যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের ভাবমূর্তি ভেঙে পড়েছে বলে মনে করেন ইসরায়েলের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট। গতকাল মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

২০২১ সাল থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত নিউ রাইট পার্টির এই নেতা ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। গতকাল তিনি বর্তমান প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ও কট্টর ডানপন্থী লিকুদ পার্টির কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, তাঁরা ইসরায়েলকে ‘বর্জনীয়’ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন।

বেনেটের মতে, নেতানিয়াহুর সরকারের কার্যক্রমের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ইহুদিদের প্রতি বিদ্বেষ আরও বাড়ছে। নেতানিয়াহু সরকার ইসরায়েলের পক্ষে প্রচার চালানোর কাজটিও ঠিকভাবে করছে না বলে মনে করেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক, ওয়াশিংটন ডিসিসহ কয়েকটি শহরে ১০ দিন কাটানোর পর এসব মন্তব্য করেন বেনেট।

সাবেক এ ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে নানা সমস্যা, বিশেষ করে অর্থনৈতিক সংকটের জন্য এখন ইহুদিদের দোষারোপ করা হচ্ছে। দুই পক্ষের রাজনীতিবিদেরাই এ দোষারোপ করছেন।

বেনেটের দাবি, তিনি তাঁর জীবনে কখনো এমন ভয়াবহ মাত্রার ইহুদিবিদ্বেষের ঢেউ দেখেননি। তাঁর মতে, যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান দুই দলেরই সমর্থন হারাচ্ছে ইসরায়েল।

বেনেটের দাবি ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ আন্দোলনের অনেক সদস্য ইসরায়েল থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। এ ছাড়া গাজায় ফিলিস্তিনিদের চলমান অনাহারের কারণে বন্ধুরাষ্ট্রগুলোর পক্ষেও ইসরায়েলকে রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

আরও পড়ুননেতানিয়াহুকে অবশ্যই বিদায় নিতে হবে, বললেন সাবেক ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনেট২৯ জুন ২০২৫

সম্প্রতি প্রকাশিত তথ্য–উপাত্তও বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে ইসরায়েলের ভাবমূর্তি নিয়ে বেনেটের মূল্যায়ন সঠিক।

গ্যালাপের একটি নতুন জরিপে দেখা গেছে, ৩২ শতাংশ মার্কিন নাগরিক গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধে সমর্থন জানাচ্ছেন। যা ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১০ শতাংশ কম।

২০২৫ সালের জুলাই পর্যন্ত করা ওই জরিপের তথ্য বলছে, গাজায় ইসরায়েলের সামরিক পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ৬০ শতাংশ মার্কিন নাগরিক। ৫২ শতাংশ মার্কিন নাগরিক নেতানিয়াহুকে নিয়ে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করেন, যা দেড় বছর আগের তুলনায় অনেক বড় পরিবর্তন।

গ্যালাপ বলছে, এর আগে ১৯৯০-এর দশক থেকে চালানো বিভিন্ন জনমত জরিপে নেতানিয়াহুর প্রতি এতটা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি দেখা যায়নি। তারা বলেছে, ক্রমাগত ভাবমূর্তির অবনতি হচ্ছে।

বেনেট মনে করেন, ইসরায়েলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হওয়ার কারণ গাজার যুদ্ধ নয়; বরং দেশের প্রচারণার কাজ ঠিকমতো না হওয়া।

বেনেট বলেন, ‘আমার মনে হয় সরকার এখনো বিপর্যয়ের মাত্রাটা বুঝতে পারেনি। আর সে কারণে দুই বছর হয়ে গেলেও আমরা কোনো তথ্যকেন্দ্র করতে পারিনি, আমাদের কাছে উত্তর নেই, কিছুই নেই। আমাদের বন্ধুরা তথ্য চাইছেন, সত্য জানতে চাইছেন, জবাব চাইছেন; কিন্তু আমরা কিছু বলতে পারছি না। তাঁরা তো জানেন না কাকে ফোন করবেন।’

