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ, মানি লন্ডারিং, ঘুষ গ্রহণ, প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইসর য় ল র ভ বম র ত
এছাড়াও পড়ুন:
আজকের মধ্যে প্রবাসী ভোটারদের আবেদন তদন্ত শেষ করার নির্দেশ ইসির
নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রবাসী বাংলাদেশিদের ভোটার রেজিস্ট্রেশন আবেদনগুলো আজকের (৬ নভেম্বর) মধ্যে তদন্ত করতে মাঠ কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে।
বুধবার (৫ নভেম্বর) ইসির জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগে পরিচালক (নিবন্ধন ও প্রবাসী) খান আবি শাহানুর খানের সই করা চিঠি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
আরো পড়ুন:
‘দেশে মোট ভোটার ১২ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪’
তৃতীয় খসড়া তালিকা প্রকাশ, বাড়ল ভোটার
চিঠিতে বলা হয়েছে, ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রবাসীদের দাখিল করা ভোটার রেজিস্ট্রেশন আবেদনগুলোর তদন্ত প্রতিবেদন আবশ্যিকভাবে ৬ নভেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে।
উপজেলা, থানা ও রেজিস্ট্রেশন কর্মকর্তারা আবেদন ফরম ও সংযুক্ত দলিলাদি প্রিন্ট করে সরেজমিনে যাচাই করবেন। তদন্ত কার্যক্রম শেষ হওয়ার পরে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে সংযুক্ত ছক অনুযায়ী প্রতিবেদন এনআইডি মহাপরিচালক বরাবর পাঠাতে হবে।
চিঠিতে আরো বলা হয়েছে, ১ সেপ্টেম্বর বা তার পর দাখিল করা কোনো আবেদনের সঙ্গে যদি প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট সংযুক্ত না থাকে, তবে তা বাতিল করা হবে না। সেক্ষেত্রে প্রতিবেদনের ছকে ‘ডকুমেন্ট সংযুক্ত নেই’ উল্লেখ করতে হবে। পরবর্তীতে ডকুমেন্ট সংযুক্ত হলে তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।
ঢাকা/এএএম/ইভা