বিলুপ্ত কুমিল্লা-৯ আসন পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ
Published: 6th, August 2025 GMT
কুমিল্লা-১০ (সদর দক্ষিণ-লালমাই-নাঙ্গলকোট) সংসদীয় আসন ভেঙে নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রকাশিত খসড়া তালিকা বাতিল ও বিলুপ্ত হওয়া কুমিল্লা-৯ আসন পুনর্বহালের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
বুধবার বিকেল ৪টা ৩০ থেকে ৫টা ৪০ মিনিট পর্যন্ত সদর দক্ষিণের পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক সংসদ সদস্য মনিরুল হক চৌধুরীর অনুসারী নেতা-কর্মীরা। এতে সদর দক্ষিণ উপজেলা বিএনপি, কুমিল্লা মহানগর দক্ষিণের ৯ ওয়ার্ড ও লালমাই উপজেলা বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন। এতে মহাসড়কের দ্বিমুখী লেনে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজট তৈরি হয়।
এর আগে একই দাবিতে গত সোমবার মানববন্ধন করে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি দেন মনিরুল হক চৌধুরীর অনুসারীরা।
আজ বিকেলে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে মনিরুল হক চৌধুরীর অনুসারীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। তাঁরা ‘তোর খসড়া তুই নে, আমার ঠিকানা ফিরিয়ে দে’, ‘কুমিল্লা-৯ আসন ফিরিয়ে দাও, দিতে হবে’, ‘আমরা সবাই মনির সেনা, ভয় করি না বুলেট বোমা’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। দ্রুত সময়ের মধ্যে বৃহত্তর কুমিল্লা সদর দক্ষিণ এলাকা নিয়ে সাবেক কুমিল্লা-৯ আসনটি ফিরিয়ে দেওয়া এবং নির্বাচন কমিশনের খসড়া বাতিল না করলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়ক ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
আন্দোলনকারী নেতা-কর্মীরা বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা ও পৌরসভা (বর্তমানে সদর দক্ষিণ, লালমাই উপজেলা ও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের দক্ষিণের ৯টি ওয়ার্ড) নিয়ে বিলুপ্ত হওয়া কুমিল্লা-৯ আসনের সীমানা ছিল। বীর মুক্তিযোদ্ধা মনিরুল হক চৌধুরী এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময়ে মনিরুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে আসনটি বিলুপ্ত করে কুমিল্লা-৬, কুমিল্লা-৮ ও কুমিল্লা-১০ আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। চার থেকে পাঁচ দফা পরিবর্তনের পর বর্তমানে কুমিল্লা-১০ (সদর দক্ষিণ-লালমাই-নাঙ্গলকোট) আসনে আছে বিলুপ্ত হওয়া কুমিল্লা-৯ আসনটি। তাঁরা দীর্ঘদিন ধরে কুমিল্লা-৯ আসন পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করছেন, আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু তাঁদের দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে যেখানে কুমিল্লা-৯ আসন পুনর্বহাল করার কথা, তা না করে কুমিল্লা-১০ সংসদীয় আসনকে ভেঙেচুরে ত্রিখণ্ডিত করে খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে ইসি। অন্যায়ভাবে কুমিল্লা-১০ আসনের লালমাই উপজেলাকে বর্তমান কুমিল্লা-৯ আসনের লাকসামের সঙ্গে এবং কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলাকে কুমিল্লা-১১ (চৌদ্দগ্রাম) আসনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। আর কুমিল্লা-১০ আসনের নাঙ্গলকোট উপজেলার সঙ্গে কুমিল্লা-৯ আসনের মনোহরগঞ্জ উপজেলাকে যুক্ত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনের এই হটকারী সিদ্ধান্ত তাঁরা মানেন না। অবিলম্বে এ সিদ্ধান্ত বাতিল করে কুমিল্লা-৯ আসন পুনর্বহালের দাবি জানান তাঁরা।