নেতানিয়াহুর দপ্তরের কর্মকর্তাদেরও আক্রমণ করেছেন বেনেট। তাঁর অভিযোগ, নেতানিয়াহুর দপ্তরে তথ্যসংক্রান্ত কাজে নিয়োজিত ব্যক্তিরা কাতার থেকে অর্থ নিচ্ছেন।

চলতি বছরের এপ্রিল মাসে নেতানিয়াহুর দুই ঘনিষ্ঠ সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তদন্তে উঠে আসে, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সঙ্গে কাতারের কর্মকর্তাদের যোগাযোগ রয়েছে। ওই দুই সহযোগীর বিরুদ্ধে বিদেশি সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ, মানি লন্ডারিং, ঘুষ গ্রহণ, প্রতারণা ও বিশ্বাসভঙ্গের অভিযোগ আনা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ইসর য় ল র ভ বম র ত

এছাড়াও পড়ুন:

কক্সের ব্যাটিং ঝলক আর বোলারদের দাপটে ইংল্যান্ডের সিরিজ জয়

ডাবলিনের মালাহাইড ভিলেজে রোববার (২১ সেপ্টেম্বর) সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে আয়ারল্যান্ডকে ছয় উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ নিজেদের করে নিল ইংল্যান্ড। ম্যাচের নায়ক জর্ডান কক্স করেছেন হাফ সেঞ্চুরি। সঙ্গে লিয়াম ডসন, জেমি ওভারটন ও আদিল রশিদের বোলিং জাদুতেই ধরা খেল স্বাগতিকরা।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৫৪ রান তুলেছিল আয়ারল্যান্ড। ইনিংসের মূল ভরসা ছিলেন গ্যারেথ ডেলানি। শেষদিকে তার ঝড়ো ২৯ বলে অপরাজিত ৪৮ রানে ভর করে লড়াকু সংগ্রহ পায় দল। ইনিংসে ছিল ৪টি চার আর ৩টি বিশাল ছক্কা। ওপেনার রস অ্যাডায়ার ২৩ বলে ৩৩ এবং তিন নম্বরে নামা হ্যারি টেক্টর ২৭ বলে ২৮ রান যোগ করেন। তবে অধিনায়ক পল স্টার্লিংকে দ্রুত ফেরান ডসন। পরে টেক্টরকেও আউট করে ২ ওভারে ৯ রানে ২ উইকেটের বোলিং ফিগার দাঁড় করান তিনি।

আরো পড়ুন:

ভারতকে ১৭২ রানের টার্গেট ছুড়ল পাকিস্তান

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে ভারত

জেমি ওভারটন তার চার ওভারে লরকান টাকার ও কার্টিস ক্যাম্ফারকে ফিরিয়ে আয়ারল্যান্ডের মিডল অর্ডারে আঘাত হানেন। সবচেয়ে কার্যকরী ছিলেন লেগস্পিনার আদিল রশিদ। ইনিংসের শেষভাগে ৩ উইকেট তুলে নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তার বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ২৯ রানে ৩ উইকেট।

লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় ওভারেই সিনিয়র ব্যাটার জস বাটলারকে শূন্য রানে ফেরান ব্যারি ম্যাককার্থি। অধিনায়ক জেকব বেথেলও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি, করেন মাত্র ১৫ রান।

তবে একপ্রান্ত আগলে ব্যাট চালান ফিল সল্ট। ২৩ বলে ২৯ রানের ইনিংসে দুই চার ও একটি ছক্কা হাঁকিয়ে গড়েন কক্সের সঙ্গে ৫৭ রানের গুরুত্বপূর্ণ জুটি। সেখানেই ম্যাচের মোড় ঘুরে যায়। কক্স খেলেন ৩৭ বলে ৫৫ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংস। যেখানে ছিল নিয়ন্ত্রিত শটের ছড়াছড়ি। শেষ পর্যন্ত বেন হোয়াইট তাকে বোল্ড করলেও তখন জয় প্রায় নিশ্চিত।

বাকি কাজটা সেরে দেন টম ব্যান্টন ও রেহান আহমেদ। ব্যান্টনের ২৬ বলে অপরাজিত ৩৭ রানে ভর করে ১৭.১ ওভারেই ৪ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড।

এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতল ইংল্যান্ড। 

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