সদর দক্ষিণ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও আসন পুনরুদ্ধারের জন্য গঠিত ‘সর্বদলীয় সংগ্রাম কমিটি’র আহ্বায়ক মুহম্মদ আখতার হোসেনের সভাপতিত্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। এ সময় আখতার হোসেন জানান, তাঁদের দাবি আদায়ে আগামী ১২ আগস্ট লালমাইতে এবং ১৩ আগস্ট কুমিল্লা সদর দক্ষিণ স্থানীয় বিএনপির উদ্যোগে বৃহৎ জনসভা আয়োজন করা হবে।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া সমাজসেবক জহিরুল হক চৌধুরী বলেন, ‘এই আন্দোলন শুধু একটি আসনের জন্য নয়। এটি আমাদের অস্তিত্বের লড়াই। আসন পুনর্বহাল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’
এদিকে মহাসড়ক অবরোধের কারণে চরম দুর্ভোগে পড়েন বাসের চালক ও যাত্রীরা। পরে কর্মসূচি শেষ হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ময়নামতি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, আসন পুনর্বহালের দাবিতে বিএনপির নেতা-কর্মীরা এক ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। কয়েক হাজার মানুষ মহাসড়কে অবস্থান নেওয়ায় প্রায় ৪ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে তাঁরা মহাসড়ক থেকে সরে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র আসন র স কর ম র র ধ কর
এছাড়াও পড়ুন:
‘সবাই সাবধান, শহরে নাগিন আজমেরী হক এসেছে’
গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যত্থানের মুখে দেশ ছাড়েন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ আন্দোলনের শুরু থেকে জোরোলো ভূমিকা পালন করেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। কখনো ফেসবুকে, কখনো দৃশ্যমাধ্যম শিল্পীসমাজের ব্যানারে রাজপথে দাঁড়িয়েছেন এই শিল্পী।
চব্বিশের ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ঘিরে তৈরি হওয়া মতপার্থক্য এখনো দূর হয়নি। ফলে বাঁধনকে নানাভাবে নানাজন কটাক্ষ করেছেন, আক্রমণ করেছেন। এ ধারা এখনো অব্যাহত রয়েছে। অন্তত, সোশ্যাল মিডিয়ায় চোখ রাখলে পরিষ্কার বোঝা যায়। এবার বাঁধন জানালেন, গালি হিসেবে তার নামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে ‘নাগিন’ শব্দটি।
আরো পড়ুন:
গায়ক জুবিনের প্রেম জীবন
‘ট্র্যাব এক্সিলেন্ট অ্যাওয়ার্ড’ পেলেন শিমুল খান
সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বাঁধন তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন। তাতে এই অভিনেত্রী বলেন, “আমি এখন জীবনের দুর্দান্ত সময় পার করছি (বিস্তারিত পরে বলব)। এরই মাঝে আমার ‘গালি’ সংগ্রহে নতুন এক সংযোজন হয়েছে, তা হলো— ‘নাগিন’।”
খানিকটা ব্যাখ্যা করে বাঁধন বলেন, “মানুষ আমাকে অনেক কিছুই বলেছেন। কিন্তু এই নামটা একদম নতুন, স্টাইলিশ…। সত্যি বলতে, এটি আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে। তাই সবাই সাবধান—শহরে নাগিন আজমেরী হক এসেছে।”
বাঁধনের এই স্যাটায়ার পোস্ট নিয়ে নেটিজেনদের অনেকে রসিকতা করছেন। কেউ কেউ মানসিক সমর্থন জানিয়ে অভিনেত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছেন।
লাক্স তারকা থেকে রুপালি পর্দা, তারপর বিশ্ব মঞ্চ ও বলিউডে দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। তবে তার এই চলার পথ মোটেও মসৃণ ছিল না। কারণ পেশাগত নানা সংকটের পাশাপাশি ব্যক্তিগত জীবনেও সংগ্রামটা একাই করতে হয়েছে তাকে।
ঢাকা/শান্ত